মোর জান-প্রাণ ঐ লাল ধান কবি মেঘনাদ সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত গণসংগীত সংগ্রহ থেকে নেওয়া
মোর জান-প্রাণ ঐ লাল ধান আহারে তোল ভাই সব লক্ষ হাতে খামারে লাগ্ রে সবাই কোমর বেঁধে বাহারে তোল ধান সব লক্ষ হাতে খামারে পৌষের এই শিশির ভেজা ভোরেতে চল্ ভাই সব কাস্তে হাতে ক্ষেতেতে ও বউ শোন্, আলপনা দে দুয়ারে তুলবো ঘরে সোনার ধান এবারে |
সব সনে এই ক্ষেতে সব জনে এই হাতে রয়েছি এ ধান মাথে পাইনিকো এক কণা রক্তে মোর ধান বোনা জান গেছে মান গেছে সেই কথা ভুলবো না জীবন কেটেছে বড়ো দুঃস্বপনে |
পৌষের এই শিশির ভেজা ভোরেতে চল্ ভাই সব কাস্তে হাতে ক্ষেতেতে ও বউ শোন্, আলপনা দে দুয়ারে তুলবো ঘরে সোনার ধান এবারে |
রোদেতে ঝড়েতে জলেতে জাড়েতে ফলাই সোনা মাটির বুকে সইবো না সইবো না ভুখেতে দিন গোনা দেবো না দেবো না এই মাটি এই সোনা শেষ লড়াই লড়বো মোরা ফিরবো না রে ||
দূরে দূরে বনধারে সারি সারি গ্রাম রে কথা ও সুর --কবি মেঘনাদ সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত গণসংগীত সংগ্রহ থেকে নেওয়া
দূরে দূরে বনধারে সারি সারি গ্রাম রে ঝোড়ো হাওয়া শন্ শনিয়ে বয় চাঁদনী রাতে মাদল কে বাজায় ধিতাং ধিতাং ঐ শোনা যায় |
ও, শাল মহুয়ার বন মাতাল করে মন কেন বিষাদী গান গায়, গায় গো গহন আঁধার চিরে কি যে সুর ভেসে আসে পরাণে কাঁদন কেন বয়, বয় গো নিঝুম রাতে সন্তান মায়ের বুকে কেন দুধের লাগি শুধুই কাঁদে হায় |
দূরে দূরে বনধারে কারা যে যায় গো লাল নিশানের ঝোড়ো হাওয়া বয় ! ধান কাটি, কাটি চলো ধান ধান কাটি, কাটি চলো ধান
ও, জমিদারে দেবো না মোর বোনা ধান ঘুম-ভাঙা গান মোদের জাগায়, ভাই গো মহাজনে দেবো না মোর বউ-এর মান দুধের বাছা কাঁদবে না ক্ষুধায়, হায় গো দুঃখের আঁধার কাটে দূরে নীলিমায় মুক্তির গান ঐ শোনা যায় |
কে তার জবাব দেবে কথা ও সুর --কবি মেঘনাদ সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত গণসংগীত সংগ্রহ থেকে নেওয়া
কে তার জবাব দেবে বিষাক্ত বাতাসে হাজার হাজার প্রাণ দিল রাত অন্ধকারে |
সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির দাঁড় টানা ক্লান্ত চোখে নামে রাত্রির তন্দ্রা আর চোখ খুললো না আর ঘুম ভাঙলো না কেন কোলাহল বন্ধ হল অকালে কে জবাব দেবে |
দোসরা ডিসেম্বর, উনিশশো চুরাশি কুয়াশাভরা রাত্রিনিশি | ভূপাল নগরীর অন্ধকারে ইউনিয়ন কারবাইড কারখানা হতে অভিশপ্ত এক দানব নামে মিশে যায় ভূপালের ভারী বাতাসে হানে যত মজুরের লাল হৃদয়ে হাজার হাজার প্রাণ লুটিয়ে পড়ে কে তার জবাব দেবে |
আর লাগবে না বুলডোজার লাগবে না রাইফেল বস্তী সংস্কারে | আর লাগবে না প্রচার লাগবে না বিচার পরিবার উন্নয়নে তুর্কম্যান সেট আর ঘটবে না ঘটবে না সংস্কার শান্তি পথে রক্তপাতহীন শান্তিপথে | আমি জানি এ কিসের ভয়ানক ছায়া এ যে রসায়ন যুদ্ধের মহড়া | যেমন ঘটেছে ভিয়েতনামে আর ঘটেছে আফগানিস্থানে | কে তার জবাব দেবে | সারি সারি মৃতদেহ নেই তাতে বিদ্বেষ হিন্দু না মুসলিম কার দেশ কার দেশ | উঁচু নীচু জাতপাত নেই তার কোনো রেস ঐক্য গড়েছে মেহনতি লাস বেশ |
ঘটতো দাঙ্গা যদি ২রা রাত্রি আমিও হতাম সেই দাঙ্গার যাত্রী হাতেতে নিতাম এক কেরোসিন বালতি জ্বালতাম উঁচু শ্বেত প্রাসাদ-এ |
গহন আঁধার ভাঙে গো কথা ও সুর --কবি মেঘনাদ সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত গণসংগীত সংগ্রহ থেকে নেওয়া [ কিষ্টা গৌড় ও ভূমাইয়া, অন্ধ্রপ্রদেশের এই দুই আদিবাসী গরীব চাষীর রাজনৈতিক কারণে জরূরী অবস্থায় সময়ে ১লা ডিসেম্বর ১৯৭৫--এ ফাঁসী হয় | ইংরেজ শাসনের অবসানের পর এই প্রথম রাজনৈতিক বন্দীর ফাঁসী হল | ]
গহন আঁধার ভাঙে গো সূর্য ওঠে কিষ্টা-ভূমার ডাকে | শোন চাষী, শোন মজুর, শোন দেশবাসী, তোমার লাগি এ দুই ভাইজান গলায় পরলো ফাঁসী | তোমার লাগি এই পরাণ জাগে কলে ক্ষেত্রে খামারে |
দেশবাসী আবার শপথ নাও, সূর্য তোমার নয়কো অনেক দূরে, আঁধার রাতে কিষ্টা ভূমার ডাক আর সহে না পরাণটা যে জ্বলে |
শোন চাষী শোন মজুর, শোন দেশবাসী, আমার মায়ের পায়ের শেকল আজও আছে লাগি | তার লাগি হাজার পরাণ কাঁদে . ভুখে দুখেতে |
দেশবাসী আবার শপথ নাও সূর্য তোমার নয়তো অনেক দূরে আঁধার রাতে কিষ্টা ভূমার ডাক আর সহে না পরাণটা যে জ্বলে ||