কবি নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনের পদাবলী
*
আজু ললিত হিণ্ডোর মাঝ
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ৩০শ পল্লব, ঝুলন-লীলা, পদসংখ্যা ১৫৬৪। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায়
দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি
নরহরি চক্রবর্তীর রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির ২১০৮ সংখ্যাক পদ।

॥ কেদার॥

আজু ললিত হিঁডোর মাঝে।
রঙ্গে ঝুলত নাগর-রাজে॥
রাই সুবদনি বাম পাশ।
কতহুঁ আনন্দ-সায়রে ভাস॥
কিবা অদভুত দুহুঁক শোভা।
নাহিক উপমা ভুবন-লোভা॥
দুহুঁ দুহুঁ মুখ দুহুঁ সে হেরি।
হাসিয়া চুম্ব দেই বেরি বেরি॥
আঁখি ভঙ্গি করে কতেক ভাতি।
কহে গদ গদ রভসে মাতি॥
ললিতাদি সখী সে সুখে ভাসি।
নেহারে দোঁহার বদন-শশী॥
রঙ্গে ঝুলায়ত মন্দ মন্দ।
মিলিয়া গাওত গীত সুছন্দ॥
বাজত বেণু বীণ উপাঙ্গ।
মধুর মৃদঙ্গ মুরজ চঙ্গ॥
কেহু নাচে কত ভঙ্গী করি।
অতি মোহিত তা দোঁহে হেরি॥
সুর-নারী নিজগণহুঁ সঙ্গে।
পুষ্প-বৃষ্টি করত রঙ্গে॥
জয় জয় শব্দ বৃন্দাবন ভরি।
শুনি রঙ্গে মাতি নরহরি॥

ই পদটি, দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত,
বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায় সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব
চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত,
১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ২৯৫-পৃষ্ঠায় এইরপে দেওয়া রয়েছে।

॥ কেদার রাগ তালোচিত॥

আজু ললিত হিণ্ডোর মাঝে। রঙ্গে ঝলত নাগর রাজে॥
রাই সুবদনী বাম পাস। কতহু আনন্দ সাওরে ভাস॥
কিবা অদ্ভুত দোহক শোভা। নাহিক উপমা ভুবনে লোভা॥
দুহুঁ দুহুঁ মুখ দোহ সে হেরি। হাসি চুম্ব দেই বেরি বেরি॥
আখি ভঙ্গি করি কতক ভাঁতি। কহে গদ গদ রভসে মাতি॥
ললিতাদি সখী সে সুখে ভাসি। নেহারি দোহার বদন শশী॥
রঙ্গে ঝুলাওত মন্দ মন্দ। মেলিএ গাওত গীত সুছন্দ॥
বাজত বেণু সুবীণা উপাঙ্গ। মধুর মৃদঙ্গ মুরজ চন্দ্র॥
কেহুঁ নাচে কত ভঙ্গি করি। অতি মোহিতা দোহে হেরি॥
সুর নর নিজগণ সঙ্গে। প্রষ্ফুরিঞ্চি করে কত রঙ্গে॥
জয় শব্দ বৃন্দাবন ভরি। সুনি রঙ্গে মাতে নরহরি॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৫৩২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ কেদার॥

আজু ললিত হিণ্ডোর মাঝে।
রঙ্গে ঝুলত নাগর-রাজে॥
থাই সুবদনি বাম পাশ।
কতহুঁ আনন্দ-সায়রে ভাস॥
কিবা অদ্ভুত দুহুঁক শোভা।
নাহিক উপমা ভুবন-লোভা॥
দুহুঁ দুহুঁ মুখ দুহুঁ সে হেরি।
হাসিয়া চুম্ব দেই বেরি বেরি বেরি॥
আখি-ভঙ্গী করে কতেক ভাতি।
কহে গদ গদ রভসে মাতি॥
ললিতাদি সখী সে সুখে ভাসি।
নেহারে দোঁহার বদন-শশী॥
রঙ্গে ঝুলায়ত মন্দ মন্দ।
মিলিয়া গাওত গীত সুছন্দ॥
বাজত বেণু বীণ উপাঙ্গ।
মধুর মৃদঙ্গ মুরজ চঙ্গ॥
কেহু নাচে কত ভঙ্গী করি।
অতি মোহিত তা দোঁহে হেরি॥
সুর-নরনারী নিজগণ সঙ্গে।
পুষ্প বৃষ্টি করত রঙ্গে॥
জয় শব্দ বৃন্দাবন ভরি।
শুনি রঙ্গে মাতে নরহরি॥

ই পদটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন
পদালী সংকলন “শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ৪৬৩-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

ঝূলন লীলা।
॥ সুই জয়জয়ন্তি - দুঠুকী॥

আজ ললিত হিণ্ডোর মাঝ।
রঙ্গে ঝুলত নাগর-রাজ॥
কিবা অদভুত দুহুঁক শোভা।
নাহিক উপমা ভুবন লোভা॥
দুহুঁ দুহুঁ মুখ দুহুঁ সে হেরি।
হাসি চুম্ব দেই বেরি বেরি॥
আঁখি ভঙ্গি করি কতেক ভাঁতি।
কহে গদগদ রভসে মাতি॥
ললিতাদি সখি সে সুখে ভাসি।
নেহারে দোঁহার বদন-শশী॥
রঙ্গে ঝুলায়ত মন্দ মন্দ।
মিলিয়া গায়ত গীত সুছন্দ॥
বাজত বেণু বীণা উপাঙ্গ।
মধুর মৃদঙ্গ মুরজ চঙ্গ॥
কেহু নাচে কত ভঙ্গি করি।
অতি মোহিত তা দোঁহে হেরি॥
সুর-নারী নিজগণ সঙ্গে।
পুষ্পবৃষ্টি করত রঙ্গে॥
জয় জয়শব্দ বৃন্দাবন ভরি।
শুনি রঙ্গে মাতি নরহরি॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
আজু রাধাশ্যাম রঙ্গেতে ঝুলে
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ৩০শ পল্লব, ঝুলন-লীলা,
পদসংখ্যা ১৫৬৬। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই
পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি নরহরি চক্রবর্তীর রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির ২১১০ সংখ্যাক
পদ।

॥ তথা রাগ॥ (মল্লার)

আজু রাধাশ্যাম রঙ্গেতে ঝুলে।
মণিময় নব                                হিণ্ডোলা সাজাইয়া
বংশীবট-তট কালিন্দি-কূলে॥
ললিতাদি রঙ্গে                                ভঙ্গী করি বেগে
ঝুলাইয়া দুহুঁ বদন চাঞা।
রসবতী ভুজ                                     পসারি নাগরে
ধরে ভয়ে অতি ব্যাকুল হৈয়া॥
শ্যাম রঙ্গে চারু                                   চিবুক পরশি
চুম্ব দেই ঘন মনেরি সুখে।
তাহা দেখি সখী                                হাসে রসে ভাসি
বসন অঞ্চল ঝাঁপিয়া মুখে॥
কৌতুক-বচন                                  কহি বৃন্দা দেবী
ঝুলায়ই পুন যতনে ধীরে।
কি আনন্দ বৃন্দা-                                  বনে নরহরি
জয় জয় দিয়া রঙ্গেত ফিরে॥

ই পদটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদালী সংকলন
“শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ৪৬৭-পৃষ্ঠা।

ঝুলন লীলা।
॥ সুই মল্লার - দুঠুকী॥

আজু রাধাশ্যাম রঙ্গেতে ঝুলে।
মণিময় নব                                হিন্দোলা সাজাইয়া
বংশী বট তট কালিন্দী কূলে॥
ললিতাদি রঙ্গে                                ভঙ্গি করি বেগে
ঝুলাইয়া দুহুঁ বদন চাইয়া।
রসবতী ভুজ                                     পসারি নাগরে
ধরে ভয়ে অতি ব্যাকুল হইয়া॥
শ্যাম রঙ্গে চারু                                    চিবুক পরশি
চুম্ব দেই ঘন মনেরি সুখে।
তাহা দেখি সখি                                হাসে রসে ভাসি
বসন অঞ্চল ঝাঁপিয়া মুখে॥
কৌতুক বচন                                     কহি বৃন্দাদেবী
ঝুলায়ই পুন যতনে ধীরে।
কি আনন্দ বৃন্দা-                                   বনে নরহরি,
জয় জয় দিয়া রঙ্গেতে ফিরে॥

ই পদটি, দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ২৯৭-পৃষ্ঠায়
এইরপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রাগ তালো যথা॥

আজু রাধাশ্যাম সঙ্গেতে ঝোলে।
মণিময় নব হিণ্ডোল সাজায়া বংশী বট তট কালিন্দীকূলে॥
ললিতাদি রঙ্গে ভঙ্গি করি বেগে ঝুলায়ই দোহ বদন চাহিয়া।
রসবতী ভুজ পসারি নাগর ধরে ভএ অতি আকুল হইয়া॥
শ্যাম অঙ্গে চারু শ্রীবুক পরসি চুম্ব দেই ঘন মনের সুখে।
তাহা দেখি সখী রসে ভাসি বসন অঞ্চল ঝাপিয়া মুখে॥
কৌতুক বচন কহি বৃন্দা দেবী ঝুলাএ পুন যতনে ধীরে ধীরে।
কি আনন্দ বৃন্দাবনে নরহরি জয় জয় দিয়া তরঙ্গেতে ফেরে॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”,
৫৩২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। প্রথম পংক্তির ভিন্নতার জন্য আমরা এই “আজু রাধাশ্যাম সঙ্গেতে
ঝুলে” পদটিকে একটি স্বতন্ত্র পদ হিসেবেও এখানে তুলছি।

॥ তথা রাগ॥

আজু রাধাশ্যাম সঙ্গেতে ঝুলে।
মণিময় নব,                                হিন্দোলা সাজাইয়া,
বংশীবট তট কালিন্দী কূলে॥
ললিতাদি রঙ্গে,                                ভঙ্গী করি বেগে
ঝুলায়ই দুহুঁ বদন চাঞা।
রসবতী ভুজ,                                পসারি নাগরে,
ধরে ভয়ে অতি আকুল হৈয়া॥
শ্যাম অঙ্গ চারু,                                চিবুক পরশি
চুম্ব দেয় ঘন মনের সুখে।
তাহা দেখি সখী,                                হাসি রসে ভাসি,
বসন অঞ্চল ঝাঁপিয়া মুখে॥
কৌতুক বচন,                                কহি বৃন্দাদেবী,
ঝুলায়ই পুন যতনে ধীরে।
কি আনন্দ বৃন্দা-                                বনে নরহরি,
জয় জয় দিয়া রঙ্গেত ফিরে॥

.            *************************            

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
আজু রাধাশ্যাম সঙ্গেতে ঝুলে
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৫৩২-পৃষ্ঠায়
এই রূপে দেওয়া রয়েছে। প্রথম পংক্তির ভিন্নতার জন্য আমরা এই “আজু রাধাশ্যাম রঙ্গেতে ঝুলে”
পদটিকে একটি স্বতন্ত্র পদ হিসেবেও এখানে তুলছি।

॥ তথা রাগ॥

আজু রাধাশ্যাম সঙ্গেতে ঝুলে।
মণিময় নব,                                হিন্দোলা সাজাইয়া,
বংশীবট তট কালিন্দী কূলে॥
ললিতাদি রঙ্গে,                                ভঙ্গী করি বেগে
ঝুলায়ই দুহুঁ বদন চাঞা।
রসবতী ভুজ,                                    পসারি নাগরে,
ধরে ভয়ে অতি আকুল হৈয়া॥
শ্যাম অঙ্গ চারু,                                    চিবুক পরশি
চুম্ব দেয় ঘন মনের সুখে।
তাহা দেখি সখী,                                হাসি রসে ভাসি,
বসন অঞ্চল ঝাঁপিয়া মুখে॥
কৌতুক বচন,                                    কহি বৃন্দাদেবী,
ঝুলায়ই পুন যতনে ধীরে।
কি আনন্দ বৃন্দা-                                   বনে নরহরি,
জয় জয় দিয়া রঙ্গেত ফিরে॥

ই পদটি, দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ২৯৭-পৃষ্ঠায়
এইরপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রাগ তালো যথা॥

আজু রাধাশ্যাম সঙ্গেতে ঝোলে।
মণিময় নব হিণ্ডোল সাজায়া বংশী বট তট কালিন্দীকূলে॥
ললিতাদি রঙ্গে ভঙ্গি করি বেগে ঝুলায়ই দোহ বদন চাহিয়া।
রসবতী ভুজ পসারি নাগর ধরে ভএ অতি আকুল হইয়া॥
শ্যাম অঙ্গে চারু শ্রীবুক পরসি চুম্ব দেই ঘন মনের সুখে।
তাহা দেখি সখী রসে ভাসি বসন অঞ্চল ঝাপিয়া মুখে॥
কৌতুক বচন কহি বৃন্দা দেবী ঝুলাএ পুন যতনে ধীরে ধীরে।
কি আনন্দ বৃন্দাবনে নরহরি জয় জয় দিয়া তরঙ্গেতে ফেরে॥

ই পদটি আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ৩০শ পল্লব,
ঝুলন-লীলা, পদসংখ্যা ১৫৬৬। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ
অনুসারে এই পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি নরহরি চক্রবর্তীর রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির
২১১০ সংখ্যাক পদ।

॥ তথা রাগ॥ (মল্লার)

আজু রাধাশ্যাম রঙ্গেতে ঝুলে।
মণিময় নব                                হিণ্ডোলা সাজাইয়া
বংশীবট-তট কালিন্দি-কূলে॥
ললিতাদি রঙ্গে                                ভঙ্গী করি বেগে
ঝুলাইয়া দুহুঁ বদন চাঞা।
রসবতী ভুজ                                     পসারি নাগরে
ধরে ভয়ে অতি ব্যাকুল হৈয়া॥
শ্যাম রঙ্গে চারু                                    চিবুক পরশি
চুম্ব দেই ঘন মনেরি সুখে।
তাহা দেখি সখী                                হাসে রসে ভাসি
বসন অঞ্চল ঝাঁপিয়া মুখে॥
কৌতুক-বচন                                   কহি বৃন্দা দেবী
ঝুলায়ই পুন যতনে ধীরে।
কি আনন্দ বৃন্দা-                                 বনে নরহরি
জয় জয় দিয়া রঙ্গেত ফিরে॥

ই পদটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদালী সংকলন
“শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ৪৬৭-পৃষ্ঠা।

ঝুলন লীলা।
॥ সুই মল্লার - দুঠুকী॥

আজু রাধাশ্যাম রঙ্গেতে ঝুলে।
মণিময় নব                                হিন্দোলা সাজাইয়া
বংশী বট তট কালিন্দী কূলে॥
ললিতাদি রঙ্গে                                ভঙ্গি করি বেগে
ঝুলাইয়া দুহুঁ বদন চাইয়া।
রসবতী ভুজ                                    পসারি নাগরে
ধরে ভয়ে অতি ব্যাকুল হইয়া॥
শ্যাম রঙ্গে চারু                                   চিবুক পরশি
চুম্ব দেই ঘন মনেরি সুখে।
তাহা দেখি সখি                                হাসে রসে ভাসি
বসন অঞ্চল ঝাঁপিয়া মুখে॥
কৌতুক বচন                                   কহি বৃন্দাদেবী
ঝুলায়ই পুন যতনে ধীরে।
কি আনন্দ বৃন্দা-                                  বনে নরহরি,
জয় জয় দিয়া রঙ্গেতে ফিরে॥

.            *************************            

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
ঝুলত সুখময় শ্যামর গোরী
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ৩০শ পল্লব, ঝুলন-লীলা,
পদসংখ্যা ১৫৬৩। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই
পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি নরহরি চক্রবর্তীর রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির ২১০৭
সংখ্যাক পদ।

॥ বেলোয়ার॥

ঝূলত সুখময় শ্যামর গোরী।
বৃন্দা-বিপিন                                নিকুঞ্জ মাঝ মিলি
প্রিয় ললিতাদি ঝুলায়ত থোরি॥
সুললিত তরল                                হিঁণ্ডোর মাঝ অতি
ঝলকত যুগল-রূপ রুচি-ধাম।
মৃগমদ-অঞ্জন-                                পুঞ্জ-জলদ-তনু
কেশর-বিদলিত-দামিনি-দাম॥
শোভা ভুবন                                বিজয় নহ সমতুল
দুহুঁ মুখ-চন্দ বিমল পরকাশ।
হেরি দুহুঁক গুণ                                গাওত চৌদিশে
শুক পিককুল হিয়া অধিক উলাস॥
ঝঙ্করু ভ্রমর                                যন্ত্র জনু বাজত
নৃত্যতি শিখিকুল উমগ অভঙ্গ।
নরহরি কহ কবি                        কো বরণব ইহ
বৃন্দাবন মধি বিবিধ তরঙ্গ॥

ই পদটি, দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ২৯৫-পৃষ্ঠায়
এইরপে দেওয়া রয়েছে।

॥ বেলোয়ার তালোচিত॥

ঝূলত সুখময় শ্যাম গোরী।
বৃন্দা বিপিন কুঞ্জ মাঝ মিলি প্রিয় ললিতাদি ঝুলাওত থোরি॥
সুললিত তরলহি ডোর মাঝ অতি ঝুল কত যুগল রূপ রুচি ধাম।
মৃগমদ অঞ্জন পুঞ্জ জলদ তনু কেশর বিনোদিত দামিনী দাম॥
শোভা ভুবন বিজয় নহ সমতুল দুহুঁ মুখ চাঁন্দ বিমল পরকাস।
হেরি দোহ গুণ         গাওত চৌদিসে শুক পিককুল হিয়া অধিক উল্লাস॥
ঝঙ্কর ভ্রমর জন্ত জনু বাওত নৃত্য তখি শিখীকুল উমগয় ভঙ্গ।
নরহরি কহে কবি কৈ রব নব ইহ বৃন্দাবন মাধ বিবিধ রঙ্গ॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”,
৫৩১-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ বেলোয়ার॥

ঝূলত সুখময় শ্যাম গোরী।
বৃন্দাবন-বিপিন,                                নিকুঞ্জ মাঝ মিলি,
প্রিয় ললিতাদি ঝুলায়ত থোরি॥
সুললিত তরল,                                হিন্দোল মাঝ অতি,
ঝলকত যুগল-রূপ রুচি-ধাম।
মৃগমদ-অঞ্জন,                                পুঞ্জ-জলদ-তনু,
কেশর-বিদলিত-দামিনি দাম॥
শোভা ভুবন,                                বিজয় নহ সমতুল,
দুহুঁ মুখ-চন্দ বিমল পরকাশ।
হেরি দুহুঁক গুণ,                                গাওত চৌদিকে,
শুক পিককুল হিয়া অধিক উল্লাস॥
ঝঙ্করু ভ্রমর,                                যন্ত্র জনু বাজত,
নৃত্যতি শিখিকুল উমগ অভঙ্গ।
নরহরি কহ করি,                        কো বরণ ইহ,
বৃন্দাবন মধি বিবিধ তরঙ্গ॥

ই পদটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদালী সংকলন
“শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ৪৬৭-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

ঝুলন লীলা।
॥ বেলোয়ার মল্লার - ডাঁসপাহিড়া॥

ঝুলত সুখময় শ্যামর গোরী।
বৃন্দা বিপিনে                                নিকুঞ্জ মাঝ মেলি
প্রিয় ললিতাদি ঝুলায়ত থোরি॥
সুললিত তরল                                হিণ্ডোর মাঝ অতি
ঝলকত যুগল রূপ-রুচি-ধাম১।
মৃগমদ অঞ্জন-                                পুঞ্জ জলদ-তনু,
কেশর বিদলিত দামিনী-দাম॥
শোভা ভুবন-                                বিজয় নহ সমতুল
দুহুঁ মুখচন্দ্র বিমল পরকাশ।
হেরি দুহুঁক গুণ                                গায়ত চৌদিশে
শুক পিককুল হিয়া অধিক উল্লাস॥
ঝঙ্করু ভ্রমর,                                যন্ত্র জনু বাজত,
নৃত্যতি শিখিকুল উমগ২ অভঙ্গ।
নরহরি কহ                                কবি কো বরণব ইহ,
বৃন্দাবন মধি বিবিধ তরঙ্গ॥

টীকা -
রূপ-রুচি-ধাম১ - রূপকান্তি বিশিষ্ট দেহ যাহাদের।
উমগ২ - আনন্দে উল্লসিত।

.            *************************            

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
উমত ঝুমত চরত চরত
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২২ বঙ্গাব্দ (১৯১৫), ১ম খণ্ড, ২য় শাখা, ৮ম পল্লব, ধীরা মধ্যা
খণ্ডিতা, পদসংখ্যা ৩৮২। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ
অনুসারে এই পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি নরহরি চক্রবর্তীর রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির
৫২৬ সংখ্যাক ও পদরত্নাকর পুথির ১০||৩ সংখ্যক পদ।

॥ রামকেলি॥

উমত ঝুমত                                 চরত চরত
চরণ ধরত থোর।
মধুর মুরতি                                 পূজল যুবতি
সোণ কুসুম জোর॥
সখি শ্যাম নাগর দেখ।
রজনি জাগরে                                অরুণ লোচন
হৃদয়ে নখর-রেখ॥ ধ্রু॥
কটি-আভরণ                                   নীল বসন
আনতহিঁ আন বেশ।
বকুল-মাল                                    ভ্রমরি-জাল
সৌরভে ভুলল দেশ॥
অধর অরুণ                                অমিয়া-ঝরণ
রসবতী রস লেল।
নয়ন-কমলে                                মধুপিবইতে
ভ্রমর বরণ ভেল॥
কিঙ্কিণি-জাল                                অতি রসাল
বিরমি বিরমি বাজে।
নরহরি পহুঁ                                গিরত গিরত
রাই-অঙ্গন মাঝে॥

টীকা -
১ - ৪। “উমত ঝুমত” ইত্যাদি। (শ্রীকৃষ্ণ) অস্থির-ভাবে ঝিমাইতেছেন এবং ঢলিয়া ঢলিয়া অল্প অল্প চরণ
নিক্ষেপ করিতেছেন ; (তাঁহার জাগরারুণ নেত্র-দ্বয় দেখিয়া বোধ হয় যেন) সেই যুবতী তাঁহাকে আরক্তিম
পুষ্প-যুগল দ্বারা পূজা করিয়াছে!
১২ - ১৫। “অধর অরুণ” ইত্যাদি। (শ্রীকৃষ্ণের) অরুণ-বর্ণ অধর অমৃতের নির্ঝরস্বরূপ ; রসবতী নায়িকা
(উহার) রস গ্রহণ করিয়াছে ; (সেই নায়িকার) নয়নরূপ কমলে মধু-পান অর্থাৎ চুম্বন করায় (অধরে নয়নের
কাজল লগ্ন হওয়ায়) উহা ভ্রমর-বর্ণ হইয়াছে।

