দেখেছি তো ছোটবেলা থেকেই বাবাকে ; . চোখের নিচের কালি র প্রতিটি রেখায় লেখা আছে- . কত কবিতা , কত গল্প , কত অসম্পূর্ণ নিবন্ধ - অপ্রকাশিত যা ! কিছু ছোটো খাটো নিজের আবদার আছে তাতে, . আর বাকিগুলো ! বুঝে নিয়েছি , সময় আর বয়সের সাথে জমতে থাকা আশাহত বেদনা . আর কর্তব্যের শিকলের আঁচড় ! . জীবনের কত বিবর্ণতা , আর সবুজের আঁচড় ।
আমার জন্ম সেই ছোট্ট কুড়ীর মধ্য দিয়ে , . যখন সারা উদ্ভিদ শরীরে উঠে শিহরন . নতুন জীবন নিয়ে । তখনও পাপড়ি মিলিনি আমি . বাইরেটা ছিল অজানা, . কল্পনার জগত বানিয়েছিলাম মনের ভিতরে . একাকী, অবচেতনে।
তারপর ধীরে ধীরে মিষ্টি স্বপ্নগুলি . ত্যাগ দিল আমারে , . সত্যটা কাছে আসলো ; সব অংক ভুল হলো , . বুঝলাম শুরু করতে হবে নতুন নিয়মে ।
এবার চিনতে থাকলাম বাইরেটাকে , . কত গাছ-ফুল-পাখি-অসীম নীলাকাশ: . আর তাতে বাতাসের নির্ভীক শাসন , . কখনোবা ঈশ্বর জলের ফোঁটা হয়ে সিক্ত করছে রুক্ষতা , . কখনোবা আসে তাঁর তান্ডব- রূদ্রমুর্তি। . এতো কল্পনাতীত ! বাস্তব জগৎ এত সুন্দর বুঝলাম যখন . শুরু হল একটা একটা করে পাপড়ি উন্মোচন, . বাঁধা ছিল যা মিথ্যার জালে ।
অনেক মৃত্যুবাঁধন - স্মৃতির গলি পেরিয়ে , . আজ হয়তো রাজপথে এসেছি। তবু মনে হয় , . অলিগলিতে-দেওয়ালে কষা অংকগুলো মিলেনি আজও ! . অভিজ্ঞতার বয়স যেন সবে কয়েক মাস ! বারবার মনে হয় এইতো হয়েছে শুরু, . বাস্তবকে চিনতে চিনতে যখন . বাস্তবের ভারে খষে পড়বে একটার পর একটা বাদামি বেরং পাপড়ি . মায়া ছেড়ে, তখন হয়তো বলতে পারব আমি ফুল হয়েছিলাম।
দুজনে মেখেছিলাম পড়ন্ত রোদের শান্ত রঙিন ছোঁয়া ওই অন্ধকার গলিতে কত গল্প জমে আছে এখনোও ; আমাদের স্মৃতি-রোমান্টিকতা ঐসব গলির অন্দরে-অন্দরে , স্বাচ্ছন্দ্যে আবিষ্কার করেছি দুজন দুজনকে।
নীরা, মনে আছে, একসঙ্গে মেখেছিলাম শিউলি ফুলের গন্ধ; দুজনে এনেছিলাম শরতের আবহ। লাভ করেনি হয়তো অমরত্ব , এই সম্পর্ক ভবিষ্যতের চুম্বন দেখিয়েছে অন্যপথের অংক।
তবে আজ ; আমি একা কল্পনার বন্যায় পায়ের নিচে মাটি সরেছে , মনটা কিন্তু রয়ে গেছে একই গভীরতায়। . অনুতপ্ত দুজনেই ।