কবি শাহজাহান পারভেজ রনির কবিতা
*
জনগণ মিথ্যে বলে
কবি শাহজাহান পারভেজ রনি

একদল সত্যবাদীর এই দেশে
না হয় আমরাই হবো সংখ্যাগরিষ্ঠ মিথ্যুক
তবু ওরাতো বাঁচুক
ওরা বাঁচলেই স্বদেশ এগিয়ে যায়
তথাকথিত মধ্যআয়ের দিকে।
সন্তানের মাথার উপর
চোখ রাঙালে পাওনাদার সূর্য্য-
একদল কালোবাজারীর মতো পিতা হিসেবে
আমারও যে ভান ভনিতা ছাড়া উপায় থাকেনা ।
অতএব এসো,
বুঝে উঠবার আগেই আমরা আমাদের সন্তানগুলোকে
শিখিয়ে দিই
সত্যের উল্টোপাঠ।
হে মহান কবি ,
যুথিষ্ঠিরের দেশে সত্য বলোনা
পারলে মিথ্যে বলো যেমন করে সম্ভব তেমন করেই বলো,
ভনিতা করোনা।

.             ***************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
চিড়াকুঠা
কবি শাহজাহান পারভেজ রনি

মাই খাবো খাবো করা অপুষ্ট শিশুটা
কি পেয়েছিলো, মৃত মায়ের স্তন চুষে?
জানা যায়নি
তবে যদ্দুর জেনেছি সাঁ'তাল পল্লীতে
কারা যেন কালরাতে সদলবলে ঢুকে পড়েছিলো।
কারা যেন দলবলে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে সকাল থেকেই;
বিষু মার্ডির চোখের উপর,
এইমাত্র-ই কারা যেন ঘুরিয়ে গেল
ভয়ংকর কালো ঘোড়া
বুঝিয়ে দিয়ে গেলো, সীমান্ত কাছেই ।
মহুয়া মার্ডির উনুনে দু'দিন হয় আগুন জ্বলেনি
দু'দিন হলো অপুষ্ট শিশুটাকে মা ভোলাচ্ছে
সদ্যবিয়োনি পূর্ণিমা।
পূর্ণিমা কোন মানুষের নাম নয়।

.             ***************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
ভেদ
কবি শাহজাহান পারভেজ রনি

কে তুই অধম আদমেরে ছাড়ি
দরগায় তুলি হাত
না চিনে আদম হয় কি পূরণ
খোদায়ী ফরিয়াদ?
খোদার শানে টানিয়া জিকির
মানতে পূণ্যবান
শিরনি ভোগি হয়িছে কে কবে
পূণ্যত ইনসান।
আত্বা ডিঙ্গায়ে সিরাতের সাঁকো
সাধ্য কি পারাপার
ছাড়ি ইনসান দরশনে কার
ভাঙে ভেদ বিধাতার!
না ভজে আদম লভিছে খোদা
কোথা সে খোদাবান
শরিয়াত বিনে যায় কি হওয়া
মারিফতে স্বজ্ঞান?

.             ***************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
*
স্বপ্নসেতু
কবি শাহজাহান পারভেজ রনি

বেশি নয়, অঙ্গুলীয় কর গুনে মাত্রই ক'টা মাস
এরপর আমাদের দিব্য মাঝির সামনে কেবলই অখন্ড অবসর।
আর মাত্র কটা মাসের অপেক্ষা
কাকডাকা ভোর ছুঁয়ে যারা
ইত্যবসরে হয়ে উঠেছিলো নিত্যিকার খেয়াপারী,
বাঁক কাঁধে তারা আর কখনোই দম লাগাবে না অপেক্ষার বিড়িতে ,
দিব্য মাঝির নৌকোর টান তারা হয়তো ভুলেই যাবে বিলক্ষণ
কেননা ইতোমধ্যেই তারা জানতে পেরেছে
কমাস গেলে দাঁত ক্যালাবে এখানেই
গণ উন্নয়নের স্বপ্ন সেতু।
পায়ে পায়ে একদিন যে পথগুলো জেগে উঠেছিলো গুদারা বরাবর,
যে হাতগুলোতে সেরে উঠতো দিনরাত
খেয়াপারের নৌকোগুলোর অসুখ
কমাস পর তারাও যে মাঝির মতো অবসর পাবে কি না, জানা নেই।
হয়তো পথগুলো মিলিয়ে যাবে আবার সদ্যসবুজ নাটা দূব্বায়
হয়তো খেয়াপারে আর কোনোদিন
নৌকোগুলোর অসুখ করবেনা এরপর।
মাত্রই ক'টা মাসের ব্যাপার।
তারপর নিমু শেখ, ময়ান মন্ডল কিংবা মাঝির ব্যাটা মাঝি সেও
ভুলে যাবে বাপদাদার কৈকারবার।
অগত্যা তারাও একদিন ভীষণ পদব্রজে ছুঁয়ে দেবে শহর
ঝুঁকে দেখবে, কেবলই দেখবে
নারীর মতো নদীও যৌবন হারায়।
বেশি নয়, অঙ্গুলীয় কর গুনে মাত্রই ক'টা মাস
এরপর আমাদের দিব্য মাঝির বুকের উপর চেপে বসবে শুধুই
গণউন্নয়নের টানধনুক।

.             ***************  
.                                                                                
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর