পাতার ধূসর শব্দ সারাক্ষণ ধ্বনিরত শফেদার বনে, এবার হারিয়ে যাব ঘরানার কোনও স্মৃতি রাখব না মনে | ভুলে যাব হে আকাশ তোমাদের ভুলে যাব নক্ষত্র-নীলিমা, যা কিছু বিগত হায় আর আমি কিছু তার মনেও রাখব না !
সব কিছু আবর্তিত, পৃথিবীর সব কিছু জানি গতিময় | আজ হবে গতকাল আহ্নিকের পরিণামে আগত সময় দেবে জানি অন্য এক সুদূর দিনান্ত ছুঁয়ে ঝড়ের আভাস, নির্ভয়ে জাগবে জানি অন্য এক দিগন্তের দীর্ঘ প্রতিভাস |
জীবন সীমিত জানি প্রত্যাশারা জানি দীপ্ত অনন্ত অসীম, পৃথিবীর সবখানে স্মৃতিময় উদ্ভাসিত আনন্দপ্রতিম সুখ-দুঃখ ভালোবাসা দেখায় অন্যত্র গ্রহে আরেক প্রতিমা--- ভুলে যাব সব কিছু ভুলে যেতে হয় জানি বিগত মহিমা |
প্রতিটি সন্ধ্যায় এসে বাতাস শুধায় যেন : বলো, তুমি কার ? কী তার উত্তর দেব ? কে হায় জেনেছে বিশ্বে কতখানি তার ? কে জানে মৃত্যুর আগে জীবনের অনুভূত প্রত্যাশার মানে ? একপাশে দুঃখ তার অন্য পাশে স্মৃতি---- জীবন কেবল তার পরিণিতি জানে |
প্রত্যহ নির্জনে বসে ভাবি আমি : এরপর যাব কোনদিকে ? বাতাস ছড়ায় ভীতি নক্ষত্রও ক্রমাগত হতে থাকে ফিকে | জেনেছি পৃথিবী এক আবর্তিত বিন্দু একটি আঁধার থেকে আরেক আঁধারে প্রসারিত যেন এক জ্যোতির্ময় সিন্ধু |
দূরের আকাশ থেকে প্রতিটি সন্ধ্যায় যেন চুপি চুপি কাছে এসে কথা কয় আলো, মনে পড়ে একদিন সে এক কিশোরী মেঘ প্রবল বৃষ্টির মতো বেসেছিল ভালো | তারপরে কত দিন কত মাস কেটে গেছে অযুত বছর | হারায়েছে মেঘ-মেয়ে---- কেউ কি জেনেছে তার জীবনের কোনখানে কে যে কার কতটা নির্ভর !
প্রতিটি সূর্যাস্তে এসে দেখি দূরে রয়েছে দাঁড়িয়ে স্নিগ্ধ ভোরের নীলিমা, তোমার মুখের থেকে উত্সারিত যে-রকম প্রত্যাশার দুর্লভ সুষমা |
জেনেছি জীবন আছে প্রত্যহের আলো আর নীল অন্ধকারে, প্রেম আছে অভিনব পৃথিবীর সবখানে নির্মল বিহারে | তুমি আছো অনুভূতি---- চারদিকে আবর্তিত জেনেছি জীবন, সর্বত্র তোমার মতো অপরূপ উল্লসিত দেবদারু বন |
দিন যায় দিন আসে অবারিত চারিদিকে প্রসন্ন রঙিন, আহ্নিকের পরিণামে নিজস্ব খেলায় প্রত্যেক রাতের শেষে আবির্ভূত দিন | প্রতিটি সূর্যাস্তে এসে তাই স্নিগ্ধ কাছে ডেকে বলি সে নারীকে : প্রেম দাও পরিশুদ্ধ প্রত্যাশার অতিরিক্ত যদি কিছু থাকে |