ছোট্ট রামায়ণ
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
লঙ্কা কান্ড
. তার
. লঙ্কায় চলিল
গণিয়া না হয় শেষ
. আকাশ
. সভা মধ্যে
. বলিছে, “
একেলা বানর আসি মিলনসাগর.কম্ সকলই যে গেল নাশি,
. উপায় কি হইবে এখন ?"
. সবে কয়, “কেনে কত ডর ?
. লাখো মাল বান্ধিবে কোম্মর,
হেথের লিবেক ভারী, মিলনসাগর.কম্ বান্দর দিবেক মারি,
. তুই থাক্ বসে গদ্দিপর !”
. সেইখানে ছিল বিভীষণ,
. বিনয়ে সে কহিল তখন,
“সীতারে রাখিলে ধরে, মিলনসাগর.কম্ সকলে মরিব পরে,
. ফিরায়ে দেহ গো এইক্ষণ |”
. ভালো কথা কহিল যে জন,
. গালি দিল তাহারে রাবণ,
মনের দুঃখেতে তাই, মিলনসাগর.কম্ গিয়া শ্রীরামের ঠাঁই
. বন্ধু তাঁর হল বিভীষণ |
. তারপরে যতেক বানর
. বড়-বড় আনিল পাথর,
গাছ কত ভারী-ভারী, মিলনসাগর.কম্ আনে তা কহিতে নারি,
. তাহে নল বাঁধিল সাগর |
. নলের কি বুদ্ধি চমত্কার,
. তেমন দেখে নি কেহ আর |
জলের উপর দিয়া মিলনসাগর.কম্ দিল সেতু বানাইয়া
. সাগর হইল সবে পার |
. লঙ্কাপুরী ছাইল বানরে |
. কাঁপে মাটি তাহাদের ভরে |
কে কবে এসেছে কত ? গাছে পাতা নাই তত,
. দেখিয়া রাবণ কাঁপে ডরে |
. তবু তো সে বড়াই না ছাড়ে,
. বলে, “কেবা মোর সাথে পারে ?”
মুকুট মাথায় দিয়া, মিলনসাগর.কম্ কিবা বুক ফুলাইয়া,
. দাঁড়ায়েছে লঙ্কার দুয়ারে |
. সুগ্রীব তা দেখিল চাহিয়া
. অমনি এল সে লাফ দিয়া,
রাবণের ঘাড়ে এসে মিলনসাগর.কম্ পড়িল সে হেসে-হেসে,
. দিল তার বড়াই ভাঙিয়া !
. হায়-হায় ! কহিল সকলে,
. রাবণ তো গেল রেগে জ্বলে,
কাড়িয়া মুকুট তার, সাজা কিছু দিয়া আর,
. হাসিয়া সুগ্রীব গেল চলে
. পরেতে অঙ্গদ বীর গিয়া
. রাবণেরে কহে গালি দিয়া,
“তুই বেটা পাবি সাজা, মিলনসাগর.কম্ বিভীষণ হবে রাজা
. যুদ্ধ কর্ বাহিরে আসিয়া |”
. বড় তায় চটিয়া রাবণ,
. “কাট্ ! কাট্ !” কহিল তখন
হাঁই-হাঁই করি তায়, মিলনসাগর.কম্ অঙ্গদে ধরিতে যায়
. চারি বেটা যমের মতন
. তারা এল “হাঁই-মাঁই” বলে,
. সে তাদেরে পুরিল বগলে,
“রাম জয়” বলি তবে, মিলনসাগর.কম্ আছাড়ি মারিল সবে,
. তারপর ঘরে এল চলে |
. এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
. সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
এমন সময় সেথা সুগ্রীব আসিয়া,
কুম্ভের ধনুকখানি লইল কাড়িয়া |
দুজনে তখন খুব হল হুড়াহুড়ি,
সুগ্রীব ফেলিল তারে সাগরেতে ছুঁড়ি |
ভিজিয়া-তিতিয়া বেটা উঠে তারপর,
সুগ্রীবের বুকে কিল দিল ভয়ঙ্কর |
তখন সুগ্রীব তারে দিল এক কিল,
গুঁড়া হল কুম্ভ তায় হয়ে তিল-তিল |
রাগেতে কুম্ভের ভাই নিকুম্ভ তখন,
পরিঘ লইয়া ধায় অসুর যেমন |
ঠেকিয়া হনুর বুকে সে পরিঘ তার,
বালির হাঁড়ির মতো হয় চুরমার |
রোষেতে নিকুম্ভ তায় ধরি হনুমানে,
টানিয়া চলিল তারে লয়ে লঙ্কাপানে |
হনু তারে এক কিল মারিল যখন,
কুঁজো হয়ে গেল বেটা ‘হ’-এর মতন |
তারপর হনু তার বুকে হাঁটু দিয়া,
মহারোষে মাথা তার ছিঁড়িল টানিয়া |
পরে যে আইল, তার মকরাক্ষ নাম,
হাসিতে হাসিতে তারে মারিলেন রাম |
আবার ইন্দ্রজিত এল তারপরে,
লুকায়ে মারিল বাণ সবার উপরে |
রোষে রাম কন, “আজ মারিব ইহারে,
দেখিব কোথায় গিয়া বাঁচিতে সে পারে |”
তাহা শুনি ইন্দ্রজিত সেথা হতে গিয়া,
মায়ার পুতুল এক এল রথে নিয়া |
সীতা নয়, কিন্তু তাহা ঠিক তাঁরই মতো
“হা রাম !” “হা রাম !” বলি কাঁদিল সে কত |
চুলে ধরে ইন্দ্রজিত নিয়ে এল তারে,
তলোয়ার দিয়া তারে চায় কাটিবারে |
রুষিয়া কহিল হনু, “শোন্ দুষ্টু চোর,
মায়েরে কাটিলে আজ রক্ষা নাহি তোর |”
সে কথায় ইন্দ্রজিত নাহি দেয় কান,
কাটিয়া মায়ার সীতা করে দুই খান |
তখন কাঁদিল সবে হায় হায় করি,
“সীতা, সীতা !” বলে রাম দেন গড়াগড়ি |
বুঝায়ে তখন তাঁরে কহে বিভীষণ,
“সীতারে কেটেছে, তাহা হয় কি কখন ?
ফাঁকি দিয়া দুষ্ট বেটা ভুলায়ে তোমারে,
নিকুম্ভিলা নামে যজ্ঞ গেল করিবারে |
সে যজ্ঞ হইলে শেষ হারাবে সবায়,
নহিলে মরিবে নিজে, ভুল নাহি তায় |
ত্বরায় ধনুক লয়ে চলহ লক্ষ্মণ,
এ যজ্ঞ হইতে শে, না দিব কখন |”
তখনি লক্ষ্ণণে সাথে লয়ে বিভীষণ,
নিকুম্ভিলা যজ্ঞ যায় করিতে রাবণ |
খেঁকায়ে রাক্ষস এল তাদের দেখিয়া ,
শব্দ শুনি ইন্দ্রজিত আসিল ছুটিয়া |
লাগিল বিষম যুদ্ধ তথন সেথায়,
যজ্ঞ শেষ করা আর না হইল তায় |
লক্ষ্মণ হনুর পিঠে, ইন্দ্রজিত রথে,
দুইজনে কত যুদ্ধ হয় কত মতে |
মারিল সারথি ঘোড়া রাক্ষস বেটার,
হাতের ধনুক তার কাটিল দুবার |
নূতন সারথি আনে রথ সাজাইয়া,
বিভীষণ ঘোড়া তার পিষে গদা দিয়া |
রেষে নিল ইন্দ্রজিত শকতি তখন,
কাটিয়া দিলেন তাহা অমনি লক্ষ্মণ |
ইন্দ্র অস্ত্র মারিলেন ধনুকে জুড়িয়া,
অসুর কাটেন ইন্দ্র যেই অস্ত্র দিয়া |
তাহা দেখি রাক্ষসের উড়িল পরাণ,
সেই অস্ত্রে মাথা তার হল দুইখান |
নাচিল বানর তায় ‘জয়-জয়’ বলে,
দুন্দুভি বাজাল সুখে দেবতা সকলে |
হেথায় সবারে ডাকি কহিছে রাবণ,
“রামেরে মারহ ঘিরি আছ যত জন |
যদি না মরে তবু, কাবু হবে তায়,
তখনি তাহারে আমি মারিব ত্বরায় |”
বিকট রাক্ষস যত এ কথা শুনিয়া,
রামেরে মারিতে গেল খাঁড়া ঢাল নিয়া |
বিষম রোষেতে তারা গিয়া সেইখানে,
চেঁচায়ে মরিল সবে শ্রীরামের বাণে |
এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
কবি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছোট্ট রামায়ণ যে কোন গানের উপর ক্লিক করলেই সেই গানটি আপনার সামনে চলে আসবে।
|
. রাবণ তায় এল তারে নিতে,
. বে দূরে থাক, নরিল নাড়িতে |
. এসে বীর হনুমান,
. ভাগারে করিল অজ্ঞান |
. রে কোলেতে করিয়া
. রে গেল সে লইয়া |
. পড়ে গেল খুলে,
. ব দুঃখ ভুলে |
. নু শর,
. সত্বর |
পিঠে করে লয়ে তাঁরে যায় হনুমান,
বাগে পেয়ে তারে দুষ্ট কষে মারে বাণ |
হনুরে মারিয়া বাণ কত হবে কাজ ?
শ্রীরামের বাণ খেয়ে বাঁচুক তো আজ !
রথ ঘোড়া সব তার গেল তাঁর বাণে,
মুকুট গিয়েছে উড়ে, মাথা যায়-যায়,
অবশ হয়েছে হাত, বল নাই গায় |
হাসিয়া তখন তারে কহিলেন রাম,
“আজি তবে ঘরে গিয়া করহ বিশ্রাম |”
লাজে আর রাবণের কথা নাহি সরে,
হেঁট করে কালামুখ পলাইল ঘরে |
বসিয়া সভার মাঝে বলিছে রাবণ,
“উপায় কি হবে, সবে কহ তো এখন |
মানুষেরে ধরে খাই, নাহি করি ডর,
কে জানে সে বেটা হয় এত ভয়ঙ্কর ?
হায় আমি তার কাছে গেলাম হারিয়া !
কোন্ বীর দিবে এই মানুষ মারিয়া ?
শীঘ্র গিয়া কুম্ভকর্ণে জাগাও এখন
মানুষ মারিবে সেই যদি করে মন |”
কুম্ভকর্ণ ভাই হয় রাবণ রাজার,
ছুটিয়া পালায় যম দেখা পেলে তার !
এমন বিকট জন্তু দেখে নাই কেহ,
পাহাড়ের মতো তার ভয়ঙ্কর দেহ !
ব্রহ্মা দিল বর, “শুধু ঘুমাইবে” বলে,
নাহিলে গিলিয়া বেটা খাইত সকলে |
ছয় মাস ঘুমাইয়া জাগে একদিন,
হাজারে হাজারে খায় মহিষ হরিণ |
ঘরের ভিতরে তার নাহি হয় ঠাঁই,
পর্বত ঘুহায় গিয়া ঘুমায় সে তাই |
ঝড়ের মতন শ্বাস বয় নাক দিয়া,
যে যায় নিকটে, তারে নেয় উড়াইয়া |
ফুঁকিল কানের কাছে শাঁখ ভারী-ভারী |
তালি দিয়া চটাপট্ চেঁচাইল কত,
কষে নাড়া দিল গায়’ যে পারিল যত |
এত করি তবু তারে নারি জাগাইতে,
সকলে মিলিয়া তারে লাগিল মারিতে |
কষে মারে কিল-গুঁতা যত মতো হয়,
চিমটি কাটে যে কত, বলিবার নয় |
দুহাতে টানিয়া চুল ছিঁড়ে গোছা-গোছা,
হাঁচির ভয়েতে নাকে নাহি দেয় খোঁচা !
কানে জল ঢেলে তায় লাগায় কামড়,
আরো নাক ডাকে তায়, ঘড়্ র-ঘড়্ র |
হাজার পাহাড়পানা হাতি দিয়া তবে,
ঘুরিয়া-ঘুরিয়া তারে মাড়াইল সবে |
সুখ বড় পেল তায়. চোখ মেলে তাই,
উঠিয়া তুলিল বেটা এই বড় হাই !
অমনি সকলে আনি খেতে দিল তারে,.
শুয়োর, হরিণ, মোষ, হাজারে হাজারে |
সকল করিয়া শেষ কুম্ভকর্ণ কয়,
“কি লাগি জাগালে মোরে এমন সময় ?’
জোড়হাতে কয় সবে. “বড়, বড় ডর !
মারি কাটি দিল সব, মানুষ-বান্দর |”
তাহা শুনি কুম্ভকর্ণ চলিল ত্বরায়,
যেথায় রাবণ আছে বসিয়া সভায় |
ভয়েতে বানর সব তাহারে দেখিয়া,
“মাগো |” বলি দুই লাফে যায় পলাইয়া |
রাবণের কাছে গিয়া কুম্ভকর্ণ কয়,
“কি লাগি জাগালে মোরে, কহ মহাশয় !”
রাবণ সকল তারে কহিল যখন,
সে কহিল, “কেন কাজ করিলে এমন ?”
তায় কিন্তু রাবণের রাগ হল ভারি,
যুদ্ধে তাই কুম্ভকর্ণ যায় তাড়াতাড়ি |
শূল হাতে ধায় সে যে পর্বতের মতো,
বানর ধরিয়া খায়, কাছে পায় যত |
রুষিয়া কামড় তারা মারে তার গায়,
সে কামড়ে কুম্ভকর্ণ সুখ শুধু পায় |
বানরেরা কিছু তার করিতে না পারে,
শরভ, ঋষভ, নীল ,সকলেই হারে |
অঙ্গদ অজ্ঞান হল, হনু গেল হেরে,
সুগ্রীব পর্বত লয়ে এল তায় তেড়ে |
পর্বত ভাঙিল ঠেকে রাক্ষসের গায়,
রুষিয়া তখন বেটা শূল হাতে ধায় |
ভাগ্যেতে ভাঙিল শূল আসি হনুমান,
নইলে যাইত তায় সুগ্রীবের প্রাণ |
ক্ষেপিয়া উঠিল তবে কুম্ভকর্ণ ভারি,
পর্বতের চূড়া নিল তুলে তাড়াতাড়ি |
ঠাঁই করে সুগ্রীবেরে ঠুকিল তা দিয়া,
ঘরে লয়ে গেল তারে অজ্ঞান করিয়া |
এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
তখন হইল যুদ্ধ বড় ভয়ঙ্কর
না জানি মরিল কত রাক্ষস
দিন নাই, রাত নাই, করে কা
রক্তেতে বহিল নদী, লাল হল
“মার্ -মার্” “কাট্-কাট্” মহা
অস্ত্র করে ঝন্ ঝন, বাজে ঢা
হেথায় রামের বাণ ছোটে যে
পলায় রাক্ষস তায় হয়ে দিশা
অঙ্গদ রুষিয়া গেল দেখি ইন্দ্র
পিষিল সারথি তার বিষম লা
তাহে দুষ্ট ইন্দ্রজিত পেয়ে ব
মেঘে লুকাইয়া যুদ্ধ করে তা
শুন বলি হল তায় কি যে সর্ব
চোর বেটা মারে বাণ নাম না
বড়-বড় অজগর ছুটে এল তা
বিষম জড়াল রাম লক্ষ্মণের
সাপে বাঁধা দুই ভাই নড়িতে
বাণেতে তাঁদের দুষ্ট করিল
ঘরে গিয়া তারপর কয় রাব
“মানুষ দুটাকে আমি আসিয়া
হেথায় কি হল তাহা শুন মন
কাঁদিতেছে সকলে রাম লক্ষ্মণে
আইল গরুড় পাখি তখন সেথায়,
সাপেরে দেখিলে ধরে অমনি সে খায় |
জটায়ুর জ্যেঠা সে যে, ভারি ভয়ঙ্কর,
উড়িলে পর্বত কাঁপে, বড় বয় ঝড় |
তারে দেখি অজগর দুভাইকে ছাড়ি,
‘বাপ !’ বলি পলাইয়া গেল তাড়াতাড়ি |
গরুড়ে করেন রাম কতই আদর,
উঁচু লেজ করি নাচে যতেক বানর |
কিচির-মিচির শুনি কহিছে রাবণ,
“রাম তো মরিল, তবে গোল কি কারণ ?”
রাক্ষসেরা কয়, “আরে রামা হল চাঙ্গা,
চিল্লায়ে বান্দর বেটা নাচে ধিঙ্গা তাঙ্গা |”
শুনিয়া রাবণ বলে, “সব হল মাটি,”
কোথা রে ধূম্রাক্ষ ! এস বেটাদের কাটি !”
ধূম্রাক্ষ চলিল তায় গদা হাতে নিয়া,
বাঘমুখো গাধা সব রথেতে জুড়িয়া |
সঙ্গেতে রাক্ষস কত লেখাজোখা নাই,
দাঁত কড়মড়ি তারা তেজ বড় ভারি,
রাক্ষসের হাড় ভাঙে কিল চড় মারি |
ক্ষেপিল ধূম্রাক্ষ তায় যমের মতন,
ভয়েতে মর্কট যত পলায় তখন |
ছোট বানরের দল যায় পলাইয়া,
দূর হতে হনুমান দেখিল চাহিয়া |
অমনি আনিয়া এক পর্বতের চূড়া,
ধাঁই করি ধূম্রাক্ষেরে করিল সে গুঁড়া
বড়ই বিষম যুদ্ধ বানরেরা করে,
রাক্ষসেরে নাহি দেয় ফিরে যেতে ঘরে |
থাপ্পড় লাগায় ভারি, ছিঁড়ে নাক কান,
গলায় জড়ায়ে লেজ কষে দেয় টান |
যেই আসে তারে মারে, নাহি করে ভয়,
মাথাটি ফাটায় তায় বলে, ‘রাম জয় !”
বজ্রদংষ্ট্র, অকম্পন, যুদ্ধে যেন যম,
কুম্ভহনু, নরান্তক, নহে কেহ কম |
প্রহস্থ কেমন বীর, কি হবে তা বলে ?
বানরের হাতে এরা মরিল সকলে |
কেমনে ঘরেতে বসে থাকিবে রাবণ ?
নিজেই আসিল তাই লয়ে লোকজন |
ইন্দ্রজিত, অতিকায় সাথে এল তার,
ত্রিশিরা, নিকুম্ভ,কুম্ভ, মহোদর আর |
লাফায়ে বানর ধায় পর্বত লইয়া,
রাক্ষসেরে নাহি দেয় ফিরে যেতে ঘরে |
রাগিয়া রাবণ মারে চোখা-চোখা বাণ,
পর্বত ভাঙিয়া তায় হয় খান্-খান্ |
বড় যুদ্ধ করে বেটা ভূতের মতন,
আঁটিতে নাহিক তারে পারে কোনোজন |
সুগ্রীব অজ্ঞান হল বুকে বাণ ফুটে,
গবয়, ঋষভ, নল, পলাইল ছুটে |
কিল বাগাইয়া তায় এল হনুমান,
দুজনে হইল যুদ্ধ সমান-সমান |
দুজনে মারিল সে কি যে-সে কিল-চড় ?
অন্য লোক হলে তায় ভাঙিত পাঁজর |
বড় বীর ছিল তাই মরে নাই তারা,
ব্যথায় চেঁচিয়ে কিন্তু হয়েছিল সারা |
তখন রাবণ দিল হনুমানে ছাড়ি,
নীলেরে মারিতে পরে গেল তাড়াতাড়ি |
বড় চটপটে নীল ছুঁচোবাজি মতো,
চোখের পলকে লাফ দেয় দুই শত |
ছুটে উঠে রাবণের রথের চূড়ায় ,
টিপ করে পড়ে নীল বেটার মাথায় |
তিড়িঙ-বিড়িঙ নাচি ফেরে হেথা-হোথা,
রাবণ পড়িল গোলে ----- বাণ মারে কোথা ?
হাসিল বানর সব, চটিল রাবণ,
ভয়ঙ্কর বাণ হাতে লইল তখন |
অজ্ঞান হইয়া নীল পড়িল সে বাণে,
ধাইয়া রাবণ গেল লক্ষ্মণের পানে |
দুইজনে হল যুদ্ধ বড়ই বিষম,
দুইজনে ভারি বীর কেহ নহে কম |
রাবণ লক্ষ্মণে মারে কড়্ মড়ি দাঁত,
লক্ষ্মণ করেন তারে বাণে চিত্পাত |
তখন রাগেতে বেয়া কাঁপি থর্ থর্ ,
ছুঁড়িয়া মারিল এক সক্তি বজ্রের সমান,
বুকে বিঁধি লক্ষ্মণেরে করিল অজ্ঞান |
এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
গদা লয়ে ধায় বেটা শ্রীরামের পানে,
অমনি পড়িল গদা কেটে তাঁর বাণে |
রাগে সে তখুনি তুলে লইল পাতর,
পাথর ভাঙিলে নিল লোহার মুদগর |
ছুটিয়া রামের বাণ আসে শত-শত,
লাফায়ে বানর ঘাড়ে উঠেছে-বা কত |
আঁচড়-কামড় মেরে করিছে পাগল,
দাঁতে হাতে পায়ে চুল ছিঁড়িছে কেবল,
কিছুতেই কুম্ভকর্ণ না হয় কাতর,
ফিরায় সকল বাণ ঘুরায়ে মুদগর |
রোষে রাম বায়ুবাম মারেন ত্বরায়,
মুদগর সহিতে তার হাত কাটে তায় |
ব্যথায় তখন বেটা চেঁচায় বিকট,
আর হাতে তালগাছ নিল চট্ পট্ |
সে হাত কাটেন রাম ইন্দ্র অস্ত্র মেরে,
তবু সে খিঁচায়ে দাঁত আসে ডাক ছেড়ে |
দুই পা কাটিল তবু যায় গড়াইয়া-------
হাঁ করি খাইতে যায় রামেরে গিলিয়া |
তখন বাণের ছিপি মুখে তার এঁটে,
ইন্দ্র অস্ত্রে মাথা তার দেন রাম কেটে |
ভয়েতে চেঁচাল তায় রাক্ষসের দল,
আনন্দে দেবতাগণ করে কোলাহল |
কাঁদিয়া রাবণ কয়, “কি হবে উপায় ?
ভাই বিভীষণে গালি কেন দিনু হায় !”
এমন করিয়া কত কাঁদিল রাবণ,
চলে সাজি অতিকায়, ত্রিশিরারে নিয়া,
দেবান্তক, নবান্তক চলিল সাজিয়া |
মহাপার্শ্ব, মহোদর চলিল দুজন,
ভারি যুদ্ধ করে তারা মিলিয়া তখন |
বানরের কিল খেয়ে মরে গেল পরে,
শুধু অতিকায় বীর সহজে না মরে |
‘অক্ষয় কবচ’ এক আছে তার গায়,
শেল, শূল, তীর কিছু নাহি বিঁধে তায় |
লক্ষ্মণ মারেন বাণ বাছিয়া-বাছিয়া,
কবচে ঠেকিয়া সব আইসে ফিরিয়া |
তখন পবন এসে কন তাঁর কানে,
“ব্রহ্মাস্ত্র মারহ, বেটা মরিবে সে বাণে |”
তখন লক্ষ্মণ ছুঁড়ে মারেন সে বাণ,
তাহা দেখি রাক্ষসের উড়িল পরান |
শত অস্ত্র মারি তাহা নারে ফিরাইতে,
মাথা কাটি পড়ে তার দেখিতে দেখিতে |
রাতে এল ইন্দ্রজিত মেঘে লুকাইয়া,
লুকায়ে মারিল বাণ আড়ালে থাকিয়া |
বাণেতে অজ্ঞান হয়ে পড়িল সকলে,
হাসিতে হাসিতে তায় বেটা গেল চলে |
লঙ্কায় ফিরিয়া বেটা কয় তারপর,
“মারিয়া আসিনু যত মানুষ বানর”
হেথায় পড়েছে সবে হয়ে অচেতন
বাকি শুধু হনুমান আর বিভীষণ |
সবারে খুঁজিয়া তারা ফেরে আলো নিয়া,
না জানি কোথায় কেবা রয়েছে পড়িয়া |
মরার মতন ঐ পড়ে জাম্বুবান
চাহিতে না পারে, চোখেতে বিঁধিয়াছে বাণ |
কহিল অনেক কষ্টে চিনি হনুমানে,
“তুমি বাঁচাইলে আজি বাঁচি হে পরানে |
ডিঙ্গাইয়া হিমালয় যাও বাছাধন,
কৈলাস পর্বত পাবে দেখিতে তখন
আর এক পরবত পাবে তার কাছে,
চারিটি ঔষধ বাছা সেইখানে আছে |
বিশল্যকরণী আর মৃতসঞ্জীবনী,
আর যে সন্ধানী আর সুবর্ণকরণী |
ঐ চারি ঔষধ নিয়া আইস ত্বরায়,
নহিলে আজ তো আর না দেখি উপায় |”
আকাশে ছুটিল হনু, ঝড় যেন বয়,
চোখের পলকে পার হল হিমালয় |
তখন দেখিল হনু, ঔষধ সকল,
কৈলাসের কাছে ঐ করে ঝলমল |
পরে যে কোথায় তারা লুকাইল হায়,
কাছে গিয়া হনু আর খুঁজিয়া না পায় |
হনুমান বলে “আমি তায় নাহি ভুলি-----
পর্বত মাথায় করে লয়ে যাব তুলি |”
এতেক বলিয়া রোষে বীর হনুমান,
পর্বত ধরিয়া দিল কষে এক টান |
চড়্ চড়্ করি তায় এল তাহা উঠি,
মাথায় লইয়া তারে যায় হনু ছুটি |
লঙ্কায় সে ফিরে যেই এল তাহা নিয়া,
ওষধের গন্ধে সবে উঠিল বাঁচিয়া |
এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
কি যুদ্ধ তখন হইল বিষম
. কি তাহা কহিব আর !
ঐ দেখ হায় রামেরে রাবণ
. অস্থির করিল বাণে,
তখনি আবার সাজা পেয়ে তার
. মরে বুঝি বেটা প্রাণে |
যতেক দেবতা কহেন সকলে,
. “রামের হউক জয় !”
“তা নয়, তা নয়, রাবণের জয় !”
. রুষিয়া অসুর কয় !
হেথায় রাবণ হয়েছেন কাবু
. শ্রীরামের হাতে পড়ে,
রথের উপরে নারেন বসিতে
. ধনুকখানি ধরে |
দশা দেখি তার, দয়া করে রাম
. দিলেন বেটারে ছাড়ি,
রথ ফিরাইয়া মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি সারথি পলায়
. তারে লয়ে তাড়তাড়ি |
রথের উপরে পড়ে সে তখন
. খাবি খেতেছিল খালি,
ঘরে গিয়া বেটা মিলনসাগর.কম্ থেকে সাহস পাইয়া
. সারথিরে পাড়ে গালি |
“ওরে বেটা গোরু, কি করিলি তুই
. লোকে কি কহিবে মোরে ?
রথ লয়ে বেটা মিলনসাগর.কম্ থেকে এলি যে পলায়ে ?
. বল তো কি করি তোরে ?”
সারথি কহিল, “ভাগি নি তো রাজা
. ঘোড়াকে পিলানু জল !
যা কহিবি তুই, সে করিব মুই-----
. এবে কি করি সে বল্ |”
হাসিয়া রাবণ মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি কহিল তখন
. সারথিরে দিয়ে বালা,
“রাম কে না মারি না ফিরিব ঘরে------
. চালা তুই রথ, চালা !”
সেই যে ফিরিয়া আইল রাবণ
. আর না ফিরিল ঘরে,
বড় কিন্তু তার মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি কঠিন পরাণ !
. বেটা কি সহজে মরে ?
মাথা কাটা গেলে মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি তখনি আবার
. আর মাথা হয় তার,
মারিতে তাহারে মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি না পারেন রাম
. কাটি মাথা শতবার |
তখনি মাতলি মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি কহিল তাঁহারে,
. “ব্রহ্মাস্ত্র মারহ ছুঁড়ি,”
অমনি সে বাণ লইয়া শ্রীরাম
. ধনুকে দিলেন জুড়ি |
পাহাড় কাঁপিল আকাশ ফাটিল,
. সাগর উঠিল তীরে,
রাবণ বেটার বুক ভাঙি বাণ
. তখনি আইল ফিরে
মরিল রাবণ, মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি ঘুচিল আপদ,
. ভয় না রহিল আর,
হাসিল গাইল মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি ছিল যত লোক,
. সুখ না হইল কার ?
লাফায়ে-লাফায়ে মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি নাচিল বানর
. তা-ধিন্ তা-ধিন্ করে,
স্বরগের ফুল মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি পড়ে ঝরঝর্
. তাদের মাথার পরে |
যতেক রাক্ষস মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি করি হায়-হায়
. কাঁদিল সকলে তারা,
কাঁদে রানীগণ, মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি নিজে বিভীষণ
. কাঁদিয়া হইল সারা |
সোনার দোলায় মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি তুলিয়া রাবণে
. শ্মশানে আনিল পরে,
চন্দনের চিতা মিলনসাগর.কম্ থেকে কপি সাজায়ে তাহারে
. পোড়াল যতন করে |
. এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
. সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
. সকলে গিয়াছে মরে,
নিজেই তখন মিলনসাগর.কম্ থেকে চলিল রাবণ
. সাজিয়া রাগের ভরে |
যতেক রাক্ষস মিলনসাগর.কম্ থেকে আছিল বাঁচিয়া
. সবারে লইল সাথে,
দাঁত কড়্ মড়ি মিলনসাগর.কম্ থেকে চলিল সকলে
. হাতিয়ার লয়ে হাতে |
রুষি শেল শূল মিলনসাগর.কম্ থেকে ছুঁড়িল তাহারা
. চেঁচায়ে খিঁচায়ে মুখ,
আছাড়ি তাদের মিলনসাগর.কম্ থেকে মারিল বানর,
. পাথরে পিষিল বুক |
ধনুক ধরিয়া ধাইল রাবণ
. রাগেতে আগুন হয়ে,
সাঁই-সাঁই বাণ মিলনসাগর.কম্ থেকে বিষম ছুঁড়িল
. বানর ভাগিল ভয়ে |
বাণেতে তখন কাটেন লক্ষ্মণ
. ধনুক সারথি তাঁর,
ঠেঙায়ে ভাঙিল তাই বিভীষণ
. ঘোড়া চারিটার ঘাড় |
রোষেতে রাবণ মিলনসাগর.কম্ থেকে মারিল তাহারে
. শকতি ছুঁড়িয়া ভারী,
পথের মাঝেতে মিলনসাগর.কম্ থেকে দিলেন লক্ষ্মণ
. কাটি তাহা তাড়াতাড়ি |
ত্বরায় রাবণ আরেক শকতি
. লইল তুলিয়া তবে,
ঝলমল করি মিলনসাগর.কম্ থেকে জ্বলে আলো তায়
. দেখিয়া কাঁপিল সবে |
মরে বুঝি হায় যায় বিভীষণ !
. কে বাঁচাবে তার প্রাণ ?
এই ভাবি মনে মিলনসাগর.কম্ থেকে রাবণে লক্ষ্মণ
. মারেন কতই বাণ |
রথের উপরে বসিয়া রাবণ
. কাঁপে রাগে থরথর্,
জ্বলে কুড়ি চোখ বিশ পাটি দাঁত
. করে তার কড়্ মড়্ |
ছাড়ি বিভীষণে লক্ষ্মণেরই পানে
. শকতি ছুঁড়িয়া মারে,
মহা শব্দে তাহা পড়ি তাঁর বুকে
. অজ্ঞান করিল তাঁরে |
‘হায়-হায়’ বলে বানর সকলে
. শকতি খুলিতে ধায়,
বাণেতে বারণ করিল রাবণ-----
. হায়, কি হবে উপায় !
কেঁদে-কেঁদে রাম তোলেন শকতি
. নিজে আসি তারপর,
কত বাণ তাঁরে মারিল রাবণ
. তাহে নাই কিছু ডর |
রেষে দেহ তাঁর উঠিল কাঁপিয়া
. শুকাল চোখের জল,
ধনুকেতে বাণ সূর্যের মতন
. করি ওঠে ঝলমল |
আকাশ পাতাল ছাইয়া তখন
. ডাকিয়া ছুটিল বাণ,
আধমরা হয়ে অভাগা রাবণ
. পলায়ে লইয়া প্রাণ |
সেথা ছিল বুড়া সুষেণ বানর
. কবিরাজ বড় ভারি,
হনুরে পাঠায়ে তখনি ঔষধ
. আনায় সে তাড়াতাড়ি |
বাস পেয়ে তার হাসিয়া লক্ষ্মণ
. সুখেতে বসেন উঠি,
অমনি আবার বিষম রোষেতে
. রাবণ আইল ছুটি |
ঝন্--ঝনা-ঝন, ঘট্-ঘটা-ঘট্
. ঘোর যুদ্ধ হয় তায়,
দেবতা অসুর মিলনসাগর.কম্ থেকে সকলে তখন
. ছুটিয়া দেখিতে যায় |
আকাশ হইতে মিলনসাগর.কম্ থেকে আসিল ইন্দ্রের
. ঝক্ ঝকে রথখানি,
কবচ ধনুক, মিলনসাগর.কম্ থেকে অস্ত্র কত আর
. নাম তার নাহি জানি |
. এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
. সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
হায় রে দুঃখের কথা কহিব কি আর----
সেই রাম না করিল আদর সীতার !
ভ্রূকুটি করিয়া তিনি কহিলেন তাঁরে,
“যেথা ইচ্ছা যাও সীতা, চাহি না তোমারে |
:ছিলে তুমি এতদিন রাক্ষসের সনে,
বাস কিনা ভালো আর কহিব কেমনে ?”
সীতা বলিলেন, “হায়, একি শুনি আজ ?
হায় রে, আমার আর বাঁচিয়া কি কাজ ?
আগুন জ্বালিয়া তবে দাও গো লক্ষ্মণ
তাহাতে পুড়িয়া সীতা মরিবে এখন |”
কাঁদিয়া লক্ষ্মণ দেন জ্বালাইয়া চিতা,
অমনি ঝাঁপায়ে তায় পরিলেন সীতা |
“হায়-হায়” করি সবে কাঁদিল তখন,
আগুন শীতল হল জলের মতন |
না পোড়ে মায়ের চুল, না পোড়ো আঁচল
সূর্যের মতন মাতা হলেন উজ্জ্বল !
যতনে তখন অগ্নি কোলে লয়ে তাঁরে,
উঠিয়া কহেন আসি সভার মাঝারে,
“লহ রাম, লহ এই সীতারে তোমার,
নাই-নাই-নাই দোষ কিছু নাই তাঁর |”
আদরে সীতারে রাম নিলেন এবার,
তখন সুখের সীমা না রহিল আর |
আনন্দ করিল কত সকলে মিলিয়া,
এলেন দেবতাগণ দশরথে নিয়া |
পিতার পায়ের ধূলা লইয়া তখন,
ভুলিলেন সব দুঃখ শ্রীরাম লক্ষ্মণ |
তুষ্ট হয়ে দেবগণ শ্রীরামেরে কন,
“কি বর চাহ রে বাছা, লহ এই ক্ষণ |”
শ্রীরাম বলেন, “তবে দিন এই বর,
বাঁচিয়া উঠুক যত মরেছে বানর |”
অমনি উঠিল বাঁচি বানর সকল,
প্রভাতে জাগিল যেন বালকের দল !
বালির ভিতর হতে ওঠে লাফ দিয়া,
সাগর হইতে উঠে লাঙুল নাড়িয়া |
শ্রীরাম বলেন, “শুন মিতা বিভীষণ,
দেশে যাই দেহ ভাই বিদায় এখন |”
সারথি পুষ্পক রথ আনে সাজাইয়া,
হাঁসে লয়ে যায় তাহা আকাশে উড়িয়া |
শ্রীরাম লক্ষ্মণ সীতা উঠিলেন তাতে,
বানর সকলে কয়, “মোরা যাব সাথে |”
রাম কন, ‘কি আনন্দ ! চলহ সকলে !’
অমনি সকলে রথে উঠে দলে-দলে |
সুগ্রীব অঙ্গদ উঠে আর জাম্ববান,
সকল বানর লয়ে উঠে হনুমান |
যতেক রাক্ষসী উঠে বিভীষণ সনে,
সবারে লইয়া রথ উড়ে সেইক্ষণে |
যখন থামিল রথ কিষ্কিন্ধ্যায় যেয়ে |
লাফায়ে উঠিল যত বানরের মেয়ে |
প্রয়াগে আসিল রথ লইয়া সবায়,
সেই মুনি ভরদ্বাজ থাকেন যেথায় |
চৌদ্দটি বছর রাম থাকিবেন বনে |
সেই সময়ের শেষ হল সেইক্ষণে |
তখন বলেন রাম হনুরে ডাকিয়া,
“অযোধ্যায় যাও বাছা সংবাদ লইয়া |
গুহ মিতা সনে দেখা হইবেক পথে,
কহিয়ো আমার কথা তারে ভালোমতে |”
আকাশে ছুটিয়া হনু যায় তাড়াতাড়ি,
দেখিতে-দেখিতে গেল গুহকের বাড়ি |
সংবাদ বলিয়া তারে চলিল ত্বরায়,
কাঁদেন রামেরে ভাবি ভরত যেথায় |
জোরহাতে হনুমান তাঁরে গিয়া কয়,
“দেশে আইলেন রাম শুন মহাশয় |
মোরে পাঠালেন নিতে সংবাদ তোমার,
ত্বরায় দেখিবে তাঁরে কাঁদিয়ো না আর |”
আহা কি আনন্দ আজ আযোধ্যা নগরে,
দেসে আসিছেন রাম এতদিন পরে !
“কি আনন্দ ! কি আনন্দ !” এই শুধু বলে,
রামেরে দেখিতে যায় ছুটিয়া সকলে |
রানীগণ যান সবে দোলায় চড়িয়া
বুড়োরা সকলে যায় নড়ি ভর দিয়া |
রামের খরম দুটি লইয়া মাথায়,
ভরত সবার আগে চলেন ত্বরায় |
পথপানে চেয়ে যায় সকলে ছুটিয়া,
হোথায় রামের রথ আসিছে উড়িয়া |
চূড়াখানি যেই তার দেখিল কেবল,
“ঐ রাম !” বলি সবে হইল পাগল |
“দেখি-দেখি, সর !” বলে করে ঠেলাঠেলি,
খোঁড়া বেটা আগে যায় সকলেরে ফেলি |
থামিল যখন রথ, নামিলেন রাম,
লুটায়ে ভরত তাঁর করেন প্রণাম |
খরম পরায়ে পায়ে বলেন তখন,
“ফিরায়ে এখন দাদা লহ রাজ্যধন |”
এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. এই পাতার উপরে ছোট্ট রামায়ণের সূচিতে কবির মূল সূচিতে
. সাজিয়া আইল তাড়তাড়ি,
রামের যতেক জট চেঁছে দিল চট্ পট্
. যতনে কামায়ে দিল দাড়ি |
সোনার সভায় তবে মিলনসাগর.কম্ থেকে রামেরে বসায়ে সবে
. মুকুট মাথায় দিল তাঁর,
ভাই শত্রুঘন আসি মিলনসাগর.কম্ থেকে ধরিলেন হাসি-হাসি
. সাদা ছাতা অতি চমত্কার |
দাঁড়াইয়া দুই ধারে মিলনসাগর.কম্ থেকে চামর ঢুলায় তাঁরে
. সুখেতে সুগ্রীব বিভীষণ,
স্বরগ হইতে আনি মিলনসাগর.কম্ থেকে মুকুতার মালাখানি
. পরাইয়া দিলেন পবন |
মিলিয়া দেবতাগণ, ভুলায়ে সবার মন,
. কিবা গান গাইল তখন |
“রাম জয় ! রাম জয়!” নাচিয়া সকলে কয়
. রাজা পেয়ে মনের মতন |
. এই কবিতাটি মিলনসাগর.কম্ থেকে
. সরাসরি এখানে কপি পেস্ট করা হয়েছে।
. লঙ্কা কাণ্ড সমাপ্ত
জাগিয়া ভাবিল মনে বানরের রাজা,
রাক্ষস বেটারে কিছু দিয়া
যেই কথা সেই কাজ করে বু
দাঁতে ছিঁড়ে নাক তার, হাতে
পায়ের আঁচড়ে নিল ছিঁড়ে দু
চেঁচাল রাক্ষস তায় ফাটায়ে আ
বিষম ভয়েতে দিল সুগ্রীবেরে
পলায়ে বানর রাজা গেল তা
বোঁচা হয়ে কুম্ভকর্ণ আইল ত
নাক নাই, কান নাই ভূতের ম
দেখিয়া বানর সব যায় পলা
পিছনের পানে আর না চায়
ধনুক ধরিয়া তায় এলেন ল
হাসি কুম্ভকর্ণ তাঁরে কহিল
“ছেলেমানুষেরে মারি কিবা
মারিতে আসিনু আজ দাদা
. নর গায় নেচে আর হেসে,
. য়া হনু রাখে তার দেশে |
. ন্ধ্যায় মিলে বানরসকলে
. গুন লয়ে যায় দলে-দলে |
. খেছিল যাহা পোড়াইতে,
. ল ছাই দেখিতে দেখিতে |
. সগুলি হইল পাগল,
. তারা চেঁচায় কেবল |
. হেথা লঙ্কার ভিতর,
. যুদ্ধ বড় ভয়ঙ্কর |
. জি আসিয়াছে কত,
.
. পড়ে বানরের চড়,
. রে করি ধড়্ ফড়্ |
. যুদ্ধ করে ভারি,
. র কাছে হারি |