অপাপ রোদ আর অমল নীলে নীলে যখন আমি ছেলেবেলায় যাই তোর বাগানের শিউলি খুঁটে আনি একটু ঠোঁটে যেই ছুঁয়েছি ফুল, কিশোর নদী সোনাই ভাঙে বুকের উপকূল |
তোর তো আছে কালবোশেখী তোর তো আছে আমকুড়োন রাত আমার দু-পা জড়িয়ে ধরে হাজার অবসাদ রে টুমা হাজার অবসাদ |
ঠোঁটের চামচ ভরে পাখি তোর দুচোখে রোদ ঢালে ভোরবেলা, আমার পাখি আর ডাকে না সকালবেলার খেলায় জাগি নষ্ট অবেলায় রে টুমা নষ্ট অবেলায় |
তোর বকুলে বন্যা আসে তোর ছুটি তো খুশির অমলতাস, আমার ডানার ক্লান্তিতে নেই ছুটির পরবাস রে টুমা একটু পরবাস |
তোর নূপুরে বৃষ্টি বাজে বুকের চূড়োয় সাত পাহাড়ের গান | আমি এখন নিষেধ মাপি আমার এখন গার্হস্থ বিজ্ঞান রে টুমা গেরস্থালির টান |
তবুও ভাবি মাঝে মধ্যে --- আমিও বোধহয় অমল হতে পারি নীলপাহাড়ের সঙ্গে বদল সংসারী ঘরবাড়ি তাই তো আসি তোর বাগানে কিশোরী তোর দুধ সাদা পায়ে অঞ্জলি দিই ফুল, বদল হয় না বদল হয় না বদল কিন্তু হয় না আমার, এক জীবনের ভুল |
এখনও সকালবেলা রোদ্দুর হাত রাখে রাতের শিশিরে কবি পল্লব কীর্ত্তনীয়া
এখনও সকালবেলা রোদ্দুর হাত রাখে রাতের শিশিরে এখনও বেহালায় তোলে সুর ভালোবাসা বুকের গভীরে এখনও মানুষের ওষ্ঠে লেগে আছে পরিচিত বিশ্বাস এখনও বন্ধুর ভাবনায় হাতে থাকে কিছু অবকাশ অবন্তী তোকে বাঁচতে হবে আরও কিছুকাল জীবনের উত্সবে গান গাব আয় আবার সকাল |
অপেক্ষা করে তোর তানপুরা, অপেক্ষা করে সা-রে-গা-মা তোর অপেক্ষা করে বন্ধুরা, অপেক্ষাতে সারারাত জাগে ভোর অপেক্ষা কলেজের ক্যান্টিন, অপেক্ষা করে তোর ক্লাসরুম অপেক্ষা করে বৃষ্টির দিন, ভালোবেসে ভেজানোর মরশুম অবন্তী তোকে বাঁচতে হবে আরও কিছুকাল জীবনের উত্সবে গান গাব আয় আবার সকাল |
এখনও কবিতার জন্য মানুষের বুকে আছে অনুভব ও ভালোমানুষের কন্যে, কবিতাই জীবনের উত্সব এই নে একমুঠো কবিতা, এই নে বেপরোয়া ছন্দ এই যে বাড়ালাম দুটি হাত, ধরে দ্যাখ জীবনের গন্ধ অবন্তী তোকে বাঁচতে হবে আরও কিছুকাল জীবনের উত্সবে গান গাব আয় আবার সকাল |
ফেরিওয়ালা গানের ডালি সাজিয়ে ঘুরি কবি পল্লব কীর্ত্তনীয়া
ফেরিওয়ালা গানের ডালি সাজিয়ে ঘুরি জীবন থেকে জীবন থেকে মৃত্যুপুরী রৌদ্র জ্বলে পাড়ায় পাড়ায় গান পুড়ে যায় গান পুড়ে যায় সন্ধ্যেবেলা গানের ক্ষত সুরের সুতোয় আবার জুড়ি
খানিকটা কথা খানিকটা নাটক খানিকটা গান কবি পল্লব কীর্ত্তনীয়া
কথা : সি আর পি আর পুলিশের জুটি . গ্রেফতর করল আদিবীসী মেয়ে দুটিকে . মাওবাদী গেরিলাদের দলে . রাইফেল হাতে ওরা ঘুরত জঙ্গলে . বিমলা সর্দ্দার আর সুলেখা মাহাতো . ল্যাণ্ড মাইনে পুলিশ মারত অহেতুক . জানে না ওরা লেখা পড়া গান্ধিজি মার্কস লেনিন . স্বাধীনতা খায় মা মাথায় দেয় . কোন গেরামের লোক মে-দিন ? . জানেনা ভারত-ভোট-গণতন্ত্র কিংবা সমাজবাদ . শুধু জানে ভাত !
নাকট : তোরা নাকি ভাত খাসনে খোঁজ . গাছের পাতা শেকড় আছে . পোকা আছে মাকড় আছে . কচু আছে ঘেঁচু আছে . কত কিছু মিছু আছে . তাই দিয়ে সার ভোজ . ভাত কি তোদের খেতেই হবে রোজ ?
গান : রাজা আছে মন্ত্রী আছে . সিপাই আছে সান্ত্রী আছে . লাল নীল নেতা আছে . বচ্চন অভিনেতা আছে . ইস্কুল আছে কলেজ আছে . কম্পিউটার নলেজ আছে . সচিন সানিয়া মির্জা আছে . ক্যাডার ভুয়ো ভোটার আছে . মাফিয়া বা প্রোমোটার আছে . দিল আছে ধড়কন আছে . ব্যান্ডের গান আর ফ্যাশন আছে . আঁতেল আছে কবি আছে . কফিহাউস বিপ্লবী আছে . নেতার বড় বাণী আছে . সুস্মিতা সেন রানি আছে . নেতার বড় বাণী আছে |
নাটক : এত কিছু আছে তবু ভাতের জন্য কাঁদিস . পুলিশ মারিস সন্ত্রাসী মাওবাদীস্ !
গান : সুলেখা বিমলা তোরা ভোটের দলে আয় . লাল জামা গায় নীল জামা গায় . লাল জামা নীল জামা গেরুয়া জামা গায় . ভোটের দলে আয় আয় রে . ভোটের দলে আয় . লাল জামা গায় নীল জামা গায় . *************** . সূচিতে . . .
কতখানি নদী সেই মেয়ের চোখে ছেলেটিতে ফসলের ঘ্রাণ সে কি তুই জেনেছিস বলেছে তোকে আমার দুয়ারে ডেকে আন | কে বলেছে, ‘তারা নেই’ ? তাহলে তো ভোর রাত্রির বুকে থেমে যাবে ! তাহাদের হাতে সেই পরশ পাথর মৃত বাঁচা প্রাণেতে ভাসাবে | যায় যদি যাক ভেসে সকল দুয়ার একবার নদী হতে চাই আমিও স্রোতের মত বলব আবার ভালোবাসা আসলে লড়াই |
বলো বলো পেলে তুমি কতটা মাটি মহেশ সে ছেলেটির নামে সে মেয়েটি সরিতা বুকের বাটি কত ঢালে মানুষের গ্রামে ! মাটি মানুষের কাছে কতটা গেলে মাফিয়া ও নেতা ভয় পায় কত ভয় মাফিয়ার বুলেটে মেলে দুটি লাশে লেখা হয়ে যায় | কত ভালোবাসলে লাশ হওয়া যায় ক্ষত খুলে জেনে নিতে চাই আমার দুয়ারে ক্ষতবিক্ষত আয় আয় লাশ দুহাত বাড়াই
নক্ষত্রের থেকে জল ঝরে যেতে দেখেছ তুমি কোনো দূর সাগরের অচেনা মৌসুমী বয়েছিল রাত জানালায় তোমার ঘুমের পাতায় পাতায় তোমার ঘুমের পাতায় |
জানালায় ভেসে যায় রাতের জাহাজ ফিরবে না তবু কেন যায় একই ঢেউ পার হয়ে সবাই খোঁজে সোনামুখী বন্দর কে জানে কোথায় ঝাউবনে লেগে থাকে বিষণ্ণ ভোঁ হাওয়া সেই বাঁশি লিখে যায় তোমার ঘুমের পাতায় পাতায় তোমার ঘুমের পাতায় |
রাতপাখি উড়ে গেলে তাদের ডানায় নাবিকের ঘুম থাকে লেগে তারাও কি সোনামুখী বন্দরে যায় জীবনের অসীম আবেগে তাদের ডানায় ঝরে তারাদের জল হাওয়া সেই জল লিখে যায় তোমার ঘুমের পাতায় পাতায় তোমার ঘুমের পাতায় |