কবি জহর রায় -   জন্মগ্রহণ  করেন  অবিভক্ত  বাংলার
বরিশালে।  সেই  অর্থে  তিনি  কবি ছিলেন না। তিনি ছিলেন
বাংলার চিত্র ও নাট্যজগতের অকজন খ্যাতনামা অভিনেতা।
তাঁর একটি মাত্র কবিতা / ছড়া আমরা পেয়ে তাঁর এই পাতাটি
তৈরী  করেছি  যাতে  মিলনসাগরের  কবিদের  সভায় তাঁকে
আসন  দিয়ে আমরা ধন্য হতে পারি। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে
আরও  কবিতা  লিখেছিলেন  কি না তা আমাদের জানা নেই।

এখানে আমরা তাঁর রচিত একটি ছড়াকে কেন্দ্র করে এই পাতাটি তৈরী করেছি, তাঁর অভিনয়, থিয়েটার ও
সিনেমা জগতের কিছু কিছু বিষয়ও ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিনেতা জহর রায়ের ব্যক্তিগত জীবন ও
অভিনয় সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য-সমৃদ্ধ সুন্দর লেখার লিঙ্ক দিয়ে দেওয়া হয়েছে পাঠকের সুবিধের জন্য এই
পাতার নীচে।
বছর হলো জহর রায়ের জন্ম শতবর্ষ পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
আমরা  
মিলনসাগরে  কবি জহর রায়ের কবিতার পাতা তুলে তাঁকে মিলনসাগরের কবিদের সভায় আসন  
দিতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি। এই পাতা অভিনেতা কবি জহর রায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য।  
তাঁর ছড়া আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে এই প্রচেষ্টার সার্থকতা।



উত্স -   



কবি জহর রায়ের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন


আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ২২.১২.২০২০                                                            ^^ উপরে ফেরত   
...
*
কবি জহর রায়ের শিক্ষা ও দাম্পত্য জীবন -                                      পাতার উপরে . . .    
কবির পিতা সতু রায়ও (১৮৯৫- ৪.১১.১৯৭৭) একজন অভিনেতা হিসাবে রঙ্গমঞ্চ ও চিত্রজগতের সঙ্গে যুক্ত
ছিলেন। কবি জহর রায় ১৯৩৮ সালে নারকেলডাঙ্গা জর্জ হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এর  পরে  
তিনি পাটনা থেকে আই.এ. পাশ করেন। তিনি কমলা দেবীর সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁদের দুই
মেয়ে ও এক ছেলে।
কবি জহর রায়ের শিক্ষা ও দাম্পত্য জীবন    
কবি জহর রায়ের কর্মজীবন    
কবি জহর রায়ের অভিনীত চলচিত্র    
জহর রায় ও ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়    
জহর রায়ের শেষ যাত্রা    
জহর রায়ের কবিতা    
*
কবি জহর রায়ের কর্মজীবন -                                                         পাতার উপরে . . .    
আই.এ. পাশ করার পরে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রুফ-রিডিং-এর কাজে যোগদান করেন। পরে ইস্ট ইন্ডিয়া  
ফার্মাসিউটিক্যালসে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং সেখানে একটি দর্জির দোকানও তিনি খুলেছিলেন।  
এসব কাজের ফাঁকে ফাঁকে অভিনয় চর্চা চালিয়ে যান। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতায় এসে অর্ধেন্দু মুখার্জির
পরিচালিত পূর্বরাগ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। তাঁর প্রথম বড় ভূমিকা ছিল বিমল রায়ের “অঞ্জনগড়”
ছবিতে। ১৯৫৩ সালে রংমহল নাট্যমঞ্চে নিয়মিত শিল্পী হিসাবে যোগদান করেন। পরে সাবিত্রী দেবী ও তাঁর
পরিচালিত শিল্পীগোষ্ঠীর পক্ষে ওই মঞ্চ ভাড়া নিয়ে তিনি নাটক-নির্দেশনা শুরু করেন। তিনি এককভাবে এবং
অজিত চ্যাটার্জির সঙ্গে মিলে অনেক কৌতুক রেকর্ড করেছেন।
*
কবি জহর রায়ের অভিনীত চলচিত্র -                                               পাতার উপরে . . .    
জহর রায়ের অভিনীত ছবির সংখ্যা আনুমানিক প্রায় পৌনে তিনশো। জহর রায় অভিনীত উলেখ্যযোগ্য
চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে “পূর্বারাগ” (১৯৪৭), “অঞ্জনগড়” (১৯৪৮), “সাড়ে চুয়াত্তর” (১৯৫৩), “উপহার” (১৯৫৫),
“দস্যু মোহন” (১৯৫৫), “দক্ষিণের চর” (১৯৫৫), উল্কা (১৯৫৭), পরশপাথর (১৯৫৮), রাদলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত(১৯৫৮),
বাড়ী থেকে পালিয়ে (১৯৫৮), অতল জলের আহ্বান (১৯৬২), পলাতক (১৯৬৩), সুবর্ণরেখা (১৯৬৫),  অভয়া
ও শ্রীকান্ত (১৯৬৫), কাল তুমি আলেয়া (১৯৬৬), নায়িকা সংবাদ (১৯৬৭), গুপি গাইন বাঘা বাইন (১৯৬৯),
নিশিপদ্ম (১৯৭০), ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট (১৯৭১), ধন্যি মেয়ে (১৯৭১), ছদ্মবেশী  (১৯৭১), মর্জিনা
আবদাল্লা (১৯৭২), যুক্তি তক্ক আর গপ্প (১৯৭৪), জমালয়ে জীবন্ত মানুষ (১৯৭৪), ছুটির ঘন্টা (১৯৭৫), বসু
পরিবার (১৯৫২), বাঘিনী (১৯৬৮), চৌরঙ্গী (১৯৬৮) প্রভৃতি।
*
জহর রায় ও ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় -                                                   পাতার উপরে . . .    
জহর রায়ের কথা উঠলেই যাঁর নাম উঠে আসে তিনি অবশ্যই ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়।  ওঁদের নিজেদের নামেই
সিনেমা হয়েছে একাধিক। এই কৃতিত্ব এমন কি চার্লি চ্যাপলিনেও হয় নি, যেমন “ভানু  পেলো লটারী”, “এ
জহর সে জহর নয়” আর “ভানু গোয়েন্দা জহর এ্যাসিষ্ট্যান্ট”! দুজনে প্রায় একই সময়ে সিনেমায়  অভিনয়  
শুরু করেন। শুধু সিনেমাতেই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও দুজনের খুব বন্ধুত্ব ছিল। জহর রায়ের জীবন নিয়ে ৩
ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সোমেশ ভট্টাচার্যের একটি অবশ্য-পাঠ্য লেখা  
“অ্যাই সত্যজিতের আলজিভ দেখবি?” পড়তে
এখানে ক্লিক করুন . . .
*
জহর রায়ের শেষ যাত্রা -                                                               পাতার উপরে . . .    
জহর রায়ের শেষ জীবন খুব কষ্টে কেটেছিল। তিনি শেষ দিকে আর কাজ পেতেন না। অসুস্থ অবস্থায়  
ঋত্বিক ঘটকের “যুক্তি তক্কো আর গপ্প”-তে (১৯৭৪) তিনি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর  
পরে বন্ধুবর ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, অন্যদেশ হলে ওঁর মতো
অভিনেতার শেষ যাত্রার সময় মাত্র তিনটে লোক দাঁড়িয়ে থাকত না।
*
জহর রায়ের কবিতা -                                                                  পাতার উপরে . . .    
সেই অর্থে জহর রায় কবি ছিলেন না। কিন্তু তিনি একটি ছড়া মুখে মুখে বেঁধেছিলেন উত্তর কলকাতার,  
রংমহল থিয়েটারের উলটো দিকে, বনেদী তেলেভাজার লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ-এর দোকানে বসে। রঙমহল  
থিয়েটারটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে কিন্তু এই কবিতাটি এখনও লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ-এর দোকানে সাড়ম্বরে টাঙানো  
রয়েছে।  

