ঘরে ফিরে দুই ভাই না
কাতরে কাঁদেন রাম
খুঁজিলেন বনে-বনে গু
গোদাবরী তীরে আর
কোথাও না পান তাঁ
কেহ নাই, তাঁর কথা
পরে আইলেন তাঁরা
রয়েছে অবশ হয়ে প
রোষেতে বলেন রাম
“এই দুষ্ট খাইয়াছে আ
রাক্ষস পাখির মতো
ঘুমায় কেমন দেখ, সী
এই বলি রাম তারে
কষ্টেতে তখন পাখি
“মেরে তো আমায় বা
তারপরে তুমি আর মেরো না রে ধন |
পলায়ে গিয়াছে দুষ্ট লয়ে সীতা মায়,
প্রাণ গেল, না পারিনু রাখিবারে তাঁয় |”
জটায়ুরে বুকে লয়ে দুভাই তখন,
কাঁদেন কাতর হয়ে, শিশুর মতন |
কিন্তু হায়, সেই ক্ষণে প্রাণ গেল তার
কিছুই কহিতে পাখি পারিল না আর |
সেথা হতে তারপর সীতারে খুঁজিয়া,
চলিলেন দুই ভাই ঘন বন দিয়া |
কবন্ধ রাক্ষস ছিল তাহার ভিতর,
কি আর কহিব সে যে কত ভয়ঙ্কর |
মাথা নাই, গলা নাই, আছে শুধু ভুঁড়ি,
হাঁ-করে রয়েছে তাই সারা বন জুড়ি |
থামের মতন তার বড়-বড় দাঁত,
যোজন জুড়িয়া দুই সর্বনেশে হাত |
একখানা চোখ দিয়া চায় কট্ মট্,
হাতি মোষ যাই দেখে, ধরে চট্ পট্ |
শ্রীরাম লক্ষ্মণ যান সেই বন দিয়া,
খপ্ করে নিল বেটা তাঁদেরে ধরিয়া |
তখন বলেন তাঁরা, “খায় বুঝি গিলে,
এই বেলা কাটি হাত দুই ভাই মিলে |”
এই বলি দুই ভাই তলোয়ার দিয়া,
তাড়াতাড়ি হাত তার ফেলেন কাটিয়া |
গড়াগড়ি দিয়া কিবা চেঁচাইল তায়,
কহিল সে, “কে তোমরা ? বল তা আমায় |”
শুনিয়া তাদের নাম বিনয়ে সে কয়,
“ভাগ্যেতে আমার হেথা এলে মহাশয়
এখন পোড়াও মোরে যদি দয়া করে
ঘুচিবে আমার দুঃখ, যাব নিজ ঘরে |”
আগুন জ্বালিয়া ভারি দুজনে তখন
কবন্ধে পোড়ান তায় শ্রীরাম লক্ষ্মণ |
অমনি দেখেন তাঁরা, কিবা চমত্কার,
পরম সুন্দর দেহ হইল তাহার |
আগুন হইতে উঠি তখন সে কয়,
“সুগ্রীবের কাছে তুমি যাও মহাশয় |
ঋষ্যমূক পরবতে, পম্পা নদী-তীরে,
থাকে সে লইয়া সাথে বড়-বড় বীরে |
ত্বরায় তাহারে বন্ধু কর মহাশয়,
করিয়া সীতারে খোঁজ দিবে সে নিশ্চয় |”
তাহা শুনি দিই ভাই যান সেথা হতে,
যেথায় সুগ্রীব থাকে, সেই পরবতে |
এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
সরাসরি কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. অরণ্য কাণ্ড সমাপ্ত
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
মিলনসাগর
ছোট্ট রামায়ণ
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
অরণ্য কান্ড
দন্ডক বনেতে যেতে লা
হাতি সিংহ বাঘ সেথা
বিরাট বলিয়া থাকে রা
না বিঁধে ব্রহ্মার বরে অ
খিঁচাইয়া রাখে দাঁত পথ-
কড়্মড়ি হাতি খায়----
রামেদের দেখে বেটা আ
শুনিয়া বিরাট কয়, “ঝাট্ পালা ঘরে !
হেথেরটি মোর গায়ে বিন্ধিবে না করে !”
