কবি গিরীন্দ্রশেখর বসুর কবিতা
*
তেপান্তরের মাঠ
কবি গিরীন্দ্রশেখর বসু
মৌচাক পত্রিকার আশ্বিন ১৩৩৩ (অক্টোবর ১৯২৬) নেওয়া। এই কবিতাটি
র শেষে আর
দুটি লাইন লিখে,
পরে "লাল কালো" ছোটদের কাব্যগ্রন্থের ভূমিকা হিসেবে আমরা পাই।

সাত সুমুদ্দুর তের নদী লঙ্কা দ্বীপের পার
তেপান্তরের মাঠে এল রাতের অন্ধকার ;
তেপান্তরের মাঠের মাঝে বোম্বা সিমূল গাছ
আগ্ ডালে তার বসে আছে কাঁকুড় সিঙ্গে মাছ ;

এরপরের দুলাইন "লাল কালো"-র ভূমিকাতে দেওয়া হয় . . .

ঝিক্ মিকিয়ে শিমুল চূড়ো নামল ভোরের আলো,
খোকার সাথে খুকুমনি পড়বে লালকালো।

.                           ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
এহেন বাণী, শুনি কানে কানে
কবি গিরীন্দ্রশেখর বসু
লাল কালো কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।

এহেন বাণী, শুনি কানে কানে,
রাজার রাণী মরে অভিমানে।
আসিল বাঁদী, সখী হাতে পাখা,
কহিল কাঁদি, কথা মধুমাখা,
“কেন গো রাণী, মুখে নাহি ভাষা,
চক্ষুতে পানি, কেন নাহি হাসা?”
বসিল বাঁদী পদতলে আসি
কহিল সাধি, “আমি তব দাসী,
বল না মোরে, কেবা দিল ব্যাথা,
আনিব ধরে, কাটি দেব মাথা।”
বিনানো ছাঁদে, দোলাইয়া পাখা
সখীরা কাঁদে, বলে, “কেন রাখা-
দুঃখের ভাগ যদি নাহি দিলে,
মনের রাগ মনেতে পুষিলে?”
রাগিয়া টানি পদ ছয়খানি
কহিলা রাণী অতি অভিমানী-
“কেন রে মিঠা দিলি হাত গায়?
নুনের ছিটা দিলি কাটা ঘায়!
মরণ মোর নাহি কোন কালে,
এ দুঃখ মোর ছিল গো কপালে!
বাসন মাজে ঝি যেবা সেও গো
স্বাধীন কাজে মন-সুখে রয় গো,
রাজার রাণী আমি হয়ে কি না
এ অপমানী রে, কারণ বিনা!

যদি বা ব্যাঙে মারিত রে লাথি,
কিংবা ঠ্যাঙে চাপিত রে হাতি,
এ দুখ ঘোর নাহি হ’ত মোর,
জীবনভোর ঝরিত না লোর,
দুঃখে অপার হবে প্রতিকার,
জীবন ছাড় না রাখিব আর!

.                ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
সাজে সাজে রে রঙ্গিলা পিঁপিড়ি
কবি গিরীন্দ্রশেখর বসু
লাল কালো কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।

লাল সেনাপতি হাঁড়িমুখোর ডাক পড়ল। লড়াইয়ের জন্যে লাল পিঁপড়ে প্রস্তুত হ’ল।

সাজে সাজে রে রঙ্গিলা পিঁপিড়ি,
বাজে কাড়া-নাকাড়া ডা ড়া ডা, ডি ড়ি ডি
হাঁড়িমুখো বেঁটে-পা চলে আগে আগে,
লাল দাঁড়ির সার দেখে ডর লাগে ;
কুটুস্ কুট্ কাট্ লে লে লে কিমড়ি,
নাহি ছোড়ি বান্দা এঁটেল চিমড়ি,
হাঁ করি ধরকাটা মুন্ডাটা যায়,
চামড়ে মরণেরি কামড় বসায়।

এল এল ঐ এল, পড়ে গেল সাড়া,
কেন্নুই সুড়সুড়ি ছেড়ে গেল পাড়া,
ঘাস হাতে লাফায় তড়াক্ তিরিং
ছাড়িয়া দিল পথ গঙ্গাফড়িং।
দেখি রাঙা পিঁপিড়ি কাতারে কাতার
ভাগিল যত পোকা হাজারে হাজার।

.                ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর