কবি আশুতোষ মজুমদারের কবিতা
*
সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ্
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ পৃষ্ঠায়
২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


আমি বহুকাল ধরে স্থিতি দেখতে চেয়েছি এ পৃথিবীর,
বালুকণার,
সমুদ্র অতলে নীলাভ গভীর জলে,
স্কর্টল্যাণ্ডিয়ার্ড এর তোড়জোড়, এফ্ . বি. আই---
তত্পর হয়ে তাদের মত |
বহুকাল, বহুদিন অপেক্ষায়
আবহমানকাল ধরে সে ইতিহাস আমার কাছে
প্রগলভ্ নেশা হয়ে
শপাঙ্ শপাঙ্ চাবুক মেরে যায় |
( হিরণ্যকশিপু তোমার হরি ভক্তির শেষ নেই )
অস্থিগুলো দেখা যায়, রশ্মি ফেলে,
সূর্য রশ্মি |
একস্ রে |
বাক্ পটু “বার্ক” আবার কাকে ‘ইম্ পীচ’ করবে ?

শতাব্দীর পর শতাব্দী তলিয়ে
আমি দেখেছি বিংশশতাব্দীর একস্ রে |
দেখেছি তার হাড়জড়ানো কাঠামোতে ঘূণ ধরেছে |
কেবলই নিশি ডাকে,
ভাঙ্গে ঘুম এ শতাব্দীর,
ইতিহাস পাতা উল্টোয়, অনির্বাণ,
চক্ষের পলকে ;
ইতিহাস---
বার বার বারংবার মনে পড়ে
পৃথিবী একদিন শ্যামলী ছিল,
অসীম নির্মল আকাশতলে, মাধুকরা,
প্রেম ভিক্ষা কিংবা
মত্ত মৃগযূথে প্রেম নিবেদন |

সভ্যতার রথচক্রে
পশুত্বের বহুবলিদান----
আজও আকাশে বিরহী মেঘ ভাসে
সোনালী সন্ধ্যায় আসে,
শতভিষা, নক্ষত্রেরা নিস্পন্দ নীরব |

মেঘদূত---
কালিদাস পৃথিবীর মায়া কাটিয়েছে বহুদিন |
দিকে দিকে ধর্ষিতা মানবিকতা কাঁদে
মানুষেরা কুকুর কুণ্ডলী |

কত উথ্বান পতন ঐশ্বর্য্যের কমণ্ডলু হাতে,
যুগের পর যুগ বেয়ে, শতাব্দীর গলিতে
বিংশ শতাব্দীর সরীসৃপ ডাঙ্গায় ঘোরে,
শিকারের খোঁজে
মত্তেভগমনা বিলোল কটাক্ষ হেনে
চৌরঙ্গীতে বাস ধরে,

সন্দেহের তির্যক চোখে আলোকের
সাতরঙ খান্ খান্ হয়
এলোমেলো হাওয়ায় ঠিকানা হারায়
আলোকের সাত রঙ্
ইন্দ্রধনুর সাতরঙ্----

আলোর সমুদ্র সময়
ফানুসের মত আয়ু তার
রঙ খুঁজবার দুর্বার মোহে
বিদ্রোহী হয়,
সন্দেহের তির্যক চোখে
খুঁজে পেতে রক্ত গোলাপ |


.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
ভেবেছিলাম : মানুষ হয়ে উড়বো
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


ঝড়ের হাওয়া অনেকবার বয়ে গেছে
মাঠের উপর দিয়ে
মঠের উপর দিয়ে
অনেক ধূসর বালি উড়তে গিয়ে পারলো না |
সমস্তটা আধোভিজে হয়ে আছে |

আমি উড়তে গিয়েও পারলাম না,
সে দোষ কাকে দিয়ে
আমার দোষের কথা ঢাকবো ?
বুঝেছিলাম, না বুঝেও
দোষের কথা, তবে
সে বুঝেছি অনেক পরে, ভেবেও
যে বুঝ-অবুঝ মন আমার, সবে
দাঁনা বেঁধে উঠেছিলো ঝড়ের হাওয়ায় | উড়তে গিয়েও
উড়তে পারলাম না | কবে
পারবো !

ভেবেছিলাম মানুষ হয়ে উড়বো
ডানামিলে
পাখী যেমন করে উড়ে
ডানামিলে
পরী যেমন করে |

পরী যেমন করে উড়ে মনের সোহাগে
রাজদূত হয়ে, ( কিংবা আবু বিন্ আদমের সেই এঞ্জেল )
কখনও বা স্বপনে কারো কাঙ্খিত হয়ে
কখনও প্রেমহারা যুবকের কোন একদিনের আবেগে |

ভেবেছিলাম মানুষ হয়ে উড়বো ;
পরীর সাথে পরীর মত করে |
পাখীর সাথে পাখীর মত করে ||

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
স্বর্গ ও শান্তি
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


ঢের বেলা হয়ে গেছে
এখনো কেন খোয়াভরা রাস্তায়
এপাস-ওপাস করো, খোয়াগুলো আরো
শিরদাঁড়া বের করে রয়েছে, এ রাস্তায়
কোনদিন পীচ্ পড়বে --- এ আশা কম
এমনই হয় কোন কোন দিন দুর্গম
তোমার বেলায় |

এ পথে স্বর্গে যেতে চেয়ে কি লাভ
সবুরে মেওয়া ফলে কিনা তর্কে এসে কি লাভ
তর্কে এসে কি লাভ চাঁদ সুকান্তের ঝলসানো রুটি
আর স্বর্গ আমার কল্পনার তিমির সরোবরে
কি না বিদ্যুৎ চমকায় |

সব ছেড়ে দিয়ে আমার ঠাকুরমা
দাদুর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেছিলো শ্মশানঘাটে
দাদুর স্বর্গ লাভে যেন আত্মার শান্তি হয় ;

আহারে আত্মা !  তার শান্তি |
সে শান্তির জল ঠাকুরমা দিতেন
যতদিন না তাঁর আত্মার কথা আমি প্রার্থনা করি |

এমনি করে এ রাস্তায় কোনদিন শেষ হবে না খোয়া
( আর ) পড়বে না পীচ্ তাঁর আশায় আত্মার শান্তি
চেয়েও আমার মনের স্বর্গে বহুবারের সঞ্চিত জল
ঘোলাটে দেখায় |

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
ঋতু পরিবর্তন
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


ভাষা নেই, ভাষাহীন এ শ্রাবণ
দিনক্ষণ, কি নিদারুণ
এমনভাবে কেটে য়ায়, সুখে
থেকেও যেন ভূতে পায়, অনেকে
আড়ষ্ট হয়ে ভরা মেঘের সন্ধ্যায়
কবিতায় মজে যায় |   তাদের কবিতায়
শ্রাবণের ধারা বয়ে যায় |

এ সন্ধ্যে না কি ভেকের পৃথিবী |

তারপর শীত, বসন্ত, হেমন্ত,
আরো কত কি অনন্ত
------ কাল হতে ঋতু পরিবর্তন ,
একই ধারায় প্রাকৃতিক অন্বেষণ
করে ছয় ঋতু বারো মাস |

বাতাসে এখন শীতের আভাষ
পড়ে যাওয়া শুকনো পাতার গাছটা বিচ্ছিরি দেখায় |
বসন্ত এলে
নতুন সবুজ কচিপাতা দেখা যায়
পল্লবিত শাখায় শাখায় |

টিকা নিয়ে যাও ---- দিকে দিকে বসন্ত |
ঋতু পরিবর্তন |
বসন্ত এসে গেছে জেনেও
হইনা এখন আনমন |
কেননা : তোমার গর্ভে ঋতু রঙ বদলায়
কোন এক আধুনিক প্রসূতি সদনে
সীজারিয়ান অপারেশানের টেবিলে ||

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
খেয়ার শেষে সূর্য ডোবে
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


দেখ, জীবনটা কেমন জানি ||  খেয়ার শেষে সূর্য ডোবে |
খেয়াপারাপার |
আহারে, বেসুরে এমন বাঁশী বাজায় কে ?
এ কোন জীবন, কোন সুর, তার স্বরলিপি ভরা
জীবনটা---
কেমন জানি, ঠিক যেন
এক বাউল, তার বৈতরণী ভেসে যায়
নদীর কূলে, অস্তাচলে |

এমন বাতাস, আর সুর তার |

আহারে বেসুরে এমন বাঁশী বাজায় কে,
এ কোন সুর, কি তার স্বরলিপি ||

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
খেয়ার হাল ধিক্ ধরায়     
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


শৈশবের বেলাভূমিতে আজও ইচ্ছামতী
আছড়ে আছড়ে যায়,
মনে মনে মিতালী পাতায়,
মনের কথায়
আজও বাঁধা পড়ে জোয়ারের জল  |        
ভাটার টানে বালুচরে
সেই সব মনে পড়ে |        

চন্দ্রের আলোকে বিমুগ্ধ হয়েছি আমি |
বিমুগ্ধ হয়েছেন জননী |
নিভৃতে বসে ছেলেকে নিয়ে
আশার আলোক নেভায় নি |
তবে কেন ভাঁটার টানে বালুচরে
সেই সব মনে পড়ে |

মনে হয় কে যেন বেসুরে আমার বাঁশী বাজায়
সেই স্বরলিপি, তার সুরে
একে বেঁকে চলে
আঁকাবাঁকা পথে
আলি পথে
দিগন্তে |

আমার মনে, নিভৃতে
বার বার খেয়ার হাল আসে, আসে যায় |
ধিক্ ধরায় |

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
কোন একদিনের ভাবনা
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


বেহায়া সন্ধ্যার শেষে আমরা ভাবের অন্তর্লোকে
ভেবেছি চিন্তার আবেশে |
বিমরা অথচ সুমনা শকুন্তলা
তার পিছিয়ে দেওয়া তপোবন ছিল বিমরা
বিমরা ছিল নিমরাজি
আর তরুলতা |
বিষাদের আবেগে বেহায়া সন্ধ্যার মত
তুমি কেন শকুন্তলা এমন হয়ে---
‘শিশু জন্মদেবে হরিণী’
সখীরা অশ্রুশেষে ভেবেছিল
ভাবের অন্তর্লোকে |
এমনি বিষাদেও আমার ছিলো আস্বাদ
কেননা ; বাবা মারা গেলেও
নবদম্পতি আমরা | তার স্বাদ আমি পেয়েছি শকুন্তলা
তুমিও পাবে, তার আশায়
আমার কপোত মন, উড়ে যায়
প্রথম জোয়ারের আগে |

ভেবে দেখ | আকাশ কেমন নির্মল |
কেমন রয়েছে শান্ত |
আমার ভাবের অন্তর্লোকে |

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
তন্তুবায় | তুমি তাঁত বুনো
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।

                      
কী অঙ্গীকার রেখে যাবো, কি ভরসায়
আজও
মেলে না দু’মন দোঁহে |                
নিরাশায় শপথ নিয়ে কেমন করে বলি ;
মেলে না দু’মন দেঁহে ----        

যাবো কি ভরসায় |  বিশুদ্ধ কোলাহলগুলো
আরো বেশী স্পষ্ট হয়ে আসে কানে |
সমত্সুক তন্তুবায় বোনে তাঁত
আমার মনে |

এলোমেলো হয়ে যায় মাঝে মাঝে
জটগুলো, উঃ কি জটিল ||        

ভেবে দেখি, নিরাশায় শপথ নিয়ে কেমন করে চলি
চল্ বে কি চল্ বে না, এ দুমন দোঁহে
সদা বিব্রত থাকে
স্থিতাবস্থায় ক্লান্তি আসে |

তন্তুবায়, তুমি তাঁত বুনো
আমার মনে |

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
আগষ্ট : ১৯৬৫
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


স্পষ্টতঃ দেখতে পাই, ঘাসে শেওলা
খুঁজে খুঁজে, সমাজ বিবর্ণ বেশ্যার অন্তরালে
মিছিলের দিকে পা এগোয় ;
বিকলাঙ্গ মনের জাগ্রত বাহিনী, জনতার মিছিল
সবে সোরগোল দিয়ে উঠে উঠে
ময়দানে কী ভীড় জমে ওঠে

তাই দেখে মনে পড়ে কোনদিন
কোন দিনকার মিছিলের মুখ |        
আবার সেই মিছিলের মুখ |
বিবর্ণ  বেশ্যার অন্তরালে
সমাজে |             
আমি এই সমাজ নিয়ে আছি
বিকলাঙ্গ মনের জাগ্রত মিছিলে ||

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
দিনান্তের রঙ   
কবি আশুতোষ মজুমদার
১৫ই অগাস্ট ১৯৬৫ তারিখে প্রকাশিত, এশিয়া পাবলিশিং-এর গীতা দত্তের প্রকাশনায়,
বিদ্যুত চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় , “বাবা ও মাকে” উত্সর্গ করা, পঞ্চাশ
পৃষ্ঠায় ২২টি কবিতা নিয়ে কবির কাব্যগ্রন্থ “সন্দেহের তির্যক চোখে সাতরঙ” থেকে নেওয়া
কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, ‘সত্তরের শহীদ লেখক
শিল্পী’ ১৯৯৮ থেকে।


উদ্দীপ্ত জীবন থেকে পাখী নীড়ে ফেরে
বিমর্ষ সন্ধ্যায় একদা আউটরাম ঘাটে
প্রচণ্ড ভীড়ের মাঝে
কে যেন বলে উঠেছিলো,
‘পতিত পাবনি গঙ্গে !        
এ বারের মত তরিয়ে দাও |  আর কত দিন
এ বোঝা, মাগো |’

তখন রক্তদাগ পশ্চিম ছুঁয়ে
পাখীরা আউটরাম ঘাটের উপর দিয়ে
নীড়ে ফেরে, ঘরে ফেরে |
চার পাশ এমনি করে আবছা হয়ে আসে |

জানি না কোন উদ্দীপ্ত জীবনের
হ্যাচ্ কা টানে কাটলো স্বপনের ঘোর |
উজ্জ্বল হয়ে উঠলো দু’নয়ন---
দু’নয়ন ভরে দেখা দিবাস্বপ্নে কাতর |

দিবাস্বপ্নে হয়োনা কাতর এমন |
( তখনও প্রখর রোদ্দুর ---
আর রোদ্দুর লুকোচুরি খেলে দীর্ঘ
দেবদারুর ফাঁকে ফাঁকে,
মাঠ ভরে ঘুঘুরা উড়ে উড়ে ফেরে )
উড়ুক উড়ুক তারা অনেক আবেগে,
গাছে গাছে
মাঠে মাঠে |

দিনান্তে সূর্যাস্তের কথা ভেবো না |

.                 **************************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর