কবি রতনতনু ঘাটীর কবিতা ও ছড়া
|
শাসন
কবি রতনতনু ঘাটী
কবি উত্তম দাশ, কবি মৃত্যুঞ্জয় সেন ও কবি পরেশ মণ্ডল সম্পাদিত “কবিতা : ষাট সত্তর”
কাব্য সংকলন, (১৯৮২) থেকে নেওয়া।
ডুব সাঁতার দিতে দিতে চাঁদ উঠছেন ডাঙায়
তাঁর উঠে আসার পথে জলভরা পদচিহ্ন পড়ে আছে
যে পথ মন্দিরে গেছে, এই পথ ; এই পথে
হুম্ হুম্ শাসন বেজেছে খুব সারারাত দেবতা মন্দিরে নেই।
আর আমরা মন্দিরের চত্তরে গোল হয়ে বসে আছি পাতপেড়ে
অন্ন চাই, আর ক্ষুধা কাতরতা নয়, অন্ন চাই দেবতার কাছে।
নিবিড় আঁধার আসে আমাদের ক্ষুধাবোধ জুড়ে ; যেন এ নিয়তি!
যে পথ মন্দিরে আসার পথ, দেখি, এই পথে দেবতা গেছেন চলে
হুম্ হুম্ শাসন বেজেছে শুধু সারারাত মন্দিরের পথে।
. ***************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
সম্মিলিত বৃন্দগান
কবি রতনতনু ঘাটী
কবি উত্তম দাশ, কবি মৃত্যুঞ্জয় সেন ও কবি পরেশ মণ্ডল সম্পাদিত “কবিতা : ষাট সত্তর”
কাব্য সংকলন, (১৯৮২) থেকে নেওয়া।
এ বছর খরা হয়নি, বন্যাও না
আমাদের এদিকে বৃষ্টিপাত বলতে খুব কম।
তবু, চাষবাসপূর্ণ এই সবুজ চরাচর ছাপিয়ে উঠেছে গন্ধে, ধানে
আমাদের এই জ্যোত্স্না ছাপানো আঙিনার এক কোণে, এই অগ্রহায়ণে
কোথাকার এক না বলা আনন্দ এসে ঢলে পড়ছে---
আমাদের ক্ষুধার্ত অন্তরের ভগবান!
বলো এরপর কি ভালো লাগে গ্রামীণতাহীন ভূবন?
মেঘকালো পর্দার জানালা?
এখন আমরা লক্ষ্মীর ঝাঁপি ভরে তুলবো ধানে---
এখন শান্তি নামের মেয়েটি এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের উঠোনে,
পিটুলি গোলা জলে আল্পনা এঁকে ঘরে ডেকে তুলছে
আমাদের সম্বত্সরের লক্ষ্মীকে।
এসো, এমন আনন্দের দিনে, এমন বিভেদহীন সমাজে-সংসারে
কাজকর্ম, চাষবাসের ফাঁকে ফাঁকে
আমাদের সম্মিলিত বৃন্দগান গেয়ে উঠি আমরা।
. ***************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
দু’চোখ মেলে রাখি
কবি রতনতনু ঘাটী
কবি শামসুর রাহমান ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদিত “দুই বাংলার প্রেমের কবিতা”
কাব্য সংকলন, (২০০৩) থেকে নেওয়া।
ধানফুল সেই বিকেলবেলা আসতে যখন কাছে
নাকে তখন বাবলাকুঁড়ির নাকছবিটাও আছে।
হাতে তখন আঁকন বাঁকন বকুল ফুলের সারি
বেশ
কবি রতনতনু ঘাটী
কবি উত্থানপদ বিজলী সম্পাদিত “এপার বাংলা ওপার বাংলার ২০০ কবির ২০০ ছড়া ও
কবিতা” কাব্য সংকলন, (২০০৯) থেকে নেওয়া।
ছোটপিসি নেপচুনে কিনলেন বাড়ি
বাবা ডেকে বললেন খুব বাড়াবাড়ি।
ছোট কাকু মঙ্গলে বানাবে বাগান
বড় জেঠে একা চাঁদে গাছই লাগান।
মেজপিসি শুক্রের ওপাশের গ্রহে
পুকুর কেটেছে এক লোকে দিঘি কহে।
বাবা বললেন ওরা আসুক না ঘুরে
আমরা তা বেশ আছি ছোটোনীলপুরে।
. ***************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
আমার বোন
কবি রতনতনু ঘাটী
কবি উত্থানপদ বিজলী সম্পাদিত “ছোটদের আবৃত্তির ছড়া ও কবিতা” কাব্য সংকলন,
(২০০৬) থেকে নেওয়া।
যদি কিছু বলি চোখ দুটো ছলছল
বোনটা বলবে, বকেছে আমাল দাদা,
অঙ্কের খাতা, ছবি আঁকা যায় নাকি?
কিছুই বোঝে না একেবারে বোকা-হাঁদা!
আঁকশি লাগিয়ে কাঁচা আম দুটো পেড়ে
অঙ্ক-পাখি
কবি রতনতনু ঘাটী
কবি কালিদাস ভদ্র সম্পাদিত “ছোটদের আবৃত্তির ছড়া” কাব্য সংকলন, (২০০৬) থেকে
নেওয়া।
যতই অঙ্ক নিয়ে বসি
মাথাটা যে করে টিন টিন
দুই থেকে এক বাদ দিলে
কেবল যে থেকে যায় তিন।
এই নিয়ে দাদা কত বকে,
‘হাঁদারাম, যোগ কী বিয়োগ?’
আমি যত মন দিয়ে কষি
অঙ্কের দেবতাকে ডাকি---
‘আমাকে বানিয়ে দাও খাঁচা
অঙ্কটা হোক পোষা পাখি।’
. ***************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
রাজকাহিনী
কবি রতনতনু ঘাটী
পার্থ ঘোষ ও কবি অনীশ ঘোষ সম্পাদিত “বড়োদের আবৃত্তির কবিতা সমগ্র” কাব্য
সংকলন, (২০১২) থেকে নেওয়া।
এই দেশে এক রাজা আছেন, যেই করেছি শুরু
চার-পাঁচজন চেঁচিয়ে বলল, “গুরু
ভুল বলছ, রাজা তো নেই। নেতা আছেন মানি।”
আমি বললাম, “জানি
দোষ কি যদি নেতার থাকে সতেরোখানা বাড়ি?
রাজারও ভাই প্রাসাদ ছিল, দীঘি এবং বাগান
ও পল্টুদা, এ-লোকটাকে মঞ্চ থেকে ভাগান।”
. ***************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
চাঁদচোর
কবি রতনতনু ঘাটী
পার্থ ঘোষ ও কবি অনীশ ঘোষ সম্পাদিত “বড়োদের আবৃত্তির কবিতা সমগ্র” কাব্য
সংকলন, (২০১২) থেকে নেওয়া।
চাঁদ নেমে এসে বসল যখন
কদম গাছের ডালে,
তিনজন চোর ছিল চাঁদটাকে
চুরি করার তালে।
জ্যোত্স্না তখন ভাসিয়ে দিচ্ছে
গাছপালা ঘরবাড়ি
তিনজন লোক ভিজছিল, তারা
স্বপ্নের কারবারি।
একজন বলে এখন আমার