কবি চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় - বিংশ শতকের দ্বিতীয়-তৃতীয় দশকের জনপ্রিয় ছোট গল্পকার।
জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত বাংলার মালদহ জেলার চাঁচল-এ। পিতা গোপালচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা
মুক্তকেশী দেবী। তাঁদের আদি নিবাস ছিল যশোহর জেলায়। ১৮৯৬ সালে চারুচন্দ্র, দুমকা নিবাসী রাধারানি
দেবীর সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। ১৯০০ সালে রাধারানি দেবীর মৃত্যু হলে তিনি দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন
পদ্মাবতী দেবীকে। অধ্যাপক কনক বন্দ্যোপাধ্যায় এঁদের সন্তান।
হুগলী জেলার বলাগড় হাই স্কুল থেকে ১৮৯৫ সালে তিনি এনট্রান্স পরীক্ষা পাশ করে ১৮৯৬ সালে কলকাতার
জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইন্সটিটিউশন থেকে এফ.এ. (First Arts) পাশ করেন। ১৮৯৯ সালে তিনি কলকাতার
প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন।
তাঁর সাহিত্যিক জীবনের শুরু “মেঘদূত”, “মাঘ” প্রভৃতি পত্রিকায় সংস্কৃত সাহিত্যের সমালোচক হিসেবে।
এরপর ইনডিয়ান পাবলিশিং হাউসে যোগ দিয়ে পুস্তক-প্রকাশন বিষয়ে কৃতিত্ব অর্জন করেন এবং
সম্পাদক ও অনুবাদক হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন। তিনি সহ-সম্পাদক হিসেবে “প্রবাসী” পত্রিকার
সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সেখানেই প্রকাশিত হয় “মরমের কথা”, তাঁর প্রথম ছোট গল্প।
বাংলা শব্দতত্ত্ব ও ভাষার উপর তাঁর দক্ষতা ছিল। ১৯১৯ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার
অধ্যাপক রূপে যোগ দেন। ১৯২৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৯২৮
সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক এম.এ. তে ভূষিত হন।
তাঁর রচিত পঁচিশটি উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে “স্রোতের ফুল”, “পরগাছা”, “হেরফের”, “আগুনের ফুলকি”
(১৯১৪), “চোরকাঁটা” (১৯১৯) প্রভৃতি। তাঁর রচিত ছোটগল্পের মধ্যে রয়েছে “বরণডালা” (১৯১০), “পুষ্পপাত্র”
(১৯১০), “সওগাত”, “চাঁদমালা” (১৯১৫), “বনজ্যোত্স্না” (১৯৩৮) প্রভৃতি।
তিনি রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন কবিতার ব্যাখ্যা ও টীকা রচনা করেন “রবি রশ্মি” (১৯৩৮) নামক গ্রন্থে। ভাষা,
সাহিত্য ও ইতিহাস বিষয়ে তাঁর রচিত নানা প্রবন্ধ “ভারতী” ও “প্রবাসী” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি
মহাকবি ভাসের “অবিমারক” নাটকের এবং কয়েকটি উপন্যাস ও কিশোরপাঠ্য গ্রন্থের সার্থক অনুবাদ
করেন। “ভাতের জন্মকথা” তাঁর একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য শিশুপাঠ্য গ্রন্থ। তিনি “মহাভারত”, “বিষ্ণুপুরাণ”,
“শূন্যপুরাণ”, “কবিকঙ্কণচণ্ডী” প্রভৃতি গ্রন্থের সংকলন ও সম্পাদনাও করেন।
কবি চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ছবি ও তাঁর জীবন সম্বন্ধে আরও তথ্য যদি কেউ আমাদের পাঠান
তাহলে আমরা, আমাদের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ প্রেরকের নাম এই পাতায় উল্লেখ করবো।
আমরা মিলনসাগরে কবি চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে
পারলে এই প্রচেষ্টার সার্থকতা।
উত্স – শিশিরকুমার দাশ, সংসদ বাংলা সাহিত্য সঙ্গী, ২০০৩।
. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত “সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান”, প্রথম খণ্ড, ১৯৭৬।
কবি চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
আমাদের ই-মেল - srimilansengupta@yahoo.co.in
এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ৮.৫.২০১৬
...