শহর থেকে যোজন দূরে গাঁয়ের মেঠো পথের ধারে ধান সিঁড়িতে বাতাস খেলে সূর্য্য ডোবে আকাশ হেলে। আলের সবুজ দূর্বা ঘাসে লাল শালুকের দীঘির পাশে আম কাঁঠালের আড়ে তারি সেথায় শ্রীদাম দাসের বাড়ি। একটি টিনের চালা ঘরে ছাগল শিশু পালন করে। কালো সাদায় মিশ্র রঙে তিড়িং বিড়িং লাফায় ঢঙে। সকাল হলেই তিনটি ছানা উঠোন মেঝেয় আনাগোনা। কখনো কেউ সামনে পেলে তখনি নেয় কোলে তুলে। কেউ কেউ দেয় শস্য দানা ঢুকতে ঘরে নেই যে মানা। বাড়ির সবার কেড়েছে মন আদর করে সবাই ভীষণ। এমনি করে কাটল ক'মাস ক্ষেতের মাঠে খায় কচি ঘাস। যাচ্ছে যে দিন এমন তর তিনটি শিশু হচ্ছে বড়।
শ্রীদাম তখন দুর্গাপুরে কারখানাতে চাকরি করে। বাড়ির লোকে বলল ডেকে বিয়ে দেব মাঘেই তোকে। শ্রীদাম রাজি এক কথাতে স্থির হল দিন আসছে শীতে। যোগাড় হল পয়সা কড়ি উঠল মেতে সারা বাড়ি। পুরুত লেখা হিসাব মত পড়ল জমা ফর্দ যত। মাছ ডাল দই গোল্লা বোঁদে সব হিসাবই মিলল সিধে। মাংস দু'চার কেজির মত গরমিল যে সেথায় যত। বলল শ্রীদাম এমন কি আর একটি দেব তিনটি ছানার। বিয়ের দিনে সকাল হলে বাজল সানাই ছাদনা তলে। জুটল পাড়া পড়শি যত দূরের কুটুম এল কত। উঠল তেতে ভোজের উনুন কাটল কেউ পেঁয়াজ রসুন। গন্ধ ছড়ায় পাকল বাঁধা রইল বাকি মাংস রাঁধা।
চালা ঘরের এক কোণেতে ব্যস্ত ছাগল ঘাস চিবোতে। ঢুকল শ্রীদাম সটান ঘরে একটি ছানা আনল ধরে। ভাবল ওরা কান্ড কি এ করছে আদর আজকে দিনে। কপাল ভাল এই বাড়িতে জন্মেছিলাম ক্ষণ তিথিতে। শ্রীদাম তখন ব্যস্ত ভীষণ লগ্ন বাকি আর কিছু ক্ষণ। স্নেহের ছাগল ছানাটিরে ধরল চেপে দানব জোরে। ত্রিপল ঘেরা কাঁঠাল তলে কষাই হাতে দিল তুলে। শান দায়ের এক কোপেতে ছিন্ন মাথা দেহ হতে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে শ্রীদাম খুশি কষাই বটে!
অদূর কোণে চালা ঘরে রইল যারা কান্না জোড়ে। স্নেহ মায়ার রইল কি দাম বুঝল না তা বিয়ের শ্রীদাম। সামলাতে মান ভোজের চুরি করল আপন হৃদয় চুরি।
আজকে তোমার জন্মদিন আনন্দ তাই অন্তহীন। তোমার সুরের মূর্ছনায় বাজবে সানাই রঙ্গনায়। ছুটবে তুমি দিগ্বিদিক বিশ্ব তোমার গাইবে গীত এখন সবে কুসুম কুঁড়ি বয়স যখন হবে কুড়ি বিকাশে মেধা বাড়িও মান। শেষের আগে পর পর বলছি শোন তারপর পৌঁছে যেও শেষ শিখরে এই অভিলাষ তোমার পরে।