কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক - জন্মগ্রহণ করেন খুলনা সদর মহকুমার চন্দনীমহল গ্রামে। বাবা অরবিন্দ
ভৌমিক, মা সাবিত্রী ভৌমিক। কবিরা এক ভাই ও পাঁচ বোন।
তিনি তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের খুলনার দৌলতপুর ব্রজলাল কলেজ থেকে আই.এস.সি পাশ করে
কলকাতার টালিগঞ্জে চলে আসেন ১৯৬১ সালে। বি.কম পাশ করেন কলকাতার ক্ষুদিরাম বসু কলেজ থেকে।
১৯৭০ সালে তিনি নিখিল দাসের কাছে সেতার শেখা শুরু করেন। বছর আটেক শেখেন। ডান পায়ের
চোটের জন্যে পা মুড়ে বসতে পারতেন না। ফলে সেতার ছেড়ে দিতে হয়।
কবি ১৯৬২ সালে বার্ণ এন্ড কোম্পানীতে ইঞ্জিনীয়ারিং অ্যাপ্রেন্টিস হিসাবে ঢোকেন। তিন বছর ছিলেন
সেখানে, ১৯৭২ যোগদান করেন ক্যালকাটা রিমেডিজ-এ মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টিটিভ হিসেবে। ১৯৮০ সাল
পর্যন্ত চাকরী করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় ঠিকাদারের কর্মচারী হিসাবে বিভিন্ন কাজ করেছেন। ১৯৮২
সালের ২রা জুন তাঁর বিয়ে হয় রামদুলাল প্রসাদের মেয়ে শোভা মৌর্যের সঙ্গে। তাঁদের তিন সন্তান।
১৯৬০ সালে পশ্চিম পাকিস্থানে আয়ুব খানের বিরোধিতার জন্য বিদ্যুৎ ভৌমিক পুলিশের লাঠি খান।
খুলনার দৌলতপুর ব্রজলাল কলেজের ছাত্র আবদুল হাকিমের কাছে প্রথম মার্কসবাদের কথা শোনেন। ১৯৬৫
সালে তাঁর এক বন্ধু রাজনীতির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। রাজনীতিতে না গেলেও এই বিষয়ে তিনি
সচেতন হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে চারদিকের রাজনীতির সঙ্গে পরিচয় হয়। ১৯৮২ সালে তৈরী হয় “গণভেরী
সাংস্কৃতিক সংস্থা”। সেই সংস্থার সঙ্গে বা এককভাবে গ্রামেগঞ্জে বা বিভিন্ন প্রদেশে গণসংগীত গেয়ে
বেড়িয়েছেন, গান লিখেছেন। ১৯৯৭ সালে নকশালবাড়ির তিরিশ বত্সর উপলক্ষে ময়দানে একটি বড়ো
জমায়েত ও সফল অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেন। তারপর থেকে রীতিমত অসুস্থ তিনি। তবুও চেষ্টা করেন
প্রতিবাদ প্রতিরোধে নিজেকে সামিল করতে বা গণসঙ্গীতকে পুনর্জীবিত করতে। সেইজন্য কবি গণসঙ্গীতকার
দিলীপ বাগচীর মৃত্যুতে তৈরী করেছিলেন একটি সংস্থা। কিন্তু তা নিয়ে এগোনো যায় নি।
২০০৬ - ০৮ সময়কালে চলা সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনে তিনি প্রতিবাদী গান রচনা করেছিলেন। ১১ই জুন
২০১০-এ জঙ্গলমহলে যৌথবাহিনীর অপারেশান গ্রীনহান্টের বিরুদ্ধে গান গেয়েছিলেন কবীর সুমনের সঙ্গে
কলকাতার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিট্যুট হলে।
“নিশান্তিকা গণসাংস্কৃতিক সংস্থা” একটি ক্যাসেট প্রকাশ করেন “মিছিলের গান” --- সেখানে বিদ্যুৎ
ভৌমিকের তিনটি গান গেয়েছেন তাঁরা কোরাসে - “যদি গতর খেটে ভাত কাপড় আর কাজ না মেলে”, “বাজে
কাঁই না না কাঁই নানা না” এবং “দিচ্ছি দেবোর ঝুলি ফেঁসে”। ১১ই জুন ২০১০-এর অনুষ্ঠানে একটি ডি.ভি.ডি
প্রকাশ করেছেন ইউনাইটেড স্টুডেন্টস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট “বিদ্রোহের গান” নামে।
তাঁর গান বা কবিতার কোনো বই প্রকাশিত হয়েছে বলে আমরা এখনো জানতে পারিনি। স্বপন দাসাধিকারী
সম্পাদিত এবং জলার্ক-র এপ্রিল-সেপ্টেম্বর ২০১০ সংখ্যায় (সঙ্গীত সমাজ ইতিহাস, বিদ্যুৎ ভৌমিক ক্রোড়পত্র
সহ) কবির ৫০টি গান প্রকাশিত হয়েছে। আমরা সেখান থেকেই তাঁর গান মিলনসাগরে তুলে দিলাম।
কবি গণসঙ্গীতকার বিদ্যুৎ ভৌমিকের গান ও কবিতা তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে এই
প্রচেষ্টার সার্থকতা।
আমরা কবি রাজেশ দত্তর কাছে ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ, কবি বিদ্যুৎ ভৌমিকের এই পাতাটি তৈরী করার
সবরকম তথ্য, ছবি, গান আমাদের দেবার জন্য তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে। আমরা আরও কৃতজ্ঞ শ্রী
চিররঞ্জন পালের (+৯১৯৪৩৪৫১৬৮৯৮) কাছে তাঁর নানাভাবে এই পাতাটি তৈরী করতে সাহায্য করার
জন্য। কবি বিদ্যুৎ ভৌমিকের ছবি, কবিতা ও গান নেওয়া হয়েছে স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, "এবং
জলার্ক" পত্রিকার, "সঙ্গীত সমাজ ইতিহাস" এপ্রিল-সেপ্টেম্বর ২০১০ সংখ্যা থেকে নেওয়া। আমরা তাঁকে
জানাই আমাদের অশেষ কৃতজ্ঞতা।
উত্স - স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত, "এবং জলার্ক" পত্রিকার, "সঙ্গীত সমাজ ইতিহাস" এপ্রিল-সেপ্টেম্বর
. ২০১০ সংখ্যা।
কবির সঙ্গে যোগাযোগ -
চলভাষ - +৯১৯০০৭৭৮১৩৬৫
কবি বিদ্যুৎ ভৌমিকের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
আমাদের ই-মেল - srimilansengupta@yahoo.co.in
এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ২৫.১০.২০১৫
...