অজেয়
কবি তরলিকা দেবী
রায় জলধর সেন সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার বৈশাখ ১৩৪৫ (এপ্রিল ১৯৩৮) সংখ্যা
থেকে নেওয়া।
হে অপরিচিত, কতটুকু মোরে
. পরিচয় তব দিলে!
চিরপরিচিত মনে হয়---তবু
. সুদূর নীলিমা নীলে---
রহস্য ঘেরা রহিলে মগন
পরশ জানায়ে করিলে গমন,
অন্তর-চিত ভরিয়া রহিলে
. শূন্য হোলো না দূর,
এ কেমন খেলা পরিচিত মোর,
. নিত্য নূতন সুর।
প্রাণে প্রাণে আমি করি অনুভব,---
যেটুকু পেয়েছি ওগো দুর্লভ,
অনন্তকাল হিয়ায় রাখিয়া
. লীলা তরঙ্গ তব
মিটিল না আশ, ছলায় কলায়
. পিপাসা বাড়াও নব!
. *************************
. সূচীতে . . .
মিলনসাগর
সত্যম্ শিবম্ সুন্দরম্
কবি তরলিকা দেবী
রায় জলধর সেন সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৫ (মে ১৯৩৮) সংখ্যা থেকে।
‘মন্দিরেরি বন্দী তুমি
. তোমায় আমার নেই প্রয়োজন,’
তোমার ঘরে মিটবে না তো
. আমার প্রাণের সব আয়োজন।
জীবন নদী বিরাটকে তার
. ধরতে যে চায় আলিঙ্গনে
প্রাণের মাঝে, বুকের মাঝে
. প্রেমকে রাখি’ সঙ্গোপনে!
ক্ষুদ্র সে যে বৃহৎ হ’য়ে
. প্রাণ সাগরের অপর পারে
মহান্ হ’য়ে, মধুর হ’য়ে
. ছ’ড়িয়ে আছে বিশ্বদ্বারে!
ইঙ্গিতে সে ডাক দিয়ে যায়
. শক্তি যোগায় ক্লিষ্ট প্রাণে
বাধার বাঁধন কাটিয়ে দিয়ে
. পূর্ণ করে নবীন দানে!
মন্দিরেরি বন্দী পায়ে
. ঝরবে না ফুল বক্ষ-ঝরা
ছড়িয়ে গেছে পাঁপড়ি কোথায়
. কোন্ খানে সে দেয় গো ধরা!
সত্য যে তা’ বাস্তবে এই
. কল্পনাতে যায় না পাওয়া,
রঙীন জালের সূতো দিয়ে,
. বহায় না সে মধুর হাওয়া।
গণ্ডী-বাঁধা আবেষ্টনের
. মধ্যে কোথাও দেব্ তা নেই,
সত্যরূপী চেতন জ্ঞানী
. সহজ, সরল, নির্ভীকেই
মাড়িয়ে চলে মিথ্যা গ্লানি
. পঙ্কিলতা, সুদুর্দ্দিনে,
আনন্দেরি বন্যা দিয়ে
. সব বাধাকে লয় সে জিনে।
নিষেধ বিধির পর্দ্দা ছিঁড়ে
. সত্য শিবম্ সুন্দরে
মন্দিরেরে ধ্বংস করি
. বসাই বুকের অন্দরে!
. *************************
. সূচীতে . . .
মিলনসাগর
স্বরণাতীত
কবি তরলিকা দেবী
রায় জলধর সেন সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার ২০ আশ্বিন ১৩৪৬ (অক্টোবর ১৯৩৯)
সংখ্যা থেকে।
স্মরণের পার হ’তে ভেসে আসে তব কণ্ঠস্বর
ভেসে আসে দিগন্ত ছাড়ায়ে যেথা আকাশ-মৃত্তিকা
এক হয়ে মিশে থাকে ; দৃষ্টি দিয়ে চিত্ত মঞ্জুলিকা
মোর টেনে নিয়ে যায়, লেই খানে সমস্ত অন্তর
দিয়ে শুনি তব ধ্বনি, বাজে সদা মিলন শিঞ্জিনী
ধূলি ধূসরিত পথে। রৌদ্র তাপে গাঁথা যে মালিকা
@@@@@@@@@@@
সৃষ্টি করে। প্রশান্ত চরণ স্পর্শ করে বৈরাগিনী!
অন্তর আকাশে মোর শুচি চন্দ্রমা শালিনী---
দিগন্তর বিস্তারিয়া জ্যোত্স্না ধারা ঢালে অবিরত!
সেই ধারা স্নানে কত পুষ্পিত মঞ্জরী মঞিজুরিত
হ’য়ে ওঠে : শিশিরের কথা হয় সৌন্দর্য্য মালিনী॥
আসে যায়, কত বর্ষ, কত জ্যোত্স্না, কত অন্ধকার,
@@@@@@@@@@@@@
. *************************
@@@@ - এই জায়গার লেখা, পড়া সম্ভব হয়নি।
. সূচীতে . . .
মিলনসাগর
পরিপূর্ণ
কবি তরলিকা দেবী
গিরিজাকুমার বসু সম্পাদিত দীপালী পত্রিকার আশ্বিন ১৩৪২ (সেপ্টেম্বর ১৯৩৫) সংখ্যা
থেকে।
তারে যে বেসেছি ভালো, সে যখন ছিল কাছে
. বুঝি নাই মন প্রাণ দিয়া
আজি সে গিয়াছে চ’লে ব্যাথায় হৃদয় দোলে
. চুরি করে গেছে সব নিয়া!
সারাটি ধরণী ভরি তাহারি মূরতি সদা
. নয়নে পরাণে শুধু জাগে
ভুলিতে চাহিলে তিল বড় ব্যথা লাগে তায়
. সুখী মন তা’রি অনুরাগে!