কবি গৌতম দত্তর কবিতা
*
অভিমান
কবি গৌতম দত্ত

ব্যথা না কান্না, রাগ না কষ্ট বুঝতেই চলে যায় –
জীবনের খাতা থেকে অনেক সময়।  তবুও তো
মন করে আনচান, খুঁজে পায় কারণের টান।
অভিমান, অভিমান আর অভিমান। চারিদিকে
মাঝে মাঝে - কেন ওঠে গাজনের গান ?  নিরালায় –
মন চলে যায়। কোনও, এক সুদূর কিনারায় !
পদ্মফোটা জলের খবর, ডাঁটার খবর, হায় !
চোখের আলোর বৃত্ত ছেড়ে – দূর থেকে দূরে, আরো
দূরে স’রে স’রে যায়। একাকী তখন, শোনো যদি, –
মেঘের ওড়ার শব্দ, দূরে নীল আকাশের গায় –
পাবে খুঁজে সব কিছু । সব কিছু, যা চেয়েছ মুখ
বুঁজে এতকাল। সব ঘরে রয়ে গেছে সর্ষে আকাল !

.                    ***************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
জন্মদিনে
কবি গৌতম দত্ত

এই দিনটায় মন ছুঁতে চায় ছেলেবেলার পথ
মায়ের হাতের মিস্টি পায়েস, বাবার মতামত।
বাবার ডাকে সাড়া দিতে ইচ্ছে করে মনে –
কত বছর ঘুরে গেল নতুন এ জীবনে।
ভাই-বোনেদের হইচইতে কাটতো সারা বেলা –
সকাল বেলার ফুল কুড়োনো, ঠাকুমা’য়ের চেলা।
দিনটা ছিল অনেক সুখের, অনেক আশায় ভরা,
মায়ের হাতে দু-বিনুনী, বন্ধ লেখা পড়া।
সকাল থেকেই ছুটির মেজাজ, আলোয় ভরা দিন
বাবার বাজার, রান্না-ঘরে মা ঘেমে হিমসিম।
প্রথম শাড়ি বাবার দেওয়া, প্রথম কেনা দুল ;
ছোটোবেলা হারিয়ে গেল, এল নতুন কূল।
শাড়ীর ভাঁজে খস্খসানি  হৃদয় ওঠে পড়ে –
পৃথিবী টা কেমন যেন রঙীন নেশায় ভ’রে।
সরস্বতী পূজো যেন,  হঠাত চলে যায়,
আবার স্কুলের পড়াশোনা, মন মানে না হায় !
জীবন যেন অনেক বড়, অনেক কিছু ভাবে –
দিন কেটে যায় দিনের মত, মনটা কেমন কাঁদে।
স্কুল থেকে তাই বিদায় নেওয়া,  কত স্মৃতির মাঝে,
কলেজ যাওয়া শুরু হ’লে মনটা ব্যাথায় বাজে।
বাবা মায়ের ফিসফিসানি  কানে এসে লাগে,
নতুন জীবন হাতছানি দেয় অজানা কোন রাগে।
স্কুলের সে সব দিনগুলো আজ কোথায় যেন গেল,
প্রথম ভালবাসার ছোঁওয়া  চোখ দুটি ছলছলো।
আসা যাওয়ার পথের ধারে কত না চোখ চাওয়া –
দূর্গাপূজোয় বারে বারে এখান ওখান যাওয়া।
ফুচকা-বাদাম-ঝালমূড়ি তে অনুরাগের ছোঁওয়া,
হঠাত করে কার ডাকে’তে একটু সাড়া দেওয়া।
বুকের মাঝে শিরশিরানি মুখেতে নেই ভাষা –
অবাক চোখের তারায় খোঁজা নতুন সে এক আশা।
সবকিছু আজ হারিয়ে গেল সেই নদীটার বাঁকে;
জীবন এখন চলছে শুধু, কে আর হিসেব রাখে !
একই রকম দিন কেটে যায়, একই রকম রাত
ফুলগুলো তো রোজই ফোটে,  স্বপ্ন যে চৌপাট !!

.                    ***************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর