কবি রসরাজ অমৃতলাল বসুর গান ও কবিতা |
ওগো কেউ বল না গো কবি রসরাজ অমৃতলাল বসু দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত “বেশ্যাসংগীত বাইজিসংগীত” ( ২০০১ ) গ্রন্থ থেকে নেওয়া। “খাসদখল” নাটকের গান। নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল ১৯১২ সালে। ॥ ভৈরবী - খেমটা॥ ওগো কেউ বল না গো আমার ভাতার কেমন মিষ্টি! আমার সুদু হয়েছিল ছেলেবেলায় ছেলেখেলা করে শুভদৃষ্টি। ভাতার কেমন মিষ্টি। মিষ্টি গুড়, মিষ্টি চিনি, আর মিষ্টি মধু কিসের মতো মিষ্টি হ্যাঁগা, সাতটি পাকের বঁধু সে কি তেষ্টার জল, চেষ্টার ফল, না জষ্টিমাসে দুপুরবেলা বৃষ্টি! ভাতার কেমন মিষ্টি। মিষ্টি ছিল বাবার আদর, আর মায়ের কোল, ফাল্গুন মাসে ফাগের খেলা, কচি আমের ঝোল, তার চেয়ে মিষ্টি ভাতার, নারীর ধর্ম কর্ম ইষ্টি কত মিষ্টি সেই বিধাতা, যার মিষ্টি ভাতার সৃষ্টি। ভাতার কেমন মিষ্টি। . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
টুকটুকে তোর পা দুখানি কবি রসরাজ অমৃতলাল বসু দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত “বেশ্যাসংগীত বাইজিসংগীত” ( ২০০১ ) গ্রন্থ থেকে নেওয়া। ॥ - কাশ্মীরি খেমটা॥ টুকটুকে তোর পা দুখানি, আলতা পরাই আয়। চটক দেখে অবাক হয়ে, থাকবি সুখে তায়॥ আগে করবি যতন পায়ে, শেষেতে সোনা গায়ে, পা-দুখানি ধরলে পরে, মুখের পানে চায়। সোনেলা আঙুলগুলি, অ ফুট চাঁপা কলি, তুলি করে আলতা দিলে বাহার খুলে যায়, ঘুরে ফিরে মনচোরা লুটিয়ে পড়ে পায়॥ *************** এই গানটিই দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত “বাঙ্গালীর গান” ( ১৯০৫ ) সংকলনে এভাবে রয়েছে টুকটুকে তোর পা দুখানি, আলতা পরাই আয়। চটক দেখে অবাক হবে ( সে লো ) থাকবে চেয়ে ঠায়॥ আগে চাই যতন পায়ে, সোনা তখন পরবি গায়ে পাখানি ধরলে মনে ( তবে লো ) মুখের পানে চায়॥ সোনেলা আঙুলগুলি, অফুটো চাঁপার কলি, তুলি করে আলতা দিলে বাহার খুলে যায়, ঘুরে ফিরে মনচোরা লুটিয়ে পড়ে পায়॥ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
বাঁটের মুখে খাঁটি দুধ কবি রসরাজ অমৃতলাল বসু দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত “বেশ্যাসংগীত বাইজিসংগীত” ( ২০০১ ) গ্রন্থ থেকে নেওয়া। ॥ - খেমটা॥ বাঁটের মুখে খাঁটি দুধ, কে নিবি তা বল। সের করা আধা আধি, খালি কলের জল॥ মাইরি বলছি ভাই, আমার ভাগলপুরের গাই, গোইলে বাঁধা কইলে বাছুর, এক বিয়নের ফল। টাকাতে ছ সের, দিচ্ছি এই ঢের, খেঁড়ো গাইয়ের গাঢ় দুধ, গায়ে বাড়ে বল॥ দুধ চড়ালে কড়ায়, ননী আপনি গড়ায়, এক পলকে চলকে উঠে, যেন যৌবন ঢলঢল॥ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
পোরার মুয়ে নারার আগুন কবি রসরাজ অমৃতলাল বসু দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত “বেশ্যাসংগীত বাইজিসংগীত” ( ২০০১ ) গ্রন্থ থেকে নেওয়া। “রাজাবাহাদুর” নাটকের গান। নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল ১৮৯১ সালে। ॥ - ॥ পোরার মুয়ে নারার আগুন বুহিনে-মাগুর বাই, চল তো চল হালার পুত দ্যাশে লয়ে যাই। জলাবুঁয়ে রাখমু গারে, বিছাই দিমু ঝারু মারে, তোর কাচা মাথা কচমচায়ে চাবায়ে না খাই। আদুর গায়ে দেদার ঝারু দূর, দূর, দূর, দূর, আগুরির পুত বাঁদির বিটা রাজা বাহাদুর। মাগুরে ছারি মাগীর বারি আইছো হালার পুতি, তোর বুকের ছাতি করমু গুরা মারে মারে লাথি, কসবি-গরে আইসে বান্দর, রাজা অইবে গবাচন্দর, তোর অন্দরেতে হুন্দুর মাগু যাবা না তার ঠাঁই। ব্যালেল্লা নোচ্ছার পাজি মুয়ে আকার ছাই। আতুর-গরে লবণ মুয়ে দ্যায়নি কেন দাই॥ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
আমার আহ্লাদে প্রাণ আটখানা কবি রসরাজ অমৃতলাল বসু দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত “বেশ্যাসংগীত বাইজিসংগীত” ( ২০০১ ) গ্রন্থ থেকে নেওয়া। আমার আহ্লাদে প্রাণ আটখানা প্রাণ কেমন কেমন করে বুঝতে পারি না॥ আমি আসছি ধান-দুব্বো নিয়ে, মামুজি করবে বিয়ে গলাগলি ঢলাঢলি করব দুজনা। তোমার মুখখানি কি চমত্কার, দেখে তোরে মাথা ঘুরে হয় একাকার, যদি ভালোবাসিস সামলে থাকিস, দিস নাকো ভাই প্রাণে হানা॥ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
ঘাট হয়েছে বাপ কবি রসরাজ অমৃতলাল বসু দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত “বাঙ্গালীর গান” ( ১৯০৫ ) সংকলন থেকে নেওয়া। ঘাট হয়েছে বাপ। সবাই মোদের করো মাপ॥ মাগিদের স্বাধীন করে, এখন যেনন মেড়া লড়ে। আমাদের ঘাড়ে চড়ে দিচ্ছে উলটো চাপ॥ ঘুটে গিয়েছে কাচা, অন্দর হয়েছে খাঁচা, এখন যে প্রাণে বাঁচা, গেল জন্মের পাপ॥ ভাবলেম হবে স্বাধীন, মজা দেবে দুদিন, এখন দিন পেয়ে ধিন ধিন নাচে, এ কীরে বাপ দাপ॥ মাগিকে মিনসে করতে, যে আর বলবে মরতে, পোঁতো তারে ইঁদুর গর্তে, জেনো সে স্বয়ং কলির কাপ॥ খেলাম কানমলা, নাকমলা, ফিরে কোন শালা স্ত্রী স্বাধীনতার কথা নিয়ে, করবে লাফালাফ। মেয়েদের দণ্ডবৎ, দিলাম এই নাকেখত, যেমনি পাপ করেছিলাম তেমনই পেলেম তাপ॥ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |