কবি অতীন্দ্রলাল দাশের কবিতা |
নাম নামী কবি অতীন্দ্র লাল দাশ রচনা – ১১ / ১২ / ১৯৫৮ শ্রীমতী মাধুরীকণা দাশ প্রকাশিত “পঙ্কজ” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হরিনামে মাতোয়ারা বালক জগৎ পান করি নাম সুধা মিটে যে সকল ক্ষুধা নাম মন্ত্রে দূরে যায় আপদ বিপদ | সঙ্গীদল নিয়া সাথে কীর্তন লীলায় মাতে মধু সুরে উঠে বোল নাম মধুময় | কীর্তনে কীর্তনে হয় অপূর্ব আবেশ শিহরি শিহরি উঠে অঙ্গে অঙ্গে দীপ্তি ফুটে সুরে সুরে লাস্যে নাচে বন্ধু সুরেশ | নব গোরা নাচে যেন শিশু বন্ধু রায়, হেম দন্ড বাহু দ্বয় ঊর্দ্ধে তুলি সমুচ্চয় নাম বোলে নাচে গায় জগৎ মাতায় | রাতুল চরণশোভা ছন্দে দোলে কমল নয়ন দুটি ভাব মুগ্ধ উঠে ফুটি বদন ভাসিয়া যায় নয়নের জলে | নামময় নামী যেন বন্ধু সুধাকর, হৃদয় বীণার তারে অনাহত ঝঙ্কারে আনন্দে ভাসিয়া যায় সর্ব চরাচর | সর্ব দেহে মনে প্রাণে জীবন স্পন্দনে, নাম রসে মহা ভাব নামময় আবির্ভাব নাম, রূপ, গন্ধ, স্পর্শ, সুন্দর ভুবন | নামের সাগরে ডুবে কভু মূর্ছা যায় ভাবের সমাধি মাঝে নামের মুরলী বাজে শুভ শতদল সম ধূলাতে লুটায় | . **************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
প্রহ্লাদ কবি অতীন্দ্র লাল দাশ রচনা –১৩/ ১২ / ১৯৫৮ শ্রীমতী মাধুরীকণা দাশ প্রকাশিত “পঙ্কজ” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হরিনামে মাতোয়া জগৎ সুন্দর হরি কথা, হরি নাম, হরি ভক্ত, যাত্রা গান, জগতের সদা প্রিয় হরি-পরাত্পর | * * * অগণিত শ্রোতা সনে বসি নিরুপম শুনিতেছে ভক্তকথা ‘প্রহ্লাদ চরিত্র’ গাথা ভাবেতে বিভোর হল বন্ধু রতন | * * * হিরণ্য কশিপু সুত প্রহ্লাদ কিশোর, হরি ধ্যান, হরি জ্ঞান, হরি-ভক্ত-পরায়ণ, হৃদয় হরেছে তার হরি মনোচোর | বিষ্ণুদ্বেষী পিতা তার কুলিশ বচনে শাসায়ে বলিল তারে, “হরি নাম ছাড় ওরে--- বাঁচিবার সাধ যদি থাকে তোর প্রাণে” ; “হরি তোর পিতৃ অরি, ভজিস তাহারে ! পাইবি উচিত শিক্ষা, কিছুতে না পাবি রক্ষা, হরি সহ তোরে আমি ডুবাব সাগরে |” “ভষ্ম করি দিব তোরে ভীষণ অনলে, লয়ে সে চিতার ছাই হরি মুখে দিব তাই অথবা মরিবি, দুষ্ট হস্তী-পদ-তলে |” শিশু বলে, “ভজ হরি, তবে মুক্তি পাবে, অনলে অনিলে হরি, জলে হরি, স্থলে হরি, কে কারে বধিবে, পিতঃ, কে কারে রাখিবে |” এত শুনি দৈত্যপতি গর্জিলে ভীষণ, “বধ এই হরি ভক্তে আজি তার তপ্ত রক্তে তৃপ্ত হবে হৃদি মোর শান্ত হবে মন |” মশানে লইয়া গেল প্রহ্লাদের তখন ; হরি ভক্তে বধিবারে শাণিত কৃপাণ করে ঘাতক দাঁড়াল আসি, নিকট শমন | ভক্ত-শিশু ভক্তি-পূতঃ ভক্তিতে মগন ; কৃতান্তে সম্মুখে হেরি, কাতরে ডাকিছে, “হরি, কোথা আছ, প্রিয়তম, দাও দরশন ; জীবন গ্রাসিবে এবে আসন্ন মরণ , যুগল রূপেতে তবে আর কবে দেখা দিবে , দেখা দাও বনমালী, জুড়াও নয়ন |” * * * ভক্তের ক্রন্দন রবে বন্ধু বিচলিত , ভক্তের লাঞ্ছনা হেরি, আকুলিত বন্ধু হরি, ভূতলে লুটায়ে পরে হইল মূচ্ছিত | . **************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |