কবি দৈবকীনন্দন এর বৈষ্ণব পদাবলী
*
চৌদিকে ভকতগণ হরি হরি বলে
ভণিতা দেবকীনন্দন
কবি দেবকীনন্দন / দৈবকীনন্দন
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ২৭শ পল্লব, মাধবী-বিলাস, পদসংখ্যা ১৫৩১।

অথ মাধবী-বিলাস।
তদুচিত গৌরচন্দ্র।
॥ শ্রীরাগ॥

চৌদিকে ভকতগণ হরি হরি বলে।
রঙ্গন-মালতী-মালা দেই গোরা গলে॥
কুঙ্কুম কস্তুরী আর সুগন্ধ চন্দন।
গোরাচাঁদের অঙ্গে সব করয়ে লেপন॥
রাঙ্গা-প্রান্ত পট্টবাস কোঁচার বলনি।
ঝলমল করে কিয়ে অঙ্গের লাবণি॥
চাঁচর চিকুরে চাঁপা মনোহর ঝুটা।
উন্নত নাসিকা ঊর্দ্ধ চন্দনের ফোঁটা॥
আজানুলম্বিত ভুজ সরু পৈতা কান্ধে।
মদন বেদনা পাঞা ঝুরি ঝুরি কান্দে॥
দেবকীনন্দন বলে সহচর সনে।
দেখ সভে গোরাচাঁদ শ্রীবাস-ভবনে॥

ই পদটি ১৯৪৩ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ২১৬-পৃষ্ঠায় এইরূপে
দেওয়া রয়েছে।

॥ শ্রীরাগ॥

চৌদিকে ভকতগণ হরি হরি বলে।
রঙ্গণ মালতীমালা দেই গোরা-গলে॥
কুঙ্কুম কস্তুরী আর সুগন্ধি চন্দন।
গোরাচাঁদের অঙ্গে সব করয়ে লেপন॥
রাঙ্গা প্রান্ত পট্টবাস কোচার বলনি।
ঝলমল ঝলমল করে অঙ্গের লাবণি॥
চাঁচর চিকুরে চাঁপা মনোহর ঝুটা।
উন্নত নাসিকা ঊর্দ্ধ চন্দনের ফোটা॥
আজানুলম্বিত ভুজ সরু পৈতা কান্ধে।
মদন বেদনা পাঞা ঝুরি ঝুরি কান্দে॥
দেবকীনন্দন বলে সহচর সনে।
দেখ সবে গোরাচাঁদ শ্রীবাস-অঙ্গনে॥

ই পদটি ১৯৩৭-৫৩ সময়কালে প্রকাশিত, নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রর
মহাজন পদাবলী “শ্রীপদামৃতমাধুরী” ২য় খণ্ড, ৬৬৭-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

মাধবী বিলাস
॥ শ্রীরাগ - বড়রূপক॥

চৌদিগে ভকতগণ হরি হরি বলে।
রঙ্গন মালতীমালা দেই গোরা-গলে॥
কুঙ্কুম কস্তুরী আর সুগন্ধি চন্দন।
গোরাচাঁদের অঙ্গে সব করয়ে লেপন॥
রাঙ্গা প্রান্ত পট্টবাস কোঁচার বলনি।
ঝলমল ঝলমল অঙ্গের লাবণি॥
চাঁচর চিকুরে চাঁপা মনোহর ঝূটা।
উন্নত নাসিকা ঊর্দ্ধ চন্দনের ফোঁটা॥
আজানুলম্বিত ভুজ সরু পৈতা কান্ধে।
মদন বেদনা পাইয়া ঝুরি ঝুরি কান্দে॥
দৈবকী নন্দন বলে সহচর সনে।
দেখ সভে গোরাচাঁদ শ্রীবাস-ভবনে॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৩৯-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ শ্রীরাগ॥

চৌদিকে ভকতগণ হরি হরি বলে।
রঙ্গন-মালতী-মালা দেই গোরা গলে॥
কুঙ্কুম কস্তুরী আর সুগন্ধি চন্দন।
গোরাচাঁদের অঙ্গে সব করয়ে লেপন॥
রাঙ্গা-প্রান্ত পট্টবাস কোঁচার বলনি।
ঝলমল করে কিয়ে অঙ্গের লাবণি॥
চাঁচর চিকুরে চাঁপা মনোহর ঝুঁটা।
উন্নত নাসিকা ঊর্দ্ধ্ব চন্দনের ফোঁটা॥
আজানুলম্বিত ভুজ সরু পৈতা কান্ধে।
মদন বেদন পাঞা ঝুরি ঝুরি কান্দে॥
দেবকীনন্দন বলে সহচর সনে।
দেখ সভে গোরাচাঁদ শ্রীবাস-ভবনে॥

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
বিপরিত-রতি অবসানে কমল-মুখি
ভণিতা দেবকিনন্দন
কবি দেবকীনন্দন
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ১৪শ পল্লব, প্রকারান্তর
সমৃদ্ধিমান্ সম্ভোগ, পদসংখ্যা ২০১১।

॥ কেদার॥

বিপরিত-রতি অবসানে কমল-মুখি
ঘামহি ভীগল চীর।
সহচরি দাসি চামর করে বীজই
কোই যোগায়ত নীর॥
বৈঠল রাধা নাগর কান।
দুহুঁ জন চির অভিলাষ পরিপূরল
পরিজন মঙ্গল গান॥ ধ্রু॥
কালিন্দী-তীর নিকুঞ্জ মনোহর
বহতহি মলয়-সমীর।
কত পরিহাস রভস রস-কৌতুক
দুহুঁ পর দুহুঁ জন গীর॥
বৃন্দা দেবি সময় বুঝি কুঞ্জহি
সেবই কত পরকার।
ও রস-সায়রে ওর না পাওল্
দেবকিনন্দন আর॥

