কবি চিরশ্রী দেবনাথের কবিতা
*
বেত্রবতী
কবি চিরশ্রী দেবনাথ


বালিশ, বিছানা এবং কিছুটা
একান্ত মনখারাপ ছেড়ে
জানালা খুললো বেত্রবতী
বসন্তকালীন রোদ ঢেকে দিল
তার ছোট স্তন,  খড়খড়ে কালো গাল,
শুকনো ঠোঁট, আর ঝড়ো চোখকে।
ঘুম ভেঙে যাওয়ার আগে
বেত্রবতীর এই শারীরিক রাজ্যপাট
নিগূঢ় বসন্তে অভিমানী থাকে....
বেত্রবতীর সব ব্রণ দাগ রেখে গেছে অবেলায়,
কৈশোর আছড়ে পরে বারংবার
নিঃসার একান্ত অভিসারে তারা সমুদ্র শুশুক..
বেত্রবতীর দিন ভালো লাগে না
রাত কেবলি রাত কেন হয় না এ জীবনে..
দীর্ঘ এক সানাই কেন বেজে যায় না নহবতে
তার সব নিজস্ব প্রেমেদের স্বয়ম্বর হতেই থাক্..
গায়ে মাথায় মুখে বেত্রবতী মেখে নেয় অলীক সুখ
বিবাহিতা কেবলি বিবাহিতা তার এই অবৈধ বিলাস।
কারা যেন আঁশটে মুকুলগন্ধ লিখে যায়
ঋতুর ঘাটে ঘাটে পাত্র চাই বিজ্ঞাপনে,
দিনশেষের রজঃস্বলা,  এই বসন্তযাপন
গা কুটকুটে অসহ্য ব্যথা, তাকেই কেন শুধু?
কিছু শিমূল, কিছু আবির বেত্রবতীর ঠোঁটে
একটি কামড় রেখে যাবে,
কথা হয়ে উড়ে গেছে সাতজন্ম পরে..
তাই দীর্ঘ, দীর্ঘ এই সব রাত
বেত্রবতীকে জেগে থাকতে হয়,
রূপং দেহি, রূপং দেহি, রূপং দেহি...
বেত্রবতী মা হয়, তার সব সন্তানেরা অযোনিসম্ভূত।
কুৎসিত ছোপ ছোপ দাঁতে, গিলে ফেলে মুকুল মদিরা
কষা স্বাদে চোখ বন্ধ হয়ে আসে
একান্ত একান্ত এই সুখবিলাস
তাম্রবরণা বসন্তে বেত্রবতী ফুটতে থাকে
নিখাদ কালো দহন হয়ে...
জানালা বন্ধ করে দেয় বেত্রবতী
জন্ম, জন্ম এবং আরো
সাতজন্ম পর সে প্রিয়া হবে....

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
ছবি মেয়ে
কবি চিরশ্রী দেবনাথ


ধর্ষণের পর থেকে এক ছবিমেয়ে
শুধু সঙ্গমের ছবি আঁকে
মোহ, সাপ, কলা, রস, ছোঁয়াচে অসুখ
ছড়িয়ে ছড়িয়ে আঁকতে থাকে বাৎসায়ন
আনতচোখের মেয়েটি দিনের পর দিন
হয়ে উঠছে অশ্লীল কেবলি অশ্লীল
তার চোখে ঢেউ হয়ে নেমে আসে জোয়ারের শরীর
এতো শরীরী সে তো ছিল না কখনো
হলুদরঙা মেয়েটির বারান্দার
একপাশের ঘরে ঝুলে থাকা
দেয়ালে  এ শুধু নোংরা ছবি
মোমরঙা ঊরুতে যে তিল ফুটেছিলো
সেখানে সে তার পেন্সিল ডোবায়
দীর্ঘ পথ খুলে যায়, এতো এতো মেয়ে সেখানে
চারদিকে ফুল ক্ষত, সাদা নখের আঁচর
আচ্ছন্ন এক রাজপথ ... রঙে জলে ভেজা,
ছবির পর ছবি বসে আছে হাঁটু ভেঙে....
ছবিরও যোনি থাকে, যোনিতে  তুলি
তুলিতে আঁকছে সেই মেয়ে শ্বেত মরুভূমি.....