সাত বাণ যদি রাম মারিলেন তারে,
খেঁকায়ে আইল বেটা রাখিয়া সীতারে |
ঝেরে ফেলে বাণ সব ধায় শূল নিয়া,
রাম দেন সেই শূল বাণেতে কাটিয়া |
তাহে দুষ্ট দিল ছুট দুভাইকে লয়ে,
কতই তখন সীতা কাঁদিলেন ভয়ে |
ভাঙিলা দুভাই তবে রাক্ষসের হাত
অমনি চেঁচায়ে বেটা হল চিত্পাত |
কিন্তু সে আপদ যে রে কিছুতেই না মরে,
পাথরে না পিষা যায়, খড়্ গে নাহি ধরে |
পুঁতিলেন তাই তারে মিলি দুই ভাই,
চলিলেন তারপর ছাড়ি সেই ঠাঁই |
মুনিদের ঘরে-ঘরে ফিরি তারপর,
সুখেতে কাটিয়া গেল দশটি বত্সর |
পরে আসিলেন তাঁরা পঞ্চবটী বনে,
সেথায় হইল দেখা জটায়ুর সনে |
অতি বড় পাখি সে যে, সম্পাতির ভাই,
রামেরে বলিল, “বাবা থাক এই ঠাঁই |
তোমার পিতার বন্ধু আমি যে রে ধন,
সীতারে দেখিব আমি করিয়া যতন |”
ভারি চমত্কার সেই পঞ্চবটী বন,
নানা রঙে ফুল ফল, দেখে ভরে মন |
দুলিয়া সুন্দর পাখি খেলে ডাল ধরি,
কুলকুল করি বয় নদী গোদাবরী |
সেই পঞ্চবটী বনে, সুন্দর কুটীরে,
সুখেতে থাকেন তারা গোদাবরী তীরে |
এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
সরাসরি কপি পেস্ট করা হয়েছে।
হেনকালে কি হইল শুনহ সকলে------
রাক্ষসী আইল সেথা সূর্পনখা বলে |
লঙ্কায় রাবণ থাকে, দশ মাথা যার
এই বুড়ি হতভাগী বোন হয় তার !
হাঁ করে সীতারে বুড়ি কয় গিয়ে ধেয়ে,
“মুঁহি গিন্নী হব এই বুড়িডারে খেয়ে |”
খাইত সীতারে বুড়ি নিশ্চয় তখন,
ভাগ্যে তার নাক কান কাটেন লক্ষ্মণ |
ব্যথায় অভাগী তায় মরে মাথা কুটি,
“বাপ্পুরে ; মাঁইরে |” বলি ঐ যায় ছুটি !
গেল বুড়ি খর আর দূষণের ঠাঁই |
সেই দু’টা হয় তার মাসতুতো ভাই |
লোকজন লয়ে তারা থাকে জনস্থানে,
কাটা নাক নিয়া বুড়ি গেল সেইখানে |
পরে যা হইল সে যে বড় ভয়ঙ্কর ;
রাক্ষসের ডাকে বন কাঁপে থর্ থর্ |
দেখিতে দেখিতে তারা, আইল ছুটিয়া |
শ্বাস ফেলি ঘোঁৎ-ঘোঁৎ ভেঙচায় রাগে,
দাঁত কড়্ মড়ি শুনি বড় ডক লাগে !
লাঠি-গদা, শেল শূল, কুড়াল কাটারি,
রোষেতে ছুঁড়িয়া তারা মারে ভারী-ভারী |
রামের বাণেতে সব হল খান-খান,
দুই দন্ডে গেল যত রাক্ষসের প্রাণ |
একটা রহিল শুধু, অকম্পন বলে,
চেঁচায়ে লঙ্কায় সেটা ছুটে গেল চলে |
রাবণেরে কয় কাঁপি, ‘ হেই মোহারাজ !
আরে তোর খরটি তো মরিলেক আজ !
দুসনিয়া ফুসনিয়া যেতো মাল ছিলো,
সবেক মানুসো বেটা রামা কাটি দিলো !”
পরেতে আসিয়া সেই নাককাটি বুড়ি
হাই-মাই করি সেথা কাঁদে মাথা খুঁড়ি |
এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
সরাসরি কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
কবি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছোট্ট রামায়ণ যে কোন গানের উপর ক্লিক করলেই সেই গানটি আপনার সামনে চলে আসবে।
|
. যেথায় মারীচ থাকে,
. সাজা দিব আজ তাকে |”
. মুই তো না সেথা যাব !
. লাট্টু পাক মোরা খাব !”
রাবণ কহিল, “নাহি যাস যদি
. এখনি কাটিব তোরে |”
মারীচ কহিল, “যাব, যাব, মুই !
. কি করিবি লিয়ে মোরে ?”
রাজা কয়, “তুমি সোনার হরিণ
. সাজিয়া সেথায় যাবে,
সীতার নিকটে নাচিয়া-নাচিয়া
. লতা পাতা খুঁটে খাবে |
রামেরে তখন দিবে সে পাঠায়ে
. তোমারে ধরিয়া নিতে,
দূরে নিয়া তারেমিলনসাগর থেকে চেঁচাইবে তুমি
. হা লক্ষ্মণ, হায় সীতে !
তাহা শুনি আর নারিবে লক্ষ্মণ
. বসিয়া থাকিতে ঘরে,
আমিও তখন সীতারে লইয়া
. ছুট দিব রথে করে !”
সাজি লয়ে সীতা তুলিছেন ফুল,
. মারীচ তখন এল,
হরিণ সাজিয়া তাঁহার নিকটে
. নাচিতে-নাচিতে গেল |
তারে দেখি সীতা আনেন অমনি
. শ্রীরাম লক্ষ্মণে ডাকি,
লক্ষ্মণ বলেন, “বুঝেছি, এ-সব
. মারীচ বেটার ফাঁকি !”
হেলা করে সীতা নাহি দেন কান
. লক্ষ্মণের সে কথায়,
মিনতি করিয়া পাঠান রামেরে
. হরিণ ধরিতে হায় !
সে পোড়া হরিণমিলনসাগর থেকেরামেরে লইয়া
. কত দূর গেল চলে,
বাণ খেয়ে শেষে ডাকিল কাতরে,
. “হায় রে লক্ষ্মণ !” বলে |
শুনি তা অমনি লক্ষ্মণেরে সীতা
. কাঁদিয়া কহেন ভয়ে,
লক্ষ্মণ বলেন, “মারীচের ফাঁকি
. নহে গো এ কিছু আর,
রাম বড় বীর, মারিবে তাঁহার,
. এত জোর আছে কার ?
একলা হেথায় রাখিয়া তোমায়
. যাইব কেমন করে ?
কোনো ভয় নাই আসিবেন রাম
. এখনি ফিরিয়া ঘরে |”
রুষিয়া তখন কহিলেন সীতা
. “বুঝিনু সকলই হায়,
ওরে দুষ্ট, তুমি এই চাও, যাতে
. রাক্ষসে তাঁহারে খায় |”
কঠিন কথায় ব্যথা পেয়ে হায়
. গেলেন লক্ষ্মণ চলি,
অমনি সেথায় আইল রাবণ,
. “হর হর বোম !” বলি |
যোগীর মতন সেজেছে রাবণ
. চেনা নাহি যায় তারে,
টিকি, দোলাইয়া হাসিয়া-হাসিয়া
. আসিল কুটির দ্বারে |
যোগী ভাবি সীতা বসিতে আসন
. দিলেন যতন করে,
ঘরে ছিল ভাত, আনিয়া আদরে
. খাইতে দিলেন পরে |
কহিছে রাবণ, “কার মেয়ে তুমি ?
. কেমনে আইলে বনে ?”
সীতা কন, “আমি জনকের মেয়ে
. এসেছি পতির সনে |”
শুনি দুষ্ট কয়, “ভিখারীর সাথে
. রয়েছ কিসের তরে ?
বনের ভিতরে বাঘ থাকে ভারি
. খাইবে তোমারে ধরে |
মোর সাথে চল,মিলনসাগর থেকে আমি সেই রাজা,
. রাবণ যাহারে কয়,
খাটেতে বসিয়া পাইবে সকল
. যা তোমার মনে লয় |”
সীতা কন তারে, “বটে রে অভাগা
. এত বড় মুখ তোর !
আজি তোর দাঁতমিলনসাগর থেকেভাঙিবেন রাম
. দাঁড়া দেখি দুষ্ট চোর |”
কুড়ি চোখ তায় ঘুরায় রাবণ
. রাগেতে পাগল হয়ে,
বিশ পাটি দাঁত করি কড়্ মড়্
. চলে রে সীতায় লয়ে |
রথ খানি তার আইল অমনি
. লাফায়ে উঠিল তায়,
দূরে দুই ভাই মিলনসাগর থেকে জানি কোন ঠাঁই
. দেখিল না হায়-হায় !
গাছের উপরে বসিয়া তখন
. ঘুমায় জটায়ু পাখি,
চমকি শুনিলমিলনসাগর থেকে ঐ যেন সীতা
. কাঁদেন তাহারে ডাকি !
অমনি জটায়ু মিলনসাগর থেকে যমের মতন
. ধরিল রাবণে গিয়া,
আধমরা করে, ছাড়িল বেটারে
. আঁচড় ঠোকর দিয়া |
ভাঙি রথখানি মিলনসাগর থেকে মারি তার ঘোড়া
. ছিঁড়ি সারথির মাথা,
কাড়িল ধনুক ঝেড়ে ফেলে বাণ
. পিষিল চামর ছাতা |
দেবতার বর মিলনসাগর থেকে পেয়েছে রাবণ,
. সে যে মরিবার নয়,
দশ মাথা তারমিলনসাগর থেকে ছিঁড়ে কতবার
. আবার নতুন হয় |
বুড়া পাখি হায় মিলনসাগর থেকে কত পারে আর ?
. বল তার গেল টুটি,
হাত-পা তাহারমিলনসাগর থেকে কাটিয়া রাবণ
. সীতা লয়ে যায় ছুটি |
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
লাফায়ে তখন মিলনসাগর থেকে নেওয়া উঠিল রাবণ
. রাগেতে আগুন হয়ে,
সারথিরে কয়, মিলনসাগর থেকে“আয় তো রে মোর
. গাধাটানা রথ লয়ে !”