কবি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছোট্ট রামায়ণ
যে কোন গানের উপর ক্লিক করলেই সেই গানটি আপনার সামনে চলে আসবে।
নিয়ে              বউ সকলে মিলনসাগর মনের সুখে
.                         চলেন সবাই ঘরে,
তখন             পথের মাঝে
মিলনসাগর কাঁপেন তাঁরা
.                        পরশুরামের ডরে |
সে যে            বাঘের মতো
মিলনসাগর বিষম রাগী,
.                        কুড়াল নিয়ে ফেরে |
নাহি              ডরায় কারে
মিলনসাগর বড়ই চটে
.                       দেখলে ক্ষত্রিয়েরে |
মুনি              কুড়াল দিয়ে
মিলনসাগর তাদের সবে
.                       কেটেছে একুশবার |
তাতেই          ভয়েতে তারা
মিলনসাগর হয় যে সারা
.                      নামটি শুনেই তার |
রাজা            কতই আদর              করেন তারে
.                      ‘আসুন-আসুন’ বলে |
মুনি             না চায় ফিরে,
মিলনসাগর রামকে দেখে
.                       গেল সে রাগে জ্বলে |
বলে.           “শিবের ধনুক
মিলনসাগর ভেঙেই বুঝি
.                       হয়েছ ভারি বীর ?
আমার         ধনুকটিকে
মিলনসাগর গুণ পরিয়ে
.                       চড়াও দেখি তীর !”
শ্রীরাম          ধনুক নিয়ে
মিলনসাগর অমনি তাতে
.                       দিলেন টেনে গুণ,
পরে            বাণটি হাতে
মিলনসাগর নিতেই মুনির
.                       মুখ তো হল চুন !
তখন           রাম ভাবিলেন,
মিলনসাগর ‘ এ বাণ খেলেই
.                       যাবেন ঠাকুর মরে’,
কাজেই        অপর দিকে                  দিলেন ছুঁড়ে
.                       সে তীর দয়া করে |
অনেক        তপস্যাতে                    পেলেন মুনি
.                       স্বর্গে যত স্থান,
সে তীর       পড়ল গিয়ে
মিলনসাগর সেইখানেতে
.                       বাঁচল মুনির প্রাণ |
ঠাকুর          হার মেনে তায়            সেখান হতে
.                       গেলেন লাজের ভরে,
রাজা          সবায় নিয়ে
মিলনসাগর মনের সুখে
.                       এলেন আপন ঘরে |
তখন          আদর করে
মিলনসাগর রাণীরা সবে
.                      বউ লইলেন কোলে,
তাঁদের        দিলেন কি যে
মিলনসাগর বলতে হলে
.                      পড়ব বড়ই গোলে |
পরে           ভরত গেলেন
মিলনসাগর মামার বাড়ি
.                      শত্রুঘ্নরে লয়ে,
আর           শ্রীরাম করেন
মিলনসাগর পিতার সেবা
.                      পরম সুখী হয়ে  |

.                    ******************            

.                  
আদি কাণ্ড সমাপ্ত


.                                 এই পাতার উপরে    ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে    কবির মূল সূচিতে    




মিলনসাগর
ছোট্ট রামায়ণ    
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

আদি কান্ড

সরযু নদীর তীরে অযোধ্যা নগর,
দেবতার পুরী হেন পরম সুন্দর |
সোনা মণি মুকুতায় করে ঝলমল,
ছায়া লয়ে খেলে তা
বড় ভালো দশরথ
দুঃখী জনে দেন সুখ
রাণী তাঁর তিনজন
দেবতা সেবায় সদা
কৈকেয়ী রূপসী ব
সুমিত্রা সরলা তাঁর
ছেলে নাই, আহা তা
কত পূজা করে রা
আসিলেন ঋষ্যশৃঙ্গ
শিঙ নেড়ে কথা ক
ভারি যজ্ঞ করিলে
‘পুত্রেষ্টি’ তাহার না
আগুনে ঢালিয়া ঘৃ
সুগভীর সুরে মন্ত্র
সে আগুন হতে তায়, পায়স লইয়া ,
লালবেশে দেবদূত আসিল উঠিয়া |
কালো মুখে হাসি, তাহে ঘোর দাড়ি জট,
লাল চোখ পাকাইয়া তাকায় বিকট |
রাজারে পায়স দিয়া কহিল সেজন,
“রাণীদের দাও গিয়া করতে সেবন |”
এতেক বলিয়া দূত গেল মিলাইয়া,
সুখে খান রাণীগন পায়স বাঁটিয়া |
তাহার পরে বছর গেলে,
রাজার হল চারিটি ছেলে |
আদরে তুলে নিলেন বুকে,
সুখের হাসি ফুটিল মুখে |
বাজনা বাজে মধুর স্বরে,
শঙ্খ বাজে ঠাকুরঘরে |
কাঙাল হাসে কতই পেয়ে,
নড়িতে নারে মিঠাই খেয়ে |         

.                                 এই পাতার উপরে    ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে    কবির মূল সূচিতে    
মুনি রাখিলেন নাম,                           
.                  
কৈকেয়ী রাণীর ঘরে                        জন্মে যে তাহার পরে
.                     ভরত হইল নাম তার |
লক্ষ্মণ শত্রুঘ্ন আর,                          দুই ছেলে সুমিত্রার,
.                    দুই ভাই ছোট সকলের,
চারিটি চাঁদের মতো                       চারি ভাই বাড়ে যত
.                   দেখে চোখ জুড়ায় লোকের |
স্নেহে মিলে চারি ভাই,                    খেলা করে এক ঠাঁই,
.                   হয়ে সবে এক প্রাণ মন,
লেখাপড়া যত হয়,                         সকল শিখিয়া লয়,
.                   যাহা কিছু জানে গুরুজন |
তীর খেলা কত মতো,                     শিখিল তা, কব কত ?
.                   মহাবীর হল চারি ভাই,
যারে ধরে একবার,                        আকাশ পাতালে তার
.                   পালাবার নাহি রহে ঠাঁই |


একদিন রাজা
মিলনসাগর থেকে নেওয়া  আছেন বসিয়া
.                   সিংহাসনে আপনার ,
বিশ্বামিত্র মুনি  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া  এমন সময়ে
.                    এলেন সভায় তাঁর |
রাজা কন, “প্রভু,
মিলনসাগর থেকে নেওয়া  কিসের লাগিয়া,
.                    আসিলেন  মোর পাশ ?
মুনি কন, “হায়  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   দুষ্ট নিশাচর
.                      সকল করিল নাশ |
লুকায়ে আসিয়া  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   রকত ঢালিয়া
.                     মোর যজ্ঞ করে মাটি ;
দিন কয় তরে  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   দেহ গো রামেরে,
.                    রাক্ষস দিবে সে কাটি |”
ত্রাসে দশরথ   
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   কহেন কাঁপিয়া
.                   “তাও কি কখনো হয় ?
রাক্ষসের মুখে  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   কেমনে বাছারে
.                     পাঠাইব মহাশয়  !”
শুনিয়া অমনি   
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   উঠিলেন মুনি
.                   বিষম রোষেতে জ্বলি ;
হয় সর্বনাশা  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   দেন বুঝি শাপ,
.                   না জানি কি কথা বলি !
ভয়ে সভাজনে  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   কহে, “মহারাজ !
.                    দেহ দেহ রামে আনি,
ভালো হবে তার,  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   মুনির কৃপায়,
.                     না হবে কোন হানি |”
শুনিয়া তখনি   
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   রাম লক্ষ্মণেরে
.                    দেন রাজা আনাইয়া |
মহা খুশি হয়ে  
মিলনসাগর থেকে নেওয়া   যান মুনি তায়
.                    দুইটি ভাইকে নিয়া |


