কবি ও গীতিকার অজয় ভট্টাচার্যর কবিতা ও গান
*
ছিল চাঁদ মেঘের পারে
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর -- হিমাংশু কুমার দত্ত
শিল্পী – গীতশ্রী গীতা দাশ ,১০৪০

ছিল চাঁদ মেঘের পারে,
বিরহীর ব্যথা লয়ে
বাঁশরীর সুর হয়ে
কে গো আজ ডাকিল  তারে |

ধরণীর ধূলি থেকে
চামেলি সে কহে ডেকে
এসো, প্রিয় আমরি দ্বারে |

চাঁদ কহে সুদূরে আমি
মোর প্রেমের-জ্যোছনা সে
কেঁদে মরে তব পাশে
ওগো ফুল কেমনে নামি?
চামেলি কহিল তবে
আমি যাই দূর নভে,
ঝরিল সে পথের ধারে ||

.                *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
একটি পয়সা দাও গো বাবু
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর  --- অনুপম ঘটক
শিল্পী – অজ্ঞাত
ছবি ---  শাপমুক্তি, ১৯৪০

একটি পয়সা দাও গো বাবু
.            একটি পয়সা দাও---
ময়লা জুতো সয় না পায়ে
.             পালিশ করে নাও |
কালো কালি বুরুশ ভালো
.             ঠিক্ রে যাবে জুতোর আলো,
এক পালিশে যায় বারোমাস
.             একটু থেমে যাও |
একটি পয়সা তোমার কাছে
.             সে কিছু নয় কি দাম আছে,
আমার সে তো রাজার মানিক,
.             মুখের পানে চাও

.         *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
জাগো আলোক-লগনে
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর  ও শিল্পী – ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, ১৯৩৭

জাগো আলোক-লগনে,
এলো ঊষা উদয় তোরণে |
.          ললাটে জ্বলে রবি
.          একি রে রূপছবি,
ফুল রাঙে বনে
.           লাজ-হিম নয়নে |
চারণ পাখী গাহে
.           নীলিমা-তৃষা লয়ে
অতীত জাগে প্রাণে
নূতন প্রেম হয়ে |
জাগো রে গৃহবাসী,
জাগো রে পথ উদাসী
মোছ আঁখিধারা
ঝরিল যা স্বপনে ||

.    *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
যদি মনে পড়ে সেদিনের কথা
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর ও শিল্পী –ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় , ১৯৩৭

যদি মনে পড়ে সেদিনের কথা
.         আমারে ভুলিও প্রিয়,
নয়ন সলিলে স্মৃতির কাজল
.         মুছিয়া নিও গো প্রিয় |
.         মোর দেওয়া মালা হেরি
.         যদি ব্যথা আসে ঘেরি
রাতুল চরণে                 সে মালা দলিও
.           কিছু না কহিব প্রিয় |
.          পরাণ মুকুর ‘পরে
.          মোর ছায়া যদি পড়ে
আর কোন ছবি হৃদয়ে আঁকিয়া
.           তারি ধ্যানে থেকোগো প্রিয় ||

.          *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
তুমি যে আঁধার তাই বড় ভালোবাসি
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর  --- হিমাংশু কুমার দত্ত
শিল্পী --- গীতশ্রী গীতা দাশ, ১৯৪০

তুমি যে আঁধার তাই বড় ভালোবাসি,
তারায় তারায় ফোটে অই তব হাসি ;
.         শুনি সুর বসি একা
.         কিছু তো যায় না দেখা,
ভালো লাগে প্রিয় অদেখার মায়া বাঁশি |
তব পথখানি কালোয় পড়েছে ঢাকা
.          পাই না তো আমি খুঁজি,
ভালো হল তাই পলে পলে মনে হয়
.          এই এলে এলে বুঝি |
.          লুকালে রূপের বিভা,
.          অপরূপ মরি কিবা,
তাই তো পুলক সহসা ডাকিবে আসি ||

.          *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
দুঃখে যাদের জীবন গড়া তাদের আবার দুঃখ কি রে
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর  --- তিমিরবরণ
শিল্পী – পঙ্কজকুমার মল্লিক
ছবি --   অধিকার, ১৯৩৯

দুঃখে যাদের জীবন গড়া তাদের আবার দুঃখ কি রে ?
হাসবি তোরা, বাঁচবি তোরা, মরণ যদি আসেই ঘিরে |
অন্ধকারের শিশু তোরা আলোর তৃষায় মিছে ঘোরা,
আপন হৃদয় জ্বালিয়ে দিয়ে জ্বালবি সবার প্রদীপটিরে ||
তোদের প্রাণে বন্দী হয়ে কাঁদে ভুখা ভগবান |
মুখে তবু খেলার বাঁশি যখন বুকে রয় পাষাণ |
হেলায় হেসে নিলি মরণ তাইতো মরণ পেল লাজ |
ধূলির সাথে মিশে তোরা সোনার মত হলি আজ ||
এবার যে রে প্রভাত আসে,   রাতের আঁধার গেল টুটে,
ভোরের আলোর তিলক প’রে বাহির পানে আয়রে ছুটে |
দুঃখ তোদের জয়ের মালা দুঃখ হল মুকুট শিরে |
বাঁধন হল হাতের রাখী মুক্তি এল নয়ন-নীরে ||

.              *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
যবে, কন্টক-পথে হবে রক্তিম পদতল
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর  ও শিল্পী – পঙ্কজকুমার মল্লিক
ছবি – ডাক্তার , ১৯৪০

যবে, কন্টক-পথে হবে রক্তিম পদতল,
অন্তরে ফুটিবে যে সুন্দর শতদল |
দুঃখের লিপিরেখা বিচ্ছেদ কালিমায়,
উজ্জ্বল হবে জানি মিলনের চাঁদিমায়,
বন্ধন মাঝে মোর মুক্তির কোলাহল ||
রাত্রি এ নয় কভু, যাত্রী রে কিবা ভয়,
হৃদয়ের তরে তার দিবসের বিভা রয় |
রিক্ত এ তরু-প্রাণে ফাল্গুন ছলোছল |
নিশীথের দুখ স্মৃতি প্রভাতের গীতি হয়,
বেদনার অশ্রু যে বেদনার গাহে জয়,
ঝঞ্ঝার পাশে ওই --- কল্যাণ আসে ওই,
হলাহল পাত্র যে সুধারসে টলোমল ||

.         *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
শেষ হলো তোর অভিযান
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর  ও শিল্পী --- পঙ্কজকুমার মল্লিক
ছবি --- দেশের মাটি, ১৯৩৮

শেষ হলো তোর অভিযান
হীরা ফলে সোনার গাছে,               হরিৎ সাগর ভুলায় প্রাণ ||
আজ দেবতার আশিস ধারা                রৌদ্র হয়ে দিল সাড়া,
আপন হতে বাহির হয়ে বাহিরকে তুই ঘরে আন |
দিগন্তে ঐ আকাশ নামে মাটির পায়ের পরশ নিতে,
বাতাস আনে চন্দন-বাস শ্রান্ত হৃদয় ভ’রে দিতে |
কত আশা কত ব্যথা                 ধানের শীষে ফুটল হেথা,
ধূলায় গড়িস ইন্দ্রপুরী তোরাই যে আজ ভগবান ||

.            *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
বন্দর ছাড়ো যাত্রীরা সবে জোয়ার এসেছে আজ
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর ও শিল্পী – শচীন দেববর্মন
ছবি – ছদ্মবেশী , ১৯৪৪

বন্দর ছাড়ো যাত্রীরা সবে                 জোয়ার এসেছে আজ,
ময়ূরপঙ্খী ডুবে গেল ভাই,              ভাঙা জাহাজেরি কাজ ||
বেলোয়ারী ঘরে ফাঁকির ফানুস
তোরা ন’স্ ভাই, তোরা যে মানুষ,
বুকের পাঁজরে লুকায়ে রয়েছে                 শত ইন্দ্রের বাজ ||
বিদায়ের বেলা পারিজাত মালা         কেহ দিবে না তো গাঁথি |
হাতে হাত দিয়ে রাখী বন্ধন,                এক সাথে চল সাথী ||
পিছনে থাক্ সে পুরানো পৃথিবী,
নূতন ফসল ভাগ ক’রে নিবি ,
আজিকার এই কাঁটার মুকুট                হবে রে জয়ের তাজ ||

.            *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর   
*
আবার যে রে রঙ ফিরেছে ধূলার ধরণীতে
রচনা – অজয় ভট্টাচার্য
সুর  --- পঙ্কজকুমার মল্লিক
শিল্পী – পঙ্কজকুমার মল্লিক ও ইলা ঘোষ
ছবি --   দেশের মাটি, ১৯৩৮

আবার যে রে রঙ ফিরেছে ধূলার ধরণীতে
.           শুনবি তোরা গান |
শুকনো শাখা সবুজ হল কোমল কিশলয়ে
.            এ যে মাটির দান ||
ভুল করে যে কাঁটার ব্যথা দিল আজি মোরে,
.            তারেই দিব ফুল,
যে ভেঙেছে গানের বীণা,---- গান শুনাব তারে
.            ভাঙব তাহার ভুল |
দুখের মরুমাঝে এল ফাগুন দিনের আশা, বনের ভালোবাসা,
.            এল আনন্দেরি বান ||
যে বাতি আজ উঠল জ্বলে, সে কি অমর হয়ে
.            জ্বলবে চিরকাল,
তুফান যদি আসেই ভোলা টুটবে সায়র মাঝে
.            ও তো ময়ূরপঙ্খী পাল
পারের দেখা পাসনে আজো, হাল ধরে ভাই ক’ষে
.            টানরে জোরে টান ||

.             *************************                
.                                                                             
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর