কবি দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা
|
প্রতীক্ষা
কবি দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভারতী পত্রিকা, বৈশাখ ১৩১৬ সংখ্যা (১৯০৯) থেকে নেওয়া।
. আছে ওগো আছে!
যা’ আছে তা’ লুকিয়ে আছে
. আমার হিয়ার কাছে!
ইচ্ছে করে বিহির করে’
. চাইতে মুখের পানে ;
নয়ন দু’টি কর্ তে কাজল
. সোহাগ তুলির টানে ;
গুনগুনিয়ে মনের ব্যথা
. শোনাতে তার কাণে।
সংগীত
কবি দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
সুকুমার সেন সম্পাদিত বংলা কবিতা সুচ্চয়, প্রথম খণ্ড, ১৯৯১ থেকে নেওয়া
ধরণীর মর্মে মর্মে রসের যে গোপন সঞ্চয়
সঞ্চারে পল্লবে পত্রে, নাহি অন্ত, নাহি তার ক্ষয়।
কুসুমে কুসুমে তাই কেঁদে মরে সুরভিত শ্বাস,
অন্তরের রসরূপ গন্ধে তাই করিছে প্রকাশ।
হৃদয়-অরণ্য মাঝে পথহারা শুধু ঘুরে মরে
বাসনা কামনা কত তাই, বেদনায় আঁখি ঝরে,
মহানন্দে হৃদয়ের মরা গাঙে দুই কূল ছাপি’,
নানা বাণী নানা বর্ণে তরঙ্গিয়া উঠিতেছে কাঁপি’,
কত কাব্য কত ছন্দে সে আনন্দ ধরিতেছে মুরতি,
মন্দিরে মন্দিরে তাই বন্দনায় ধ্বনিছে আরতি ;
কত কথা হল বলা সৃজনের সেই আদি হতে
তবু যেন মনে হয় বলা নাহি হল কোনমতে,
ক্ষণে ক্ষণে তাই সুরে অর্থহীন বেদনায় ভরি
সেই কথা বলি যাহা বলা নাহি হল যুগ ধরি।
. **************************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
করুণ-কঠোর
কবি দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভারতী পত্রিকা, আষাঢ় ১৩১৮ সংখ্যা (জুন ১৯১১) থেকে নেওয়া।
প্রলয় মূর্ত্তি ধরিয়া এসেছ দুয়ারে ;
রুদ্র, ভীষণ, নমি বার বার তোমারে!
. ধূর্জ্জটি তব জটাজাল উড়ে গগনে,
. মাতে ইন্মাদ নৃত্য ঝঞ্ঝা পবনে,
পুরাতন ও নূতন
কবি দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভারতী পত্রিকা, জৈষ্ঠ ১৩১৬ সংখ্যা (জুন ১৯০৯) থেকে নেওয়া।
. বর্ষ-শেষ
কর্ম্ম-ক্লান্ত বত্সরের শেষ রশ্মি-শিখা
অন্তে গেল! উর্দ্ধে হের কা’র অনামিকা-
স্বপ্রকাশ
কবি দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভারতী পত্রিকা, মাঘ ১৩১৭ সংখ্যা (ফেব্রুয়ারি ১৯১১) থেকে নেওয়া।
আপন বসন্তরাগে সেথা তুমি পূর্ণ প্রস্ফুটিত
. সেথা নাহি দখিন পবন।
নিঃশব্দ বীণায় তব সেথা জাগে সম্প্ত সঙ্গীত
. সেথা নাহি কাকলী কূজন!
সার্থক দান
কবি দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভারতী পত্রিকা, চৈত্র ১৩১৭ সংখ্যা (এপ্রিল ১৯১১) থেকে নেওয়া।
এ সংসারে সবার সাথে অনেক কথা কই
. একটি কথা আছে তোমার তরে,
নয়নপাতে নীরবে কত অশ্রুবোঝা বই
. তোমার লাগি একটি ফোঁটা ঝরে।
. কত না সুরে গাহি যে কত গান
. কত বেদনা কত যে অভিমান,
তাহার মাঝে একটি সুর ক্ষণে ক্ষণে বাজে
. সে সুর শুধু তোমায় খুঁজে মরে।