কবি মেঘনাদ - জন্মগ্রহণ করেন কলকাতার তালতলায়। তাঁর ফেসবুক পাতায় জন্মদিন জন্ম ১লা নভেম্বর
১৯৪৫ দেওয়া রয়েছে। নকশালবাড়ি আন্দোলনের সময় কমরেডরা তাঁর নাম রেখেছিলেন মেঘনাদ। তাঁর
আসল নাম পৃথ্বীশ দাশগুপ্ত।
ছোটবেলায় তাঁদের তালতলার বাড়িতে যাতায়াত করতেন দিলীপকুমার রায়।
এনট্যালি অ্যাকাদেমি থেকে শেষ করেছেন স্কুল জীবন। ছোটবেলায় মায়ের কাছে হারমোনিয়ম বাজানো
এবং, গান শেখেন। ১৯৬২ সালে কলকাতার শিয়ালদার কাছে, সুরেন্দ্রনাথ কলেজে চীন ভারত নিয়ে
মারামারি হয়। তখন কবি এস.এফ. (স্টুডেন্টস ফেডারেশন) করতেন। বিপক্ষের মারে কবি চলে যান
দুর্গাপুরে, বড়দির কাছে। ১৭/১৮ বছর বয়সে দুর্গাপুরে গানের স্কুলে ভর্তি হন। দুর্গাপুরেই টেকনিক্যাল পাশ
করেন।
চাকরির ব্যবস্থাও হয়ে গেছে, এমন সময় কথাকলি গুরু কেল্লু নায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। ওনার
প্রেরণাতেই কলকাতায় এসে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিখতে দক্ষিণীতে ভর্তি হন। তখন গান শেখাতেন অমল নাগ,
সুশীল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখরা। হাতে করে প্রথম গণসংগীত শেখান কমল সরকার। মেঘনাদ, ১৯৬৫ সালে
তালতলায় একটা গ্রুপ তৈরী করেন। তিনি অজিত পাণ্ডের কাছেও গান শিখতে গিয়েছিলেন।
দক্ষিণীর রবীন্দ্রসঙ্গীতের কোর্স শেষ করা হয়নি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্যই। তালতলার লোকাল কমিটির
বেশীরভাগ সদস্যই, নকশালবাড়ী আন্দোলনকারী সি.পি.আই.এম.এল. দলে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালের ৬ই
আগস্ট দুর্দাপুরে খাদ্য আন্দোলনে শহীদ হন মেঘনাদের দাদা আশিস দাশগুপ্ত। মেঘনাদের নামেো
ওয়ারেন্ট বার হয়েছিল। কিন্তু তখন ধরতে পারেনি। অসীম চ্যাটার্জীদের সঙ্গে ১৯৬৮ সালে গেলেন
গোপীবল্লভপুরে। তার আগে এক-দেড় বছর হাওড়ার জি.কে.ডব্লু ও সন্নিহিত অঞ্চলে কাজ করেছিলেন।
সেই সময়ে উত্তর কলকাতায় অসীম চ্যাটার্জী সৌরেন বসুকে মেঘনাদের গানের কথা বলেন। সৌরেন বাবু
অনেক গান শুনে মেঘনাদের সঙ্গে গানের ধরণ নিয়ে আলোচনা করে বলেছিলেন যা তাঁর গানের ধরণটা
শহুরে হয়ে যাচ্ছে।
মেঘনাদ মনে করেন যে গুরু কেল্লু নায়ার এবং সৌরেন বসু, এই দুজনই তাঁর গানের জীবনের মোড়
ফিরিয়েছিলেন।
বেশ কিছু গান রচনা করলেও তিনি খুব বেশী গণসঙ্গীত গাননি। ১৯৮৫ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ রাজনীতি করতেন।
কাজের চাপে গান গাওয়া হয়নি। মাঝে মাঝে কোন গ্রামে রাতে, অবসরে গেয়েছেন। পরে, প্রথম সারির
নেতৃত্বরা ধরা পড়ে গেলে তাঁকে ডেবরায় পাঠানো হয়। সেখানেই ১৯৭০ সালের ৩রা মে ধরা পড়েন।
মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে বেশী করে গান অনুশীলন করতেন, সবাই উত্সাহ দিত | প্রথম সুযশ ভট্টাচার্য ,
সমর বসুমল্লিক এদের গানে সুর দিতেন। সুযশ ভট্টাচার্যের উত্সাহে গান লিখলেন ‘উতল সাগরে ঢেউয়ের
মাতামাতি’। প্রায় সাড় চার বছর বাদে ২৪শে ডিসেম্বর ১৯৭৪ তারিখে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান।
তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা তাঁর গানের একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেছেন ১৫ই এপ্রীল ২০১১ তারিখ থেকে। সেই
ওয়েবসাইটে, মেঘনাদের গান শুনতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক্ করুন . . .
http://meghnad.org/
আমরা মিলনসাগরে কবি মেঘনাদের কবিতা তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলেই এই
প্রয়াসের সার্থকতা।
আমরা কবি রাজেশ দত্তর কাছে ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ, কবি মেঘনাদের এই পাতাটি তৈরী করার সবরকম
তথ্য, আমাদের দেবার জন্য তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে। আমরা আরও কৃতজ্ঞ শ্রী চিররঞ্জন পালের
(চলভাষ +৯১৯৪৩৪৫১৬৮৯৮) কাছে তাঁর নানাভাবে এই পাতাটি তৈরী করতে সাহায্য করার জন্য।
স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত “এবং জলার্ক” থেকে ২৫.০৫.১৯৯৮ তারিখে প্রকাশিত “যুদ্ধ জয়ের গান”, গ্রন্থ
থেকে নেওয়া তথ্যাদি নেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁদের কাছেও কৃতজ্ঞ।
উত্স - আলপথে মাঠে, স্বপন দাসাধিকারী সম্পাদিত যুদ্ধ জয়ের গান, ১৯৯৭।
কবি মেঘনাদের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
মেঘনাদের গান শুনতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক্ করুন . . .
http://meghnad.org/
কবির ফেসবুক পাতা -
https://www.facebook.com/meghnad.dasgupta
আমাদের ই-মেল - srimilansengupta@yahoo.co.in
এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ১৭.১১.২০১৫
...