.                                 এই পাতার উপরে    ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে    কবির মূল সূচিতে    
রণবেশে দুই ভাই সাজি তারপর,
মুনির সহিত যান লয়ে ধনু-শর |
গুরুজন খান চুমো তাঁদের মাথায়,
দেবতার নাম লয়ে করেন বিদায় |
পথে রাম শিখিলেন সরযূর তটে
দুই বিদ্যা অদ্ভুত মুনির নিকটে |
এক তার ‘বলা’, তাহে যায়
‘অতিবলা’ আর, তাতে হয়
দুইদিন পরে তাঁরা হন গঙ্গা
তারপরে ঘন বন, বড় অন্ধকা
রামেরে বলেন মুনি, “হেথায়,
তারকা রাক্ষসী থাকে বিকট
রক্তখাকী হতভাগী ভারি বল
লোকজন মেরে বন করেছে
এই পথে যেই যায়, তারে খা
আপদে মারহ বাপ দুই ভাই
.মরিবে রাক্ষসী বুড়ি, রক্ষা না
তখনি দিলেন রাম ধনুকে টং
‘টং-টং’ রবে তার রুষি ভয়ং
দাঁত কড়্মড়ি বুড়ি কাঁপে থ
“হাঁই-মাঁই-কাঁই” করি ধাঁই-ধাঁ
হুড়মুড়ি ঝোপঝাড় চুরমারি
গরজি-গরজি বুড়ি ছোটে. যে
শ্বাস বয় ঘোরতর ঘড়র্-ঘড়
কান যেন কুলো তার. দাঁত যেন মুলো,
জ্বল-জ্বল দুই চোখ জ্বলে যেন চুলো |
হাঁ করেছে দশ গজ, তাহে জিভ খান
লকলকে চকচকে দেখে ওড়ে প্রাণ |
বিষম ধূলার ঘোরে দোঁহারে ঘেরিয়া,
পাথর ছুঁড়িয়া বুড়ি মারে চেঁচাইয়া |
কোনো ডর নাহি পায় তাহে দুই ভাই,
ডাক শুনি লাখ বাণ মারে সাঁই-সাঁই |
দেখা দিল বুড়ি তাই ফাঁপর হইয়া,
পাহাড় বেরুল যেন দাঁত খিঁচাইয়া |
হাত নাক কান কাটি, বুকে হানি বাণ,
দুজনে তখন তার বধিল পরান |
মুনির মুখেতে হাসি ধরে নাকো আর
“বেঁচে থাক” “বেঁচে থাক” বলে বারবার |
মহা-মহা শেল শূল দেন কত রামে,
দেবতা অসুর কাঁদি ভাগে যার নামে |
যতনে তখন লয়ে ভাই দুইজনে,
ফিরিয়া গেলেন মুনি নিজ তপোবনে |
যজ্ঞ করে মুনিগণ বসিয়া সেথায়,
রাক্ষস আসিয়া দেয় রক্ত ঢালি তায় |
তারপর পাঁচদিন মিলি দুইজনে,
পাহারা দিলেন সেথা বড়ই যতনে |
যজ্ঞের আগুন যেই জ্বলিল তখন,
মেঘের উপরে হল ভীষণ গর্জন |
তাহা শুনি দুই ভাই দেখেন চাহিয়া,
রাক্ষস খিঁচায় দাঁত আকাশ ছাইয়া |
জালাপানা মুখ আর ঝাঁটাপানা চুল,
কানে আঙুটির গোছা, হাতে শেল শূল |
মেঘের আড়ালে থাকি মারে উঁকি-ঝুঁকি,
পচা রক্ত ঢালি দেয় বারবার শুঁকি,
দুইটা পালের গোদা, বিষম বিকট,
মারীচ, সুবাহু নাম, অতি বড় শঠ |
মানব নামেতে বাণ জুড়িয়া ধনুকে,
ছুঁড়িয়া মারেন রাম মারীচের বুকে |
সেই বাণ খেয়ে বেটা, ঘোরে বন্-বন্ ,
সাগরে পড়িল গিয়া হয়ে অচেতন |
অগ্নিবাণ খেয়ে গেল সুবাহু মরিয়া,
বায়ুবাণে আরগুলো মরে চেঁচাইয়া |
যজ্ঞের আপদ গেল, দূর হল ভয়,
আনন্দতে মুনিগণ বলে জয়-জয় |

