কবি রজনীকান্ত সেন-এর "শেষ দান" কাব্যগ্রন্থের গান ও কবিতা
|
বিশাল-বিমুক্ত-শূন্য-চন্দ্রাতপ-তলে
কবি রজনীকান্ত সেন
শেষ দান (১৯২৭) কাব্যগ্রন্থের গান ও কবিতা।
যোগী
বিশাল-বিমুক্ত-শূন্য-চন্দ্রাতপ-তলে,
চপলা প্রকৃতি-মাঝে, অচঞ্চল, ধীর,
উত্তুঙ্গ শিখর-শ্রেণী প্রসারি’ গগনে
কবি রজনীকান্ত সেন
শেষ দান (১৯২৭) কাব্যগ্রন্থের গান ও কবিতা।
সৃষ্টি-স্থিতি-লয়
উত্তুঙ্গ শিখর-শ্রেণী প্রসারি’ গগনে
সুবিশাল গিরি ওই অটল গম্ভীর,
ফল-পুষ্প-তরুলতা-তুষার-কাননে,
প্রকৃতির চিরশান্ত পবিত্র মন্দির।
লীলাময়ী নির্ঝরিণী ঝর ঝর ঝরে,
প্রহেলিকাময় চিরন্তন!
কবি রজনীকান্ত সেন
শেষ দান (১৯২৭) কাব্যগ্রন্থের গান ও কবিতা।
মহাকাল
প্রহেলিকাময় চিরন্তন!
. নিত্যবুদ্ধ---চিরসুপ্ত,
. স্বপ্রকাশ, চিরলুপ্ত ;
অবিজ্ঞেয়, অনুভূত, ভীম নিরঞ্জন!
পরিত্রাণ যদি মোর, ভগবান্, নাহি কর তুমি
কবি রজনীকান্ত সেন
শেষ দান (১৯২৭) কাব্যগ্রন্থের গান ও কবিতা।
ক্ষণিক এ সুখদুঃখ
পরিত্রাণ যদি মোর, ভগবান্, নাহি কর তুমি,
এক্সটেম্পোর পত্র পেয়ে
কবি রজনীকান্ত সেন
শেষ দান (১৯২৭) কাব্যগ্রন্থের গান ও কবিতা।
হাসপাতালের শয্যায় লেখা। মৃত্যুর কয়েকদিন পূর্বে কবির পরম বন্ধু প্রথিতযশা শ্রীযুক্ত
অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় (১৮৬১ ~ ১৯৩০) মহাশয়ের উচ্ছ্বসিত কবিতায় লিখিত পত্রের উত্তের
রচিত এই কবিতা।
বিদায়-লিপি
এক্সটেম্পোর পত্র পেয়ে
. হয়েছি অবাক্।
হাজার হলেও, দাদা,
. মরা হাতী লাখ।
তোমার মঙ্গল-ইচ্ছা
. হ’ল না সফল,---

দাও, ভেসে যেতে দাও তারে
কবি রজনীকান্ত সেন
শেষ দান (১৯২৭) কাব্যগ্রন্থের গান ও কবিতা।
হাসপাতালের শয্যায় লেখা। এই কবিতাটি বঙ্গসাহিত্যে কবি কান্তকবির শেষ দান। এই
কবিতাটি রচনার কয়েক দিন পরেই, ১৩ই সেপ্টেম্বর ১৯১০ তারিখে, তাঁর
লেখনী চিরতরের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়।
শেষ দান
দাও, ভেসে যেতে দাও তারে।
ঐ প্রেমময় পরমেশ-পাদোদক!
তাহার চরণামৃত ছুটেছে যে অশ্রুরূপে,
তারে দিও না গো বাধা।
. যেতে দাও!
আমার মরাল-মন ঐ চ’লে যায় কার গান গেয়ে,
শোন। ঐ স্রোতবেগে, মধুর তরঙ্গ তুলি’
. যেতে দাও!
মুছিও না, ওটিও চলিয়া যাক্
আসিয়াছে যেথা হ’তে,---
সে চরণে ফিরে চ’লে যাক্।
দিয়ে যাক্ এ তৃষায় কাতর
পৃথিবীরে সুশীতল সুমধুর ধারা,---
অমর করিয়া যাক্ বহি।
ঐ অশ্রুটুকু এ জীবন-মরালের পাথেয় মধুর,
. সেটুকু নিও না কেড়ে ;
. দিতে চাই তারি পদতলে---
. যে দিয়েছিল অশ্রুভিক্ষা।
আমার দয়াল অই---
. ব’সে আছে নিরজনে!
আমারে দিও না বাধা,---
. ভেসে যাই একমনে!