ঈশ্বর কবি যশোধরা রায়চৌধুরী (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
বার বার ফিরে এসে তোমাদের ঘরে দেখেছি কেমন দীন, হাভাতে ঈশ্বর একা একা টিভি দেখে, একা একা রেডিও চালিয়ে বসে থাকে, গলায় কম্ফর্টার, চোখে ছানি, আর আঁকাবাঁকা শীর্ণ আঙুলের ভাঁজে কত না কাহিনি।
ড্রেসিং টেবিল কবি যশোধরা রায়চৌধুরী (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
তুমি আয়নার সামনে বসে বসে সারাদিন ত্বক ফর্সা করার ক্রিম ব্যবহার কর তুমি সৌন্দর্য আন কৃত্রিম উপায়ে এইরূপে যে সুখ প্রদান কর, তাও কিন্তু ভালবাসা মনে হয় আজ ফুলে ওঠে অনুভব, বড় বড় বেলুনের মত
তুমি আয়নার সামনে বসে বসে যে বেলুন প্রদান কর, তা দিয়ে খোঁপা হয়। চাইলে, তা দিয়ে শরীরও হয়। আয়নার সামনে অত অত ঘন্টা , দিন, সপ্তাহ...কী কর? তুমি কি আয়নার প্রণয়িনী? তাই এত এত আয়নার কাছে থাকো? নাকি ওর থেকে ভিক্ষা করে রূপ সংগ্রহ করো? আয়নার ভেতরে পাশে এধারে ওধারে খুচরো পড়ে আছে রূপ অতক্ষণ তাই আয়নার কাছে থাকো? আমার মাথা ঘোরে আমি পারিনা অতক্ষণ আমার শরীর মচকানোর মত লাগে, দীর্ঘ পিঠ জুড়ে নেমে আসে অসহায়তা, রাগ, বিনুনির বদলে
আমি দেখি, দেখি দেখতেই থাকি, হে সুন্দরীশ্রেষ্ঠা, আয়নার অতলে তুমি পড়ে আছো, হামাগুড়ি দিয়ে রূপ তুলে নিচ্ছো চুলের ক্লিপের মত, খুঁটে খুঁটে আয়নার ভেতরে তুমি আশ্রয় নিচ্ছ অবশেষে...
দুটি কবিতা কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
বিষাদ ১
অন্ধকার চিরে চিরে মুখ উঠে এল সকাতর। এই সেই মুখ, যার একদিক সমুদ্রে চোবানো, ঘন নুনে আচারের মত করে সংরক্ষিত, সুস্বাদ, সফেদ।
মুখের অন্যদিক কাঁটাতোলা বুটজুতোর মত অসমান। ওই দিকে আসলে যে সত্যিটুকু মাখামাখি আছে যেন প্রেমে থাকা, যেন উত্থিত, সবুজ... বৃন্তগুলো দানা দানা ঘটে আছে। যেন ফল, যেন কারুকাজ উচু উঁচু। কঠোর আবেগে সমস্ত শিহরবশ, সমস্ত ভেতরভর্তি ভালো না লাগার মায়ামোহ...
মুখের বাঁদিক আর মুখের ডানদিক চিরকাল মুখের বাঁদিক আর মুখের ডানদিক থেকে যাবে। কেউ কাউকে বোঝে না তারা, কেউ কাউকে জানে না।
বিষাদ ২
আমাদের সেই একটি কবিতা, অন্ধ। আমাদের সেই একটি কবিতা প্রচন্ডভাবে একা। আমাদের সেই একটি কবিতা, একটিই।
অথচ ভিড়ে তো কতগুলো লেখা ভাস্বর গায়ে মাথায় আর কাঁটায় কাঁটায় লেখা আছে কত বেদনাবাহিত দম্ভ
কান্নার মত পড়ে আছে বাকি এত্তো এত্তো কবিতার মত লাইনও।
আমাদের সেই একটি কবিতা ভেঙেচুরে দিয়ে কান্নাকে, শুধু রাগ দেয় একটু একটু চেটে খায় তার শুকনো কষ্ট, এবং সেটার ভাগ দেয়।
দুই মেয়ের গপ্পো কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
প্রতিটি দিন তো এঁটো বাসন প্রতিটি দিন তো যন্ত্রণার প্রতিটি দিন তো বাসি খাবার প্রতিটি দিন কী অন্ধকার!
তুই কি একটা থালায় সব পুরনো খাবার জড়ো করিস ? তুই কি একটা পুরনো রাগ ছেড়ে ফেলিস, ঝেড়ে ফেলিস ? কাপড়ে দাগ । বাসি কাপড় । ক্ষারে কাচিস । ক্ষারেই কাচ। কাচের ধার, কি, কাটল তোর ? আঙুলে বাঁধ তো ছেঁড়া কাপড়। বোতল ভেঙেছে , টুকরো তোল । ফেলে দে কুড়িয়ে ভাঙা বোতল।
প্রতিটি দিন তো এঁটো কাপড় আমারো কেমন হালকা মন রোজ তো তেল ও কালির দাগ। তোকে ধুতে দিই পোড়া কড়াই।
উনুন নয় তো, গ্যাসেরই স্টোভ । ঘষতে ঘষতে মনে কী ক্ষোভ ! আমিও একটা বাক্সে সব বাসি তরকারি ঢেলেছি , ধ্যাত বাক্স মানে তো টিফিনবক্স । অফিসে আমিও মাঝারি বস। আমিও একটা ঘেমো গুমোট সন্ধেবেলায়; বাড়িতে লোক বাচ্চাটারও তো কী হোম-ওয়ার্ক ! অফিসে আবার বিশ্রি বস।
লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। শেয়ার ট্যাক্সি , জানালা ধার ধারের কাচ। কাচের ধার । সব লোকাল । সব গ্লোবাল।
তুইও কি একটা ঘেমো গুমোট সন্ধেবেলায় ঘরে ফিরিস? তোর তো নেই আর কাজের লোক! কার ওপরে যে রাঙাবি চোখ!
কালারফুল বিবর্নতা কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
বিবর্ণতা এত এত নিজেকে জানায় বিবর্ণতা এত এত নিজের এই প্রবণতা নিয়ে আসে, আর খেয়ে নেয় যাবতীয় রঙের আখ্যান তোমার বিবর্ণতা এত এত চলে আসে নিজস্ব নির্মাণ নিয়ে, এত এত ঢং নিয়ে আসে যে প্রতিটি দিন আপাত রঙিন কিন্তু ভেতরে ভেতরে তুমি জানো বিবর্ণতা বিবর্ণতা ছাড়া কিচ্ছু নয়।
কালারফুল উত্থান জানায় কালারফুল প্রশ্রয় জানায় কালারফুল বিবর্ণতা আলুথালু ভালবাসা মূলত উত্তেজনা শুধু
বিবর্ণতা যা কিছু নতুন তাকে নেয়, ঘাঁটে, দেখে বিবর্ণতা তারপর একটু একটু করে ক্লান্ত ও বিবর্ণ হতে থাকে বিবর্ণতা প্রস্থান জানায় অস্বস্তি বাড়ায় তার সঙ্গে সঙ্গে, বিবর্ণতা সঙ্গে নিয়ে থাকে অল্পস্বল্প কিছু উপাদান যেমন আশ্রয়হীন শ্রুতিসুখ অভিভাবহীন প্রাণারাম যেমন প্রশ্রয়ের ইচ্ছা আর কাতর প্রচেষ্টাগুলি যেমন অশ্লীল আর অলীক আমোদ অপরের মুখ ম্লান করা আত্মউন্মোচন বিবর্ণতা আপাতত ঘামহীন সঙ্গম , রতি আত্মবিদ্ধ অশরীর কাম বিবর্ণতা ঝালহীন বড় ক্যাপসিকাম সুপারমার্কেট ঘেঁটে যাকে আমি কী রঙিন, কিনে আনলাম ।
ভারত, এক খোঁজ কবি যশোধরা রায়চৌধুরী শারদীয়া দেশ, ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
লোকাল ট্রেনের মত দুলছে সে, দুলে দুলে বেঁচে থাকছে রোজ। সাইকেলের ক্যারিয়ারে ঝুলছে সে, ধানখেতের আলপথে হেঁটে যাচ্ছে রোজ। ভালোমন্দ চুলচেরা, ভেবেচিন্তে ঘেঁটে যাচ্ছে রোজ। আলো ও আন্ধারে সেঁটে, লম্বা ও বেঁটের মধ্যে গুঁড়ি মেরে, একলা থেকে , দোকলা থেকে , পুরনো চালের মত ফুলছে সে, রোজ। সে এখন ভেসে যাচ্ছে দানাদানা ঘটে ওঠা তানকর্তবের মত . ঘটনাবলীর মধ্যে... উড়ে যাচ্ছে চুল। সে এখন দেখতে পাচ্ছে ঘুর্নিগুলো, একটু একটু ঘটে যাচ্ছে ঠিক আর একটু একটু ভুল। সে এখন খুঁজে নিচ্ছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রকৃত তন্ডুল। পরোটা আকৃতিমাত্র দেশ জুড়ে সে এখন পুঁজে ভরা অসংখ্য জড়ুল দেখতে পাচ্ছে, চুলকোবার জন্য তার হাত তো উঠছে না! ফিরে আসছে পকেটের ভাঁজে, তাকে থাকতে হচ্ছে অসম্ভব চুপ সমস্ত জীবন ধরে তাকে ঢাকছে বল্মীকের মত, শুধু জটিলের স্তূপ।
সে এখন, সে এখন ...নিজের ইন্ডিয়াদেহে, কী অবশ, দেখছে খালি পিঁপড়ের সারির মত ঘটে উঠতে, ভারত-এর খোঁজ।
প্রথাগত কবিতা কবি যশোধরা রায়চৌধুরী পরমা, জুলাই ২০১২ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
রাসমন্দিরের নীচে জমা অন্ধকারে তোমাদের মুখের প্রতিমা ভাঙে, গড়ে। সে মুখে করুণ আলো, সে আলো পৃথক। সে মাতা বিবর্ণ মাতা, শোলাসাজহীন।
এই অপরূপ বাস্তবতা আমি পলায়নপর, দেখে নিই, ছলাকলাভরে কেঁদে নিই দুই-পালা, মিনতির দ্যুতি ছড়ায় দোপাটিপুষ্পে, মিটিমিটি প্রদীপবর্তিকা জ্বলে ওঠে, নিবে যাবে বলে।
আমি দেখি আরো প্রকৃতপ্রস্তাবে কোন ধোঁয়া নয়, কুয়াশার মত পুকুরের পাড়ে পাড়ে প্রেত ঘোরে ফেরে কতিপয় ছেলেমেয়ে জোড়ায় জোড়ায় পাড়ার যুবকে, গাঢ় পুরুষালি ঘাড়ের কেশরে ধুকপুক বুকে হাত, মেয়েটির নত অবয়বে জলের ছলাৎ আলো... তারপর আলো ভেঙে যায়।
ভেঙে দিই আমি সেই দ্যুতি, মায়া, মোহ। বাড়িখানি দুলে ওঠে, পালাগান শেষ হয়ে গেলে রাসমন্দিরের নিচে মৃদু অন্ধকারে কন্ডোমের কথা এসে পড়ে বাহাত্তর ঘন্টার ট্যাবলেটের কথা এসে পড়ে আর ব্লেড চমকানো। অ্যাসিড বালব-এর ছলাচ্ছল ।
অনাহতের গান কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ১৭ জুলাই ২০১২ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
এখনো মেলা বসে, মেলায় ঝুরিভাজা পাঁপড় স্তূপে রাখে নরম লোক শিশুরা কালোকোলো ভিড় জমায় চোখখিদের ঝোঁকে: আরো পেঁয়াজি হোক এখনো ফেলা রসে প্যাঁচালো জিলিপিরা ফুলের মত ফোটে, ঝাল নরক তেঁতুলজলে ডোবে প্রাণের অংশ যা, আলুর চোখাসহ লঙ্কা ভোগ...
এখন গ্রাম থেকে শহরে চলে যায় ক্ষুরের মত সেই লৌহপাত এখনো গ্রাম গ্রাম, শহরও কী শহুরে , মধ্যে উঁচু টেলিটাওয়ার, রাত এখনো প্ল্যাটফর্ম, এখনো স্টেশনেরা, শান্ত পড়ে থাকে, শূন্যপুর, এখনো ট্রেন যায়, ট্রেনের ব্রেন থেকে টপটপায় কিছু অন্ধ সুর...
প্রেমসিরিজ কবি যশোধরা রায়চৌধুরী দেশ পত্রিকা, ২ জুন ২০১২ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
মধ্যযুগ
রাত্রির অনন্ত সত্য। তার মধ্যে জেগে আছে ছোট ল্যাম্পের মিষ্টি মিথ্যে। ও গড, এ কীরকম জেগে থাকা, বলো হাজার ওয়াটের আলো ছেড়ে দিলে, এসির গরম শ্বাস ছেড়ে দিলে এখন আমার কাছে এসে শুধু বসে থাকা মরমি সন্ধ্যায় এখন স্নিগ্ধতা চাওয়া। তুমি কী করুণ!
শার্টের ভেতরে আত্মা আটকে আছে, কতখানি বঞ্চিত, লাঞ্ছিত চাকরি ছেড়ে দিতে চাও, বার বার বলো, এই চাকরি ভাল লাগছে না . তোমার
সময়ের হাত ধরে বসে আছি কতকাল ধরে সময়ের নাড়ী টিপি, খুলে খাই ভাঁজ করা সময় পুরিয়া মেড়ে খাই নুড়িতে ও খলে। সময়ের হাত ধরে বসে বসে দেখেছি তো তোমার আমার সম্পর্ক কেমনে যায় গঙ্গাজল বয়ে নগরী পাতালদেশে, জালিকার পথে পথে, সুয়ারেজে, নিচু...
গলিমুখ, গ্যাসবাতি, রেডিওবিকল সন্ধেগুলোঃ “আপনি তো আগের মত আর ভালো বাসেন না আমাকে?”
মেট্রোযুগ
তুই মারহাব্বা, কিন্তু ম্যাচো না উবেরকুল, মেট্রোসেক্সুয়াল জানি না সহসা তুই হান্ডু, তুই কিউট, কিন্তু তুই আমাকে কীভাবে অ্যাক্সেপ্ট করিস আর কতখানি সহ্য দিয়ে রেখে দিস নিজের কোটরে
নিজের বুকের মধ্যে ছুরি দিয়ে কেটে তোর দেখানোর কিছু নেই, . অযথা সার্কিটে কোথায় কোথায় আমি, নাম লেখা, ছবি আঁকা, ছবিটা তো ডক্টরড, . তবু লিপলাইনারে আঁকা, ফোলানো ফাঁপানো বুব্স, এ আবার কোনরকম সাজ
প্রেমিকের অবতারে কিছু কিছু বদল ঘটলেও আসলে ব্যাপারটা একই, কোন হেলদোল নেই পুরনো, পুরনো অপচয়ে? “আজকাল তুই আমাকে, আমি তোকে , সেভাবে রিলেট করতে পারিনা কেন রে?” নাঃ এভাবে চলবে না, তোর কাছে ঠোঁট ফোলানোর আর অভিমান অভিমান খেলার . বিষাদ আসে না? কমিউনিকেট করেনা কিছুই?
স্বপ্নের পুরুষ কবি যশোধরা রায়চৌধুরী সানন্দা, পূজা ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
স্বপ্নে তুমি অনেক বেশি কেয়ারিং । স্বপ্নে তুমি এমনভাবে আমার হাত তোমার হাতের ভেতরে নিলে খাপে খাপে এঁটে বসে গেল যেন কিডগ্লাভ । এমন নরম করে চাপ দিলে হাতে যেন আমরা একই শরীরের দুটি হাত – বাঁহাত ডানহাত ।
স্বপ্নে , তুমি বাস্তবের মত নও। তোমার লালার ঘ্রাণে প্রবল নৈরাশ্য জাগে, ক্লান্তি হয়, পাশ ফিরে যখন যখন সেই প্রত্যাখ্যান জানাও আমাকে –নাক ডেকে ঘুম যাও, আর জেগে উঠে শীতল, উদাসীন... একলা কাগজ পড়ো সঙ্গমের পরে... স্বপ্নে সেইসব কিচ্ছু নেই।
প্রেম কাকে বলে সেসব তো জেনেছি আমি স্বপ্ন দেখে দেখে আর ঐ যে, নত হওয়া, ঘামের তরল চোখের পাতায় লেগে ছিটকে ওঠা প্রবল গরম সব স্নান, বৃষ্টি , স্নান
শুধু, মাঝে মাঝে বাস্তবই স্বপ্নের সঙ্গে মিলে গেছে বলে, ওইটুকু ওইটুকু বিন্দু বিন্দু ডিটেল মিলে গেছে বলে এখনো তোমার সঙ্গে থাকতে পারি, বাস্তব তোমার সঙ্গে
আজকাল স্বপ্ন থেকে উঠে আসি, উঠে দেখি বাস্তবের দিন খুলে নিচ্ছে ব্যান্ড-এডের মতন চড়চড় চড়চড় করে আমার ওই বিন্দুগুলি থেকে আর সারা জীবনের মধ্যে ফাটল ও চিড়
বাস্তব, স্বপ্ন, সব কোনদিন আলাদা আলাদা করে দিলে, স্বপ্নে , তুমি অনেক বেশি কেয়ারিং, আর বাস্তবের তুমি? সনাতন স্বামীরূপ, দাগি বয়ফ্রেন্ডরূপ সত্য বটে , হৃদয়ে তোমার অবাস্তব রূপান্তর আরো বেশি সত্যি হয়ে আছে তো, প্রেমিক !