ই পদটি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শ্রীশচন্দ্র মজুমদার দ্বারা সম্পাদিত, ১৮৮৫ সালে প্রকাশিত, বৈষ্ণব
পদাবলী সংকলন “পদরত্নাবলী”-তে এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রামকেলি॥

উমত ঝুমত ঢরত ঢরত
ঢরল ঢরত থোর।
মধুর মূরতি পূজল যুবতী
শোন কুসুম জোর॥
সখি, শ্যাম নাগর দেখ।
রজনি জাগরে অরুণ লোচন
হৃদয়ে নখের রেখ॥ ধ্রু॥
কটি আভরণ নীল বসন
আনতহিঁ আন বেশ।
বকুল মাল ভ্রমরী জাল
সৌরভে ভুলল দেশ॥
অধর অরুণ অমিয়া ঝরণ,
রসবতী রস নেল।
নয়নকমলে মধু পিবইতে
ভ্রমর বরণ ভেল॥
কিঙ্কিনী জাল অতি রসাল
বিরমি বিরমি বাজে।
নরহরি প্রভু গিরত গিরত
রাই অঙ্গ মাঝে॥

ই পদটি দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ১২১-পৃষ্ঠায়
এইরপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রামকেলি॥

উমত ঝুমত ঢরত গীরত চলত চরণ থোর।
মধুর মুরতি পূজল যুবতী সোনার কমল জোড়॥
সখী হে শ্যামনাগর দেখ।
রজনী জাগরে অরুণ লোচন হৃদয়ে নখের রেখ॥
কটি আভরন নীল বসন আনতহি আন বেশ।
বকুল মাল ভ্রমরী জাল সৌরভে ভুলল দেশ॥
অধর অরুণ অমিয়া ঝরণ রসবতী রস লেল।
নয়ন কমলে মধু পিবইতে ভ্রমর বরণ ভেল॥
কিঙ্কিণীজাল অতি রসাল বিরমি বিরমি বাজে।
নরহরি পহু গিরত গিরত রাই অঙ্গন মাঝে॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”,
৫৩২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রামকেলি॥

উমত ঝুমত,                                 ঢরত ভরত,
চরল ঢরত থোর।
মধুর মুরতি,                                 পূজল যুবতী,
শোণ কুসুম জোর॥
সখি শ্যাম নাগর দেখ।
রজনি জাগরে,                                অরুণ লোচন,
হৃদয়ে নথর-রেখ॥ ধ্রু॥
কটি-আভরণ,                                   নীল বসন,
আনতঁহি আন বেশ।
বকুল মাল,                                    ভ্রমরী জাল,
সৌরভে ভুলল দেশ॥
অধর অরুণ,                                অমিয়া ঝরণ
রসবতী রস নেল।
নয়ন কমলে,                                মধু পিবইতে,
ভ্রমর বরণ ভেল॥
কিঙ্কিনী জাল,                                অতি রসাল,
বিরমি বিরমি বাজে।
নরহরি পঁহু,                                গিরত গিরত,
রাই অঙ্গন মাঝে॥

.            *************************            

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
আজু রচিত নব রতন-হিঁডোর
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ৩০শ পল্লব, ঝুলন-লীলা,
পদসংখ্যা ১৫৫৯। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই
পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি নরহরি চক্রবর্তীর রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির ২১০৩
সংখ্যাক পদ।

অথ বিধাতারং প্রতি আক্ষেপো যথা।
শ্রীগৌরচন্দ্রঃ।
॥ ইমন বেলোয়ার॥

আজু রচিত নব রতন-হিঁডোর।
সুরধুনি-তীর                                তুঙ্গ-তরু-তল তহিঁ
রসময় গৌর কিশোর॥ ধ্রু॥
পরিকর সুঘড়                                ঝুলায়ত লহু লহু
গাওত তান সরস রস মাতি॥
উদঘট থোঙ্গ                                থোঙ্গ তক থৈ থৈ
নাচত মধুর বাওত বহু ভাতি॥
নদীয়া নগর                                না রহু কোই ঘর
তেজি চলত চৌদিশে নপনারী।
অধিক উছাহ                        হোয়ত হিয়ে পহুঁ কর
হাস-মিলিত মুখ-চাঁদ নেহারি॥
সুরগণ গগনে                                মগন গণ সুখে
বরিখত কুসুম করত জয়কার।
নরহরি ভণত                                ভুবন উমতারল
কো কহুঁ অদভুত রঙ্গ অপার॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন  “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ২০৯-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া
রয়েছে। জগবন্ধু ভদ্র, এই পদটিকে ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদ বলে উল্লেখ করেছেন। আমরা, ৪২৬ গৌরাব্দে
(১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা  প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থে এই পদটি পাইনি। তাই এই পদের
রচয়িতা কোন নরহরি তা বলা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। নরহরি সরকার ও নরহরি চক্রবর্তী
ছাড়াও অন্য কোনো কবি নরহরির পদ কি না তাও বা কে বলতে পারে!

॥ ইমন॥

আজু রচিত নব রতন-হিডোঁর।
সুরধুনিতীরে                                তুঙ্গ-তরুতলহি
রসময় গৌরকিশোর॥ ধ্রু॥
পরিকর সুঘড়                                ঝুলায়ত লহু লহু
গাওত তানরস মাতি॥
উদঘট থোঙ্গ                                থোঙ্গ কত থৈ থৈ
নাচত মধুর বাওত বহু ভাতি॥
নদীয়ানগর না                                রহে কেহ ঘর তেজি
চলত চৌদিকে নরনারী।
অধিক উদাস                        হোয়ত হিয়া পহুঁ কর
হাস মিলিত মুখচাঁদ নেহারি॥
সুরগণ গগনে                                স্বগণসহ বরিখত
কুসুম করত জয়কার।
নরহরি ভণত                                ভুবন উমতায়ল
কো কহু অদভুত রঙ্গ অপার॥

ই পদটি, দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত,  ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ২৯৫-পৃষ্ঠায়
এইরপে দেওয়া রয়েছে। প্রথম পংক্তির ভিন্নতার জন্য. পাঠকের সুবিধার্থে আমরা এই “আজু রচিত নব
ললিত হিণ্ডোর” পদটিকে একটি স্বতন্ত্র পদ হিসেবেও এখানে তুলছি।

॥ রাগিণী বেলোয়ার॥

আজু রচিত নব ললিত হিণ্ডোর।
সুরধুনী তীর তুঙ্গ তরুতল ঝুলত গদাধর গৌরকিশোর॥ ধ্রু॥
পরিকর সুখন ঝুলাওত লহুঁ লহুঁ গাওত তাল সর সরস মাতি॥
উঘটত থোঙ্গ থোঙ্গতক থৈ থৈ নাচত মধুর বাওত বহু ভাতি॥
নদীয়া নগর না রহু কোই ঘর তেজি চলত চৌদিসে নরনারী।
অধিক অধিক উত্সাহ হোয়ত হিয়ায় পহুঁ রহসি মিলিত মুখ চান্দ নেহারি॥
সুরগণ গগনে মগন গণ সমুখে বরিখত কুসুম করত জয়কার।
নরহরি ভণত ভুবন উমাতাল কো কহু অদ্ভুত রঙ্গ অপার॥

.            *************************            

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
আজু রচিত নব ললিত হিণ্ডোর
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায় সংরক্ষিত,
১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন মণ্ডল ও
সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ২৯৫-পৃষ্ঠায় এইরপে দেওয়া
রয়েছে।

॥ রাগিণী বেলোয়ার॥

আজু রচিত নব ললিত হিণ্ডোর।
সুরধুনী তীর তুঙ্গ তরুতল ঝুলত গদাধর গৌরকিশোর॥ ধ্রু॥
পরিকর সুখন ঝুলাওত লহুঁ লহুঁ গাওত তাল সর সরস মাতি॥
উঘটত থোঙ্গ থোঙ্গতক থৈ থৈ নাচত মধুর বাওত বহু ভাতি॥
নদীয়া নগর না রহু কোই ঘর তেজি চলত চৌদিসে নরনারী।
অধিক অধিক উত্সাহ হোয়ত হিয়ায় পহুঁ রহসি মিলিত মুখ চান্দ নেহারি॥
সুরগণ গগনে মগন গণ সমুখে বরিখত কুসুম করত জয়কার।
নরহরি ভণত ভুবন উমাতাল কো কহু অদ্ভুত রঙ্গ অপার॥

ই পদটি, আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ৩০শ পল্লব,
ঝুলন-লীলা, পদসংখ্যা ১৫৫৯। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ
অনুসারে এই পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি নরহরি চক্রবর্তীর রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির
২১০৩ সংখ্যাক পদ। প্রথম পংক্তির ভিন্নতার জন্য. পাঠকের সুবিধার্থে আমরা এই “আজু রচিত নব রতন-
হিঁডোর” পদটিকে একটি স্বতন্ত্র পদ হিসেবেও এখানে তুলছি।


অথ বিধাতারং প্রতি আক্ষেপো যথা।
শ্রীগৌরচন্দ্রঃ।
॥ ইমন বেলোয়ার॥

আজু রচিত নব রতন-হিঁডোর।
সুরধুনি-তীর                                তুঙ্গ-তরু-তল তহিঁ
রসময় গৌর কিশোর॥ ধ্রু॥
পরিকর সুঘড়                                ঝুলায়ত লহু লহু
গাওত তান সরস রস মাতি॥
উদঘট থোঙ্গ                                 থোঙ্গ তক থৈ থৈ
নাচত মধুর বাওত বহু ভাতি॥
নদীয়া নগর                                  না রহু কোই ঘর
তেজি চলত চৌদিশে নপনারী।
অধিক উছাহ                           হোয়ত হিয়ে পহুঁ কর
হাস-মিলিত মুখ-চাঁদ নেহারি॥
সুরগণ গগনে                                   মগন গণ সুখে
বরিখত কুসুম করত জয়কার।
নরহরি ভণত                                ভুবন উমতারল
কো কহুঁ অদভুত রঙ্গ অপার॥

.            *************************            

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
আরে মোর প্রেমালয় পরম করুণাময়
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ২৫শ পল্লব,
শ্রীগৌরভক্তবৃন্দের চরিত্র-বর্ণন, পদসংখ্যা ২৩৬৯। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া
সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি নরহরি চক্রবর্তীর রচনা।

॥ তথা রাগ॥ (বরাড়ী)

আরে মোর প্রেমালয়                                   পরম করুণাময়
শ্রীগোপাল ভট্ট ভূ মাঝার।
সকল সদগুণ-খনি                                   বিপ্রবংশ-শিরোমণি
শ্রীবেঙ্কট ভট্টের কুমার॥
শ্রীগৌরাঙ্গের প্রিয় যতি                                অদ্ভুত ভজন-রীতি
জগতে বিদিত কীর্ত্তি যার।
অল্পকালে মহাভক্তি                              কে বুঝিতে পারে শক্তি
সদা কৃষ্ণ-রসে মাতোয়ার॥
দক্ষিণ-ভ্রমণ-কালে                                     প্রভু চারি মাস হলে
ত্রিমল্ল বেঙ্কটগৃহে স্থিতি।
তথা নিজ নাথে পায়্যা                                পরম-আনন্দ হয়্যা
পিতার আজ্ঞায় সেবে নিতি॥
শচীসুত গৌরহরি                                      পরম করুণা করি
প্রিয় ভট্ট গোপালের তরে।
প্রেমামৃত পিয়াইয়া                                     নিজ-তত্ত্ব জানাইয়া
ভাসাইল আনন্দ সাগরে॥
প্রন প্রভু গৌরহরি                                     ভট্টের করেত ধরি
কহে কিছু মধুর বচন।
তুয়া প্রেমাধীন আমি                                শীঘ্র ব্রজে যাবে তুমি
তাহা পাবে রূপ সনাতন॥
শুনিয়া প্রভুর বাণী                                    বিচ্ছেদ হইবে জানি
তিলেক ধৈরজ নাহি বান্ধে।
মুখে না নিঃসরে কথা                                সদাই অন্তরে বেথা
ও রাঙ্গা চরণে পড়ি কান্দে॥
পুন প্রভু গৌরহরি                                  প্রিয় ভট্ট কোলে করি
সিঞ্চিয়া শ্রীনয়নের জলে।
কত কীপে প্রবোধিয়া                                ভট্ট-মুখ পানে চাইয়া
কাতর-অন্তরে প্রভু চলে॥
শ্রীবেঙ্কট ত্রিমল্লেরে                                আশ্বাসিয়া বারে বারে
দক্ষিণ ভ্রমণে প্রভু গেলা।
এথা কথোদিন পরি                                     গৃহ-সুখ পরিহরি
শ্রীগোপাল ভট্ট ব্রজে আইলা॥
প্রভু আসি পুরুষোত্তমে                              যবে গেলা বৃন্দাবনে
তাহাঁ হইতে আসিবার কালে।
পথে রূপ সনাতনে                                 শিক্ষা দিয়া দুই জনে
তবে প্রভু গেলা নীলাচলে॥
রূপ আর সনাতন                                  যবে আইলা বৃন্দাবন
ভট্ট গোসাঞি মিলিলা সভায়।
প্রভু-প্রিয় লোকনাথ                                  মিলিলা সভার সাথ
সভে মেলি গৌর-গুণ গায়॥
নীলাচলে গৌরাঙ্গ                                     বিহরে ভকত সঙ্গ
শুনিলা শ্রীভট্ট ব্রজে গেলা।
মহাপ্রভু প্রেম ভরে                                  শ্রীগোপাল ভট্ট করে
ডোর বহির্বাস পাঠাইলা॥
সভা সহ সনাতন                                       ডোর বহির্বাস ধন
পাইয়া আনন্দ উথলিল।
কেহু নাচে কেহু গায়                                কেহু প্রেমে গড়ি যায়
চারি দিগে ক্রন্দন উঠিল॥
কথো ক্ষণে স্থির হৈয়া                                ডোর বহির্বাস লৈয়া
সমর্পিলা গোপাল ভট্টেরে।
ডোর-বহির্বাস ধন                                     পাইয়া আনন্দ মন
নিয়ম করিয়া সেবা করে॥
গৌরাঙ্গের গুণ গানে                                দিবানিশি নাহি জানে
শ্রীরূপ-সভায় সদা স্থিতি।
গোসাঞি শ্রীসনাতন                                   সঙ্গে সুখ অনুক্ষণ
কে বুঝিবে তাহার পিরিতি॥
গোসাঞির বৈরাগ্য যত                             তাহা বা কহিব কত
যার প্রেমাধীন জানাইতে।
শ্রীরাধারমণ-লীলা                                    আপনে প্রকট হৈলা
শালগ্রাম-শিলাতে হইতে॥
শ্রীরাধারমণ বিনে                                 অন্য কিছু নাহি জানে
শ্রীরাধারমণ প্রাণ যার।
সদা গৌর-গুণে মত্ত                                বাখানে ভকতি-তত্ত্ব
হেন কি বৈরাগ্য হয় আর॥
সদা বাস বৃন্দাবনে                                কভু কুণ্ড গোবর্দ্ধনে
কভু বরসান নন্দীশ্বরে।
কভু বা যাবটে গিয়া                                পূর্ব্ব-বাস নিরখিয়া
ভাসে মহা আনন্দ-সায়রে॥
শ্রীগোকুল মহাবনে                                কভু রহে সুনির্জ্জনে
কভু প্রিয় লোকনাথ পাশ।
এইরূপে ফিরে রঙ্গে                                স্নেহ ব্রজবাসী সঙ্গে
ভক্তি-দানে পরম উল্লাস॥
গুণ কি বর্ণিব আর                                কৃপা কর এই বার
শ্রীনিবাস আচার্য্যের প্রভু।
নরহরি অকিঞ্চন                                ও পদে সোঁপিল মন
এ অধমে না ছাড়িবা কভু॥

বিশেষ উল্লেখ -
এই পদটি কেবল খ পুথিতে দৃষ্ট হয়। এই সুদীর্ঘ ঐতিহাসিক পদটি অজ্ঞাত-পূর্ব্ব ; ইহা ‘গৌরপদ-তরঙ্গিণী’
গ্রন্থে উদ্ধৃত হয় নাই। এই পদটি পরিত্যক্ত হওয়ায় ক, খ, প্রভৃতি পুথিতে ২৫শ পল্লবের নির্দ্দিষ্ট পদ-সংখ্যা
অপূর্ণ রহিয়াছে।
---সতীশচন্দ্র রায়, শ্রীশ্রীপদকল্পতরু॥

.            *************************            

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
গৌর-প্রিয় গুণমণি কেবল প্রেমের খনি
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি চক্রবর্তী
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ২৫শ পল্লব,
শ্রীগৌরভক্তবৃন্দের চরিত্র-বর্ণন, পদসংখ্যা ২৩৭১। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া
সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি গীতচন্দ্রোদয়ের রচয়িতা কবি নরহরি চক্রবর্তীর রচনা।

॥ তথা রাগ॥ (বরাড়ী)

গৌর-প্রিয় গুণমণি                                কেবল প্রেমের খনি
লোকনাথ লোকের পরাণ।
যার শিশুকাল হৈতে                                প্রবল বৈরাগ্য চিতে
পরম উদার দয়াবান॥
প্রেম-রস-আস্বাদনে                                দিবানিশি নাহি জানে
অন্য কথা না করে শ্রবণ।
মহৈশ্বর্য্য ত্যাগ করি                                আইলা নবদ্বীপ পুরী
যথা প্রভু শ্রীশচীনন্দন॥
প্রভু-মুখ নিরখিয়া                                     ধরণীতে লোটাইয়া
বন্দিলেন চরণ-যুগল।
গৌরাঙ্গ আনন্দ-মনে                                হেরি লোকনাথ পানে
প্রেম-ভরে করে টলমল॥
আইস আইস লোকনাথ                            আজি মোর সিপ্রভাত
এত কহি শচীর কুমার।
ভুজ-যুগ পসারিয়া                                 আলিঙ্গন কৈল ধাইয়া
বুক বাহি পড়ে অশ্রু-ধার॥
লোকনাথ করে দৈন্য                                  শুনি প্রভু শ্রীচৈতন্য
নিষেধি নিকট বসাইলা।
প্রেমাবেশে বারে বার                                  পুছে প্রভু সমাচার
লোকনাথ সব নিবেদিলা॥
পুন প্রভু হর্ষ হৈয়া                                   প্রিয় লোকনাথে লৈয়া
নিভৃতে কহয়ে ধীরে ধীরে।
মন-দুখ পরিহরি                                   মোর দোষ ক্ষমা করি
যাইতে হইল ব্রজ-পুরে॥
সনাতন রূপ সাথ                                         ভট্ট-যুগ রঘুনাথ
আর যত মোর প্রিয়গণ।
ক্রমে ক্রমে সেই স্থানে                              মিলিবে তোমার সনে
পাইবে আনন্দ অনুক্ষণ॥
আর এক শুন তুমি                                  কথোদিন পরে আমি
করিব সন্ন্যাস অঙ্গীকার।
দেবের দুর্ল্লভ ধন                                    জীবে করি বিতরণ
নাশিব দারুণ কলি-ভার॥
ভক্তগণ লৈয়া সঙ্গে                                   বিহরিব নানা রঙ্গে
সঙ্কীর্ত্তন প্রচার করিয়া।
বৃন্দাবনে থাকি তুমি                                   সকল শুনিবে আমি
সমাচার দিব পাঠাইয়া॥
শুনি সন্ন্যাসের কথা                                    অন্তরে উঠিল বেথা
প্রভুর শ্রীকেশ পানে চায়।
কান্দিয়া কান্দিয়া বলে                                হায় প্রভু কি বলিলে
ইহা বলি ভূমে গড়ি যায়॥
অগভুত গৌর-গুণ                                    আপনি অধৈর্য্য পুন
প্রিয় লোকনাথ হাথে ধরি।
প্রবোধিয়া কত কত                                   রাধাকৃষ্ণ-প্রেমামৃত
পিয়াইল পূর্ণ কৃপা করি॥
লোকনাথ মনে গণি                                      প্রভুর বচন মানি
অতিশয় মনে দুখী হৈয়া।
প্রভুর পদ হৃদয়ে ধরি                                   চলিলেন ব্রজ-পুরী
সভাকার অনুমতি পায়্যা॥
দেখি লোকনাথ-গতি                                প্রভু সে ব্যাকুল অতি
লোকনাথ-পথ হেরি কান্দে।
প্রিয় গদাধর আদি                                   যত্ন করে নানা বিধি
তথাপিহ ধৈর্য্য নাহি বান্ধে॥
এথা পথে লোকনাথ                                  শিরে দিয়া দুটি হাথ
কান্দিয়া কহয়ে বার বার।
গৌরমুখ-চন্দ্র-হাসি                                  বরিষে অমিয়া-রাশি
বুঝি না দেখিতে পাব আর॥
সঙ্গে লৈয়া ভক্তগণ                                      বিহরিব অনুক্ষণ
সঙ্কীর্ত্তন সুখের হিলোরে।
মুঞি অতি অভাগিয়া                              দেখিতে না পাব ইহা
বিধাতা বঞ্চিত কৈল মোরে॥
এইরূপ আক্ষেপণে                                  দিবানিশি নাহি জানে
কথোদিনে গেলা বৃন্দাবনে।
যমুনা-পুলিন-বনে                                     কুণ্ড গিরি গোবর্দ্ধনে
দেখি প্রেম-ধারা দু-নয়ানে॥
পূর্ব্ব-বাস মনোহর                                      শ্রীযাবট নন্দীশ্বর
বৃষভানু-পুর অনুপাম।
আর যত স্থান-গণ                                     তাহে ভ্রমে অনুক্ষণ
তরু-মুলে বসতি নিয়ম॥
প্রেমের তরঙ্গ অতি                                নাহি কোন স্থানে স্থিতি
কথো দিন পরে বৃন্দাবনে।
শ্রীসুবুদ্ধি মিশ্র রূপ                                    সনাতন ভক্তি-ভূপ
মিলিলেন এ সভার সনে॥
নানা ভাব পরকাশে                                সদা সেবানন্দে ভাসে
শ্রীরাধাবিনোদ প্রাণ যার।
গৌর-গুণ সঙ্কীর্ত্তনে                                    উদ্ধারে অধম জনে
ত্রিজগতে মহিমা অপার॥
কহে নরহরি হীন                                   মো বড় বিষয়ী দীন
হেন জন্ম বিফলে গোঙাইলুঁ।
নরোত্তম-প্রাণনাথ                                 মোরে কর আত্মসাথ
তুয়া পদে শরণ লইলুঁ॥

বিশেষ উল্লেখ -
এই অজ্ঞাত-পূর্ব্ব সুদীর্ঘ ঐতিহাসিক পদটি কেবল ঘ পুথিতে দৃষ্ট হয়।
---সতীশচন্দ্র রায়, শ্রীশ্রীপদকল্পতরু॥

.            *************************            

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*