চৈত্রে রচিত কবিতা কবি উত্পলকুমার বসু চৈত্রে রচিত কবিতা কাব্যগ্রন্থ থেকে
১ নিঃসঙ্গ দাঁড়ের শব্দে চলে যায় তিনটি তরণী |
শিরিষের রাজ্য ছিল কূলে কূলে অপ্রতিহত যেদিন অস্ফুট শব্দে তারা যাবে দূর লোকালয়ে আমি পাবো অনুপম, জনহীন, উর্বর মৃত্তিকা
তখন অদেখা ঋতু বলে দেবে এই সংসার দুঃখ বয় কৃষকের | যদিও সফল প্রতিটি মানুষ জানে তন্দ্রাহীনতায় কেন বা এসেছো সব নিষ্ফলতা, কবিতা তুমিও,
নাহয় দীর্ঘ দিন কেটেছিল তোমার অপ্রেমে---
তবুও ফোটে না ফুল | বুঝি সূর্য যথেষ্ট উজ্জ্বল নয় | বুঝি চিরজাগরূক আকাশশিখরে আমি ধাতুফলকের শব্দ শুনে---- সূর্যের ঘড়ির দিকে নিষ্পলক চেয়ে আছি
এখনি বিমুক্ত হবে মেঘে মেঘে বসন্ত-আলোর নির্ভার কৃপাকণা | সমস্তই ঝরেছিল --- ঝরে যাবে--- যদি না আমার যদি না আমার মৃত্যু ফুটে থাকা অসংখ্য কাঁটায় |
২ আসলে মৃত্যুও নয় প্রাকৃতিক, দৈব অনুরোধ | যাদের সঙ্কেতে আমি যথাযথ সব কাজ ফেলে যাবো দূর শূন্যপথে---- তারা কেমন বান্ধব বলো কোন্ ঘড়ি ? কোন্ সূর্যরথ ?
হয়ত প্রকৃত ঐ নগ্ন জলধারা---- যখন দুপুর কাঁপে গ্রীষ্মের নতুন সাবানে | ওদের দেবতা বলে আমি মানি | ওদের ঘড়ির সমস্ত খঞ্জনপাখা লক্ষবার শোনায় অস্ফুটে---- আমার বন্ধু কি তুমি ? আমি কি তোমার ?
কেন যে এখনো নই প্রাকৃতিক দুঃখজটাজাল ? আমার নিয়তি তুমি ঈর্যা করো---- আমার স্মরণে যাও দূর তীর্থপথে, ভুল পথে --- রক্তিম কাঁটায় নিজেকে বিক্ষত করো | রোমিও --- রোমিও ---
কেন শূন্যে মেঘলীন কম্পিত চাদর উড়ে গেলে---- অনির্বাণ, স্থির নাটকের যারা ছিল চারিত্রিক, নেপথ্যে কুশল, প্রেম চেয়েছিল, দুঃখ, তারা একে একে অম্লান ঝরে যায় ?
তবে কি আমিও নই তেমন প্রেমিকা ?
৩ বহুদিন ছুঁয়ে যায় বর্তুল, বিস্মৃত পৃথিবী লাটিম সূর্যের তাপে নানা দেশ—বিপুল শূন্যতা--- সে যেন বিচিত্র আলো দিয়েছিল আমার ঘরের গবাক্ষবিহীন কোনো অন্ধকারে--- একদিন ---শুধু একদিন |
তখন, প্রবল মুহূর্তে আমি জেনেছি অনেক--- সমুদ্র কেমন হয় | কাকে বলে দুর্নিরীক্ষ্য তরু | আমি কেন রুগ্ন হই | তুমি দূর স্খলিত তারার কেন বা সমাধি গড়ো বনে বনে |
অথচ আঁধারে ফিরি আমি ক্লান্ত প্রদর্শক আলো, যারা আসে সহচর রক্ত-লাল, গমের সবুজ, তারা কেউ ধূর্ত নয়---দয়াশীল, বিনীত ভাষায় বলে, ‘তুমি ভুলে যাও সমস্ত জ্ঞানের ভার--- সমস্ত অক্ষর |’
৪ এখনি বৃষ্টির পর আমি পাবো জ্যোত্স্না-ভালোবাসা | কেননা মেনেছি আমি শোকাকুল তুমিও বন্দিনী অজেয় শকটে তার | কোনো কোনো রথ একা যায় ভ্রান্ত পথে---- অন্ধকারে ---চালকবিহীন---
