পত্র প্রসাদ ২য় খণ্ড, পৃঃ ৩৯০, কিঞ্চিৎ পত্র প্রসাদ আছে কবি অতীন্দ্র লাল দাশ রচনা – ২৪ / ০৯ / ১৯৫৯, উদয়পুর শ্রীমতী মাধুরীকণা দাশ প্রকাশিত “পঙ্কজ” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
কৃষ্ণ-গতি ২য় খণ্ড, পৃঃ ৩৯৩, ‘ধাবমান শ্রীকৃষ্ণ’ কবি অতীন্দ্র লাল দাশ রচনা – ২৪ / ০৯ / ১৯৫৯, উদয়পুর শ্রীমতী মাধুরীকণা দাশ প্রকাশিত “পঙ্কজ” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
বন্ধু দরশন লাগি পাগল অতুল, কেমনে পাইবে তাঁর চরণ রাতুল | ট্রেনে চলিয়াছে আর ভাবে আনমনে কৃষ্ণ ধ্যান, কৃষ্ণ জ্ঞান, কৃষ্ণ মনে প্রাণে | ভাবিতে ভাবিতে তার শিহরিত কায়, সহসা অরূপে দেখে রূপের মায়ায় | যথা হেরে কৃষ্ণ স্ফুরে মুক্ত বাতায়নে, রূপের অঞ্জন তার লেগেছে নয়নে | বনমালা গলে দোলে শ্যামল কিশোর, মৃদু মৃদু হাঁসিতেছে গোপী মন চোর | চরণে নুপূর বাজে শিখি পাখা চূড়ে, কটীবাস আছে বাঁশী যায় উড়ে উড়ে ! চলন্ত গাড়ীর সনে ধায় পীতাম্বর, রূপে তার উদ্ভাসিত সুনীল অম্বর | বিস্মিত অতুল তায় ফিরিল দক্ষিণে, লোচন ফিরাতে হেরে কমল লোচনে | অদ্ভুত অপূর্ব দৃশ্য এও কি সম্ভব, বিদ্যা বুদ্ধি অতুলের মানে পরাভব | বিস্ময় পুলকে আঁখি ফিরাইল বামে, সর্বত্র দেখিতে পায় মদনমোহনে | কৃষ্ণ-প্রেম-রসে সিক্ত অতুলের মতি | মানস সরসে হেরি নবীন কিশোর, কৃষ্ণানন্দে মত্ত সে যে হইয়া বিভোর |
হরেকৃষ্ণ এই দিকে ২য় খণ্ড, পৃঃ ৩৯৬, "হরে কৃষ্ণ এই দিকে" কবি অতীন্দ্র লাল দাশ রচনা – ২৪ / ০৯ / ১৯৫৯, উদয়পুর শ্রীমতী মাধুরীকণা দাশ প্রকাশিত “পঙ্কজ” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
কলিকাতা আসিয়াছে চম্পটী ঠাকুর চিদ্ ঘন চিদানন্দে চিত্ত ভরপুর | গঙ্গাস্নানে স্নিগ্ধ করি সকল শরীর, বন্ধু-দরশন তরে অন্তর অধীর | ভাবাবেশেতে চলে যায় দুই বাহু তুলি ভক্তি বিগলিত ধারে সিক্ত পথ ধূলি | হেনকালে মৃদু মন্দ পবন হিল্লোল, অমৃত লহরী যেন হেলে দুলে চলে | বীণা বিনিন্দি, কন্ঠ ভেসে এল কানে, “হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, এদিকে, এখানে |” বিস্মিত পুলকে হেরে অতুল সুজন, তার পানে চেয়ে আছে প্রিয় বন্ধু-ধন | আনন্দেতে অতুলের পুরিল হৃদয়, বাঞ্ছিত মিলন রসে হইল তন্ময় |
কীর্তনব্রত ২য় খণ্ড, পৃঃ ৪০১, দীনবেশ ও তপস্যা কবি অতীন্দ্র লাল দাশ রচনা – ২৪ / ০৯ / ১৯৫৯, উদয়পুর শ্রীমতী মাধুরীকণা দাশ প্রকাশিত “পঙ্কজ” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
বন্ধু বলে চম্পটীরে শুন মহাশয়, গৈরিক ধারণ তব উচিৎ না হয় | ত্যাগ ও বৈরাগ্য মন্ত্রে দীক্ষা আছে যায়, কলঙ্ক কালিমা লেখা নাহি বাসনার | হৃদয় গৈরিক রাগে হয়েছে রঞ্জিত, গেরুয়া সন্ন্যাস ভুষা এ শাস্ত্র বিহিত, শুভ্র বাসে আবরিয়ায় অমলিন দেহ, শুভ্র চিন্তা কর আর ভক্তি প্রীতি স্নেহ | বৈষ্ণবের হরি ভক্তি কৃষ্ণ সেবিবারে শুভ্র পুষ্পসম হোক হৃদয় তোমার | গৈরিক ছাড়িয়া তাই শুভ্র বাস পরি, হরি নাম উদ্ যাপিয়া ব্রত নিষ্ঠা করি | টহল কীর্তন নিত্য – এই নাও পাঠ জগন্নাথ ঘাট হতে যাও কালীঘাট | স্নান সার দুই ঘাটে যাতায়াত আর ধর করতাল, কর কর্তব্য তোমার |
নাম নামী লীলা ২য় খণ্ড, পৃঃ ৩৯৯, “নাম নামী ও প্রেম” কবি অতীন্দ্র লাল দাশ রচনা – ২৪ / ০৯ / ১৯৫৯, উদয়পুর শ্রীমতী মাধুরীকণা দাশ প্রকাশিত “পঙ্কজ” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
হরকুমারের বাড়ী শ্রীবন্ধু সুন্দর আনমনে পায়চারি করে নিরন্তর হে কালে আসে সেথা শ্যাম মনোহর, কিশোর বালক এক নধর অধর | সুরের লহরী তুলি গাহে কৃষ্ণ নাম, মধু-স্বর মধু-রূপ নয়নাভিরাম | মন্ত্রমুগ্ধ করে সবে কীর্তনের রসে চম্পটী ভাবিতে থাকে বিস্ময়ে তরাসে, “এই ত বালক সেই যারে দেখেছিনু, ধাবমান গাড়ী হতে ধাবমান কানু, সেই মুখ সেই চোখ অঙ্গের লাবনী, দেখে যে মনে হয় চিনি তারে চিনি | অতুল চিন্তিত মনে ভাবে কুতুহলে, গাহিতে গাহিতে শিশু কোথা গেল চলে ||
ছাত্রবন্ধু ২য় খণ্ড, পৃঃ ৪০০, “নাম নামী ও প্রেম” কবি অতীন্দ্র লাল দাশ রচনা – ২২ / ০৯ / ১৯৫৯, উদয়পুর শ্রীমতী মাধুরীকণা দাশ প্রকাশিত “পঙ্কজ” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
কলেজে ছুটির পরে বিকাল বেলায় কতিপয় ছাত্র এল দর্শন আশায় বন্ধুবরে ছাত্রবন্ধু ভাবি মনে মনে ভক্তবর হর রায় নিবাস সদনে | স্নেহেতে আদরে সবে বসায়ে নিকটে কুশল পুছিল কত বন্ধু অকপটে ! সিক্ত করি করুণায় মঙ্গল আশীষ মধুমাখা শিষ্ট বাক্যে তুষিল সবারে, জননীর মত স্নেহ কত না আদরে | বন্ধু বলে, “করতালি দাও সবে মিলে, মধুর কীর্তন কর হরি হরি ব’লে |” মিষ্টান্ন প্রসাদ দিল বালকবৃন্দেরে, সকলে প্রণাম করে ছাত্রবন্ধুবরে |