বাবা হে ই দেশটাতে আর রইব নাই কবি অরুণ চট্টোপাধ্যায় সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত “গণসংগীত সংগ্রহ” থেকে নেওয়া |
বাবা হে ই দেশটাতে আর রইব নাই | ই দেশের মাটি বানভাসি, ফিরে দিছে খরা জ্বালাই |
ই দেশে রাজারাণীর দেশশাসনা, ভাল কথা বইলছে মুহে কাজের বেলায় রা কাড়ে না শুইনলাম চাঁদে মানুষ জমি লিছে, বাঘের মাস মানুষ খাইছে, পাতালেতে রেল চলিছে তবু পেটের ভুখ তো মিটছে নাই |
ই দেশে বিটি ছেইলার চুলে ছাঁটাই, খাদে কলে চাকরী ছাঁটাই, চাষীর ঘরকে যেমন শুখা মরাই তেমন মরদগুলার তাগদ নাই |
( বাবা হে ) ই দেশের গুণিন যত মন্ত্র কত জাইনছে ঠিকেই তবু কেনে ডাইন-খেদা সরযূপড়া ঝাঁটাপিটা কইরছে নাই ?
বিপন্নতা নিয়ে ঘর কোরি কবি অরুণ চট্টোপাধ্যায় ট্রিনিটি ট্রাস্ট, আসানসোল, থেকে প্রকাশিত, অসীমকৃষ্ণ দত্ত ও আবদুস সামাদ সম্পাদিত, “আসানসোল শিল্পভূমি : কবি ও কবিতা” (২০০৫) থেকে নেওয়া |
বিপন্নতা নিয়ে আমার বসবাস . . . দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি . . . বোললেও . আমি যেতে পারি না আমার সব কিছু গচ্ছিত রেখেছে বাড়িওয়ালা লিঙ্গ হৃদয় কিডনি . . . সব কিছু . . . . মায় অনুভূতির তন্তুও . . . তাই প্রস্তুত গাড়িও ফিরে যায় . . . বেলা কিন্তু থেমে থাকে না ছুটন্ত ট্রেনে চেপে সে . দূর থেকে দূরে ক্রমাগত . . . আমি বাড়িওয়ালাকে ডাকি . . . আমার গচ্ছিত ধন কিছু ফিরিয়ে দাও . . . . বিপন্নতার ধুলো উড়িয়ে সে ফেরারিই থেকে যায় . . . বিপন্নতা নিয়ে আমি ঘর কোরি . . .
প্রতিবিম্ব দেখে কবি অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায় উত্তম দাশ ও মৃত্যুঞ্জয় সেন সম্পাদিত “আধুনিক প্রজন্মের কবিতা” (১৯৯১) থেকে নেওয়া।
নিজের মুখোমুখি দাঁড়াতে খুব ভয় করে।
নির্জন অন্ধকার ঠিক আয়নার মত তার কাছে গেলেই ভেতরে প্রবেশ অনিবার্য এবং তখনি মুখোমুখি নিজের মধ্যিখানের কাটা ছেঁড়া হতকুচ্ছিত চেহারাটা বেরিয়ে এসে ঝুলে থাকে অন্ধকার দেয়ালে।
আলোয় আলোয় প্রসাধন সেরে যাই।
এই পুরনো বাড়িটায় যদি অন্ধকার নামে নির্জনতা চারপাশ গিলে খেয়ে দর্পণ হয়ে যায় নিজেই তখন নিজের প্রতিবিম্ব দেখে কেঁপে উঠি।