ই পদটি দ্বিজ মাধব সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায় রক্ষিত,
“শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ৪৪৮-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রাগিণী কেদার॥ তালোচিত॥

বিপরিতরতি অবসানে কমলমুখি ঘামহি ভী গেও চীর।
সহচরি দাসী চামর করে বীজই কোই জোগায়ত নীর॥
বৈঠল রাধানাগর কান।
দুহুজন চির অভিলাষ পরিপূরল পরিজন মঙ্গল গান॥
কালিন্দীতীর নিকুঞ্জ মনোহর বহতহি মলয় সমীর।
কত পরিহাস রভস রসকৌতুক দুহু পর জন গীর॥
বৃন্দাদেবী সময় বুঝি কুঞ্জহি সেবই কত পরকার।
ও রস সায়রে ওর না পাওল দেবকীনন্দন আর॥

ই পদটি ১৯৩৭-৫৩ সময়কালে প্রকাশিত, নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রর মহাজন পদাবলী
“শ্রীপদামৃতমাধুরী” ৩য় খণ্ড, ৪০১-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ কেদার বিহাগ - ছুটা॥

বিপরিত রতি                        অবসানে কমলমুখি
ঘামহি ভিগেল চীর।
সহচরী দাসী                            চামর করে বীজই
কোই যোগায়ত নীর॥
বৈঠল রাধা নাগর কান।
দুহুঁ জন চির অভি-                      লাষ পুরি পুরল
পরিজন মঙ্গল গান॥ ধ্রু॥
কালিন্দী তীর                             নিকুঞ্জ মনোহর
বহতহি মলয় সমীর।
কত পরিহাস                           রভস রস কৌতুক
দুহুঁ পর দুহুঁ জন গীর॥
বৃন্দা দেবী                               সময় বুঝি কুঞ্জহি
সেবই কত পরকার।
ও রস সায়রে                              ওর না পাওল
দেবকী নন্দন আর॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”,
৯৪০-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

প্রকারান্তর সমৃদ্ধিমান্ সম্ভোগ
॥ কেদার॥

বিপরিত-রতি অবসানে কমল-মুখি
ঘামহি ভীগল চীর।
সহচরি দাসি চামর করে বীজই
কোই যোগায়ত নীর॥
বৈঠল রাধা নাগর কান।
দুহুঁ জন চির অভিলাষ পরিপূরল
পরিজন মঙ্গল গান॥ ধ্রু॥
কালিন্দি-তীর নিকুঞ্জ মনোহর
বহতহি মলয়-সমীর।
কত পরিহাস রভস রস-কৌতুক
দুহুঁ পর দুহুঁ জন গীর॥
বৃন্দা দেবি সময় বুঝি কুঞ্জহি
সেবই কত পরকার।
ও রস-সায়রে ওর না পাওল
দেবকিনন্দন আর॥

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
নদীয়ার মাঝারে ওনা রূপ
মরি মরি না নদিয়ার মাঝারে ও না রূপ
অলকা তিলকা চান্দ-মুখের পরিপাটী
ভণিতা দৈবকীনন্দন / দেবকিনন্দন
কবি দেবকীনন্দন
নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত এবং  ৪২৬
গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, ৯০৬-পৃষ্ঠা।

॥ পুনঃ কশ্চিৎ কামোদঃ॥

নদীয়ার মাঝারে ওনা রূপ।
সোনার গৌরাঙ্গ নাচে অতি অপরূপ॥ ধ্রু॥
অলকা তিলকা চান্দ মুখের পরিপাটী।
রসে ডুবু ডুবু করে রাঙ্গা আঁখি দুটি॥
অধরে ঈষৎ হাসি মধুর কথা কয়।
গ্রীবার ভঙ্গিমা দেখি প্রাণ কোথা রয়॥
হিয়ার দোলনে দোলে রঙ্গণ ফুলের মালা।
কত রস লীলা জানে কত রস-কলা॥
চন্দনে চর্চ্চিত অঙ্গ বিনোদিয়া কোঁচা।
চাঁচরচিকুরে শোভে গন্ধরাজ চাঁপা॥
দৈবকীনন্দনে বোলে শুন লো আজলি*।
তুমি কি না জানো গোরা নাগর বনমালী॥

* আজল - উপহাস (ঠাট্টা) করিয়া যে কথা কয়।

ই পদটি আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং
সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮),
৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ১৪শ পল্লব, শ্রীগৌরাঙ্গের নৃত্যাদি লীলা, পদসংখ্যা ২০৮৬। এই পদটি
নিমানন্দ দাসের পদরসসার পুথির ২১৯৫ সংখ্যক পদ, এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ গৌরী॥

মরি মরি না নদিয়ার মাঝারে ও না রূপ।
সোণার গৌরাঙ্গ নাচে অতি অপরূপ॥ ধ্রু॥
অলকা তিলকা শোভে মুখের পরিপাটী।
রসে ডুবুডুবু করে রাঙ্গা আঁখি দুটি॥
অধরে ঈষৎ হাসি মধুর কথা কয়।
গ্রীবার ভঙ্গিমা দেখি পরাণ কোথা রয়॥
হিয়ার দোলনে দোলে রঙ্গণ-ফুলের মালা।
কত রস-লীলা জানে কত রস-কলা॥
চন্দনে চর্চ্চিত অঙ্গ বিনোদিয়া কোঁচা।
চাঁচর চিকুরে শোভে গন্ধরাজ চাঁপা॥
দেবকীনন্দনে বলে শুন লো আজুলি।
তুমি কি না জান গোরা নাগর বনমালী॥

ই পদটি ১৯৪৩ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ৯৯-পৃষ্ঠায়
এইরূপে দেওয়া রয়েছে।  

॥ গৌরী॥

মরি মরি না নদীয়ার মাঝারে ও না রূপ।
সোণার গৌরাঙ্গ নাচে অতি অপরূপ॥ ধ্রু॥
অলকা তিলকা শোভে মুখের পরিপাটী।
রসে ডুবু ডুবু করে রাঙ্গা আঁখি দুটী॥
অধরে ঈষৎ হাসি মধুর কথা কয়।
গ্রীবার ভঙ্গিমা দেখি পরাণ কোথা রয়॥
হিয়ার দোলনে দোলে রঙ্গণ ফুলের মালা।
কত রসলীলা জানে কত রসকলা॥
চন্দনে চর্চ্চিত অঙ্গ বিনোদিয়া কোচা।
চাঁচর চিকুরে শোভে গন্ধরাজ চাঁপা॥
দেবকীনন্দন বলে শুন লো আজুলী।
তুমি কি জান গোরা নাগর বনমালী॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৪০-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ গৌরী॥

মরি মরি না নদিয়ার মাঝারে ও না রূপ।
সোণার গৌরাঙ্গ নাচে অতি অপরূপ॥ ধ্রু॥
অলকা তিলকা শোভে মুখের পরিপাটী।
রসে ডুবুডুব করে রাঙ্গা আঁখি দুটি॥
অধরে ঈষৎ হাসি মধুর কথা কয়।
গ্রীবার ভঙ্গিমা দেখি পরাণ কোথা রয়॥
হিয়ার দোলনে দোলে রঙ্গণ-ফুলের মালা।
কত প্রেম-লীলা জানে কত রস-কলা॥
চন্দনে চর্চ্চিত অঙ্গ বিনোদিয়া কোঁচা।
চাঁচর চিকুরে শোভে গন্ধরাজ চাঁপা॥
দেবকীনন্দনে বলে শুন লো আজুলি।
তুমি কি না জান গোরা নাগর বনমালী॥

ই পদটি ১৯৬১ সালে প্রকাশিত, বিমান বিহারী মজুমদার সম্পাদিত “ষোড়শ শতাব্দীর
পদাবলী-সাহিত্য”, নিমাই পণ্ডিতের সহচর কবিকুল, ৩৮৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।
পদটি তিনি ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থে পেয়েছিলেন।

অলকা তিলকা চান্দ-মুখের পরিপাটী।
রসে ডুবু ডুবু করে রাঙ্গা আঁখি দুটি॥
অধরে ঈষৎ হাসি মধুর কথা কয়।
গ্রীবার ভঙ্গিমা দেখি পরাণ কোথা রয়॥
হিয়ার দোলনে দোলে রঙ্গণ ফুলের মালা।
কত রসলীলা জানে কত রসকলা॥
চন্দনে চর্চ্চিত অঙ্গ বিনোদিয়া কোঁচা।
চাঁচর চিকুরে শোভে গন্ধরাজ চাঁপা॥
দেবকীনন্দনে বোলে শুন লো আজুলি।
তুমি কি না জান গোরা নাগর বনমালী॥

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
নাহি নাহিরে গৌরাঙ্গ বিনে
ভণিতা দৈবকীনন্দন / দেবকীনন্দন
কবি দেবকীনন্দন
নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত এবং  ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩
খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, ৯৫৬-পৃষ্ঠা।

॥ পুনঃ কশ্চিৎ কামোদঃ॥

নাহি, নাহিরে গৌরাঙ্গ বিনু, দয়ার ঠাকুর নাহি আর।
কৃপাময় গুণনিধি, সব মনোরথ সিধি, পূর্ণ পূর্ণ পূর্ণ অবতার॥
কলি কবলিত যত, জীব সব মুরুছিত, নাহি আর মহৌষধি তন্ত্র।
গতিহীন ক্ষীণ প্রাণী, দেখি মৃত সঞ্জীবনী, প্রকাশিলা হরিনাম মন্ত্র॥
রাম-আদি অবতারে, ক্রোধে যুদ্ধে অস্ত্র ধরে, অসুরের করিল সংহার।
এবে অস্ত্র না ধরিল কারু প্রাণে না মারিল, মন শুদ্ধ করিল সবার॥
এ হেন মহিমা তাঁর, পাষাণ হৃদয় যার, সে না হইল মুনির সোসর।
দৈবকীনন্দনে ভণে, হেন প্রভু যে না মানে, সে ভাড়িয়া গড়িয়া শূকর॥

ই পদটি আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ১৪শ পল্লব,
শ্রীগৌরচন্দ্র প্রকারান্তর, পদসংখ্যা ২২০৬। এই পদটি নিমানন্দ দাসের পদরসসার পুথির ২৩১৪ এবং
কমলাকান্ত দাসের পররত্নাকর পুথির ৯|১ সংখ্যক পদ, এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ ভাটিয়ারি॥

নাহি নাহি রে                                গৌরাঙ্গ বিনে
দয়ার ঠাকুর নাহি আর।
কৃপাময় গুণ-নিধি                        সব-মনোরথ-সিধি
পূর্ণ পূর্ণ অবতার॥
রাম আদি অবতারে                ক্রোধে নানা অস্ত্র ধরে
অসুরেরে করিলা সংহার।
এবে অস্ত্র না ধরিলা                কারু প্রাণে না মারিলা
মন-শুদ্ধি করিলা সভার॥
কলি-কবলিত যত                        জীব সব মুরছিত
নাহি আর মহৌষধি তন্ত্র।
তনু অতি ক্ষীণ প্রাণী                     দেখি মৃত-সঞ্জীবনী
প্রকাশিলা হরিনাম-মন্ত্র॥
এ হেন করুণা তার                       পাষাণ হৃদয় যার
সে না হৈল মণির সোসর।
দেবকীনন্দন ভণে                     হেন প্রভু যে না মানে
সে ভাড়িয়া গড়িয়া শূকর॥

ই পদটি ১৯৪৩ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ৩১-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।  

॥ ভাটিয়ারি॥

নাহি নাহি রে                                গৌরাঙ্গ বিনে
দয়ার ঠাকুর নাহি আর।
কৃপাময় গুণনিধি                       সব মনোরথ সিদ্ধি
পূর্ণ পূর্ণ অবতার॥ ধ্রু॥
রাম আদি অবতারে                ক্রোধে নানা অস্ত্র ধরে
অসুরেরে করিলা সংহার।
এবে অস্ত্র না ধরিলা                 কারু প্রাণে না মারিলা
মন শুদ্ধি করিলা সভার॥
কলি-কবলিত যত                        জীব সব মুরছিত
নাহি আর ঔষধি তন্ত্র।
তনু অতি ক্ষীণপ্রাণী                      দেখি মৃতসঞ্জীবনী
প্রকাশিলা হরিনাম মন্ত্র॥
এ হেন করুণা তার                      পাষাণ হৃদয় যার
সে না হৈল মণির সোশর।
দৈবকীনন্দন ভণে                     হেন প্রভু যে না মানে
সে ভাড়িয়া গড়িয়া শূকর॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”,
৯৩৯-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

শ্রীগৌগৌরাঙ্গ গুণ-বর্ণন।
॥ ভাটিয়ারি॥

নাহি নাহি ভাই                           গৌরাঙ্গ চাঁদ বিনে
দয়ার ঠাকুর নাহি আর।
কৃপাময় গুণ-নিধি                        সব-মনোরথ-সিধি
পূর্ণ পূর্ণ তম অবতার॥
রাম আদি অবতারে                 ক্রোধে নানা অস্ত্র ধরে
অসুরেরে করিলা সংহার।
এবে অস্ত্র না ধরিলা                 প্রাণে কারু না মারিলা
মন-শুদ্ধি করিলা সভার॥
কলি-কবলিত যত                        জীব সব মুরছিত
নাহি আর মহৌষধি তন্ত্র।
তনু অতি ক্ষীণ প্রাণী                     দেখি মৃত সঞ্জীবনী
প্রকাশিলা হরিনাম মন্ত্র॥
এ হেন করুণা তার                        পাষাণ হৃদয় যার
সে না হৈল মণির সোসর।
দেবকীনন্দন ভণে                     হেন প্রভু যে না মানে
সে ভাড়িয়া গড়িয়া শূকর॥

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
গজেন্দ্র-গমনে নিতাই চলয়ে মন্থরে
ভণিতা দৈবকীনন্দন
কবি দেবকীনন্দন
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ
শাখা, ১৪শ পল্লব, শ্রীনিত্যানন্দের গুণ-বর্ণন, পদসংখ্যা ২৩১৬। এই পদটি নিমানন্দ দাসের
পদরসসার পুথির ২৪২০ সংখ্যক পদ।

॥ সুহই॥

গজেন্দ্র-গমনে নিতাই চলয়ে মন্থরে।
যারে দেখে তারে ভাসায় প্রেমের পাথারে॥
পতিত দুর্গত পাপীর ঘরে ঘরে গিয়া।
ব্রহ্মার দুর্লভ প্রেম দিছেন যাচিয়া॥
যে না লয় তারে কয় দন্তে তৃণ ধরি।
আমারে কিনায়া লও বোল গৌর হরি॥
তো সভার লাগিয়া কৃষ্ণের অবতার।
শুন নাই গৌরাঙ্গসুন্দর নদীয়ার॥
যে পহু গোকুল-পুরে নন্দের কুমার।
তো সভার লাগিয়া এবে কৈল অবতার॥
শুনিয়া কান্দয়ে পাপী চরণে ধরিয়া।
পুলকে পূরল অঙ্গ গরগর হিয়া॥
তারে কোলে করি নিতাই যায় আন ঠাম।
হেন মতে প্রেমে ভাসাইল পুর-গ্রাম॥
দৈবকীনন্দনে বলে মুঞি অভাগিয়া।
ডুবিলুঁ বিষয়-কূপে নিতাই না ভজিয়া॥

ই পদটি ১৯৪৩ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ২৭৭-পৃষ্ঠায় এইরূপে
দেওয়া রয়েছে।

॥ সুহই॥

গজেন্দ্রগমনে নিতাই চলয়ে মন্থরে।
যারে দেখে তারে ভাসায় প্রেমের পাথারে॥
পতিত দুর্গত পাপীর ঘরে ঘরে গিয়া।
ব্রহ্মার দুর্ল্লভ প্রেম দিছেন যাচিয়া॥
যেনা লয় তারে কয় দন্তে তৃণ ধরি।
আমারে কিনায়া লও বল গৌরহরি॥
তো সবার লাগিয়া কৃষ্ণের অবতার।
শুন ভাই গৌরাঙ্গসুন্দর নদীয়ার॥
যে পহুঁ গোকুলপুরে নন্দের কুমার।
তো সভার লাগি এবে কৈল অবতার॥
শুনিয়া কাঁদয়ে পাপী চরণে ধরিয়া।
পুলকে পূরল অঙ্গ গর গর হিয়া॥
তারে কোলে করি নিতাই যায় আনঠাম।
হেন মতে প্রেমে ভাসাওল পুরগ্রাম॥
দেবকীনন্দনে বোলে মুই অভাগিয়া।
ডুবিলুঁ বিষয়-কূপে নিতাই না ভজিয়া॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৪০-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

শ্রীনিত্যানন্দের গুণ-বর্ণন
॥ সুহই॥

গজেন্দ্র গমনে নিতাই চলয়ে মন্থরে।
যারে দেখে তারে ভাসায় প্রেমের পাথারে॥
পতিত দুর্গত পাপীর ঘরে ঘরে গিয়া।
ব্রহ্মার দুর্লভ প্রেম দিছেন যাচিয়া॥
যেনা লয় তারে কয় দন্তে তৃণ ধরি।
আমারে কিনিয়া লও বল গৌরহরি॥
তো সভার লাগিয়া কৃষ্ণের অবতার।
শুন নাই গৌরাঙ্গসুন্দর নদীয়ার॥
যে পহুঁ গোকুল-পুরে নন্দের কুমার।
তো সভার লাগিয়া এবে কৈল অবতার॥
শুনিয়া কান্দয়ে পাপী চরণে ধরিয়া।
পুলকে পূরল অঙ্গ গরগর হিয়া॥
তারে কোলে করি নিতাই যায় আন ঠাম।
হেন মতে প্রেমে ভাসাওল পুর-গ্রাম॥
দেবকীনন্দনে বলে মুই অভাগিয়া।
ডুবিলুঁ বিষয়-কূপে নিতাই না ভজিয়া॥

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
ভুবনমোহন গোরা রূপ নেহারিয়া আজু
ভণিতা দেবকীনন্দন
কবি দেবকীনন্দন
এই পদটি ১৯৪৩ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন
“শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১১৫-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ ভাটিয়ারি॥

ভুবনমোহন গোরা                        রূপ নেহারিয়া আজু
নয়ান সার্থক ভেল মোর।
ও চাঁদ মুখের কথা                         অমিঞা সমান জনু
শ্রবণে সার্থক শ্রুতি জোর॥
এ দুহুঁ নাসিকা মঝু                          সার্থক হোয়ল সোই
গৌরগুণমণি-অঙ্গগন্ধে।
এ চিত-ভোমরা মঝু                        অতিহুঁ সার্থক ভেল
মধু পিয়ে পদারবিন্দে॥
এ কাঠ-কঠিন হিয়া                          সার্থক হোয়ব কবে
ও নাগরে দৃঢ় আলিঙ্গিয়া।
এ কুচ-কমল মঝু                           সার্থক হোয়ব কবে
ও না মুখের চুম্বন লভিয়া।
দেবকীনন্দন শির                           সার্থক হোয়ব কবে
নাথের চরণে লুটাইয়া॥

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
অঙ্গনামঙ্গনামন্তরা মাধবো
ভণিতা দেবকীনন্দন
কবি দেবকীনন্দন
রাধামোহন ঠাকুর রচিত ও সংকলিত, রামনারায়ণ বিদ্যারত্ন দ্বারা সম্পাদিত পদামৃত সমুদ্র সংকলনের
প্রথম মুদ্রিত সংস্করণে ১২৮৫ বঙ্গাব্দ (১৮৭৮ খৃষ্টাব্দ), ২২৩-পৃষ্ঠা।

॥ ধানশী রাগৈক তালি তালাভ্যাং॥

অঙ্গনামঙ্গনামন্তরা মাধবো মাধবং মাধবং চান্তরোণাঙ্গনা।
ইত্থমাকল্পিতে মণ্ডলে যধ্যগো বেণুনা সংজগৌ দেবকী নন্দনঃ॥

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
দৈবকীনন্দনের বৈষ্ণব বন্দনার ভুমিকা
কবি দৈবকীনন্দন দাস
শ্রীগৌরপদতরঙ্গিণীর ২য় সংস্করণের সম্পাদক মৃণালকান্তি ঘোষ, দৈবকীনন্দনের বৈষ্ণব বন্দনার একটি
হস্তলিখিত পুখিতে একটি ভূমিকা পেয়েছিলেন। সেটি তখন পর্যন্ত অপ্রকাশিত ছিল। তিনি সেই ভুমিকাটি
প্রথমে ১৩০৫বঙ্গাব্দের (১৮৯৮) “শ্রীবিষ্ণুপ্রিয়া” পত্রিকার জ্যৈষ্ঠ সংখ্যায় এবং পরে শ্রীগৌর-বিষ্ণুপ্রিয়া
পত্রিকার ১৩০৯বঙ্গাব্দের (১৯০২) পৌষ সংখ্যায় “শ্রীদেবকীনন্দন ও বৈষ্ণব-বন্দনা” শিরোনামের প্রবন্ধ
হিসেবে প্রকাশিত করেন। আমরা সেই পত্রিকাতে প্রকাশিত প্রবন্ধটি হাতে পাইনি। কিন্তু মৃণালকান্তি ঘোষ
তাঁর সম্পাদিত শ্রীগৌরপদতরঙ্গিণীর ২য় সংস্করণের “পদকর্ত্তৃগণের পরিচয়”-তে দেবকীনন্দন এর জীবন
সম্বন্ধে লিখতে গিয়ে, সেই ভূমিকাটি থেকে কিছু কলি বা পংক্তি উদ্ধৃত করেছেন। আমরা সেই অংশগুলি
একত্রে এখানে তুলে দিচ্ছি। সেই ভূমিকায় দেবকীনন্দন বা দৈবকীনন্দন লিখেছেন . . .


শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য নিত্যানন্দ না জানিয়া।
নিন্দিলুঁ বৈষ্ণবগণ মানুষ বলিয়া॥
সেই অপরাধে মুঞি ব্যাধিগ্রস্ত হৈলুঁ।
মনে বিচারিয়া এই নিরূপণ কৈলুঁ॥
নিমাই পণ্ডিত কত পাতকী উদ্ধার।
পরিণামে কেন মোরে না কৈলা নিস্তার॥
*        *        *        *        *
নাটশালা হৈতে যবে আইলেন ফিরিয়া।১
শান্তিপুরে যান যবে ভক্ত-গোষ্ঠী লৈয়া॥
সেই কালে দন্তে তৃণ ধরি দূর হৈতে।
নিবেদিলুঁ গৌরাঙ্গের চরণ-পদ্মেতে॥
পতিত-পাবন-অবতার নাম যে তোমার।
জগাই মাধাই আদি করিলে উদ্ধার॥
তাহা হৈতে কোটিগুণে অপরাধী আমি।
অপরাধ ক্ষম প্রভু জগতের স্বামী॥
*        *        *        *        *
প্রভু আজ্ঞা দিলা---শ্রীবাসের স্থানে।
অপরাধ হয়েছে তোমার---তাঁর পড়হ চরণে॥
*        *        *        *        *
প্রভুর আজ্ঞায় শ্রীবাসের চরণে পড়িলুঁ।
শ্রীবাসের আগে গৌরের আজ্ঞা সমর্পিলুঁ॥
*        *        *        *        *
দেবকীনন্দনকে শ্রীবাস পণ্ডিতের দুইটি উপদেশ  . . .
১। পুরুষোত্তমপদাশ্রয় কর গিয়া ঘরে। (এই পদের দ্বিতীয় কলিটি দেওয়া নেই।)
২। বৈষ্ণব-নিন্দনে তোমার এতেক দুর্গতি।
.     বৈষ্ণব-বন্দনা করি শুদ্ধ কর মতি॥
*        *        *        *        *
প্রভুপাদপদ্ম আমি মস্তকে ধরিয়া।
বাঢ়িল আরতি চিত্তে উলসিত হিয়া॥
বৈষ্ণব-গোসাঞির নাম উদ্দেশ কারণ।
নানা ক্ষেত্র তীর্থ মুঞি করিল গমন॥
যথা যথা যাঁর নাম শুনিলুঁ শ্রবণে।
যাঁর যাঁর পাদপদ্ম দেখিলুঁ নয়নে॥
শাস্ত্রে বা যাঁহার নাম দেখিলুঁ শুনিলুঁ।
সর্ব্ব প্রভুর নাম-মালা গ্রহণ করিলুঁ॥
*        *        *        *        *
ইথে অগ্রপশ্চাত মোর দোষ না লইবে।
ঠাকুর-বৈষ্ণব মোর সকল ক্ষমিবে॥
এক ব্রহ্মাণ্ডে হয় চৌদ্দ ভুবন।
যাহাতে বৈষ্ণবগণ করিয়া যতন॥
জাতির বিচার নাই বৈষ্ণব-বর্ণনে।
দেবতা অসুর ঋষি সকলি সমানে॥
দেবতা গন্ধর্ব্ব আর মানুষ আদি করি।
ইহাতে বৈষ্ণব যেই তাঁয় নমস্করি॥
পদ্মপুরাণ আর শ্রীভাগবত-মত।
বন্দিব বৈষ্ণব প্রভুর সম্প্রদায়ী যত॥
পুলিন্দ পুক্কশ ভীল কিরাত যবন।
আভীর কঙ্ক আদি করি সকলি সমান॥
যত যত হীন জাতি উদ্ভবে বৈষ্ণব।
সভারে বন্দিব, সভে জগত-দুর্ল্লভ॥

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
অথ শ্রীবৈষ্ণবাভিধানম্
কবি দৈবকীনন্দন দাস
শ্রাবণ, শ্রীচৈতন্যাব্দ ৪২৪-এ প্রকাশিত (১৯১১), অতুলকৃষ্ণ গোস্বামী সম্পাদিত শ্রীশ্রীবৈষ্ণব-বন্দনা গ্রন্থ থেকে
পাওয়া। এই পদটি সংস্কৃতে। দৈবকীনন্দনের বেশী পদাবলী না পাওয়ায় আমরা এটাও এখানে যুক্ত করলাম



প্রণম্যাদৌ কৃপাদৃষ্টিপবিত্রীকৃতভূতলম্।
সর্ব্ববাঞ্ছাকল্পতরুং গুরুং শ্রীপুরুষোত্তমম্॥
মহৌজসো মহাভাগান্ মহাপতিতপাবনান্।
মহাভাগবতান্ সর্ব্বান্ বৈষ্ণবান্ বিষ্ণুরূপিণঃ॥
ততঃ শছীজগন্নাথৌ খ্যাতৌ ভূদেবরূপিণৌ।
শ্রীবিশ্বরূপশ্রীবিশ্বম্ভরয়োঃ পিতরৌ শুভৌ॥
ধন্যং শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যচন্দ্রস্যাগ্রজরূপিণম্।
শঙ্করারণ্যনামানং বিশ্বরূপমহাশয়ম্॥
গদাধরপ্রাণনাথং লক্ষ্মীবিষ্ণুপ্রিয়াপতিম্।
সাক্ষাৎ প্রেমকৃপামূর্ত্তিং শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভুম্॥
তথা পদ্মাবতী-শ্রীমন্মুকুন্দদ্বিজসত্তমৌ।
নিত্যানন্দস্বরূপস্য পিতরাবতুলশ্রিয়ৌ॥
শ্রীমন্নিত্যানন্দচন্দ্রং বসুধাজাহ্নবীপতিম্।
শ্রীবারভদ্রজনকং সর্ব্বপাষণ্ডখণ্ডনম্॥
যদ্যপি প্রকৃতিক্ষুদোহবুদ্ধিমান্ বালকঃ স্বয়ম্।
অনন্তবৈষ্ণবানন্তমহিমাখ্যানবালিশঃ॥
তথাপি রসনালৌল্যদত্যন্তান্তঃকুতূহলাৎ।
করোমি বৈষ্ণবানন্তাভিধানং স্মরণং কিয়ৎ॥
কিঞ্চাত্র মম হীনস্য সর্ব্বেষ্বতন্নিবেদনম্।
ক্রমভঙ্গভবা দোষা ন গ্রাহ্যাস্তৈর্গুণোদয়ৈঃ॥
শ্রীমাধবপুরী শ্রীলাদ্বৈতাচার্য্যস্তথাচ্যুতঃ।
গোপীনাথঃ শ্রীনিবাসো গোবিন্দশ্চন্দ্রশোখরঃ॥


হরিদাসঃ শ্রীমুরারিগুপ্তো নারায়ণস্তথা।
মুকুন্দো বাসুদেবশ্চ শ্রীদামোদরপণ্ডিতঃ॥
পীতাম্বরো জগন্নাথঃ শ্রীনায়ারণশঙ্করৌ।
শ্রীরামপণ্ডিতশ্চক্রবর্ত্তিনীলাম্বরস্তথা॥
গঙ্গাদাসো দ্বিজো বিষ্ণুঃ শ্রীসুদর্ষনপণ্ডিতঃ।
বিদ্যানিধিস্তথা বুদ্ধিমন্তঃ শ্রীলসদাশিবঃ॥
শ্রীগর্ভঃ শ্রীনিধিঃ শুক্লাম্বরঃ শ্রীধরপণ্ডিতঃ।
কবিচন্দ্রো রামদাসো বনমালী হলায়ুধঃ॥
বিজয়ো নন্দনাচার্য্য ঈশানো গরুড়ধ্বজঃ।
জগদীশঃ সঞ্জয়শ্চ শ্রীমান্ কাশীশ্বরস্তথা॥
গঙ্গাদাসো বাসুদেবভদ্রো রাম-মুকুন্দৌ।
শ্রীবল্লভাচার্য্যবর্য্যো মিশ্র শ্রীলসনাতনঃ॥
আচার্য্যবনমালী চ কাশীনাথদ্বিজোত্তমঃ।
শ্রীশ্বরাভিধানপুরী শ্রীমৎকেশবভারতী॥
পরমানন্দাখ্যপুরী দামোদরস্বরূপকঃ।
নরসিংহাখ্যানতীর্থো রামচন্দ্রপুরী তথা॥
গরুড়াবধূতদেবঃ পুরী রাঘবসংজ্ঞকঃ।
ব্রহ্মানন্দস্বরূপশ্চ পুরী শ্রীযুতকেশবঃ॥
শ্রীমদ্বিষ্ণুপুরী বিশ্বেশ্বরানন্দমহাশয়ঃ।
শ্রীসচ্চিদানন্দনামাহনুভবানন্দ এবচ॥
শ্রীমত্কৃষ্ণানন্দপুরী নৃসিংহানন্দভারতী।
কাশীশ্বরাখ্যানদোবোহনুপামঃ শ্রীসনাতনঃ॥


রূপো দীবঃ শ্রীপ্রবোধানন্দঃ শুদ্ধসরস্বতী।
রঘুনাথদাসনামা তথা গোপালভট্টকঃ॥
রঘুনাথো লোকনাথঃ শ্রীমদ্ভূগর্ভনামকঃ।
রাঘবো জগদানন্দপণ্ডিতঃ শ্রীপুরন্দরঃ॥
কাশীমিশ্রো রায়রামানন্দো বক্রেশ্বরদ্বিজঃ।
বাণীনাথপট্টনায়ো গোবিন্দানন্দ এবচ॥
সদাশিবকবিক্ষ্মাভৃদ্দাসবংশগদাধরঃ।
শ্রীশিবানন্দসেনশ্চ শ্রীমুকুন্দভিষগ্বরঃ॥
শ্রীমন্নরহরিঃ শ্রীলরঘুনন্দন এবচ।
রঘুনাথদাসবৈদ্যোপাধ্যায়মধুসূদনঃ॥
দেবানন্দদ্বিজবরঃ শ্রীলাচার্য্যপুরন্দরঃ।
শ্রীযুক্তাচার্য্যচন্দ্রশ্চ শ্রীকৃষ্ণদাসপণ্ডিতঃ॥
সতার্থপরমানন্দঃ শ্রীমত্সৃষ্টিধরস্তথা।
গোবিন্দো মাধবো বাসুদেবো ঘোষাভিধানভৃৎ॥
শ্রীলশ্রীরামদাসঃ শ্রীসুন্দরানন্দ এবচ।
পরমশ্রীলপরমেশ্বরঃ শ্রীপুরুষোত্তমঃ॥
শ্রীকৃষ্ণদাসঃ শ্রীগৌরীদাসঃ শ্রীকমলাকরঃ।
বংশীগীতপ্রকাশী শ্রীবংশীবদনদাসকঃ॥
শ্রীমদুদ্বরণ-শ্রীলদ্বিজশ্রীপুরুষোত্তমৌ।
কবিরাজমিশ্রবর্য্যো মধুসূদনপণ্ডিতঃ॥
শ্রীমদ্ভাগবতাচার্য্যো গোবিন্দাচার্য্য এবচ।
শ্রীসার্ব্বভৌমঃ শ্রীযুক্তো নন্দনাচার্য্য এবচ॥
শ্রীমত্প্রতাপরুদ্রশ্চ রঘুনাথধরামরঃ।
হরিদাসদ্বিজঃ স্রীলসারঙ্গো মকরধ্বজঃ॥
শ্রীবৃন্দাবনদাসঃ শ্রীজগদীশাখ্যপণ্ডিতঃ।
প্রদ্যুম্নমিশ্রস্তপনাচার্য্যঃ শ্রীভগবাংস্তথা॥
ওড্রজঃ শ্রীবিপ্রদাসোহম্বষ্ঠশ্রীবিষ্ণুদাসকঃ।
বনমালিদাসবৈদ্যো হরিদাসো গদাধরঃ॥
ওড্রজঃ শ্রীকৃষ্ণদাসঃ শ্রীকাশীশ্বরপণ্ডীতঃ।
বলরামজগন্নাথদাসৌ শ্রীচন্দনেশ্বরঃ॥
সিংহেশ্বরঃ শিবানন্দো বলরামমহোত্তমঃ।
সুবুদ্ধিমিশ্রন্তুলসীমিশ্রঃ শ্রীনাথসংজ্ঞকঃ॥
কাশীনাথে হরিভট্টঃ পট্টনায়কমাধবঃ।
রামানন্দবসুব্রহ্মচারী শ্রীপুরুষোত্তমঃ॥
শ্রীরামচন্দ্রভূদেবঃ শ্রীমচ্ছ্রীকরপণ্ডিতঃ।
যদুনাথঃ-কবিচন্দ্রঃ পণ্ডিতঃ শ্রীধনঞ্জয়ঃ॥
আচার্য্যশ্রীজগন্নাথঃ শ্রীসূর্য্যদাসপণ্ডিতঃ।
শ্রীলশ্রীলক্ষ্মণাচার্য্যঃ শ্রীকৃষ্ণাচার্য্য এবচ॥
চৈতন্যদাসঃ পরমানন্দগুপ্ত-ভিষগ্বরঃ।
শ্রীজগন্নাথ-কংসারিসেনৌ শ্রীযুক্তভাস্করঃ॥
কবিচন্দ্রশ্রীমুকুন্দঃ শ্রীরামঃ সেন-বল্লভঃ।
শ্রীযুক্তবলরামাখ্যাদাসো মহোশপণ্ডিতঃ॥
পরমানন্দাবধূতঃ শ্রীগঙ্গাদাসপণ্ডিতঃ।
কবিরাজশ্রীমুকুন্দানন্দঃ শ্রীজীবপণ্ডিতঃ॥
চির়্জিবঃ কৃষ্ণদাসঃ কৃষ্ণদাসাখ্যবালকঃ।
যদুনাথদাসবর্য্যঃ শ্রীকৃষ্ণদাসপণ্ডিতঃ॥
রামতীর্থঃ কৃষ্ণতীর্থঃ পুরী শ্রীপুরুষোত্তমঃ।
শ্রীজগন্নাথতীর্থো রঘুনাথপুরী তথা॥


শ্রীবাসেদেবতীর্থশ্চ শ্রীলোপেন্দ্রাভিধাশ্রমঃ।
অনন্তাভিধানপুরী হরিহরানন্দভারতী॥
শ্রীমন্নৃসিংহচৈতন্যঃ শ্রীমদাচার্য্যমাধবঃ।
শঙ্করো মাধবানন্দাচার্য্যো দাস-সনাতনঃ॥
শিবানন্দচক্রবর্ত্তী দ্বিজ-নারায়ণাদয়ঃ।
য এতান্ স্মরতি প্রাতঃ শৃণুতে বাপি ভত্তিতঃ।
কস্মিন্ কালেহপি স পুমান্ যাতনাং নার্হতি ধ্রুবম্॥
এতান্ সংস্মৃত্য সংস্মৃত্য যো নমস্কুরুতে জনঃ।
শ্রীবৈষ্ণবপদে তস্যনাপরাধঃ কদাচন॥
লভতে বৈষ্ণবপদমেতেষাং স্মৃতিমাত্রতঃ।
ভক্তিঞ্চ প্রেমপীযূষমধুরাং দেবদুর্ল্লভাম্॥
সর্ব্বেষামপ্যুপাদেয়ঃ সর্ব্ববেদাধিকস্তা।
শ্রবণান্নয়নাচ্চিত্তাদপি দূরো হি বৈষ্ণবঃ॥

ইতি শ্রীদৈবকীনন্দন-কবিরাজ-বিরচিতং
বৈষ্ণবাভিধানং সম্পূর্ণম্।

.        *************************       
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর