গাজীর গান আমি আগে করি পয়গম্বরের চরণ বন্দনা কথা ও সুর -- কবি জর্জ মিরজাফর গোস্বামী সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত গণসংগীত সংগ্রহ থেকে নেওয়া
আমি আগে করি পয়গম্বরের চরণ বন্দনা তারপরেতে গাজীর গান শুনেন সর্বজনা | শুনেন বন্ধুগণ দিয়া মন দেশের কাহিনী সম্প্রতি হইয়াছে যাহা লোক জানাজানি |
শুনেন জবর খবর মড়া কবর থেকে উঠবে নেচে আর লাজের চোটে কাটা ছাগল সাতবার উঠে হেঁচে | ‘নয়া জারের কথা’ শুনে ব্যথা পাবেন সত্য কথা আর লম্বা চওড়া বাক্যি শুনে ধরবে আপনার মাথা | ‘লেনিনের দেশের নেতা’ ব্রেজনেভ হেথা আইলেন মোদের দ্যাশে গণ্ডায় গণ্ডায় চুক্তি হইল কত কলম পিষে |
‘ন্যাকা চৈতন্য’ গণ্যমান্য কত মহাজন চুক্তি কইরা দ্যাশটারে ভাই দিলরে বন্ধন | সামরিক চুক্তি হইয়া গেল, গেল কাছা খুলে | ‘ভিলাই বানাইল’ পিঠ কিলাইল ঐ রাশিয়ান আর রেডিওতে রোজ শুনি সমাজবাদের গান |
‘দ্যাশে খাদ্য নাই’ কি বালাই জোতদার চাষী চোষে আর বড় ন্যাতায় গরিবী হঠায় ঠাণ্ডা ঘরে বসে | ‘দালাল কাগজগুলো’ কানে তুলো, মহিমা প্রচার করে সমাজবাদ আসবে দ্যাশে কেবল গলার জোরে |
‘তিরিশ বছরে’ জনম ভরে বাণী শুনে গেলাম আর আমরা যত হাভাতে অশ্বডিম্ব পেলাম | ‘নানান রং-এর ন্যাতা’ ঢং-এর কথা গদী চড়ে বসে আমার মাথায় কাঠাল ভাঙ্গে ত্যাল মারি কষে |
‘আসবে সমাজতন্ত্র’ কত যন্ত্র এল বিদেশ থেকে ( আর ) গরীব দ্যাশে থাকবে নাকো বলেন ন্যাতা হেঁকে | ‘প্যাঁচায় ডিম পেড়েছে’ ঘর ভরেছে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি আমেরিকার সাথে আহা হোক না মধুর আড়ি |
‘অভিমান করেছে’ প্রাণ কেঁদেছে মার্কিন নিক্ সন রাশিয়া থেকে এল কত বিশেষ বিশেষ জন | ‘ট্রাক্টর দিয়াছে’ সুদ নিয়েছে দ্বিতীয় সেতু হবে ( আর ) দেশের লোকে ঘটি বাটি বেচে হাওয়া খাবে | ‘পাতাল-রেল চলিবে’ ফল ফলিবে রাশিয়ার ঘরে দেশের লোকে ঝণ শুধিতে না খাইয়া ভাই মরে |
চাইলের দাম বেড়েছে লোক মরিছে কি বা আসে যায় সমাজবাদের শ্লোগান দেখ দ্যাওয়ালের গায় দ্যাশের অগ্রগতি তরে ক্ষতি হবে অল্পস্বল্প ( আরে ) এর চাইতেও তো ভাল ছিল গ্যাঁজাখোরের গল্প |
‘সবুজ বিপ্লব হবে’ লোকে খাবে বড় ভুট্টার দানা, বিদেশ থেকে এল কত গরু, দুধ আর ছানা | ‘অপসংস্কৃতি’ তরলমতি বালক বালিকায় কাঁচা মাথা খায় চিবাইয়ে প্রেম সিনেমায় | ( ‘ট্যাক্স কমিবে’ মদত দিয়ে ভাবেন পাবে পার ) ( আর ) জেলে না হয় থাকবে বন্দী কয়েক হাজার |
‘তাতে কি হয়েছে’ আরও রয়েছে লক্ষ হাজার কোটি ( আর ) রক্ত দিয়ে রাখব কেড়ে আমার হকের মাটি | ‘তোমরা জেনে রাখ’ টিকে থাক আর শেষ কয়টা বেলা ( আর ) শ্রমিক কৃষক জুটল এবার খতম তোদের খেলা | ‘কলের মালিক যত’ তোদের মতো জোতদারও যাবে ( এই ) লক্ষ জন গেছে ক্ষেপে তাদের কে ঠেকাবে | ‘তোদের ভণ্ড বাবা’ যেন হাবা এই রাষ্ট্রযন্ত্র ( আর ) শ্মশানেতে চিতা জ্বলে দেখে পাইনে অন্ত |
‘শুনেন বন্ধুগণ’ করেন পণ যায় যাক প্রাণ শপথ করেন অস্ত্র ধরেন হয়ে এক প্রাণ | শুনলেন গাজীর গান |
পুরুত আর মোল্লা মিঞা কথা ও সুর-- কবি জর্জ মীরজাফর গোস্বামী স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত ‘যুদ্ধ জয়ের গান’ থেকে নেওয়া রচনা - নভেম্বর, ১৯৯২
পুরুত আর মোল্লা মিঞা দাড়ি আর টিকি নিয়া সিরনি মেঠাইখানা একসাথে খাবে না স্বভাব তো কখনো যাবে না || রাম রাবণে যুদ্ধ করে টিভির পর্দায় বামরা দেখে ডানরা দেখে দিল্লীর বড়দায় নানা রঙের নানা নেতা গদীর পানে চায় টিভি রামের ভোটের ঝুলি ভক্তের দরজায় গাওরে রামের ভজন সঙ্গে হনু ডজন ডজন বাপুজীর ঐ রামরাজ্যের খবর পাবে না স্বভাব তো কখনো যাবে না || কোন যুগেতে রামচন্দ্রর জ্যান্ত অবতার কার সে মামা কার সে পিসে হিসেব রাখে তার অবতার আঁতুড় ঘরে মোল্লা নাকি নামাজ পড়ে ইতিহাসে রামের বাবার হদিশ পাবে না || ইট পাটকেল পূজা করে বেন্তভূতের ছা তার জাত ধম্মো মাথায় ওঠে রহিম ছুঁলে গা তিন ঢোকে গঙ্গা পানি খেয়ে বলে ধম্মো মানি ডোম চণ্ডাল মেথর ধাঙড় পেসাদ পাবে না | হিন্দুস্তান কাফেরীস্তান মোল্লা ডেকে কয় বাবর বাবর জবর খবর সারা দেশময় মোল্লার খোয়াব ভারি ইসলামী দেশ চুলকে দাড়ি রহিম কেন পায়না খেতে জবাব পাবে না | ভারতমাতার দুইটা ছেলে হিন্দু মুসলমান শিখ খৃষ্টান মেথড় ধাঙড় মায়ের-ই-সন্তান সবার প্রাণে মায়ের দেয়া একই রক্ত বয় শুধু মোল্লা পুরুত পাত্রীমশাই জেতের কথা কয় ভাই ভাই মিললে পরে মালিকের টনক নড়ে বিবাদ কেন বাঁধায় তারা কেউ তো ভাবে না || পলাশীতে রক্ত ঝরায় হিন্দু মুসলমান রামের জবান রাখতে রহিম দিল আপন প্রাণ তিতুমীর আর চেরাগ আলি আজও ডাকে হায় বীর খাইবার রক্তে রাঙা পতাকা ওড়ায় বিভেদের ভ্রান্তি ভুলি লালে লাল ঝাণ্ডা তুলি রাতের কালো মুক্ত আর প্রস্তুতি জল্পনা ||
বকচ্ছপ অথবা লয়া সুরের গান কথা ও সুর-- কবি জর্জ মীরজাফর গোস্বামী স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত ‘যুদ্ধ জয়ের গান’ থেকে নেওয়া রচনা কাল - ১৯৭৪
যেমন বক আর কচ্ছপ মিলে হয় বকচ্ছপ মূর্তি তেমনি নিকসন সঙ্গে ব্রেজনেভ মিশিয়ে বাহবা কি ফূর্তি চলে আয় সা রা রা | সা রা রা গান শুনে যা লয়া সুরের গান এমন লয়া সুর বেঁধেছি তাহার জবাব নাই ও যে মস্কো থেকে হচ্ছে রিলে দিল্লীতে চোলাই চলে আয় সা রা রা, এই গানের সুর দিয়ে গেলেন ইংরেজ মহান দুশো বছর গলা সাধা দিয়ে মন প্রাণ আবার আমেরিকাও সুর মেশালো জুড়াল তাই কান এখন মস্কো থেকে এল এবার সমাজবাদের গান চলে আয় সা রা রা রা || জমিদারীর রঙ বদলালো বদল হলো নাম তাই বলে কি কাম ভুলেছি এমা ছি ছি রাম আমরা আছি ঠিকই দেখ দেখি সুবা আউর সাম আমরা গণতান্ত্রিক সমাজবাদে সঁপেছি এই প্রাণ চলে আয় সা রা রা রা || আমরা মার্কিন বাবার পোষ্যপুত্র টাটা বিড়লা নাম বাপের বাজার রাখতে চালু ফেলছি মাথার ঘাম চলে আয় সা রা রা রা || প্রেমের বাঁধন বড়ো বাঁধন ভুলো না ভাই তোমরা দেশে কাঁচা মালের ফুল ফুঠছে আমেরিকা ভোমরা ওরা খেল মধু নতুন বঁ ধু এল রাশিয়ান তাই গণতান্ত্রিক মাটিতে জন্মায় সমাজতান্ত্রিক ধান চলে আয় সা রা রা রা || ঋণ দিয়েছে আমেরিকা নিল বটে সুদ আরে তোমরা শুঁকবে ঘোলের গন্ধ আমরা খাব দুধ চলে আয় সা রা রা রা || সমাজবাদী রাশিয়ানের লীলার অন্ত নাই চড়া দামে গম দিয়েছে বাজাও তালি ভাই ভাঙ্গা হলেও যন্তরপাতি করল কিছু দান কত নতুন নাচ শেখাল ধরে আমার কান চলে আয় সা রা রা রা || গণতন্ত্রের গাছে জন্মায় আমলাতন্ত্রের ফল খাল কেটেছি ভোলগা থেকে সমাজতান্ত্রিক জল চলে আয় সা রা রা রা || ইংরেজ থেকে আমলাতন্ত্রর মস্কোর সমাজবাদ মার্কিন থেকে গণতন্ত্রর আহা কি আল্লাদ এ সব বেশ মিশেছে দেশ ভেসেছে তোমরা পুণ্যবান কর গণতান্ত্রিক সমাজবাদে অবগাহন চান চলে আয় সা রা রা রা || এমন সাধের গান শুনে ফের করিস যদি আড়ি পাঠাব তোদের মিসায় কিংবা সিধা যমের বাড়ী চলে আয় সা রা রা রা ||
ভোট চুরি কবি জর্জ মীরজাফর গোস্বামী অর্জুন গোস্বামী সম্পাদিত ‘রক্ত ঝরাতে পারিনাতো একা’ থেকে নেওয়া [ সুকুমার রায়ের ‘গোঁফ চুরি’ অবলম্বনে ]
ঝাপানডাঙ্গার গোপাল কাহার লোকটি বেজায় শান্ত তার যে এমন মাথার ব্যামো কেউ কখনো জানত ? দিব্যি যেত চৈত্র মাসে মহাজনের বাড়ী ঘ্যান ঘেনিয়ে কর্জ নিত মুখটি করে হাঁড়ী, বছর বছর গুণেই দিত সুদের ওপর সুদ মারত চাপড় বাচ্চাটাকে চাইলে খেতে দুধ এমনিতেই সে লোকটা ভালোই, বউয়ের কথা শুনে--- রথের মেলায় কিনত হেসে তিনটে পাঁপড় গুনে | সেই গোপালই এই গরমে হঠাৎ গেল ক্ষেপে---- চোখ পাকিয়ে একটি লাফে বসল ছাদে চেপে, দৌড়ে আসে পিসীমা তার ষাট বছরের বুড়ি গোপাল বলে পিসী আমার ভোট গিয়েছে চুরি | তাই শুনে কেউ বদ্যি ডাকে কেউ বা ডাকে ওঝা, পঞ্চায়েতের লীডার বলে ‘ব্যাপারটাকে বোঝা, ভোট হারানো ? আজব ব্যাপার ! একি অনাসৃষ্টি, নামতো তোমার ঠিকই আছে, এই দেখোনা লিষ্টি ! সবচেয়ে আগে বুঝতে হবে ডেমোক্রেসীর তত্ত্ব ! ছাপটা তুমি মারবে হেথায়, এটাই পরম সত্য ! ভোটটা তোমার রাইট বটে, পবিত্র এক ডিউটি, যদুর পরে আসবে মধু,---- নন ভায়োলেন্ট বিউটি !’ গোপাল বলে, ওসব কথা আমি কি আর বুঝব ? চুরিই গেছে ভোটটা আমার, কোন্ খানে তা খুঁজব’ মোড়ল বলে, হয়নি চুরি, কক্ষনো তা হয় না, এই ধরনের দুর্ঘটনা স্বাধীন দেশে সয়না !’ ব্যাপার শেষে পৌঁছে গেল মিনিস্টারের কর্ণে | গোপাল তাকায় কটমটিয়ে চক্ষু রাঙা বর্ণে | মিনিস্টারে বলেন, শোন, ‘হওনা বাছা শান্ত ---- তোমার মত জ্যান্ত ভোটার ডেমোক্রেসীর প্রাণ তো | হ্যাংলা ভোটার, ক্যাংলা ভোটার টাটকা কিবা শুঁটকো | মরা ভোটার, বৃদ্ধ ভোটার, খানদানী বা উটকো---- সব ব্যাটাকেই তোয়াজ করি ইলেকশানের পূর্বে তবেই সে না গঞ্জে গাঁয়ে লাল পতাকা উড়বে | গোঁয়ার ভোটার, গাড়োল ভোটার সবাই আমার লক্ষ্মী, এই দেখোনা আমি কেমন ডেমোক্রেসীর রক্ষী | চিন্তা কেন ? আবার যখন ভোটের সময় আসবে, ছাপটা মেরো যেই ছবিটা চোখের উপর ভাসবে | গোপাল বলে শালার ব্যাটা ইয়ারকীটা মারছো ? করল কেটা ভোটটা চুরি ধরতে কি তা পারছো ? ডুকড়ে কেঁদে গোপাল বলে ‘ভোট দেব না, আর না |’ জাঁদরেল সিং পুলিশ বলে, ‘মার শালাকে মার না |’ মন্ত্রী বলেন, কি ভয়ানক অভিজ্ঞতা আজকে, তদন্তটা করতে হবে, ডাক না বুড়ো জাজকে |
* * *
উপগ্রহে খবর আসে দিল্লী থেকে টাটকা শীগগিরী সেই চাষার পোকে ডি, আই, আর-এ আটকা ! ভোটটা চুরি ? মামদোবাজী ? ব্যাপারটা নয় সাচ্চা---- আসল ব্যাপার গোপাল বোধ হয় মাও সে তুং--এর বাচ্চা |
গাজীর গান বীরের গাথা গাইবো মোরা জনম ধন্য মানি কথা ও সুর -- কবি জর্জ মিরজাফর গোস্বামী
‘নবান্নে’র নিবেদন : জর্জ মীরজাফর গোস্বামী তিন দশক জুড়ে লোকায়ত সঙ্গীত গাজীর গান নিয়ে নিবিড় চর্চা করেছেন । সম্প্রতি তিনি একটি সময়-উপযোগী গাজীর গান লিখেছেন । ‘নবান্নে’র পক্ষ থেকে সেই গান প্রকাশ করা হল । পরম্পরাশ্রয়ী লোকায়ত সঙ্গীতে যাদের গভীর প্রেম আছে, যাদের কাছে লোকগান লোকজাগরণের অস্ত্র তাদেরই জন্য এই গান পরিবেশিত হল ।
আমি আগে করি পয়গম্বরের চরণবন্দনা তার পরেতে গাজীর গান শুনেন সর্বজনা শুনেন বন্ধুগণ ॥ দিয়া মন দেশের কাহিনী
বীরের গাথা গাইবো মোরা জনমধন্য মানি শুনেন গোড়া থেকে ॥ রেখে ঢেকে বল্ বো না তো ভাই মঙ্গল পাঁড়ের স্মরণ নিয়া দূরের পানে চাই— আকাশ মেঘে ঢাকা ॥ কথা রাখা সিধু কানুর দেশে মেঘের কোলে রোদ উঠিবে মুক্ত হাসি হেসে আহা যষ্ঠিধারী ॥ দেমাক ভারি রচেন কাব্য-গাথা মাথা ব্যথা নিরাময়ে কাটেন তিনি মাথা একটু খুলে বলি ॥ ঘোর কলি মোদের স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা ডিগ্ বাজি খায় তোমায় ভালবেসে এতো কলির সন্দ্যে ॥ নিরানন্দে আছ কেন ভাই শান্তিরক্ষা করেন তাঁরা নদের নিমাই আহা বলিহারি ॥ কৃষ্টি তাঁরই ভাবেন এন্ডারসনে শান্তিরক্ষা গণের অক্কা যাইবে বৃন্দাবনে প্যাঁচায় ডিম পাড়িল ॥ গাল পাড়িল এই বঙ্গবাসী আড়ং ধোলাই দিয়া তারে পাঠায় গয়া কাশী তাঁহার সাহেব বাবা ॥ পাশা দাবা খেলেন ভারত নিয়া ক্ষুদিরামের হইল ফাঁসী ----- ঐ চট্টল কন্যা ॥ অগ্নিবন্যা শহীদ দেশের তরে আসফাকউল্লা জীবন দিলেন অশ্রু ঘরে ঘরে যতেক মুক্তি সেনা ॥ পাওনা-দেনা ঘুচায় আন্দামানে কারাগারে রক্তঝরে বীরের মরণ তরে যতেক সাদা চামড়া ॥ গুঁফো দামড়া ভুলে বাপের নামে উধম সিং-এর অস্ত্রে ডায়ার গেলা স্বর্গধামে বীর জালিয়ানা ॥ নাম না জানা যতেক শহীদগণে স্বাধীনতার পিদিম জ্বালায় নৌসেনার মনে ঐ বরানগর ॥ কচি ডাগর মারেন ‘ডিম্ব-অলা’ মুক্তি সূরজ দালাল তিনি তাই তো দেখান কলা ডায়ার পুত্র তিনি ॥ ওকে চিনি বলেন দেশবাসী বঙ্গভূমে হাজার-শতেক করেন জীবন নাশ-ই— ভুলি নাই—ভুলি নাই ॥ ডাক দিয়ে যাই বলেন রাগী কবি শান্তিবৃক্ষের গাত্রে ঝোলে তথাগতের ছবি যতেক বন্দীশালা ॥ ভাঙ্গলো তালা নজরুলের গানে দধীচিরা আজও আছেন দেশমাতার প্রাণে ভুলে পথের ভ্রান্তি ॥ শ্মশান শান্তি শিক্ষা নেব ভাই যষ্ঠিধারী নিপাত যাবে অযুত সুরে গাই ঝান্ডা রাঙ্গা নিয়া ॥ হিন্দু-মিঞা চলব একই পথে বাস্তিলের পতন হবে বিশ্বঐক্য মতে বুকের শোণিত দিয়া ॥ অগ্নি নিয়া হিজলী-বীরে ডাকে হাজার মানুষ জোট বান্ধিল চক্ষু রাঙাও কাকে শুনেন বন্ধুগণ ॥ করেন পণ যাক নয় জান লড়াই লড়াই লড়াই গড়েন হয়ে একপ্রাণ শুনলেন গাজীর গান ॥
বিধান রায় মরেনি কবি জর্জ মীরজাফর গোস্বামী ( ১৯৭৮ )
রাজ্য হাতে খ্যাম্ তা চাই বলেন নেতা চেঁচিয়ে ভূমি-নীতি করেন চালু গান্ধীবাদে আঁচিয়ে । রাজ্য হাতে খ্যাম্ তা চাই বলেন নেতা কাঁপিয়ে চাষাভুষোর হামলা দেখে ওঠেন তিনি হাঁপিয়ে রাজ্য হাতে খ্যাম্ তা চাই বলেন নেতা সজোরে মজুর-টজুর করলে লড়াই কাঁদেন তিনি অঝোরে । রাজ্য হাতে খ্যাম্ তা চাই বলেন হাতা গুটিয়ে পুলিশ করে হুকুম তালিম উদ্বাস্তু পিটিয়ে । রাজ্য হাতে খ্যাম্ তা চাই বলেন ভীষণ বন্যায় চালিয়ে গুলি দমন করেন ভুখা লোকের অন্যায় । রাজ্য হাতে খ্যাম্ তা চাই বলেন ঘুমের মাঝারে শিষ্যরা তাই বিকট চেঁচায় গঞ্জে-হাটে বাজারে । রাজ্য হাতে খ্যাম্ তা চাই বলেন নেতা বারবার এসো তুমি রুবল-বাবা চালাও ফলাও কারবার । রাজ্য হাতে খ্যাম্ তা চাই নয়া-জারের দাদনে আনন্দেতে হাত পা নাড়ে কবর থেকে বিধানে ।