কবি রাসবিহারী মুখোপাধ্যায় - জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত বাংলার ঢাকা জেলার, তারপাশা-
বিক্রমপুরে। অল্পবয়সে তাঁর পিতা-মাতার মৃত্যু হলে পিতামহ তারকচন্দ্র মুখোপাধ্যায় তাঁকে মানুষ করেন।

তিনি জাতিতে কুলীন ব্রাহ্মণ ছিলেন। দারিদ্রের কারণে তাঁর পিতামহ তাঁকে ৮বার বিবাহ দেন। কিন্তু তাঁর
মনে বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে ভয়ানক ক্ষোভের সঞ্চার হয়। তিনি কর্মজীবনে কয়েক বছর ময়মনসিংহের
জমিদারের তহশিলদারের পদে কর্মরত ছিলেন।

পণপ্রথা, বহুবিবাহ, কৌলীন্যপ্রথা প্রভৃতি বিষয়ের কুফল আলোচনা করে “বল্লাসংশোধনী” নামে গ্রন্থ রচনা
করেন। এছাড়া তিনি কৌলীন্য কুপ্রথা বিষয়ক বহু গানও রচনা করেন। তদানীন্তন ব্রিটিশ বড়লাট (ভাইসরয়
১৮৭২ - ১৮৭৬) লর্ড নর্থব্রুক ঢাকায় এলে তিনি এইসবের বিরুদ্ধে তাঁর অনুমোদন লাভ করতে সমর্থ হন।

পূর্ববঙ্গে এই আন্দোলন পরিচালনার জন্য তিনি
ঈশ্বচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও রেভারেণ্ড জেমস লঙ-এর সমর্থন পান।
নিজের ছেলে ও মেয়েকে তিনি অকুলীনস্থ সমাজে বিবাহ দেন।

তাঁর আত্মজীবনী “সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত” (২খণ্ড) গ্রন্থ, কৌলিন্যপ্রথার বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রামের ইতিহাস। তাঁর
রচিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে “রমণীবরণ”, “বিদ্যানিধি”, “শৈশবজ্ঞান চন্দ্রিকা” প্রভৃতি।


তাঁর কবিতা ও গানের কথায়, সমাজকে তীক্ষ্ণ শরে বিধেছেন প্রতিনিয়ত। ক্ষোভ, দুঃখ, হতাশা ও শ্লেষ তার
লেখনীর বৈশিষ্ট ছিল। হিন্দু বাঙালী মেয়েদের দুর্দশা, সমাজের পরিহাস ও নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত রূপ তাঁর গান
ও কবিতার মধ্যে ফুটে উঠেছে। পূর্ববঙ্গে পণপ্রথা, কৌলীন্যপ্রথা, বহুবিহাপ্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনের তিনি
অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন।


আমরা
মিলনসাগরে  কবি রাসবিহারী মুখোপাধ্যায়ের কবিতা ও গান তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে
দিতে পারলে এই প্রচেষ্টাকে সার্থক বলে মনে করবো।
মিলনসাগরের এই পাতা তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য।




উত্স - সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত  ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত সংসদ বাঙালী চরিতাভিধান (পঞ্চম সংস্করণ), ২০১০।
      


কবি রাসবিহারী মুখোপাধ্যায়ের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন

              


আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতা প্রথম প্রকাশ - ২৮.৬.২০১৬
...