কবি রীনা তালুকদারের কবিতা
*
লিমেরিক
কবি রীনা তালুকদার


শীতে শীতে ভিজে লতা
দূর্বাঘাসে সজীবতা
শীতের গীতালী
গান গায় শীতালী
কাজে কর্মে অলসতা।


শর্ষে ফুলে ছড়ায় ঘ্রাণ
মৌমাছিরা  খোঁজে প্রাণ
ঘুরে মধুর খোঁজে
পাতায় মুখ গুজে
ভৌমরার গুণগুণানি গান।


নতুন সবজির স্বাদে
রুচির মুখ আহ্লাদে
বেজায় খুশি
টুনি টুসি
বেশী বেশী সাদে।

.          ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
কমরেড
কবি রীনা তালুকদার

আমার প্রিয় শব্দ মা
তার পর কমরেড শব্দটি প্রিয়
কমরেড শব্দটা বড় সাহসী
উচ্চারণ করলেই বুকটা স্ফীত হয়
মা শব্দটা মমতার পরম পরশ
এ দুটো শব্দই আমার পকেট ভরে থাকে
আমার জন্মের সময় মা ছিলেন জীবন যোদ্ধা কমরেড
শিশু জন্মের বেদনার চেয়ে
আর কোন বড় যুদ্ধ নেই পৃথিবীতে
মৃত্যুকে একদিন ফিরে আসার আশ্বাস দিয়ে
ফের আড় মোড়া খেয়ে বেঁচে ওঠা
প্রত্যেক মাকেই আমি কমরেড পদবীটা দিতে চাই
একাত্তরে কমরেড মায়েদের প্রসব যন্ত্রণায়
ভূমিষ্ঠ সন্তান বাংলাদেশ
যা আমাকে জড়িয়ে রাখে
লাল সবুজ বৃত্তে শ্যামল মখমল দুর্বা
সতেজ আদরে সারাবেলা
এখন আমার প্রিয় শব্দ
মা, কমরেড আর বাংলাদেশ।

.          ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
বর্ণমালার রৌদ্দুরে
কবি রীনা তালুকদার

বর্ণমালা শহীদের রক্তের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ
নিয়ে ঘুরছে জাতির উত্তরসূরী
লাঙ্গলের ফলায় কর্ষিত ঊষর ভূমিতে নাইট্রোজেন আধিক্য
বীজ নষ্ট হচ্ছে যথাযথ অক্সিজেন প্রক্রিয়ার অভাবে
কৃষ্ণবৃত্তে জন্মোৎসবের কোলাহল
ডারউইন নাকাল হয় অন্ধকারে
নাব্যতা হারানো নদী যত্মে পায় কোমলতা
সময় অতিক্রম করে বলার থাকে না কিছুই কারো
টকটকে রক্ত ঝরছে স্বচ্ছ টলটল খেজুর রস ঝরছে
সাদা সোনা রাবার রস ঝরছে বন জুড়ে
শান্তিপ্রিয় নাগরিক সাতে পাঁচে নেই
তবুও ভোগান্তি নিত্য সঙ্গী সাথী
বর্ণের শব্দ তরঙ্গ বিস্ময়ে থ মুখে
জিজ্ঞাসু দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে থাকে
বর্ণমালার মুক্তির সংগ্রাম চলছে যুগ যুগ
ঊনপঞ্চাশটি বর্ণমালা এখনো মুক্তি পায়নি।

.          ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
লিখতে হলে নীরব থাকা খুব দরকারী
কবি রীনা তালুকদাররে লিমেরিক

লিখতে হলে নীরব থাকা খুব দরকারী
লেখার জন্য মনে মন পুড়ছে অনাহারী
বড় বাসা হয় না তবু কাঙ্ক্ষিত জাগা
স্বাধীনতা শব্দ সবার আগুন লাগা
বাসাটা কবিতা নয় লোকালয় সরকারী।

.          ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
চাঁদের দেশে
কবি রীনা তালুকদাররে লিমেরিক

