অবক্ষয় মেরুদণ্ডের হাত ধরেছে আমার মধ্যে বোধ বোধের মধ্যে বোধের অবক্ষয় আমি নিজেই। বোধের মধ্য থেকে একটা ক্রোধের সিঁড়ি বেয়ে গেছে যেখানে পাপ পূন্য হাত ধরে কলম, কুঠা, কাস্তে, আমি সারাক্ষন শুধু বোধ খুঁজেমরি বোধের অবক্ষয় হতে বোধ বুঝতে।
চোখের সামনে ভেসে আসে সেই সব দিন গুলো তিন ভাই আর আমি এক বোন। সকাল হলে-ই বাবা ডাক দিত, উঠে পড় সবাই আজ খেলার মাঠে যাবো। খালি পায়ে আমরা দৌড়াতাম কচি ঘাসের উপর থাকতে থাকতে বলে উঠত বাবা ....
ছুটে যাবো আরো দূর পথ যদি হয় ব্যাথাতুর তবু ও থাম বোনা মিটেয় যাবো জন্মের দেনা।
বাবা কবিতা বোলতে পারতো ভালো আমরা এই কবিতার লাইন শুনে হাসতাম জীবনের কি আর দেনা হয় নাকি।
তখোন বুঝে উঠতে পারিনি কবিতার লাইন গুলো। একদিন এক এস্কিডেন্টে মারা গেল মা, বাবা দুজনেই, তার পরে শুরু হল অকাল বনবাস। সবাই যেন বোবা হয়ে গিয়েছিলাম। কেউ সেই সত্যিটা মেনে নিতে পারেনি। ক্ষুধার জ্বালায় হন্যে হয়ে ঘুরতে থাকি এবাড়ী ওবাড়ী, সবাই অলাদা হয়ে গেছি কেউ আর কারোর খোঁজ রাখেনি। একদিন হটাত ট্রেনে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা গাল ভরা দাড়ী হাতে নখ বড় বড় আমি বলি ভাই ভাই...
লাল লাল চোখ করে আমার দিকে তাকালো। তার পর বলে উঠল আমার রুটির খবর তুমি বলতে পারবে? আমার রুটি না কে চুরি করে নিয়েছে। (উচ্চ স্বরে বলে উঠল) সরে যাও দেখি তোমার পায়ের নিচে লুকিয়েছো কিনা?
আমি বুঝলাম পাগল হয়ে গেছে। আমি এখন লোকের বাড়ী কাজ করে দিন কেটে যায়। এখন বুঝতে পারি সেই লাইন গুলো...
মেয়েটি ফুলের গায়ে হাত বোলাতো , জানো মেয়েটি না জেনেই সিন্দুর মেখে নিত গায়ে মেয়েটা জানালার পাশে বসে হাত বাড়াতো জানালার বাইরে।
না এ সেই মেয়েটি নয় যৌন্য নির্গৃত হতো পথের বারান্দায় এ সে নয় স্বামি পোড়ানো বিধবা না এ সে নয় লাঞ্ছিত কোনো ঘরোয়া বধূ না সে নয় জলের কলসি নিয়ে ডোবা প্রতিছবি।
জানো এ সেই মেয়েটা চোখে দেখতে পায় না মুখে বোলতে ও পারে না মেয়েটি জামাই বাবুর গায়ে হাত বুলিয়ে মনে করে এমনি পুরুষ মানুষ হয় সে কানে শোনে শেষের কবিতার অডিও মাটির কলসিতে হাত বুলিয়ে মনে করে এখান থেকেই জল উপচে পড়ে। পাড়ার বিয়ে বাড়ীর সানাইয়ের শব্দ তার কানে বাজে না এ মেয়েটা সে নয় কোনো দুপুরে হঠাৎ সাহসী হয়ে পড়ে । এ সে নয় যে স্বামীর আহ্লাদ আটখানা হয়ে রেঁধে ফেলে চিকেন আলুর দোলমা এ সে নয় সারাদিন বাসর সাজাতে রাতের অপেক্ষায় জানো মেয়েটা চোখে দেখতে পায় না মুখে বলতে ও পারেনা।
আমি তোমার শ্রুতি লেখা, মেয়েটি হারমোনি বাজাতে পারে “তোমার বিরহে রহিব বিলিন তোমাতে করিব বাস দীর্ঘ রজনী দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ বরষ বাস’’ গানের সুরে সুরে। মেয়েটি গাইতে পারে না মেয়েটি বোলতে পারে না এ মেয়েটি সেই একবার ও মা ডাকতে পারলোনা। একবার ও মা হতে পারবেনা। এ মেয়েটি সেই নেই দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা বাসস্টপে নেই ফোনের ব্যাস্ততা নেই ঠোটে রং হাতে শাখা আর কপালে লাল টিপ এ মেয়েটি সেই চোখে দেখেতে ও পায় না মুখে বলতে ও পারে না।
কটা টাকা হবে অন্ধকারে যে বাড়ীটার পোড়া ইট গুলো খুলে পড়ছে দেখে আসতাম . টাকা দিয়ে কেনা অলো নিয়ে। বাড়ীটাতে আর টাকার হুঙ্কার নেই নেই তরবালি চিৎকার নেই সূর্যোদয় দরজা নেই জানালা নেই তবু আলো প্রবেশ করে না। শুধু দুঃস্বপ্ন খেলা করে মাঝ রাতে, খেলা করে জোনাকি অলোর হাহাকার। যে বাড়ীটাতে সারাক্ষন আলো জ্বলতো গরীবের ধন কেড়ে নিয়ে সে বাড়ীটার আর আলো জ্বালানোর সময় নেই। লাল কারপেট গুলো রক্তের গন্ধ ছড়ায় সারাক্ষন শোনা যায় শুধু মৃত্যুর প্রতিধ্বনি, এমন ভাবেই কি পোড়াবাড়ী পার করে ফেলে বন্ধুকের সীমানা রাত গুনতে গুনতে।
চায়ের কেবিন পড়ে আছে শুধু একা তোমায় ফেলে যাওয়া পুরনো বাস স্ট্যান্ড তোমার গল্প বলার রুচি তোমায় প্রথম দেওয়া ডায়রিটা নিয়ে প্রতি পাতাতেই খুঁজি।
তোমায় ফেলে যাওয়া শান্ত বিকাল গড়ে শুধু রূপকথা ওরা পুরো আকাশ বাদ দিয়ে দেয় তোমার জন্য ফাঁকা । আমার লিখে রাখা শেষের কবিতা খোঁজে তোমায় রাত্রি দিন আমার ছিড়ে ফেলা শেষের চিঠি বাক্য শুধু মলীন। আমি জেনে নিয়েছি তুমি চলে যাবে তার পর ও ফোনের কাছে সারাক্ষন রিং বেজে উঠল তোমার ফোন ছিলনা আমার সব আজ বদলে গেছে বদলে গেছে সব তুমি চলে গেছো তাই আমি ও গেছি বদলে।