কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের কবিতা |
মমতা মোর পথের কীটও পায় যেন হায় পায় যেন গো, বনবিহগের কণ্ঠে হউক অমর আমার ভাষা ! ভক্তি-বিহীন সম্বল-হীন দুঃখী অকপট, শক্তি নাহি গড়তে দেউল, সান্ত্বনারি মঠ | দরদী এই দীনের হিয়া নিঝরে যাক প্রণয় দিয়া হয়তো কোন তৃষিতেরি মিটতে পারে তৃষা | জনিলে এ মানব জনম আবার পাব কি না, নিরুদ্দেশের যাত্রী রাখি প্রণয়রাখির চিনা | অনুভূতির ছিন্ন সূত্র যাই রেখে যাই যত্রতত্র, পারবে না যা করতে পরশ কালের কর্মনাশা | হয়তো কারো হরবে ক্ষুধা আমার তরুর ফল, স্নিগ্ধ কারো করবে দেহ অশ্রুদীঘির জল | ঝরা ফুলের গন্ধে ও রে হয়তো কেহ স্মরবে মোরে ভাবুক পথিক বলবে হেসে---লোকটা ছিল খাসা | . ************************* . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
ভুলি কোশল-পৌরভবন, ভুলতে নারি অশোক-কানন, সরমার সে সখীত্বটি বন্দিনী মা সীতার সাথে | ভুলি দ্বারাবতীর ঘটা, কংসবধের গৌরবও | ভুলায় কুরুক্ষেত্র গোটা বিদুর-ক্ষুদের সৌরভও | বাঁশরী আর শিখীর পাখা সুদর্শনকে দেয় যে ঢাকা, সুদামার প্রেম-সখ্যে যে ম্লান পাণ্ডব এবং কৌরবও | ভুলতে নারি সারনাথ আর নালন্দা-মঠ-ধ্বংসটিকে, মনে পড়ে বুদ্ধদেবের বুকে কাতর হংসটিকে | হাজার হাজার মূর্তি তাহার উহার কাছে মানছে যে হার, পূর্ণতা দেয় বিরাট করে ক্ষুদ্র তাহার অংশটিকে | মহামায়ায় যতই মানাক সিংহ এবং সিংহাসনে, রামপ্রসাদের বেড়ার ধারে দেখেই যে হয় হিংসা মনে | বাদ্য ঘন্টা লক্ষ বলি মিলনসাগর ডট কম অলক্ষে সব যায় যে চলি--- বক্ষে জাগে দৃষ্টি মায়ের মিষ্ট হাসি চন্দ্রাননে | আদর করি শিখীর চেয়ে চূড়ার শোভা শিখীর পাখা, বিশাল রসের বনের চেয়ে ঘটের ছোটো আমের শাখা | খনি রেখে মণিই তুলি, মধু পেয়ে ভ্রমর ভুলি | মা মেনকার অশ্রুকণায় বিশাল গিরীশ পড়ল ঢাকা | . ************************* . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
আমার বাড়ি কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক আমরা কৃতজ্ঞ শ্রীমতী ইলোরা রায়ের কাছে যিনি আমাদের এই কবিতাটি পাঠিয়েছেন। প্রাপ্তি - ৩১.০৭.২০১৭। কবিতাটি আমাদের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছিলেন শ্রী সমীর বিশ্বাস। তাঁর ইমেল - biswas.baruipur@gmail.com বাড়ি আমার ভাঙন ধরা অজয় নদীর বাঁকে, জল সেখানে সোহাগ-ভরে স্থলকে ঘিরে রাখে। সামনে ধূসর বেলা, জলচরের মেলা, সুদূর গ্রামের ঘর দেখা যায় তরুলতার ফাঁকে। ঠিক দুপুর্ বাতাস লেগে নাচে জলের ঢেউ আমি দেখি আপন মনে আর দেখে না কেউ। জেলেরা দেয় বাচ, লাফায় বোয়াল মাছ, নীরব আকাশ মুখর করে শঙ্খচিলে ডাকে। ভাঙা বাড়ির ভাঙা ঘটে আছড়ে পড়ে জল মেঠো ফুলের মিঠা বাসে মন করে চঞ্চল। যত দূরেই চাই, শোভার সীমা নাই--- পল্লীবধু কলসি করে জল লয়ে যায় কাঁখে। মাধবী আর মালতীতে ঘেরা উঠান মোর, আমের গাছে কোকিল ডাকে সারাটি দিনভর--- দোয়েল-পাপিয়ায়, গানে কানন ছায়--- চক্র রচে মৌমাছিরা নিত্য ঝাঁকে ঝাঁকে। . ************************* . সূচীতে . . . মিলনসাগর |