যদি তুমি সারারাত, আমার হাতে’তে হাত, রাখো – আমি তবে চাইবোই - তোমার শরীরে শুধু মাখো বকুলের ঝাঁঝে ভরা কিম্বা কামিনী’র ফুলে মেশা সুরভিত সে সুবাস। তখন ভাসিব আমি, নেশা কাকে বলে জেনে গিয়ে তোমার নরম বুকে, খেলা হবে বাকি রাত। আরো হবে কত শত কথা বলা – তোমার কাঁধেতে মাথা রেখে। চাঁদে’র সে আলো জ্বলে - জ্বলে ডুবে যাবে, দূর আকাশের গায়। পাখা মেলে উড়ে যাবে রাত জাগা পাখী ডানা মেলে হায় ! চার চোখে ইকিড় মিকিড় খেলা শেষ হবে রাত পার হলে। পূব আকাশের গা’য় শুরু হয়ে যাবে যত কিছু রঙ আছে তার - ঝকমকি সুর। আরো কতো সুরে সুরে ডেকে যাবে কত পাখী – তাহাদের শীষে – ভরে যাবে চার পাশ, আমাদের কানে কানে মিশে যাবে সেই সব গান, তোমার সে সারা গায়ে ঢেলে দেব কত শত মিঠে মিঠে চুমু তোমার সে গালে। তারপরে, দিন যবে দেবে আলো আমাদের গা’য় লজ্জা রাঙা মুখে তুমি যাবে চলে ফেলে যে আমায় !
সপ্তপদীর রোমান্সে - বর্ণিল স্পর্শে মন যখন উলুধ্বনির গমগমে আওয়াজে দিশেহারা, তখন কি চোখে পড়ে - ? মেয়েটির অপাপবিদ্ধ মনের অজানা আশঙ্কা। বেনারসীর খসখসে আওয়াজে, ঢেকে যায় সব। মন, আত্মা, শরীর সব, সবকিছু। আর সবকিছু ছাপিয়ে মাথা তুলতে থাকে, প্রবাল দ্বীপের মতো অধিকারের চিরন্তন লালসা। সে কার ? মুক্তমনা সেই পুরুষশ্রেষ্ঠের, নাকি – আজন্মলালিত পুতুলখেলায় বেড়ে ওঠা, সেই শিহরিত কুমারী’র। কত আশা, কত স্বপ্ন, কত প্রতিশ্রুতির জ্বলজ্বলে তারাগুলো – ক্রমে ক্রমে পরিণত হয় উল্কাপিন্ডে। চার চোখের চাওয়ার সে ঐশ্বর্যের দাম লাদাখের নেড়া পাহাড়ের মত প্রতি ক্ষণে দেখা দিতে থাকে। মধুচন্দ্রিমার সমুদ্রসৈকত ছেড়ে – উত্তরবায়ুর টানে ধুসর মরুভূমি এগিয়ে আসতে থাকে, থাকেই। দিন যায় – প্রবাহিত নদীর স্রোতের ঘর্ষণে খাঁজ কাটা পাড়ের পাথরগুলোর মত, সংসার বহে চলে। কখনো দুর্মর বেগ, কখনো বা একটানা প্রবাহে। এরি মাঝে মাথা তুলে উঠতে থাকে – অধিকারের গোড়ে মালা গুলো। আর সেই ধারায় স্নান করতে থাকে – করতেই থাকে, চিরন্তন সেই - মেনে নেওয়ার চিরহরিৎ মূর্খতার সরু পথ। কন্যা-জায়া-জননী’র সেই চলমান ছায়া – আস্তে আস্তে গিলে খায়, অধিকারের পাপ। আর সেই অধিকারের গর্বে গর্বিত মুখগুলো – খসে যেতে থাকে চেনা মুখের মুখোশে। জীবন চলে জীবনের জোয়ার ভাঁটায়।
মনের গভীরে কখনো যদি বা অগোচরে প্রেম আসে, পারবে কি তাকে সাজিয়ে তুলতে - বাঁধভাঙা উচ্ছাসে। সীমা যদি আজ গাণিতিক জালে বাঙ্ময় হতে চায় – দুরাশা তখন ঘিরবেই জানি জীবনের আঙিনায়। বাসো যত ভালো, ততই আমার সুরের সাতটা তার – হাসিতে খুশীতে ছন্দে সুরেতে, মিলেমিশে একাকার। সেকালের প্রেমে ছিল কত বাধা লুকোচুরি মাখা রাত – এখন রঙীন দুনিয়া জুড়েই, প্রেমহীন উৎপাত। হৃদয় কি তবে নতুন প্রেমের সন্ধান খুঁজে ফেরে – নতুন রঙেতে রাঙিয়ে তুলতে, মনের’ই অগোচরে। সাদা আর কালো এই দুটো রঙে হিরোশিমা আজো ভিজে - প্রকৃতি আবার মেলেছে পাখনা, আপন খেয়ালে নিজে ! তবুও এখনো প্রেম জেগে আছে মানুষ মানুষী মাঝে – তামাম দুনিয়া সেই মাতনেই, ফলে ফুলে আজ সাজে। অচেনা প্রকৃতি দিনে দিনে খোলে নতুন নতুন রূপে, জাগাতে প্রেমের সে ভরা জোয়ার, নির্বাক নিশ্চুপে।