যেখানে সুদীর্ঘ রাত ওড়ে নীল গন্ধের রুমালে যেখানে জলের মতো পরিসর, অফুরন্ত বায়ু ধুয়ে দেয় বনস্থলী, বালুতট----দীর্ণ হাহাকার
তুলেছিলে শূন্যতায় পাহাড়ের উর্বর মৃত্তিকা, তুমি দুঃখ, তুমি প্রেম, শোনেনি সতর্কবাণী | যেন স্রোত সহসা পাথরে রুদ্ধ হল | এবং স্খলিত বহু রথ, পদাতিক দেখে আমি মেনেছি এখন
প্রতিটি বৃষ্টির পর ছিন্ন হও তুমি, ভালোবাসা |
৫ পৃথিবীর সব তরু প্রতিচ্ছায়া খুলে দেয় বসন্তের দিনে | যখনি তোমাকে ডাকে ‘এসো এসো বিদেহ কলুষ’, কেন যে লুন্ঠিত, নীল পরিধান খুলে তুমি বালিকার স্পষ্টতায় কাঁদো---- বসন্তই জানে |
তবুও আমার স্বপ্ন দুপুরের ----ঘুমন্ত রাতের --- প্রবল নদীর জলে ধরে রাখে নীল যবনিকা---- সে তোমার পরিচ্ছদ, অন্তরাল, হয়ত বা যেটুকু রহস্য আমি ভালোবাসি বালিকা কিশোর শরীরে ---
এখন বিনিদ্র রাতে পুড়ে যায় সব মোমবাতি ! এবং অলেখা গান নিষ্ফলতা বয়েছিল কত দীর্ঘ দিন সে নয় প্রেমের দুঃখ ? তবু সতর্কতা ভেঙে ফেলে সুন্দরের প্রিয় পুষ্পাধার বলেছিল, ‘এই প্রেম অন্তিমের, সমস্ত ফুলের’
৬ যেন দূর অদেখা বিদ্যুতে তুমি পুড়ে যাও . তুমি সুন্দর নিয়তি যেন জল, ঝোড়ো রাতে জ্বলে একা বজ্রাহত তরু . তুমি সুন্দর নিয়তি মৃতেরা নিষ্পাপ থাকে | কারো নামে অচ্ছোদসরসী--- . তুমি বিরূপ নিয়তি রাখো দূর মেঘপটে যত ক্রোধ, অকাম কামনা . তুমি সুন্দর নিয়তি ফিরে দাও দীর্ঘ ঝড় মদিরায় প্রাচীন কুঞ্জের . তুমি সুন্দর নিয়তি |
এই বেলাভূমি কবি উত্পলকুমার বসু চৈত্রে রচিত কবিতা কাব্যগ্রন্থ থেকে
সুন্দরী আধেকলীনা, তুমি দেহভার কিছু রাখো দুপুরের হলুদ বেলায় কিছু রাখো অন্ধকার জলের গভীর দেশে---- প্রমত্ত আশার লক্ষ ঢেউ মুছে যায় একাকার সাগরে, সকালে,
অথচ তোমার কোলে অগ্রন্থির মালা ছেঁড়ে এখনো বাতাস | এখনো দুর্লভ যত সংগ্রহে ভরে আছে পর্বত তোমার | প্রাকৃত জনের মতো আমি ভাবি সহসা নিশ্বাস তোমারই বুকের কাছে বেজেছিল, সহসা মর্মরে
দিগন্তের তালবন যেন দূর পূর্ণিমাসন্ধ্যার অন্তরালে তোমাকেও নিয়ে যায় – তুমি নামো আসন্ন জোয়ারে, প্রথম সাগরস্নানে | অতি দীর্ঘ বালুতট শূন্য পড়ে থাকে--- যদি না ওদের সম্রাট ফিরে আসে গুপ্তচর, অভিশাপ, যদি না সভ্যতা |
ময়ূর কবি উত্পলকুমার বসু চৈত্রে রচিত কবিতা কাব্যগ্রন্থ থেকে
ময়ূর, বুঝি-বা কোনো সূর্যাস্তে জন্মেছ | এবং মেঘের তলে উল্লাসে নতুন ডানাটিকে মেলে ধরে যখন প্রথম খেলা শুরু হবে---- সেই স্থির পরকালে আমি প্রথম তোমার দেখা পেয়েছি, ময়ূর |
সমুদ্রসৈকত ধরে এত দূর, এত গাঢ় স্তব্ধতার কাছে এসে তোমার প্রবল দৌড় দেখা গেল, যেন আরো শব্দহীনতার প্রতি --- অন্ধকার ঝাউবনে--- অস্তিত্ব-জটিল আমাদের আর্তরবে ডেকেছ সহসা
অথচ বনের শেষে নির্বসন যৌবনের চোখে বিদ্যুত্চমক বলে মনে হল তোমার প্রতিভা মনে হল নবীন নবীনতমা সৃষ্টির ক্ষমতাও বুঝি এইভাবে ক্রমাগত অন্তরহীনতার বুকে মিশে যায় |
ফিরে দাও সাগরে আবার | ফিরে দাও উন্মাদ তুফানে অস্তিত্বকে ফিরে দাও | বিপুল পৃথিবীময় পাথরের বুকে আমি তার ভেঙে পড়া দেখেছি গর্জনে | দেখেছি আছাড় ডুবন্ত জাহাজ থেকে ভেঙে নেয় পাটাতন, জয়ের মাস্তুল |
আরো প্রকৃতির ছবি কবি উত্পলকুমার বসু পুরী সিরিজ কাব্য গ্রন্থথেকে নেওয়া
বাতাস শাসন করে ঢেউগুলি | অনন্ত প্রাকার শুষ্ক তৃণে, ঝাউশাখে | নগর পিছনে ফেলে চলে আসে সহস্র ভিখারি, অন্ধ লোল ভিখারিনী, ভিক্ষাদাতা ইত্যাদির সার কেননা ওষ্ঠে দুই করতল স্ফীত করে হাঁক দেয় মুক্তার শিকারি যেখানে জলের রেখা ধাপে ধাপে দিগন্তে ছড়ায় যেখানে সৈকত জুড়ে উড়ে চলে ছায়াপত্ররাশি আমার হোটেল থেকে দেখা গেল --- যতখানি তোমাকে দেখায় কিছু কি গোপন রাখো ? কোনো প্রেমবৈষম্যের হাসি ?
প্রতি ধর্ম বলে দেয় : আমি চাই অসম্পূর্ণ পাঠ | ঐ মতো মুক্তা বলে | জলের প্লাবনে তব মুক্তার শিকার | তরঙ্গে নেমেই আজ বোঝা গেল সমুদ্রকপাট
আরো দূরে | যেখানে জলের রঙ লৌহমরিচার শিকলের মতো লাল | ভিখারির দলে মিশে আমি কি শুনি নি জলের গভীরে রুদ্ধ শৃঙ্খলের ধ্বনি ? * রাত্রির জোয়ার লেগে নুয়ে পড়ে সৈতকতৃণ এখন রেখেছি মদ নৃত্যপর মদের গেলাসে উঠেছি নক্ষত্রহীন গম্বুজে ও সমুদ্রবাতাসে দূর হতে দেখা যায় অপসর হেমন্তের দিনও
তোমাকে অনেক কথা বলা হল | কিছু নেই বাকি | হেমন্তের দিনে আর ফাঁক নেই | পাতা হতে পাতার তরল উচ্ছ্বাস ধাবিত দেখে, হে জীবপালিনি, ঐ অনন্ত শীতল বাহুবন্ধে ছিঁড়ে পড়ে দেখেছি একাকী
চূর্ণ সবিতার দিন ক্রমাগত দূরে সরে যায় | যেখানে সৈকততৃণ অর্ধেক আলোকগ্রস্ত অর্ধেক ঢাকা যেখানে রূপোয়-গড়া সুবর্ণের, তরঙ্গের অতীন্দ্রীয় চাকা
আগুন উড়ায় দ্রুত | মৌমাছি কি গতিদিব্যতায় আবার বসন্তদিনে খুলে ফ্যালে রান্নার হাঁড়ি | যখন প্রস্তুত সব, ধোঁয়া ওঠে, ক্ষুধা, কাড়াকাড়ি | * লাল টালি শাদা বাড়ি ঢেউ ওঠে ঢেউ পড়ো পড়ো শাদা বালি শাদা বাড়ি দুপুরের আলো ধূ ধূ সূর্যের আলো শাদা সূর্য ও বালি শাদা ফেনা ও ফেনার টানে ঢেউ পড়ো পড়ো জাগে বালিয়াড়ি জ্বলে লাল টালি তোমাদের বাড়ি |
আকাশযান কবি উত্পলকুমার বসু পুরী সিরিজ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
তুমি সম্রাট, প্রভু ও যাতায়াতকারী পথিকের দেবতা . তুমি এক কাঠা মদ দাও আর আমাদের . দাই-মাকে ফিরে দাও দু’চারবার আলোছায়া মেলে ধরো পথে তুমি . তোমারই প্রস্তাব . কুরুক্ষেত্র গ্রাম থেকে সিপাহীর হাঁক শোনা যায় ‘সাধ ছিল’ বলে আজ কাগজসন্ন্যাসী . তার মানে এই নয় বৃষ ও মানুষ দু’চার বছর শুধু স্তন ও স্তন্য নিয়ে খেলেছিল . তাকে ফিরে পেতে হয়েছিল ‘মদ’ যাকে বলে . অর্থাৎ আদর তাকে পেতে হয়েছিল কুকুরের ল্যাজ নাড়া দেখে তাকে প্রীত হতে হয়েছিল . বনের ভিতরে গিয়ে মনিব হারায় আর . নিশ্চেতন পড়ে থাকে বৃষ ও মানুষ তুমি সম্রাট, প্রভু ও যাতায়াতকারী পথিকের দেবতা . ঝুড়ি থেকে তুলে নাও শুল্ক ঠিক . তুলে নাও বজ্রসেগুন পাতা মুখে বলো ‘দেখহ বিচারি’
ফেরীঘাট কবি উত্পলকুমার বসু পুরী সিরিজ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
. হে সূর্য, ককুদবৃষ, সাবলীল সোনার গাছের প্রচ্ছায়ায়, অন্ধকারে সমস্ত তৃণের রোমে একই সঙ্গে . ক্ষুধা ও চুম্বন রেখেছ স্তম্ভিত করে | হে সূর্য, উদ্ভিন্ন বাহু, তুমি পরাঙ্মুখ . আমাকে দাওনি ধান, গোলাঘর, বীজের উথ্বান . আমাকে দাও নি সার, বৃষ্টিজল, কূপের বিন্যাস আমাকে দাও নি শেষ জলসিঞ্চনের মতো জননীপ্রতিভা
ওখানে দিনের শেষে অপরাহ্নের ফুল ঝরে যায় দ্রুত | . ওখানে প্রার্থনারত কঙ্কালের বাহুবদ্ধ ছায়া খুলে ফ্যালে একে একে কৌতূহলহীন ত্বক, মাংসের জটিল উপশিরাগ্রস্ত পাতা | একে একে অরণ্যের গাছ মরে যায় | . কেননা দিগন্তে তুমি কীর্ণ হয়ে উঠে এলে এইমাত্র --- কেননা সোনার গাছ . গ্রাস করে বেড়ে ওঠে---- বেড়ে ওঠে উন্মাদ হাওয়ায় অন্য সব ফুল, ফল, জীবের বিজ্ঞান . সাম্যতার, প্রতিসাম্যতার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে
এখনো ডুমুর গাছে পৌষের লিপ্ত কুয়াশায় . মরা পালকের পুঞ্জে শুয়ে আছে পাখি---- মাটির গর্ভ খুঁড়ে আমরা অর্জন করি লোহার আকর . এত লোহা কাদের মঙ্গলে পরস্পর প্রতিবন্ধে গড়ে তোলে . এঞ্জিন, স্তব্ধ রেল, সাঁকো, বাড়ি, কলোনি, বাজার ------ ক্ষীরের আর্শি থেকে স্বাস্থ্য ভিক্ষা করেছিল যক্ষ্মা-রোগিনীরা . ফলের আর্শি থেকে একবাটি স্বচ্ছন্দ রসের . ফেনায়, তারল্যে, প্রেমে . ডুবে যেতে চেয়েছিল দিল্লীর বাসিন্দা দুধের আর্শি থেকে মৃত্যুপথগামী ওরা চেয়েছিল দীর্ঘ পরমায়ু
হে সূর্য, নাক্ষত্রতন্তু ছিঁড়ে তুমি বারবার . ক্ষীরে, ফলে, দুধের প্রবাহে পৌষে, শীতের রাতে, মাংসে, ত্বকে, উচ্ছ্বসিত রোমে . একই সঙ্গে হাহাকার, করতালি, ইন্দ্রিয়ের বাঁশি কুকুরের দীর্ণ ডাক, ভাঙা ঘন্টা, জলের গর্জন . সোনার গাছের তলে উত্সারিত করে দিলে --- . সোনার গাছের তলে এই কি চুম্বন ?
. তোমাকেও আবিষ্কার তৎক্ষণাৎ কাঞ্চীকাবেরীর জঙ্গলের মর্ম ছিঁড়ে চন্দনবনের করাতকলের পাশে, . তোমাকেও আবিষ্কার তৎক্ষণাৎ গতরজনীর আলেয়ায়, খাজুরাহে . নৈকষ্যকুলীন, শূদ্র, ব্রাহ্মণের শোভাযাত্রাময় ঐ . ভাঙা স্তম্ভে, মিথুনবিপ্লবে --- হিমালয়ে, ডালহৌসী পাহাড়ে এক চিঠির অক্ষরে, . বস্তুত, ধূলির খেলা ফেলে দিয়ে আমি বারবার অন্য সকলের মতো ধ্রুব তত্ত্বে, আত্মজিজ্ঞাসায় . ফিরে যেতে চেয়েছি যৌবনে তবু আত্মরতিহীন কোন্ সৌরময়দানে আধিপত্য মানুষের ? . তবু ব্যথাহীন কোন্ বিচ্ছেদের নীল ? . কোন্ মৃত্যু ঔদাসীন্যহান ?
এতগুলি বিপরীত প্রতিদ্বন্দ্বী বোধ, ইচ্ছা, পরস্পর সারে সারে . মাথার এ-পাশ থেকে ঐ পাশে উড়ে চলে যায়--- . জ্যোত্স্নায় এখনি উত্সব শুরু হবে | . কেননা সমস্ত হাঁস যুদ্ধের সন্তান | . কেননা উত্সব এক জাগতিক, বাঁকা উপত্যকা . চাঁদের প্লাবন, শিরা, রক্ত, বুদ্ধি, তীব্রতা ডিমের ফুল-ফোটানোর আগে | এতগুলি বিপরীত, প্রতিদ্বন্দ্বী . উচ্চকিত থালা | সহসা ঘোরাও তুমি যুদ্ধে, জন্মে, যোনির শিখরে ; . কেননা জন্মও তত কষ্টকর--- বিচ্ছেদের মতো | রক্তপাত ভয়ঙ্কর ততখানি গম্বুজের ভাঙা দেয়ালের মতো |
স্বাধীনতা ! অকস্মাৎ তোমাকেও মনে হয় নির্নিমেষ করুণ অঙ্গার . সভ্যতার নাভির ভিতরে--- ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আছো, ক্রেমলিনে, যুক্তরাষ্ট্রে . হয়তো বা বৈকুন্ঠের যৌনমখমলে, হিন্দুর জিজ্ঞাসা নয় | শুধু কিছু ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের
কেবলই মঙ্গল করো | তুমি আপেক্ষিক . অন্য সকলের প্রতি ---- যেহেতু বিভেদ ‘আন্তর্জাতিক’ বলে উদ্যত মুষল----যেহেতু মানুষ রেডিোর মতো এক অর্বাচীন বক্তার সম্মানে . পরিবারসহ শ্রোতা | যেহেতু কাগজে নিত্যই সম্পাদক ছাপার কলের সঙ্গে কী ভাবে সঙ্গম করে--- . তারই বিবরণ ধুরন্ধর লিখেছে বিশদ
স্বাধীনতা ! তোমাকেই দেখা হল বংশপরম্পরা . নির্মল বীজের থেকে ক্রমাগত পূর্ণ মহিলায় . কেবলই উঠেছে জেগে --- কূট পাণ্ডুলিপি থেকে বাত্স্যায়নের . স্বপ্নদূতীর মতো, নিতম্বের বিপুল আঘাতে . ঠেলে ফেলে দাও দূরে পূর্বএশিয়ার চুক্তি পশ্চিমের সাথে আমাকেও খদ্যোৎ হিন্দুর মতো উড়ে যেতে বলো কালো নাভির ভিতরে . যেখানে অঙ্গার