রস-সাগর কবি কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ীর সমস্যা পূরণ কবিতা
|
ঔষধ জাহ্নবী-জল, বৈদ্য নারায়ণ
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একবার রস-সাগর অসুস্থ হয়ে পরায় রাজ-বৈদ্য তার বাড়িতে গিয়ে চিকিত্সা করেছিলেন।
তার চিকিত্সায় সুস্থ হয়ে রস-সাগর রাজ-বৈদ্যের প্রশংসা করেন। রাজ বৈদ্য বিনীত
ভাবে বলেন, “ঔষধ জাহ্নবীতোয়ং বৈদ্যো নারায়ণঃ স্বয়ম্ |” রস-সাগরও হাসতে হাসতে
বলেন “ঔষধ জাহ্নবী জল, বৈদ্য নারায়ণ!” এটা শুনেই রাজ-বৈদ্য বলেন “এখন আপনার
সমস্যাটি আপনিই পূরণ করে দিন।” তখন রস-সাগর এভাবে তা পূরণ করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “ঔষধ জাহ্নবী-জল, বৈদ্য নারায়ণ!”
সমস্যা পূরণ ---
কচু ঘেঁচু নীচু বটে, উঁচু কিন্তু কাজে
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন যুবরাজ শ্রীশচন্দ্র কয়েকজন বন্ধু নিয়ে সভায় বসে গল্প করছিলেন, এমন সময় রস-
সাগর এসে উপস্থিত হলেন। তাকে দেখেই যুবরাজ প্রশ্ন করলেন, “কচু ঘেঁচু নীচু বটে, উঁচু
কিন্তু কাজে!” রস-সাগর তখনি সেই সমস্যা পূরণ করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “কচু ঘেঁচু নীচু বটে, উঁচু কিন্তু কাজে!”
সমস্যা পূরণ ---
. *******************
[ ব্যাখ্যা - ইতিহাসে মহারাজা দেবী সিংহ নাশিপুর রাজ পরিবারের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন
১৭৫৭ এর পলাশির যুদ্ধের পরে। তিনি ধীরে ধীরে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির ট্যাক্স
কালেক্টর হয়েছিলেন। সম্ভবত, এই কবিতায় তাঁর উত্থানের পন্থা সম্বন্ধে যে জনশ্রুতি
প্রচলিত ছিল তাই বর্ণনা করেছেন রসসাগর। ]
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
কত দেবী পড়ে দেবী-সিংহের কবলে
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন যুবরাজ শ্রীশচন্দ্র রস-সাগরকে এক ঐতিহাসিক সমস্যা পূরণ করতে দিয়েছিলেন,
--- “কত দেবী পড়ে দেবী-সিংহের কবলে!” রস-সাগর এভাবে সেই সমস্যা পূরণ করেছিলেন
. . .
সমস্যা --- “কত দেবী পড়ে দেবী-সিংহের কবলে!”
সমস্যা পূরণ ---
ক’নে বৌ রহে যথা ঘোমটা ভিতরে
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
মহারাজ গিরীশ-চন্দ্রের অর্থাভাবের জন্য রসরাজ কয়েক মাস বেতন পান নি। তিনি যখন
মহারাজের খাজাঞ্চি রামমোহন মজুমদারের নিকট তাগাদা করতে গেলে রামমোহন বেতন
দেবার সম্বন্ধে কোন কথা না বলে লজ্জায় নতমুখে বসে থাকেন। একদিন রামমোহনের মুখে
কোন উত্তর না পেয়ে রস-সাগর মহারাজের নিকট গিয়ে বললেন --- মহারাজ! টাকার
তাগাদা করতে গেলে মহারাজ কনে বৌ-এর মত মুখ খানি নীচু করে থাকে।”
তখন মহারাজ হেসে হেসে রস-সাগরকে বললেন যদি আমার এই সমস্যাটি পূরণ করে
দিতে পারেন তাহলে আমি আপনার টাকার সমস্যা পূরণ করে দিব এখনই। এই বলে এই
সমস্যাটি পূরণ করতে দিলেন . . .
সমস্যা ---“ক’নে বৌ রহে যথা ঘোমটা ভিতরে।”
সমস্যা পূরণ---
হেঁটে হেঁটে প্রাণ গেল, মাহিনা না পাই,
রামমোহনের কাছে লাথি ঝাঁটা খাই |
কহিলে টাকার কথা নাহি দেয় উত্তর,
গুরুক টানিয়া কে’সে মরে নিরন্তর |
রাঙা রাঙা চোক দুটি, ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলা,
পেটের ভিতর তার আছে কত ছলা |
ভাঁড়ে মা ভবানী তার, কিন্তু আসবাব,
ঠিক ব’সে আছে যেন সিরাজ নবাব |
হাই তোলে, তুড়ি মারে, মাথা হেঁট করে,
‘ক’নে বৌ রহে যথা ঘোমটা ভিতরে !
কবিতা লিখিতে যেন কপিতা না হয়
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন যুবরাজ শ্রীশচন্দ্র সভায় বসে কয়েকজন বন্ধুর সাথে গল্প করছিলেন, এমন সময়
রস-সাগর সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলেন। শ্রীশচন্দ্র তাকে দেখা মাত্র দেখেই পাশে এক
বন্ধুকে দেখিয়ে বললেন, “রস-সাগর মহাশয় আমার এই বন্ধুটি আপনার মত বাংলা ভাষায়
সমস্যা পূরণ করতে অভ্যাস করছেন।” তখন রস-সাগর বললেন “কবিতা লিখিতে যেন
কপিতা না হয়।” শুনেই শ্রীশচন্দ্র বলেন, “আপনার সমস্যা আপনাকেই পূরণ করে দিতে
হবে।”
সমস্যা --- “কবিতা লিখিতে যেন কপিতা না হয়!”
সমস্যা পূরণ---
“কবিতা লিখিতে যেন কপিতা না হয়!”
কবিতা লেখেন যিনি বিদ্বান্ হইয়া,
তিনিই যথার্থ কবি, --- দেখহ ভাবিয়া |
যে জন কবিতা লেখে, কিন্তু বিদ্যা নাই,
সে জন যথার্থ কপি, --- জানিও ইহাই |
সত্কূল-সম্ভূতা যিনি, তারে বলি জায়া,
নামে মাত্র জায়া যেই, তারে বলি মায়া |
এ কথাটি মনে রেখো কবি মহাশয়!
‘কবিতা লিখিতে যেন কপিতা না হয়!’
কমলার আগমন ব্রাহ্মণের ঘরে
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন যুবরাজ শ্রীশচন্দ্র রস-সাগরকে বললেন, “আপনাকে এখন একটি সমস্যা পূরণ
করতে দিব। কোন একটি বিশেষ ঘটনা অবলম্বন করে আপনাকে এটা পূরণ করতে হবে।”
এটা বলেই তিনি এই সমস্যাটি পূরণ করতে দিলেন, -- “কমলার আগমন ব্রাহ্মণের ঘরে!”
রস-সাগর যুবরাজের মনভাব বুঝতে পেরে এটা এভাবে পূরণ করলেন . . .
সমস্যা --- “কমলার আগমন ব্রাহ্মণের ঘরে!”
সমস্যা পূরণ ---
অগস্ত্য ঋষির বংশে জনম লভিয়া
এতদিন কাটাইনু বাতাপি সেবিয়া |
ওহে নবকৃষ্ণ দেব ! তোমারি কৃপায়
কমলা আমার ঘরে আসিলেন হায় !
বিচিত্র ব্যাপার ইহা দেখিনু সংসারে,--
‘কমলার আগমন ব্রাহ্মণের ঘরে !’
কলঙ্ক ঘুচাতে এসে হইল কলঙ্ক
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
কৃষ্ণনগরে কোন এক দোকানদারের দোকানে রস-সাগর মহাশয় সংসারের প্রয়োজনীয়
জিনিসপত্র কিনতেন। দোকানদারের কাছে অনেকদিন থেকেই তার কিছু ধার দেনা ছিল।
রাজবাড়ি থেকে সময়মত বেতন না পাওয়াতে তিনি ওই দেনা শোধ করতে পারেন নি।
কিছুকাল পরে রাজবাটি থেকে সামান্য কিছু টাকা হাতে আসতেই দোকানদারকে দিতে
গেলেন। দোকানদার টাকা পেয়েও বলল “এখনও আপনার অনেক দেনা রহিল |” তখন রস-
সাগর বললেন, “কলঙ্ক ঘুচাতে এসে হইল কলঙ্ক!” দোকানদার অত্যন্ত সুরসিক লোক
ছিলেন | তিনি বললেন “রস-সাগর মহাশয়! কৃষ্ণ-বিষয়ক কোন একটি ঘটনা নিয়ে আপনার
সমস্যা আপনাকেই পূরণ করতে হবে। এটা শুনেই দোকানে দাঁড়িয়ে তিনি সমস্যাটি এভাবে
পূরণ করলেন . . .
সমস্যা --- “কলঙ্ক ঘুচাতে এসে হইল কলঙ্ক!”
সমস্যা পূরণ ---
লম্পট কপট রোগ, অবলার কর্ম্মভোগ,
নন্দালয়ে কীর্ত্তিযোগ, গোকুলে আতঙ্ক !
কেঁদে কন্ যশোমতী, জটীলা কুটিলা সতী,
জল আন শীঘ্রগতি উভয়ে নিঃশঙ্ক |
মায়ে ঝিয়ে একি লাজ, পড়িল কলঙ্ক-বাজ,
ক্ষিতিতলে বৈদ্যরাজ পাতিলেন অঙ্ক |
ব্রজে মাত্র সতী রাই, হরি হরি ঘরে যাই,
‘কলঙ্ক ঘুচাতে এসে হইল কলঙ্ক ||’
কাচ্ছা বাচ্ছা লয়ে কিসে বাঁচে দিগম্বর
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একবার কৃষ্ণনগরে কোন এক ব্রাহ্মণের বাড়িতে অন্নপূর্ণা পূজোতে নিমন্ত্রিত হয়ে সেখানে
গিয়েছিলেন। গৃহস্বামী মহাশয় হাসতে হাসতে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কাচ্ছা বাচ্ছা লয়ে
কিসে বাঁচে দিগম্বর!” এটা শোনা মাত্রই রস-সাগর মহাশয় এই উত্তর দিয়েছিলেন . . .
সমস্যা --- “কাচ্ছা বাচ্ছা লয়ে কিসে বাঁচে দিগম্বর!”
সমস্যা পূরণ ---
বুঝে লও সে সংসারে হয় কত সুখ,
স্বয়ং কর্ত্তার যদি রহে পাঁচ মুখ !
একটী পুত্রের মুখ হাতীর মতন,
অন্যটির ছটী মুখরহে সর্ব্বক্ষণ !
মাঝে মাঝে আসে এক অতিথি বাটিতে,
“চতুর্ম্মুখ” নাম তাঁর বিখ্যাত জগতে !
অন্নপূর্ণা না রহিলে গৃহে নিরন্তর,
“কাচ্ছা বাচ্ছা ল’য়ে কিসে বাঁচে দিগম্বর |”
কাছে আগুয়ান
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
একদিন মহারাজ গিরীশচন্দ্র সভায় বসে রস-সাগর ও অন্যান্য পারিষদ-বর্গের সাথে
মহারাজেন্দ্র বাহাদুর কৃষ্ণচন্দ্রের মাতৃশ্রাদ্ধে যে সমারোহ হয়েছিল, সে বিষয়ে নানা গল্প
করছিলেন। গল্প করতে করতে তিনি রস-সাগরকে বললেন, “কাছে আগুয়ান্।” রস-সাগর
মহারাজের মনের ভাব বুঝতে পেরে তখনি এই সমস্যাটি সমাধান করে সভার সকল
লোককে চমকে দিয়েছিলেন . . .
সমস্যা --- “কাছে আগুয়ান”।
সমস্যা পূরণ ---
তিন জনে তিন মাতৃ-শ্রাদ্ধ করিলেন যবে
গগন ফাটিয়া ছিল তাঁহাদের রবে |
কৃষ্ণচন্দ্র, নবকৃষ্ণ, গোবিন্দ-দেওয়ান,---
কার সাধ্য ইহাদের ‘কাছে আগুয়ান |’
. *******************
[ ব্যাখ্যা – বিশ্বামিত্র মুনি রাম ও লক্ষ্মণকে নিয়ে মিথিলায় যান, তখন তারা পথে একটি
নদী দেখতে পান। তখন সকলকে নদীর অপর পারে নিয়ে যাবার জন্য বিশ্বামিত্র মাঝিকে
আদেশ করেন। মাঝি কিছুতেই তার আদেশ পালন করতে চাইল না। সে ব্যক্তি
শ্রীরামচন্দ্রের মূর্ত্তি ও জ্যোতি দেখেই তাকে সাক্ষাৎ নারায়ণ বলে বুঝতে পেরেছিল। সে
পূর্বেই শুনেছিল যে, এই মহাপুরুষের চরণের ছোঁয়াতেই একটি পাথরখন্ড মানুষ হয়ে
গিয়েছিল। পাছে তার নৌকাও মানুষ হয়ে যায়, এই ভয়ে মাঝি তাদেরকে নদীর অপর
পারে নিয়ে যেতে সাহস করল না। মাঝি নিজ অপভাষায় বিশ্বামিত্র মুনিকে এভাবে
সম্বোধন করে বলছে। ]
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
কাঠ পাথরে বিশেষ কি?
কবি রসসাগর কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী
কবিভূষণ শ্রী পূর্ণচন্দ্র দে কাব্যরত্ন উদ্ভটসাগর সংগৃহিত ও সম্পাদিত, "রসসাগর কবি
কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মহাশয়ের বাঙ্গালা-সমস্যা-পূরণ" গ্রন্থ থেকে নেওয়া, (১৯২০)।
কোন সময়ে সুপ্রসিদ্ধ কবি-ওয়ালা সাতুরায় ( ছাতুরায় ) কৃষ্ণনগরে কবির গাওনা করতে
গিয়েছিলেন। আগে থেকেই তিনি শুনেছিলেন মহারাজ গিরীশচন্দ্রের সভার রস-সাগর এক
কবি উপস্থিত থাকতে পারেন। তার গাওনা শেষ হলে তিনি মহারাজের সাথে দেখা করতে
যান। রস-সাগরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সাতুরায় বললেন রস-সাগর মহাশয়!“ আমি
কি আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে পারি?” রস-সাগর মহাশয় খুশী মনে অনুমতি দিলে
সাতুরায় বলেন, “কাঠ পাথরে বিশেষ কি?” রস-সাগর বললেন “আপনার এরূপ সহজ
ভাষাতেই আমি পূরণ করে দিই” --- এটা বলেই তখনি তা পূরণ করে দিলেন . . .
সমস্যা --- “কাঠ পাথরে বিশেষ কি?”
. ( বিশ্বামিত্রের প্রতি মাঝির উক্তি )
সমস্যা পূরণ ---
তোমার চাল না চুলো ঢেঁকি না কুলো পরের বাড়ী হবিষ্যি। আমার নাই লক্ষ্মী, দীন দুঃখী, কতক গুলি কুপুষ্যি। যখন ঠেক্ বে পা, ঘুচ্ বে লা লা হয়ে যাবে মনিষ্যি। আমি ঘাটে থাকি, বুদ্ধি রাখি কাঠ পাথরে বিশেষ কি’?
|