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
ঊনিশে মে, ভাষা শহীদ দিবস
কবি চিরশ্রী দেবনাথ


হিজলের আলোছায়া মেলা আজ এই  দ্বিপ্রহরে,
আমি জানি, তোমরা আমাকেই শুনতে এসেছো
আমার শ্যামল পায়ে মেলে দিতে এসেছো
দীঘল ভাষণ।
ভুলে যাও কেন!
আমার  ট্রেন চলে যাওয়া প্ল্যাটফর্ম,
জুতো হারানো শৈশব শুয়ে আছে তোমারি পকেটে
দোমরানো কাগজকুচি হয়ে ...
একঝাঁক যুবতী মাছরাঙা যেভাবে
ফেলে গেছে আহত মাছেদের কামরাঙা উঠোনে,
অন্ধকার নিভে যাওয়া ভোর রাতে আমিই সেই অভিমান,

তোমাদের শিশুদের মুখ ভর্তি লালা,
লালায় লোলে আমি চুঁইয়ে চুঁইয়ে ডুবিয়ে যাচ্ছি
মৌমাছি বসত,
এই যে কারুকাজ আঁকা একচিলতে ছায়া ঘর
মাটি মাটি মিশে থাকা রান্না গন্ধ, ঘাম ত্বক,
তোমার প্রেমিকার নিটোল বাহু ভেবে ...
স্পর্শ দিও কোন বেহাগ নীশিথে।
যদি ভাবো মা?
তবে কি সোহাগ একটু কম করো
......বলে মনে হয় না তোমার?
যেন কিছু  পশমিনা  দামী শাল মাঝে মাঝে,
ওম দেয় অকাল স্যাঁতসেঁতে বর্ষায়।
লাল হলদে ঔষধি আদর, মুখ গম্ভীর দায়সারা সঙ্গ
ধনেখালি শাড়ি মেলা দোকানি শরত,
বোধনের তাড়াহুড়ো চন্ডীপাঠ,
বছরে একবার বিজয়া প্রণাম,
কিছু বেসুরো ঢাকের আওয়াজে
বরাক থেকে উঠে আসা আরেকটি ছায়া ছায়া নদী
ঘোলা জলে  জুরীর  মেঘলা বিকেল...
কেন যেন দুর্বল হয়ে ছড়িয়ে পরে আজকাল
আমার হলকা নিঃসঙ্গ শ্বাস, ছুঁয়ে থাকে এক
সোনালি খড়ের শীত মাঠ ...
আমাকে প্রেমিকা ভাবো...... পারো না ভাবতে?
সকাল দুপুর রাত দেখবে কেমন আচ্ছন্ন সময় দিই
কেমন ফাঁকহীন তেওড়া তাল.....
সোঁদাল গাছের ছায়ার মতো ডুবন্ত বেঁচে থাকা
সময়ের ভগ্নাংশে উড়ে যাবে ক্লান্তি, বিরক্তি, অলস মোহ
পাগলের মতো লিখবে আমাকে বিহংগ কলমে,
.........তোমার তৈরী মাঠে,
আমার সঙ্গে খেলবে তোমার পুরুষ আঙুল দিনরাত,
দুগ্ধ কলস  সবুজ গাভীর চিকন লোমে উচ্ছসিত ঋতুস্নান।
একবারও মনে হবে না,
বারান্দায় পরে থাকা একটি অকেজো ইজি চেয়ার..
মনে হবে অবন ঠাকুরের রূপককথা
কালো কালো গুচ্ছ গুচ্ছ প্রেম,
জোৎস্না ঝুলন, দোলনায় যুগল মেঘমল্লার  
এভাবেই রাখো না আমায়, নাহয় বদলে দিলে সংঙ্গা
বদলে দিলে শীতের পোশাকী উষ্ণতা,
বুক থেকে জোড় করে তুলে আনা বিবেক ..
তার চেয়ে  সঙ্গীনীর কফি মগে দিও যৌথ চুমুক
ভেবে দেখো আমি তোমার আসন্নপ্রসবা তরুণী গ্রাম
জন্ম নেবে না আমার কোন ভেজা সন্তান,
আমি শুধু তোমার ...তোমার ....কাঙ্খিত...
ধানভারে নুয়ে পরা পূর্ণগর্ভা তরুনী প্রেমিকা.....


বরাক ...আসামের একটি নদী
জুরী....ত্রিপুরার একটি নদী

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
মিশ্রগুচ্ছ
(প্রকাশিত "দৈনিক সংবাদ "সংবাদ বিচিত্রা, রবিবারের পাতা)
কবি চিরশ্রী দেবনাথ


এক
গুলঞ্চ বেলা

ভীষণ গভীর রাতে/
মধ্যবিত্ত শহরের খোলা ছাদগুলোতে/
জমা হয় শহরের সব বিশ্রী মেয়ের প্রেম/
তারা রঙ মাখে, চুল বাঁধে, চুলে দেয় গুলঞ্চ ফুল/
সেইসব প্রেমেরা গুছিয়ে বসে ফিসফিস করে/
শহর জেগে গেলেই আবার তারা /
ঢুকে যায় ঘুপচি মেয়ের গহ্বরে/
প্রতিরাতে  এভাবে তারা বুড়ো হয়/
তারপর এক গরীব দুপুরে /
মেয়েরা  তাদের প্রেম বেঁচে দেয়/
সমাপ্তি সঙ্গীত গায় একটি মেয়ে/
বাকি মেয়েরা দেখে দিনে দিনে/
শেষ হয়ে আসছে গুলঞ্চ ফুলের ঝোঁপ...../


দুই
মাংসাশী সুর

মাংস কাটার দোকানের কাছে বসে আছে/
এক পরিযায়ী বেহালাবাদক/
ছাল উঠছে, রক্ত ঝড়ছে টুপটাপ/
বেহালায় জোৎস্না সুর,চোখ বন্ধ/
পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে মাংস কাটার গান/
ছাল উঠছে, রক্ত ঝড়ছে টুপটাপ /
বসন্তের পশুরা সার সার গান শুনছে /
ঝরে ঝরে পড়ছে লোম, পোকা /
সোনালি চামড়ায় ভেসে যাচ্ছে মাংস/
সোনালি ছাল জমছে আর জমছে/
বেহালার সুরে এবার শুধু/
ঘুমিয়ে পড়ার গান, ঝরা লোমের গান...../


তিন
মনখারাপের রিংটোন

কোন এক ভূমিকম্পের নবীনভঙ্গুর/
পর্বতমালায় একটি কুটির আমাদের/
সামনে বহতা রাস্তা/
প্রহরে প্রহরে কেঁপে ওঠে মাটি /
বদলে যায় রাস্তা, দৃশ্য, বারান্দার চেয়ার/
শুধু একটি ঝর্ণা পুরনো, 'মনখারাপের '/
এতো এতো বার মাটি কেঁপে ওঠে /
ঝরনাটি  তবু ঝরতেই থাকে ..... /
তার একটিই শুধু রিং টোন ..../


চার
মহাবলীপুরম্

সপ্তম শতাব্দীর তীরে ভেসে আসা একটু সমুদ্রক্ষণ/
পল্লবসাম্রাজ্যের হীরকদুপুরে/
অগোছালো একটু বিংশ মানবী/
পাথর চিনেছে সবই /
ধাতব নূপুর, সুগন্ধ পুষ্পবাস/
পায়ের ছাপে কড়কড়ে বালিপতন/
সুনামীর ঝড়ো শ্বাস/
আর
.........এই তো সেই পালিয়ে যেতে থাকা মেয়েটি..../


পাঁচ
কাঞ্চীপুরম্

এতো রুক্ষ তুমি আগেও ছিলে/
এখনো তোমাকে ছুঁয়ে আছে আগুন বালিচ্ছায়া/
অর্জুন রথের সব যুদ্ধ খেলা, বর্শা আঘাত/
একটুও রক্ত দেয়নি আমায়/
কোমরবন্ধনীতে শুধু চুবিয়ে গেছে ধীর ক্ষয়/
কোন প্রাকসন্ধ্যায়, মনে করো সন্ধ্যার ফিরে আসা/
চন্দ্রগ্রহনে দিয়ে যাওয়া ঝিনুক পোশাক, মুক্তোগ্রাস ...../


ছয়
ভেলোর ফোর্ট

বসন্তের শেষ  চারণভূমিতে /
অদক্ষ কালিদাসের শ্লোকসন্ধ্যা/
দুর্গের প্রাকার থেকে /
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের ঘুমন্ত রাত/
ঘাস ঘাস সঙ্গীন চরণে হেঁটে গেলাম গ্রাণাইট শরীর/
পাথরের গরম শ্বাস, পরিখার জল/
ভিনদেশী রোদ তিনটি হাতে মেলেছে জলপাখনা/
সমুদ্রহাওয়ায় কুমকুম শুকিয়ে শুকিয়ে অশরীরী /
এক দেবদাসী বন্ধু পাপ করেছিল /
তার গচ্ছিত এই পদ্মপাপ/
আমারি কাছে আছে সযতনে/
ঘুরে ঘুরে এসেছি ফিরে/
এক  ভুল তরবারির কাছে/
স্তব্ধ হয়ে আছে ঝনঝন/
ঝরাবো তাকে হাজার সন্ধ্যা পরে /
ভিনদেশী মেয়ের অবাধ্য লালিত শাসিত অক্ষরে .../

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
প্রাগজ্যোতিষ পুরে
কবি চিরশ্রী দেবনাথ
মিলনসাগরে প্রকাশকাল ১২.৭.২০২০।

মানস অভয়ারণ্যে এক ব্যাঘ্রদম্পতি মরে পড়ে আছে
উজ্জ্বল হলুদ ডোরাকাঁটা রঙ আস্তে আস্তে ফ্যাকাশে ফেনিল

দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর অঝোর বৃষ্টিপাতে অরণ্য এখন জলমুখর
যুগল বাঘের সামনে এক নিহত হরিণী ...অক্ষত।
যেন হত্যা এবং প্রাণদান শেষে সুসম্পন্ন হয়েছে
হরিণমেধ যজ্ঞ
বনদপ্তরের লোকেরা এসে ছাল ছাড়িয়ে নিয়ে গেলো বাঘেদের।
এই ব্যাঘ্রছাল নির্বানের প্রতীক,
লোহিত নদীর প্লাবনে রক্তের দাগ মুছে গেলে,
কপৌ ফুল শোভিত বনের,
চমৎকার  শিকারকান্ডের কথা লিখে বিখ্যাত হয়ে যাবে কোন পর্যটক।
অথচ নীল বনলতার চরম ফিসফিসেও কেউ  জানবে না,
নিহত হরিণতরুণী উদ্ধত বাঘের কোমল দ্বিতীয়া,
তিনটি মৃত্যু আসলে তিনটি মন্ত্রোচ্চারণ, প্রবল আত্মাহুতি।

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
অযৌন
কবি চিরশ্রী দেবনাথ
মিলনসাগরে প্রকাশকাল ১২.৭.২০২০।

ব্যক্তিগত কথা গুলো আপাতত বনভূমি হয়ে উঠতে চাইছে
প্রেম অথবা সংলাপ গাছের মতোন

গোড়ায় জল দিতে চাইছি এখন
অথচ মৃত ডালপালা তো কবেই দেখেছি

জলবাউল এক নতুন ফেরিওয়ালা
ব্যাগে করে গাছের শিকড় আনে, জরিবুটি

পল্লীবধূদের বলে গর্ভে নয়,  মাটিতে পুঁতে দাও ঔষধি

স্নান করতে করতে সঙ্গমে মন দিও    
মেঘের মতো খোকা খুকী হবে,
জন্ম থেকেই চাষীর মত নরম মন

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
কৈলাসহর আমার বাবার বাড়ি
কবি চিরশ্রী দেবনাথ
মিলনসাগরে প্রকাশকাল ১২.৭.২০২০।

কৈলাসহর আমার বাবার বাড়ি
আমি চলে আসার পর কৈলাসহরে প্রতিদিন আত্মহত্যা হয়
এসব আত্মহত্যাদের জন্য দমকল ছুটে আসে না
দেহ গুলোর পোস্টমর্টেম হয় না
আসলে তাদের দেহই ছিল না
ছায়া    আর  রোদ   দিয়ে তৈরী  ছেলেমানুষ শরীর,
সংখ্যায় অনেক তারা,
আমার পঁচিশ বছরের " আনন্দদুঃখআকাশপ্রবণতা  "

যেগুলো  এখনো  প্রত্যেকদিন আলাদা আলাদা করে মরে যায়
আমি  টের পাই, খুব বুঝতে পারি  হাওয়ার দিক পরিবর্তনে

দুহাত বাড়িয়ে এই  চির অশরীরীদের মুঠোতে বন্দী করে, নোনা জল ঢালি ...

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
সকল ক্ষতিতে এসো
কবি চিরশ্রী দেবনাথ
মিলনসাগরে প্রকাশকাল ১২.৭.২০২০।

চুলগুলো শনের মতো,
ছবির গায়ে শীত মেঘ , তুষারপাতের সম্ভাবনাও  আছে
অথচ বিখ্যাত শিল্পী হাঁটুমুড়ে বসে, চোখ নামিয়ে
সাধারণ ছবি আঁকতে মন চায়
সন্ধ্যা নামের একটি নদী, সূর্য , বাঁশের ঘর, বেড়া, রাস্তা
তুলিতে কবেই হারিয়ে গেছে এইসব সাধারণীরা
ঘুরে ঘুরে বিমূর্ততা আসে
আলাদা আলাদা হয়ে ছড়িয়ে পরে কারোর শরীর
হৃদয় খুঁজে পাওয়া যায় না
ওটাকেই আঁকতে হবে,  মনে হয় সব রঙ শেষ
এতো কথা বলতে বলতে তারা উবে গেছে
মনোরমের সমাবেশ কই,  যক্ষিণী বলে " আমাকে আঁকো "
তাকেও  তো রুক্ষ  চুলের আবহে , গালে আদর করে,  ঠোঁটে হিংস্রতা এঁকে প্রাণ দিতে
হবে
আজ থেকে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত এই তবে অন্ধকার, এই তবে শেষ ছবি
ফিরে যেতে হবে, ফিরে যেতে হবে মূলে, সকল ক্ষতিতে
বাগানের  সাদা গোলাপ  নিয়ে একক মিছিল, শবের কাছে কোলাহলে
যাবতীয় পদচিহ্ন মুছে দিতে  মেঘেরা এসো তখন  মাটিতে,
প্রস্তাব ও প্রত্যাখ্যানচূর্ণের ধূপে বিদ্যুৎ স্পর্শ দিও   ।

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
বিভাজিত মেঘ
কবি চিরশ্রী দেবনাথ
মিলনসাগরে প্রকাশকাল ১২.৭.২০২০।

দুজন সমকামী মেয়ের অর্ধেক আকাশ নেই
দেহতত্ত্বের অন্ন সুবাসে
তাদের শরীরে জারিত পূর্ণ আকাশ
এই ভূমিকায় একটি  গ্রহণ ছেয়ে যাবে
সে গ্রহণের দায় কোন সন্তানের নয়

ক্যাকটাসে যে ফুল ফুটে চল্লিশটি বছর পর
একমেয়ে অন্য মেয়ের চুলে গুঁজে দিয়েছে সেই গন্ধ

"বাহারো ফুল বরষাও"

বৃষ্টি জ্বলছে আঁধারে, ডুবছে পরিধি
এখানে পতন হোক দিগন্তের
পাতাল ছুঁয়ে দেখুক কেউ কেউ

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
আকাশমণি ফুল
কবি চিরশ্রী দেবনাথ
মিলনসাগরে প্রকাশকাল ১২.৭.২০২০।

অনেক অনেকদিন পর হয়তো তুমি একদিন জাগলে ঘুম থেকে

জিজ্ঞেস করলে আজ কেমন আছো

আমিও যেন, কালই বলেছিলাম অনেক কথা সেরকম ভাবেই বললাম
জ্বর গেছে পালিয়ে, দেশেও শান্তি ফিরেছে
চল বেরিয়ে পরি কোথাও নির্বিবাদে,

তারপর আর নেই, বহুদিন কিছু নেই, চিরাচরিত খরা

যেন কোন কথা হয়নি কোনদিনও আমাদের

তুমি বলেছো আমি দুঃখ দিই শুধু
আমি বলেছি তুমি দুঃখ দাও শুধু
সেইসব নিরীহ বোকা বোকা দুঃখরা সোচ্চারে ফুটেছে আজ বাগান আলো করে

.         **************************  
.                                                                                
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর