রস-সাগর কবি কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ীর সমস্যা পূরণ কবিতা
|
তুমিই সর্ব্বস্ব মোর ওহে নারায়ণ
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন কৃষ্ণনগরের রাজসভায় কোন এক লোক এই সমস্যাটি দিলেন, “তুমিই সর্ব্বস্ব মোর
ওহে নারায়ণ!” তখন রস-সাগর এভাবে সেই সমস্যা পূরণ করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “তুমিই সর্ব্বস্ব মোর ওহে নারায়ণ!”
সমস্যা পূরণ ---
এই ত্রিভুবনে হরি! তুমিই বিধাতা,
তুমি মোর পিতা, তুমি মোর মাতা |
তুমি মোর পুত্র মিত্র আত্মীয় সোদর
ধর্ম্ম অর্থ কাম মোক্ষ তুমি নিরন্তর |
তুমি মোর বিদ্যা বুদ্ধি, তুমি মোর ধন,
‘তুমিই সর্ব্বস্ব মোর ওহে নারায়ণ |’
তুমি কার, কে তোমার, মর কার তরে
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
কোন এক পণ্ডিত রসসাগরকে এই সমস্যাটি পূর্ণ করতে দিলেন --- “তুমি কার, কে তোমার,
মর কার তরে!” রসসাগর এভাবে পূরণ করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “তুমি কার, কে তোমার, মর কার তরে!”
সমস্যা পূরণ ---
নিবেদন করি আমি, ওরে মূঢ় নর !
যাহা কিছু দেখিতেছি, সকলি নশ্বর |
কোথা রবে গাড়ী যুড়ী, কোথা ঘর বাড়ী
কিছুদিন পরে সব যাবে গড়াগড়ি |
শুইয়া সোণার খাটে কর কত ঠাট্ ,
ঘাটে গে’লে হায় কোথা রবে সেই খাট !
যে মুখে খাইতে সুখে সন্দেশ মিঠাই
দারা পুত্র কন্যা সেই মুখে দিবে ছাই |
কোথা গেলে টাকা পাব,--- ভাবিয়া বিরলে
দিবানিশি ঘুরিতেছ এই ভূমণ্ডলে |
জুয়াচুরি বাটপাড়ি করিয়া নিয়ত
ঘুরে মর নাক-ফোঁড়া বলদের মত |
অপরে ঠকাতে গিয়া নিজেই ঠকিলে,
ভাবিলে না একবার বসিয়া বিরলে |
ওরে জীব ! পূজ শিব, --- বিলম্ব না সয়,
এখনি আসিয়া কাল করিবে প্রলয় |
এ রস-সাগর কয় পড়িয়া ফাঁপড়ে,-----
‘তুমি কার, কে তোমার, মর কার তরে !’
তৈল থাকিতে দীপ গেল নিবাইয়ে
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন রাজসভায় রামায়ণ সম্বন্ধে নানা গল্প হচ্ছিল, তখন একজন বলে উঠলেন, “তৈল
থাকিতেও দীপ গেল নিবাইয়ে।” মহারাজ ইশারা করা মাত্রই রস-সাগর তখনি ইহা পূরণ
করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “তৈল থাকিতে দীপ গেল নিবাইয়ে।”
সমস্যা পূরণ ---
কৈকেয়ী-বচনে রাজা রামে বনে দিয়ে
মনস্তাপে ব্রহ্ম-শাপে জর্জ্জরিত হয়ে
দশরথ অযুত বত্সর আয়ুঃ পেয়ে
তৈল থাকিতেও দীপ গেল নিবাইয়ে।
তোমা বিনা অধমের গতি নাই আর
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একবার সমস্যা উঠে ছিল, “তোমা বিনা অধমের গতি নাই আর!” রসসাগর ইহা এভাবে
পূরণ করেছিলেন . . .
সমস্যা --- “তোমা বিনা অধমের গতি নাই আর।”
সমস্যা পূরণ ---
ধনহীন কর মোরে, কিংবা ধনবান,
প্রদান করহ মান, কিংবা অপমান ;
বৈকুণ্ঠে বসতি কিংবা নরকে বসতি,
যা ইচ্ছা করাও মোরে, নাহি তায় ক্ষতি !
ভক্তি যেন থাকে হরি ! তোমার চরণে,
এই ভিক্ষা চাহিবার সাধ আছে মনে |
তোমার চরণে ভক্তি একমাত্র সার,
‘তোমা বিনা অধমের গতি নাই আর !’

. *******************
[ ব্যাখ্যা - ১৭৩৬ সালের ১৯ জুলাই ও ২ আগষ্ট যথাক্রমে কাটোয়া ও গড়িয়া
নামক স্থানে এবং কিছু দিন পরে উদয়-নালায় মীরকাশিমের সাথে ইংরেজদের তিনটি যুদ্ধ
হয়। এই তিনটি যুদ্ধেই ইংরেজরা জয়লাভ করেন। নিজের পরাজয়ের খবর পেয়ে
মীরকাশিম অক্টোবর মাসে মুঙ্গেরে যান। ইংরেজ সৈন্যগণ তার পিছু নেয়। মীরকাশিম
গর্গিণ নামে একজন রণ কুশল আর্মেনিয়ান সেনানীকে তার সেনাপতি করেছিলেন। ভ্যান্
সিটার্ট সাহেব গর্গিণের সাথে বন্ধুত্ব করে তাকে নিজের পক্ষে নিয়ে আনেন। এই কারণেই
মীরকাশিমের পরাজয় ঘটে। ]
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
থোতা মুখ ভোতা হ’য়ে গেল
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একবার মহারাজ গিরীশ চন্দ্র প্রশ্ন করলেন, ”থোতা মুখ ভোতা হ’য়ে গেল।” রস-সাগরও তা
তখনই পূরণ করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “থোতা মুখ ভোতা হ’য়ে গেল।”
সমস্যা পূরণ ---
দক্ষিণা করিল দান গুরুগৃহে গিয়া
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির প্রসিদ্ধ দেওয়ান সুরসিক স্বর্গিয় কার্ত্তিকেয়চন্দ্র রায় মহাশয় একদিন
রসসাগরকে এই সমস্যাটি পূরণ করতে দেন --- “দক্ষিণা করিল দান গুরুগৃহে গিয়া!”
রসসাগর, দেওয়ান মহাশয়ের মনের ভাব বুঝতে পেরে তখনি এটা এভাবে পূরণ করে
দিলেন . . .
সমস্যা --- “দক্ষিণা করিল দান গুরুগৃহে গিয়া!”
সমস্যা পূরণ ---
মদন-অনল যদি জ্বলে একবার,
হৃদয়-কুটীর খানি করে ছারখার !
ভাল মন্দ জ্ঞান আর রহে না তখন,
তোমার অনন্ত লীলা, শুন রে মদন !
কত রম্য নারী স্বর্গে করেন বিরাজ,
সেই সবে পরিহরি’ কিন্তু দেবরাজ
গুরুপত্নী অহল্যায় প্রাণ সঁপে দিয়া
‘দক্ষিণা করিল দান গুরুগৃহে গিয়া !”
. *******************
[ ব্যাখ্যা - শি-কার অর্থাৎ শিব, বি-কার অর্থাৎ বিষ্ণু এবং ব্র-কার অর্থাৎ ব্রহ্মা, --- এই
তিনটী নামের দ্বিত্ব করলে অর্থাৎ প্রত্যেক নাম দুইবার উচ্চারণ করলে দণ্ডধর ( যম )
দণ্ডভয়ে ( শাস্তি পাবার ভয়ে ) দণ্ডবৎ ( সাষ্টাঙ্গ প্রণাম ) করে থাকে | ]
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
দণ্ড-ভয়ে দণ্ডধর দণ্ডবৎ করে
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন রস-সাগরের কোন বন্ধু প্রশ্ন করলেন, “দণ্ড-ভয়ে দণ্ডধর দণ্ডবৎ করে।” রসসাগর
এভাবে তখনি সেই সমস্যাটি পূরণ করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “দণ্ড-ভয়ে দণ্ডধর দণ্ডবৎ করে।”
সমস্যা পূরণ ---
মৃত্যু-কালে পড়িয়া পাতকী খাবি খায়,
সন্নিকটে শ্মশানে ঘেরিল ধর্ম্মরায় |
আকার-ইঙ্গিতে ভাবে, --- হেন লয় চিত্তে,
শি-কার, বি-কার কিংবা ব্র-কারের দ্বিত্বে
যদি ব্যক্তি করে উক্তি, কার শক্তি ধরে,
‘দণ্ড-ভয়ে দণ্ডধর দণ্ডবৎ করে |’
দরিদ্র পতিকে পত্নী ফে’লে চলে যায়
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
মহারাজ গিরীশচন্দ্রের দারুণ আর্থিক কষ্ট চলতে থাকায় রসসাগর কয়েক মাসের বেতন
পান নি। এই কারণে তিনি একদিন মহারাজ গিরীশচন্দ্রের কাছে গিয়ে দুঃখ জানিয়ে শেষে
ঠাট্টার ছলে বললেন, “মহারাজ! আমার সংসারে যে রকম কষ্ট হয়েছে, তাতে ভয় হয় যে,
কোন দিন হয়ত ব্রাহ্মণী এই অধম ব্রাহ্মণকে ছেড়ে চলে যাবেন।” এটা শুনেই মহারাজ হেসে
রস-সাগরকে বললেন, “দরিদ্র পতিরে পত্নী ছেড়ে চলে যায়।” রসসাগর বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট
না করে সমস্যাটি পূরণ করে দিলেন।
সমস্যা --- “দরিদ্র পতিরে পত্নী ফে’লে চলে যায়।”
সমস্যা পূরণ ---

দালান চুরির কথা কে শুনেছে কাণে
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন যুবরাজ শ্রীশচন্দ্রের কোন বন্ধু রসসাগরকে এই সমস্যাটি পূর্ণ করতে দিলেন, ---
“দালান চুরির কথা কে শুনেছে কাণে!” রসসাগর একটি ঐতিহাসিক ঘটনা অবলম্বন করে
এই সমস্যাটি এভাবে পূরণ করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “দালান চুরির কথা কে শুনেছে কাণে!”
সমস্যা পূরণ ---
মহারাজ চেৎসিংহ কাশীধামে ছিল,
হেষ্টিংসের সনে তাঁর বিবাদ বাঁধিল |
কান্ত বাবু মধ্যে থাকি’ মজা লুটে নিল,
কত মহামূল্য ধন বাটীতে আনিল |
লক্ষ্মী-নারায়ণ শিলা আজি বিদ্যমান,
প্রস্তর-নির্মিত এক সুন্দর দালান |
হ’য়েছে পুকুর চুরি,--- তাও লোকে মানে,
‘দালান চুরির কথা কে শুনেছে কাণে !’
দিতে হয়, দিবার নয়, দিই কি না দি
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
মহারাজ গিরীশচন্দ্র ভীষণ কৌতুক-প্রিয় ও পরিহাস-রসিক ছিলেন। কোন বন্ধুর শোবার
ঘরে রাতে আঁড়ি পাতার জন্য তার এক প্রিয় বিশ্বাসী বয়স্ক লোককে পাঠান। তিনি
মহারাজের আদেশ পালন করে পরদিন সকালে মহারাজের কাছে সব কথা নিঃসঙ্কোচে
বললেন। বিকেলে সেই বন্ধু যখন মহারাজের সাথে দেখা করতে এলেন, তখন মহারাজ
তার সামনে রসসাগরকে প্রশ্ন করলেন “দিতে হয় দিবার নয়, দিই কি না দি।” রসসাগর
তখনই আলাদা আলাদা ভাবে ছয়টি কবিতা রচনা করে দিলেন।
সমস্যা ---- “দিতে হয়, দিবার নয়, দিই কি না দি |”
সমস্যা পূরণ ---
. ১ম পূরণ
রামকে আনিতে এল বিশ্বামিত্র মুনি,
শুনি রাজা দশরথ লোটায় ধরণী |
না দিলে শাপয়ে মুনি,--- এখন করি কি ?
‘দিতে হয়, দিবার নয়, দিই কি না দি |’
. ২য় পূরণ
শ্রীরাম হবেন রাজা, সীতা হবেন রাণী,
বনে যাইবেন রাম, স্বপনে না জানি |
রাম সীতা বনে দিয়া প্রাণে কিসে রই,
“দিতে হয়, দিবার নয়, দিই কি না দি ||”
. ৩য় পূরণ
ভীম বলে কীচকের শাস্তি দিতে পারি,
অজ্ঞাত হইবে জ্ঞাত, এই ভয় করি |
না দিলে ছাড়িবে প্রাণ পঞ্চালের ঝি,
“দিতে হয়, দিবার নয়, দিই কি না দি !”
. ৪ র্থ পূরণ
যখন হেমন্ত কন্যা করেছিল দান,
ডাক দিয়া আনিলেন যত এয়োগণ |
জয়া ও বিজয়া আর চন্দ্রমুখী হীরে,----
সকলেই আসিলেন এয়ো হইবারে |
চরণে আল্ তা দিতে নাপিতের ঝি,
“দিতে হয়, দিবার নয়, দিই কি না দি !”
. ৫ম পূরণ
কৃষ্ণচন্দ্রে নিতে এল সে অক্রুর মুনি,
ভাবিতে লাগিলা নন্দ সেই কথা শুনি !
না দিলে রুষিবে কংস, ইথে করি কি,
“দিতে হয় দিবার নয়, দিই কি না দি !”
৬ষ্ঠ পূরণ অত্যন্ত আদিরসাত্মক বলে, সংকলক ও সম্পাদক পূর্ণচন্দ্র দে তা ছাপান নি!