চাঁদে নাকি বুড়ি নেই
আছে নাকি নুড়ি
শূন্যের উপর দিনে রাতে
করছে ঘুরা ঘুরি

আঁধার হলে তারার মেলা
হেসে কুটি কুটি
সে আঁধারে ঘুরছে দ্যাখো
হাজার গ্রহ ঝুটি

বুধ শুক্র শনি গ্রহ আর
প্লুটো ও ইউরেনাস
বৃহস্পতি মঙ্গলেও
করবে মানুষ বাস

বসবাসের জন্য এখন
চলছেই আবিস্কার
বুকিং দিতে চলে এসো
কার কার আছে দরকার ?

.          ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
মস্তিস্ক
কবি রীনা তালুকদাররে লিমেরিক

মানুষের মস্তিস্কে আছে
দশ লাখ কোটি নিউরণ
প্রতিটি নিউরণ তিন’শ
জিনোম জোড়া জীবন

মস্তিস্ক দশ ভাগ করে কাজ
বাকী থাকে পড়ে
জীবনভর সেরিব্রালে কটেক্স
আবেগ রাখে ধরে

মস্তিস্কে করপাস ক্যালোসাম
নিউরণ ক্রিয়া করে
স্নায়ুতন্ত্র ডানে বামে
সমান্তরাল ঘরে

ল্যাটারাল মেডুলায় সংকেত
অস্থির স্নায়ুকোষে
কিছু স্মৃতি সচল অচল
কিছুটা গ্রন্থি পোষে

প্রোজেন মেজেন রম্বেন ভাগে
তিন তিনটি সেফালন
টেম্পোরালের লোব গ্রন্থিতে
ভাষা ডাটা রক্ষণ

নারী পুরুষের মস্তিস্ক
এক পয়েন্ট চার কেজি
নাজুক প্যাঁচানো গেরো
বহুত হিজিবেজি

বামে হেমিস্ফিয়ার উন্নত
সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ
একটিতে পুরুষের কারুকাজ
নারীর দুইটিতে প্রকাশ

এক হেমিস্ফিয়ারে পুরুষ
তথ্য দিচ্ছে আগে
নারী তথ্য রাখে বেশী
প্রদানে সময় লাগে

সাইনোপসে সেকেন্ডে হাজার
ভাগেরও কম সময়
নিউরো ট্রান্সমিটার নিঃসরণ
তথ্যের তাল সমন্বয়

নিউরণ সংযোগ কোষে সংকেত
এক্সণ বাহুতে প্রেরণ
তথ্য বিনিময়ের কাজে
ডেনড্রাইটে গ্রহণ

তরলে ভাসে মস্তিস্ক
প্যাঁচানো সব কোষে
নিউরোপেপটাইড এসিড
এ্যামাইনো শোষে

নারীর মস্তিস্ক বিভাজন
পুরুষের সমতল
সন্ধ্যানী চোখে খোঁজে
ডুব সাঁতারের অতল

নার্ভাসের অদৃশ্য স্রষ্টা
সংকেত আড়াল অনুভব
বিজ্ঞান অনুমানে হাঁটছে
সৃষ্টি এখানেই নীরব।

.          ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
রুবাই
কবি রীনা তালুকদাররে লিমেরিক

১।
শীত এসে মনে করিয়ে দেয় হারানো দিন
দুধ চিতই রস; মুড়ি মুড়কি মুষ্ঠি পিঠা আহা
ভুলতে কি যায় পারা এসব;
লেপ মুড়িতে তোমার বুকে খেলতো পাগলা হাওয়া।

২।
মাওসেতুং বলেছেন-‘‘গণতন্ত্র শুয়োরের খোয়াড়”
হরতাল খেয়ে পেট ভরেছে লিংকনী গণতন্ত্র
বঙ্গদেশের শুয়োর গুলো ইমানদার বটে
ধর্মের বাইরে মানুষের জন্য এক পা-ও নড়ে না।