আমরা কৃতজ্ঞ উত্তর কলকাতার গোয়াবাগান স্ট্রীটের নন্দী সুইটস-এর মালিক শ্রী প্রদীপ নন্দীর কাছে, যিনি
আমাদের এই ছড়াটি পাঠিয়েছেন। তাঁর যোগাযোগের চলভাষ : +৯১৯৮৩০৩০৭৭৬০


১৩.২.২০১৫ তারিখের আনন্দবাজার পত্রিকায় ঋজু বসুর “
দশতলা বাড়ি কই! ধুঁকছে তেলেভাজা শিল্প”  
লেখাটি শুরু করেছেন জহর রায়ের উল্লেখ দিয়েই। তেলেভাজা শিল্প নিয়ে লেখা এই প্রবন্ধটিতে জহর রায়ের
লেখা বিখ্যাত সেই ছড়াটিরও আংশিক উল্লেখ তিনি করেছেন। তিনি লেখাটি শুরু করেছেন এইভাবে . . .

জহর রায়ের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তেলেভাজাকে এত বড় শংসাপত্র আর কেউ দেননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেলেভাজাকে শিল্পের
তকমা দেওয়ার পরে গদ্গদ ভাবেই বলছেন উত্তর কলকাতার তেলেভাজা হেভিওয়েট লক্ষ্মীনারায়ণ সাউয়ের
সুপুত্র কেষ্ট গুপ্ত (সাউ)।

সে সময় দোকানের উল্টো ফুটেই রংমহল থিয়েটারের রমরমা। নিত্য তেলেভাজার ডায়েটে অভ্যস্ত সুরসিক
জহর রায় মুখে-মুখে ছড়া বেঁধেছিলেন, ‘
চপ খাব আস্ত, তৈরি করব স্বাস্থ্য/ বেগুনি খাব গোটা,
আমরা হব মোটা/ পেঁয়াজি খাব শেষে, খাব ভালবেসে..
.’। সে-কবিতা এখনও টাঙানো রয়েছে সেই
দোকানে। মুখ্যমন্ত্রীর (শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বক্তৃতায় তেলেভাজার গৌরবগাথা শোনার পর টিভিতে,
কাগজে আলোচনা হয়েছে। রসিক খাইয়েদের কারও কারও টিপ্পনী, তেলেভাজা-শিল্পের প্রসারে এ বার এই
কবিতাকেও স্কুলের সিলেবাসে ঠাঁই দেওয়া হোক
। . . . ”