.                                 এই পাতার উপরে    ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে    কবির মূল সূচিতে    
তখন             সবাই মিলে                 যান মিথিলায়
.                        বোঝাই দিয়ে গাড়ি,
সেথায়           যজ্ঞ হবে   
মিলনসাগর     জবর জাঁকাল
.                        জনক রাজার বাড়ি
আছে            ধনুক সেথায়   
মিলনসাগর কেউ নাকি তায়
.                        গুণ পরাতে নারে,
শুনে              মুনির সাথে   
মিলনসাগর   দুভাই সুখে
.                        দেখতে চলে তারে |
কত               সবুজ মাঠে,   
মিলনসাগর     নদীর তীরে
.                         পথ গিয়েছে ঘুরে,
আহা,             শূন্য পরে    
মিলনসাগর    তাহার ধারে
.                         এ কোন মুনির কুঁড়ে ?
মুনি               তার কাহিনী   
মিলনসাগর  কহেন রামে
.                         গৌতমেরে স্মরে,
“জায়া            অহল্যারে   
মিলনসাগর    শাপেন তিনি
.                         বিষম দোষের তরে |
হেথায়            থাকবে পড়ে    
মিলনসাগর   ছাইয়ের পরে
.                         বাতাস কেবল খাবে |
হাজার            বছর ধরে    
মিলনসাগর   কেউ তোমারে
.                         দেখিতে নাহি পাবে |
শেষে             রামকে  দেখে    
মিলনসাগর  দুখ ফুরাবে
.                         ফিরব আমি ঘরে |
বলেই             অমনি চলে    
মিলনসাগর   যান হিমালয়
.                         দারুণ রাগের ভরে |
দেবী              ভাবেন হরি   
মিলনসাগর   হেথায় পড়ি,
.                         কঠিন সাজা সয়ে |
চল,               তোমায় দেখে  
মিলনসাগর   এবার তিনি
.                         উঠুন সুখী  হয়ে |”
তখন             সবাই মিলে   
মিলনসাগর   সেদিক পানে
.                        চলেন তাঁরা ধেয়ে,
কুটির             উজ্জ্বল করি   
মিলনসাগর   উঠেন দেবী
.                        রামের দেখা পেয়ে |
তাঁরে             দেখতে পেয়ে   
মিলনসাগর   দুভাই গিয়ে
.                       পড়েন চরণ তলে,
দেবী              অমনি তুলে   
মিলনসাগর   নিলেন কোলে,
.                        ভাসল নয়ন জলে |
গৌতম            এলেন ঘরে   
মিলনসাগর   সেই সময়ে
.                        এলেন ততক্ষণ,
আবার           দুজনে মিলে   
মিলনসাগর   হরির পূজায়
.                        দিলেন তাঁরা মন |


.                                 এই পাতার উপরে    ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে    কবির মূল সূচিতে    
সেথা হতে মিথিলায় যান তিনজন,
দু ভায়ে দেখিয়া ভোলে সকলের মন |
জনক বলেন, “আহা কেমন সুন্দর !
কাহার কুমার এরা কহ মুনিবর |”
মুনি বলেন, “দশরথ রাজা অযোধ্যার,
শ্রীরাম, লক্ষ্ণণ এরা তাঁহার কুমার |
তাড়কা মারীচে মারি এসেছে হেথায়,
তোমার ধনুকখানি দেখিবারে চায় |”
রাজা বলেন, “বাছা সব থাকুক বাঁচিয়া
ধনুক দেখাই আমি এখুনি আনিয়া |
শিবের ধনুক সেটি, দিল দেবগণ,
গুণ দিতে নাহি তায় পারে কোনোজন |
গুণ দিবে দূরে থাক, তুলিতে না পারে,
লাজ পেয়ে শেষে চায় মারিতে আমারে |
সে ধনুকে যদি রাম পারে গুণ দিতে,
সীতার বিবাহ দিব তাহার সহিতে |”
মিলনসাগর থেকে সরাসরি নকল করা  
শুনহ সীতার কথা সবে মন দিয়া,
ডিম্বের ভিতরে কন্যা ছিল লুকাইয়া |
চাষ করে মহারাজ লইয়া লাঙ্গল,
সেই কালে চারিদিক হইল উজল |
তখন দেখিল রাজা চাহিয়া সম্মুখে,
আশ্চর্য উঠেছে ডিম্ব লাঙ্গলের মুখে |
দেবতার সমান কন্যা তাহার ভিতরে,
সুখে তারে মহারাজ নিল বুকে করে |
সীতে থেকে উঠে তাই নাম তার সীতা,
জনকেরে কয় সবে সে মেয়ের পিতা |
রাজা কন, “ধনুকেতে যেই গুণ দিবে,
সেই সে সীতারে মোর বিবাহ করিবে |”
মিলনসাগর থেকে সরাসরি নকল করা
না জানি কতই ভারি ছিল ধনুখানি !
অনেক হাজার লোকে আনে তারে টানি |
ভয়ঙ্কর সেই ধনু তুলি বাম হাতে,
হাসিতে হাসিতে রাম গুণ দেন তাতে |
তারপর গুণ ধরি দিল এক টান,
‘মট্’ করি হর-ধনু ভেঙ্গে দুইখান |
ভয়ে তায় চোখ বুজি, কানে দিয়ে হাত,
‘বাপ’ ! বলি কত বীর হয় চিত্পাত !
বড়ই হলেন সুখী জনক তখন,
রামেরে আদর করি কত কথা কন |
বিবাহের কথা স্থির হইল ত্বরায়,
লিখন লইয়া দূত যায় অযোধ্যায় |
পত্র পান দশরথ বসিয়া সভায়-----
“শ্রীরাম-সীতার বিয়ে এস মিথিলায় |”
রাজা কন, “কি আনন্দ চলহ সকলে  |”
অমনি সাজিল সবে “রাম জয়” বলে |
হাতি ঘোড়া, লোকজন ঢাক ঢোল নিয়া |
মহানন্দে মহারাজ চলেন সাজিয়া |
চারদিনে যান রাজা মিথিলা নগরে,
জনক নিলেন তাঁরে পরম আদরে |
মিলনসাগর থেকে সরাসরি নকল করা
শুন কি সুন্দর কথা হইল তখন |
সেথা ছিল চারি কন্যা জনক রাজার,
ভাইঝি মান্ডবী তাঁর, শ্রুতকীর্তি আর |
সীতারে লইয়া তারা হয় চারিজন,
চারি পুত্র দশরথ রাজার তেমন |
মুনিগণ বলে, “আহা, কিবা চমত্কার,
মেয়ে নাই হেন কোনোখানে আর |
এই-সব ছেলে যদি এই মেয়ে পায়,
বড় ভালো, মহারাজ, হইবেক তায় |”
জনক বলেন, “বেশ, ভালো তো কহিলা,
শ্রীরামের দেহ সীতা, লক্ষ্মণে ঊর্মিলা,
শত্রুঘ্নরে শ্রুতকীর্তি, মান্ডবী ভরতে,
একদিনে চারি বিয়ে হোক এই মতে |”
তখন মিথিলাপুরী করে টলমল,
কি আনন্দ, কত গান, পূজা কোলাহল |
লাগিল ভোজের ধুম বাজিল বাজনা,
ঢাক, ঢোল, কাড়া, কাঁসি, না হয় গণনা |
আলো করে ঝলমল, ধূপধূনা জ্বলে,
যতনে সাজায়ে কন্যাআনিল সকলে |
অগ্নির সম্মুখে বসি জনক তখন,
চারি বরে কন্যা দেন করিয়া যতনে |
কতই মুকুতা মণি দাস-দাসী আর
মেয়েদের দেন রাজা শেষ নাই তার |
তারপর আশীর্বাদ করিয়া সকলে,
বিশ্বামিত্র মুনি যান হিমালয় চলে  |
মহারাজ দশরথ ছেলে বউ নিয়া,
মনের সুখেতে যান বিদায় লইয়া |

.                                 এই পাতার উপরে    ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে    কবির মূল সূচিতে