কবি সজল রায়চৌধুরী - জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত বাংলার চব্বিশ পরগনা জেলার বারুইপুরে। পিতা শৈলেন্দ্রকুমার রায়চৌধুরী এবং মাতা বীণাপানি দেবী। কবি গণনাট্য আন্দোলনের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন। প্রখ্যাত অভিনেত্রী রেবা রায়চৌধুরী (১৯২৪ - ২০০৭) তাঁর সহধর্মিনী ছিলেন।
তিনি ১১৩৮ সালে খুলনার দৌলতপুর হিন্দু আকাডেমিতে আই.এ. পড়ার সময় ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি বঙ্গাবাসী কলেজ পড়ার সময়ে কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক ছিলেন। তিনি এম.এ. বি.টি. পাশ করেছিলেন।
১৯৩৯ সালে যশোহর জেলার পাঁজিয়ায় অনুষ্ঠিত কৃষক সম্মেলনে যোগ দেন। চারের দশকে তিনি নাগপুর ও পাটনায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত ছাত্র সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য পদ গ্রহণ করেন। ওই সময়ে সোভিয়েত সুহৃদ সমিতির ব্যানারে পার্কে পার্কে ফ্যাসিবাদ বিরোধী নাটকে অভিনয় করেছেন। ১৯৪৪ সালে, বিজন ভট্টাচার্যের লেখা ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রযোজনায়, শম্ভু মিত্রের পরিচালনায় “নবান্ন” নাটকের প্রথম শো থেকেই তিনি তাতে অভিনয় করেছেন।
গণনাট্য-শিল্পীদের সঙ্গে তিনি গ্রামে-শহরে যোগ দিতেন। পার্টির নির্দেশে স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের চাকরি ছেড়ে মন্বন্তরের সময়ে বাংলার সাহায্যের জন্য সাংস্কৃতিক স্কোয়াড নিয়ে আসাম ঘোরেন এবং সেখানে হেমাঙ্গ বিশ্বাস, নির্মলেন্দু চৌধুরী, খালেদ চৌধুরী, শান্তা সেন (রায়) প্রমুখদের সঙ্গে পরিচিত হন।
তিনি গণনাট্য সংঘের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক হয়েছিলেন। প্রায় পাঁচ দশক ধরে বহু নাটকে অভিনয় করেছিলেন। তাদের মধ্যে আছে “রাহুমুন্ত”, “সূর্য্যগ্রাস”, “মা”, “নীলদর্পণ”, “দেবীগর্জন”, “মুক্তধারা”, “আলো ফুটেছে” প্রভৃতি।
তাঁর অভিনীত ছায়াছবির মধ্যে রয়েছে “মৃগয়া”, “পরশুরাম”, “ময়নাতদন্ত”, “দখল”, “আকালের সন্ধানে”, “পার” প্রভৃতি।
তাঁর পরিচালনায় মঞ্চস্থ হওয়া নাটকের মধ্যে রয়েছে “মোহানা”, “সূর্য্যগ্রাস”, “মুক্তধারা”, “শেষরক্ষা”, “পথের দাবি”, “ইস্পাতের আগুন”, “আলো ফুটেছে” প্রভৃতি।
গণ-আন্দোলনে যোগ দিয়ে ১৯৪৮ ও ১৯৫৯ সালের মধ্যে তিনি কারাবরণও করেছেন। তিনি ১৯৫০ সাল থেকে শিক্ষক হিসেবে নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সঞ্চে যুক্ত ছিলেন।
কবি সজল রায়চৌধুরীর রচনাসম্ভারে রয়েছে প্রায় ৪০টি পূর্ণাঙ্গ ও একাঙ্ক নাটক। তার প্রায় সবকটি নাটকই শহরে-বন্দরে গ্রামেগঞ্জে অভিনীত হয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তিনি বহু প্রবন্ধও লিখেছেন। তাঁর দুটি সংকলন “গণনাট্য কথা” এ “নট নাট্যকার নির্দেশক বিজন ভট্টাচার্য” নাট্য আকাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাডেমি কর্তৃক বিশিষ্ট নাট্যকার হিসেবে তিনি পুরস্কৃত্ত হয়েছেন। তিনি দীনবন্ধু পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছিলেন।
মিলনসাগরে কবি সজল রায়চৌধুরীর কবিতা ও গণসঙ্গীত তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে এই প্রচেষ্টার সার্থকতা।
কবি সজল রায়চৌধুরীর মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
উৎস :
আমাদের ই-মেল : srimilansengupta@yahoo.co.in
হোয়াটসঅ্যাপ : +৯১ ৯৮৩০৬৮১০১৭
এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ১৮.৮.২০১৬
পাতায় কবির পরিচিতি ও ছবি সহ পরিবর্ধিত সংস্করণ - ৩০.৩.২০২৩।
উৎস :
- অঞ্জলি বসু সম্পাদিত সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, ২য় খণ্ড।
- সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত “গণসংগীত সংগ্রহ”, ১৯৯০।
- জলি বাগচী ও দিপালী সেনগুপ্ত সম্পাদিত “গণবিষাণের গানের স্বরলিপি”, ২০১২।
আমাদের ই-মেল : srimilansengupta@yahoo.co.in
হোয়াটসঅ্যাপ : +৯১ ৯৮৩০৬৮১০১৭
এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ১৮.৮.২০১৬
পাতায় কবির পরিচিতি ও ছবি সহ পরিবর্ধিত সংস্করণ - ৩০.৩.২০২৩।