কবি গোমাল কুদ্দুস – বিশিষ্ট সাম্যবাদী কবি এবং ঔপন্যাসিক। তিনি জন্মগ্রহণ করেন অধুনা
বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার সাট্টিগ্রামে তার মামাবাড়ীতে। পৈতৃক নিবাস ছিল কুষ্ঠিয়া জেলার কুমারখালী
থানার ধলনগর গ্রামে।  পিতা  গোলাম দরবেশ জোয়াদার  ছিলেন  একজন  উকিল এবং মাতা সৈয়দুন্নেসা
খাতুন।

রবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় গ্রামের সোলেমান পণ্ডিতের পাঠশালায়। তারপর হরিনারায়ণপুরের হাই স্কুল ও
পরে কুষ্টিয়া হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি
কলেজে।  গোলাম কুদ্দুস কলকাতার বেকার হস্টেলে থাকতেন। ওই হস্টেলে তার পাশের ঘরে থাকতেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। গোলাম কুদ্দুস ইতিহাসে এম এ পাস করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

ইতিহাসের খ্যাতনামা অধ্যাপক সুশোভন সরকারের মার্কসিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিহাস পড়াতেন। তাঁরই প্রভাবে
কবি গোলাম কুদ্দুস ছাত্রবস্থাতেই কমিউনিস্ট হয়ে ওঠেন এবং আমৃত্যু ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির
সর্বক্ষণের কর্মী হন।

কবির কর্মজীবনে তিনি ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকেই ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র "স্বাধীনতা"
 
পত্রিকায় সাংবাদিকতার কাজ শুরু করেন এবং
কবি জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রর সঙ্গে ‘অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট রাইটার্স
অ্যান্ড আর্টিস্টস’-এর যুগ্ম সম্পাদক হন। এসবের পাশাপাশি তিনি ট্রেড ইউনিয়ন, কৃষকসভার সঙ্গে
ফ্যাসিবিরোধী
 আন্দোলন, প্রগতিশীল লেখক সংঘ, রুশ-ভারত মৈত্রী সমিতি, ভারতীয় গণনাট্য সংঘ
প্রভৃতির কাজের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছেন। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে তিনি দৈনিক "কালান্তর"
পত্রিকার সূচনা
 পর্ব থেকে দীর্ঘদিন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও ছিলেন। চল্লিশের দশকে তিনি ফ্যাসিবাদী
কবিদের সংকলন  "একসূত্র" যুগ্মভাবে সম্পাদনা করেন
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

তাঁর প্রাপ্ত সম্মাননার মধ্যে রয়েছে সাংবাদিকতার জন্য ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে সোভি
য়েত ল্যান্ড নেহরু পুরস্কারে  
ভূষিত হন
। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতী গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন তাঁকে বিশেষভাবে সংবর্ধনা জ্ঞাপন
করে
কবি বাংলা সাহিত্যের জন্য বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন যার মধ্যে রয়েছে বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম,
রবীন্দ্র, নজরুল, মুজফ্ফর আহমেদ স্মৃতি পুরস্কারে প্রভৃতি।

তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে
"বিদীর্ণ" (১৯৫০), "ইলামিত্র" (১৯৫৪), "টুনটুনির গান" (১৯৫৪), "নাচে মনময়ূর",
"স্বেচ্ছাবন্দী"
প্রভৃতি। তাঁর উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে "মারিয়ম" (১৯৫৪), "এক শৃঙ্গে" (১৯৫৫), বাঁদী (১৯৫২),
"লেখা নেই স্বর্ণাক্ষরে"
প্রভৃতি।

আমরা
মিলনসাগরে  কবি গোলাম কুদ্দুস-এর কবিতা তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে এই
প্রচেষ্টার সার্থকতা।


উত্স ---
  • শিশিরকুমার দাশ, সংসদ বাংলা সাহিত্য সঙ্গী, ২০০৩।    
  • উইকিপেডিয়া



কবি গোলাম কুদ্দুস-এর মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।   



আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতা প্রথম প্রকাশ - ২৫.৪.২০১৫।
কবির ছবি সংযোজন ও পাতার পরিবর্ধন - ২৬.১.২০২৩।




...