৩।
নিরামিষ সময়ে ভাল লাগে না জীবন যাপন
আইবলে দুটো উন্মাতাল চোখ
দিশেহারা সময়কে উপভোগ্য করে দেয়
জানো উচ্ছসিত চোখ দুটো কার?- তোমার।


৪।

কাটা ঘুড়ির খোঁজে দৌঁড়ায় যে কৈশোর
সে লাভ ক্ষতি বুঝে দৌঁড়ায় না
মনে চিরকাল কৈশোর লুকিয়ে থাকে ; কেনো জানো ?
তোমার ভালোবাসায় এখনো পাগলামী আছে।

.                  ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
পরমাণু গল্প -১
কবি রীনা তালুকদার

একদিন কবিতার আড্ডায় দেখেছিলাম বুকের বোতাম খুলে অদৃশ্য চোখের ইশরায় যেনো
বলেছিলে এ বুকে আয়...। সেই থেকে পাজরের ফরাফরাস জ্বলে জ্বলে তৈরী হচ্ছে
সম্মিলিত প্রেমের রসায়ণ।

.                             ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
পিতার জন্য কবিতা
কবি রীনা তালুকদার

হিমালয় দেখার ইচ্ছে চিল ... হিমালয় দেখিনি ...
কিন্তু এখন আর আমার হিমালয় দেখার ইচ্ছে নেই...
কারন আমি মুজিবকে দেখেছি  - ফিদেল কাস্ত্রো

হয় না মানুষ আকাশ সমান
আকাশ অতিক্রম করে মহাবিশ্বের
শনি বুধ বৃহস্পতি, শুক্র ও ইউরেনার্স,
নেপচুন, প্লুটোর খোঁজে
লাল গ্রহ মঙ্গলের লবন সাগরে
মানুষ ফেলছে নিঃশ্বাসের কোমলতা
হিমালয় এক অহংকার সফেদ গিরি
সবার চাওয়া হয় না এক
সত্য অহংকার অর্জন করতে হয়
অহংকারও এক শিল্পীত যোগ্যতা
কেউ কেউ ধারণ করেন এমন যোগ্য গুণ
মহান গুণের সেই মহৎ মানুষ
শেখ মুজিবুর ছিলেন
যাকে দেখেছে যারা করেছে অনুমান
মানুষ ও সৃষ্টির রহস্য
প্রকৃতির রহস্য
মানবতার রহস্য
যে নাম নিলে মিছিলে শক্তি আসে ফিরে
যে ছবি কথা বলে কবিতার
কবিতা তার জন্যই হয় কবিতা
মাতৃভাষার সাবলীল চরণে আসে সূর্য আলো
ধেয়ে যায় দূর সীমানা ছেড়ে সুদূরে
হিমালয় ম্লান হয় ব্যক্তিত্বের আত্মবিশ্বাসে
যারা হিমালয় দেখেছে সে জন জানে আত্মকথন
মুজিবকে দেখেছে যারা জানে অমরতা কাকে বলে।

.                             ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
তর্জনী
কবি রীনা তালুকদার

তর্জনীর কী শক্তি থাকে
তর্জনী আছে সব মানুষেরই
শক্তি কী এক সব তর্জনীর?
কারো কারো নাক্ষত্রিক তর্জনী ভীষণ শক্তিশালী
একটি দেশ স্বাধীন হলো বিশ্বে তর্জনী নির্দেশে
পৃথিবীর মানচিত্রে নাম বাংলাদেশ
কেউ চোখের ভাষায় কেউ মুখের ভাষায়
অস্ত্রের ভাষায় কেউ কেউ
বীর বাহাদুর তর্জনীর ইশারায়
শাসন করে অন্যায় অত্যাচারকে
হয় না সবার সব্যসাচী তর্জনী
ত্যেজোদীপ্ত তর্জনীর মালিক ছিল যে
নাম তার শেখ মজিবুর রহমান।

.                      ****************                                
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর