.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে - দুষ্টকবি
ক্ষমা প্রার্থনা -
সুনন্দ সান্যাল -
শঙ্খ ঘোষ কবি -
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় -  
কহেন কবি অভিষেক বন্দ্য -
ডক্টর মিশ্র সূর্যকান্ত -
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য -
সাংসদ শ্রী কুণাল ঘোষ -
মাননীয় মণীশ গুপ্ত -
মহান রতন টাটা -
জনাব আহমেদ হাসান ইমরান -
শিল্পী শ্রী শুভাপ্রসন্ন -
মাহাতো ছত্রধর -
কবীর সুমনের কথা -

শ্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় -
দেবাশিস রায় সুরকার -
তারকা তাপস পাল -
চেয়ারম্যান বিমান বসু -
দম আছে তাই দময়ন্তী -
পুলিশের দফা সারা -
সাত্তোর গেরামের বধূ -
জনগণ ভালবাসিয়া ডাকিতো হার্মাদ -
টিপু মসজিদের ইমাম -
কবি জয় গোস্বামীর ভাগে -
সমীর আইচের ক্যানভাসে -
অনুব্রত হৃষ্টচিত্তে -
ব্রাত্যবসু নাট্যকার -
নরেন্দ্র দামোদর মোদি -
<<<এই পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে দেয়ালিকার
<<<শুরুতে ফিরতে
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সুনন্দ সান্যাল                       নেই ঢাল তরোয়াল
সৌম্য দরশন মানি।
নির্বাচনে কারচুপি                      ভোটাররে পড়ালে টুপি
নজরদারী করিতেন জানি।
“যাকে ইচ্ছা তাকে দিন                নিজের ভোট নিজে দিন”
এই ছিল তাঁর মূল মন্ত্রে।
নির্বাচনের কালে                       কাড়িতেন হাওয়া পালে
শাসকের রিগিং-এর যন্ত্রে।
“পরিবর্তন” ব’লে                              “দিদি”র সঙ্গে মিলে
হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করিলেন।
জীবন সায়াহ্নে এসে                             নির্বাচনের রেসে
যুবকের বাড়া দৌড়-ঝাঁপিলেন।
নিজের জন্য নয়,                           শুধু “দিদি” জিতে যায়,
এই তাঁর শপথ কঠিন।
সততার প্রতীক তিনি                       খেলেন নাই ছিনিমিনি
মানুষের ভরসায় কোনোদিন।
পরিবর্তনের পরে                               শিক্ষামন্ত্রকের তরে
কমিশনে হইলেন প্রধান।
বাকি কমিশনের বৃন্দে                         নাচিয়া দিদির ছন্দে
পরীক্ষা তুলে দেওয়ার দেয় বিধান।
মতের অমিল হওয়ায়                       ছাড়ি দেন এক কথায়
দিদির কমিশনের কোট।
তাহার মতো মানুষ দেখেই             বাংলার শিক্ষিত লোকে
দিয়াছিলেন দিদির দলে ভোট।
এমন মানুষ থাকতে                          কিসের প্রমাণ রাখতে
মুখ্যমন্ত্রী ত্যাগেন ইঁহাদের।
দুষ্টকবি ভাবিয়া মরে                           কী অঙ্ক দিদি করে
মন্দ রেখে বাদ ভালোদের।
.                      **************************   কলকাতা ০৫/২০১১
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
শঙ্খ ঘোষ কবি                          তিনি এই যুগের “রবি”
সবাই জানায় তাঁহারে প্রণতি।
নন্দীগ্রামের বধে                                            ইস্তফা দেন পদে
ছিলেন, অ্যাকাদেমির সহ-সভাপতি॥

তাঁহার ইস্তফারই পরে                     লাগলো ভাঙ্গন তাসের ঘরে
বিমান বাবু আসেন গৃহে ছুটি |
নিভৃতে কি কথা হয়                        আমাদের তা জানিবার নয়
কবি রহেন অটল, নাহি টুটি||

পরিবর্তন হইলে পরে                           আসল ছবি চোখে পড়ে
যে --- পরিবর্তন কেবল ধ্বজার রঙ্গে।
অনাচার ছাইলো দেশে                        নারীর মান ধূলায় মেশে
কবি হাঁটেন আক্রান্তের সঙ্গে॥

কামদুনি-পার্কস্টীট কাণ্ডে                   নারী যখন অসহায় কান্দে
কবি দেন প্রতিবাদের ভাষা।
দুষ্টকবি শ্রদ্ধায় ভণে                             শ্রেষ্ঠ তিনি গুণে মানে
তাঁর কাছেই খুঁজিয়া পায় মানুষ, আশা॥

.                      **************************   কলকাতা, ১০.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়     শুরু করিলেন নব অধ্যায়
পরিবর্তনের ঠিক পরে।
প্রথম ক’দিনের কার্যকরণ                   দেখিয়া ভাবে বঙ্গজগণ
আসিলেন বুঝি ত্রাতা তাদের ঘরে॥
বদলা নয় বদল চাই                      এই ছিল তাঁর স্লোগানটাই
জুড়াইত শুনিয়া সবার বুক।
কিছু দিন গেলে পরেই                        বদলটা চোখে প’ড়েই
গেল গিয়া সবার মনের সুখ॥
বদল হইল বটে                          কিন্তু বঙ্গের ভাগ্যে জোটে
নতুন বোতলে সেই বাসি মদ!
বামফ্রন্টের হার্মাদগণ!                       বদলাইয়া জামার রং!
হইল দিদির দলের সভাসদ॥
উচিত বাক্য কহিত যারা                       চক্ষুশূল হইল তারা
অর্ধচন্দ্রে বিদায় তাদের করিলেন।
রহিল চারিপাশে যারা                         চাটুকার, ব্যক্তিত্বহারা,
হাড়গিলেদের সৈন্য তিনি গড়িলেন॥
নানা চিটফাণ্ডের নামে                         যাহারা লুটিত জনে
তাহারাই হইল প্রিয় তাঁর।
কেহ যোগায় টাকা                           কেনে কেহ ছবি-আঁকা
কোটি কোটি টাকা ছারখার॥
মা-মাটি-মানুষের নামে                        লুঠের বেসাতি নামে
নেতা মন্ত্রি সবের চোখে লোভ।
মোদীর চুক্তির ফলে                          কুণাল-মদন বলি দিলে
পুলিশ তথ্য-প্রমাণ করে লোপ॥
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের ঠেলায়                          নারীর মান লুটায় ধূলায়
নিজেই তিনি এক শ্রীমতী।
যখনই ঘটনা ঘটে                           বলেন ইহা চক্রান্ত বটে
বিরোধী দলের মতিগতি॥
এমত করি নারীর গল্প                      রচিলেন "কন্যাশ্রী প্রকল্প"
ধন্য ধন্য করে দেশময়।
কন্যাদের বিকাশের লাগিয়া                 দানছত্র দিলেন খুলিয়া
সাইকেল সহ কন্যাশ্রী-বলয়॥
রাজ্যের উন্নতি-কল্পেও               কেবল দেখেন "কন্যাশ্রী প্রকল্প"
লগ্নিকারীর বৈঠকেও তাদের লন!
ডুবন্ত রাজ্যের আঁধারে               “খড়কুটো” কন্যাশ্রীকেই ধরে!
দিদির, কন্যাশ্রীই হইলো আভরণ॥
চেলা চামুণ্ডা তারি                                   প্রকাশ্যে হুংকারি
কহে ঢালাও “রেপ” করে দেবো।
কেহ কহে “বোমা মারো”                   কেহ “গলা টিপে মারো”
কেহ কহে “হাত কেটে নেবো”॥
মূখ্যমন্ত্রী হইবার পরে                     পাড়ার মাস্তান যত ঘোরে
পোয়াবারো হইলো এক্কেবারে।
আইন ভাঙ্গিয়া শব্দ দূষণ               পুলিশ করিলে থানায় চালন
মূখ্যমন্ত্রি থানায় গিয়ে ছাড়ে।
তেলেভাজা তাঁহার শিল্প!              নিন্দুকে বলে বোমাও শিল্প!
কুটীরশিল্পের আকার দরশে।
রাজ্যে “দখল”-এর যুদ্ধে                   বন্দুক, গুলি, পেটোসুদ্ধে
বোমার চাহিদা আকাশ পরশে॥
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য           সারিয়া বামফ্রন্টের কার্য
এখন নাকি সন্ন্যাসের চিন্তা করেন।
ঝানু কমিউনিস্ট কিনা                    সন্ন্যাস তো নেওয়া মানা
মিটিং টিটিংএ এখনো বুলি ঝাড়েন॥

হয় বয়সের ভার                              নয় নির্বাচনের হার
হতাশ-দাড়ি রাখিয়া লাগিত বেশ।
মাঝে, সারদার খেলা                     যখন দিদিরে দিল ঠেলা
দেখি, দাড়ি কামাইয়া হইলেন তিনি ফ্রেশ॥

বাঙালী ক্ষেপিয়া তারে                      সেই যে বাতিল করে
বহুদিন ছিল তারা রাগিয়া।
সে রাগ গিয়াছে চলে                 বুদ্ধকেই লোকে “উত্তম” বলে
এখন দিদির কার্যকলাপ দেখিয়া॥

তাহার স্কন্ধে পড়িছে ছায়া                  সূর্যকান্ত মিশ্রের মায়া
তবু তাঁর সুখের আছে কারণ।
দুষ্ট কবি কহে প্রমাণে                      আগামীতে বাঙ্গালীর মনে
সবার চেয়ে বেদরদী শাসক তিনি নন॥

.                      ************************** কলকাতা, ৪.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
জনাব আহমেদ হাসান ইমরান  দিদির অতি প্রিয় ভাইজান
দিদি তাঁরে করিলেনই সাংসদ।
ভোটের জ্ঞান দিদির প্রখর                            ভোটই তাঁর কষ্টিপাথর
তাঁরে মাথায় তুইল্যা তাই গদগদ॥
তিনি চরিত্র ঐতিহাসিক                               তাঁর সুকর্ম করা বাতিক
যেমন, নিষিদ্ধ সিমির সভাপতি ও জনক।
সংবাদপত্রের মাথা                                      “কলম” পত্রিকার পিতা
দীর্ঘকাল ছিলেনও সম্পাদক॥
তাঁর নামে খবরে আরও                                সন্ দুইহাজার তেরো
ক্যানিং দাঙ্গার তিনিই নাকি নায়ক।
দুইহাজার সাত সালে                            সেই তসলিমা-খেদার কালে
পার্কসার্কাস-হাঙ্গামারও তিনি গায়ক॥
যাঁর এমন বায়োডাটা                                  আর এমন বুকের পাটা
দিদি তাঁরে ফ্যালেন কেমন করে।
সোনার বাংলা জুড়ে                                 হাঁকিবে দাঙ্গাবাজরা ঘুরে
এদের ভারেই দিদির শাসন বাড়ে॥
খবর বাংলাদেশের                                 শেখ হাসিনার প্রাণনাশের
চক্রান্তে লিপ্ত ছিলেন যাহারা।
সারদার টাকা নিয়ে                                  পাঠান বস্তায় ভরে দিয়ে
অভিযোগ ইমরানের নামে করা॥
সুদীপ্ত সেনের কাছে                                     “কলম” দিলেন বেচে
গরীবের টাকা লুঠের অংশীদার।
এতকিছুর পরেও কি ক’রে                        তিনি এখনো দিদির ঘরে!
দুষ্টকবির ভাবার কি দরকার?
.                        ************************** কলকাতা, ১৪.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
শিল্পী শ্রী শুভাপ্রসন্ন     খ্যাত ছিলেন “কাক”-এর জন্য
পরিবর্তনের আগে প্রতিবাদী।
শুভ্র তাঁর কেশ ও ভুরু                         অগ্নিকন্যার শিল্পগুরু
পরে তিনি হইলেন শিল্পপতি॥

এক হাতে রং ও তুলি                 অপর হাতে বেওসার ঝুলি
চলিতেছিল সবই ঠিকঠাক।
নিন্দুকে সারদার কথা                      শুনাইয়ে ঘোরালো মাথা
ইডি-সিবিআই বাজায় ঢাক॥

হুলিয়া বাহির হইতে                         খবরের শিরোনামেতে
আসিলেন এই শিল্পী-মহাজন।
মোদী আর দিদিতে মিলে                     উহ্য মিতালীটি হইলে
পায়ের তলায় মাটি ফিরা পান॥

এত কিছু হইলেও কিন্তু                     তাঁর শিল্পী সত্তা উপরন্তু
আজও তাঁরে করে আকর্ষণ।
দেখে কোনো সুন্দর সৃষ্টি                       টানে যে তাঁহার দৃষ্টি
দুষ্টকবি নিরীক্ষিয়া কন্॥
.                      **************************   কলকাতা, ৫.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
মাহাতো ছত্রধর               তিনি দাপাইতেন লালগড়
সেই পরিবর্তনের আগে।
তিনি তাঁর বাইকে করিয়া                    দিদিরে আসেন ঘুরাইয়া
অভেদ্য সব অঞ্চল বাম যুগে॥

তাঁহার নামে বুদ্ধের সরকার             আনেন কেস দেশদ্রোহিতার
এখন সাজা জাবজ্জীবন হাঁকে।
পরিবর্তন হইয়া গেল                            দিদি গদ্দী পাইয়া গেল
এখন দিদি চেনেনইনা তাঁকে॥

দুই হাজার দশ নিদাঘে                     কলকাতাতে মিছিল লাগে
লালগড় আন্দোলনের তিনি মাথা।
তখন তিনি দিদির পক্ষে              সিঁড়ির এক ধাপ, দিদির, লক্ষ্যে
এবং, লালগড়ে তিনিই দিদির ভ্রাতা॥

এখন তাঁর ফুরাইয়াছে “কাজ”        “পাজি” তিনি হইলেন তাই আজ
দিদি আজ মহা দেশভক্ত।
দুষ্টকবি লিখিতে পারে                  তিনি তো নাই ক্ষমতার ধারে
তাঁর বুকে দীর্ঘশ্বাস আর ফোটে রক্ত॥
.                      **************************   কলকাতা, ৫.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
কবীর সুমনের কথা            পূর্বে গাহিয়াছি গাথা
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের কালে।
দিদির টিকিটে জিতে                         নির্বাচনে কেল্লা ফতে
সাংসদ, দুই হাজার নয় সালে॥

সাংসদের কোটার বখরা                       লইয়া লাগিল ঝগড়া
দিদির সঙ্গে লাগিল তাঁর ঠেস্।
দিদি ঘাটাইলো না তারে                 সংখ্যালঘু ভোটের ভারে
দিদির সঙ্গে আড়ি শুরুর রেশ॥

দল ও পদ না ত্যাগিয়া              কাল কাটাইলেন কুত্সা করিয়া
ছত্রধরের দুঃখে বাঁধেন গান।
গাছেরটাও খাইতে জানেন            তলারটাও কুড়াইতে থাকেন
উত্তম তাঁর ব্যবসায় জ্ঞান॥

বঙ্গ বিঙূষণের ডালি                      করাইলো আবার মিতালি
দেওয়া নেওয়ার তিনি পরমেশ।
গানের কথার সম্ভার                           কর্মে, মেলেনা তাহার
দুষ্টকবি কহে --- আছেন বেশ॥
.                      **************************   কলকাতা, ৪.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
শ্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়          স্কন্ধে শিক্ষামন্ত্রীর দায়
তিনিই দিদির পরে, তৃণমূলে।
ছিলেন ম্যানেজমেন্টের ঘরে            রাজনীতিতে অনেক পরে
দিদি বিধানসভায় নেতা কৈলে॥
তাঁর বড় সমস্যা দেখি                         মান রাখি না দিদি রাখি
দেখিয়া সবার তাইতো মনে হয়।
তাহার সহনেতাগণের                            নানান বাণী-প্রবচনের
মিডিয়ায় ঠ্যালা তাঁহাকেই বুঝিতে হয়॥
শিক্ষাতে দলতন্ত্রের কথা                  শুনিতাম তা বামেদের প্রথা
দেন, আরও পরিশীলিত নিদান।
পরীক্ষা না দিলেও পাশ                   শিক্ষিকাকে ধর্ষণের আস্বাস
উপাচার্য-শিক্ষকদের প্রহার দান॥
বিভিন্ন শিক্ষায়তনে                       যাহাদের বসাইলেন যতনে
অনেকেরই নাম পুলিশের খাতায়।
কাহারও খুনের দায়                            কেহ লুঠে হাত পাকায়
কাহারও লক্ষ্য শিক্ষকের মাথা॥
তাহার দলের ছাত্রগণের                         নিত্য অভব্য আচরণে
ভিসির হাত পা বাঁধিয়া দেন ঠেলি।
কিন্তু তাঁহার দলের না হইলে               ছাত্রের দাবী ন্যায্য হইলেও
মধ্যেরাতে কোমাণ্ডো দেন লেলি’॥
ওজন কমাইতে গিয়া                             ফলতঃ বিফল ক্রিয়া
ধন-মানের ওজন গেছে বাড়িয়া।
সিঙ্গুরের সেই সব দিনের                     দুষ্টকবির আছে স্মরণে
এখন সেসব দিন গেছে উড়িয়া॥
.                      **************************   কলকাতা, ৫.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
তারকা তাপস পাল                 “চন্দননগরের মাল”
কহেন নিজেই জনসভা হাঁকিয়া।
দিদির আশিস মাথে                             “ছেলেরা” তাহার সাথে
তাঁহার, বচনে মানুষ যায় চমকিয়া॥

যোগদান দিদির দ্বারে                           নামিলেন দোশোদ্ধারে
দেখেন নাই নিজেরই জননীকে।
দিদিরে দক্ষিণা দিতে              ঢুকাইবেন “ছেলেদের” রেপ করিতে
তামাম বিরোধী বোন ও মা কে॥

দীর্ঘকাল বাংলার স্মৃতিতে                    দাদারকীর্তির দ্যূতিতে
সাহেব-এর চরিত্রে চক্ মক্।
এতকাল পরে আসি                               মুখোশটা গেল খসি’
আড়ালে আনন ভয়ানক॥

দিদির তিনি প্রিয় এত                                  প্রশাসন থতমত
আদালতে ছুট পেয়ে ঘোরে।
এরাই এখন নেতা                                  দুষ্টকবির প্রশ্ন হেথা
কি লাভ হলো পরিবর্তন করে?
.                      **************************   কলকাতা, ৫.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
২০১৪ সালের জুন মাস নাগাদ নদীয়া জেলার  নাকাশীপাড়া এলাকায় ভাষণ দিতে গিয়ে সাংসদ শ্রী তাপস পাল,
বিরোধী দলীয় কর্মীদের হুমকি দিয়েছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, তিনি বলছেন, “যদি বিরোধী কেউ থেকে
থাকেন, শুনে রাখুন, যদি এই গ্রামে আমাদের মা বোন, বাচ্চা, চাচা, চাচি – কারও গায়ে হাত পরে, এই তাপস
পাল ছেড়ে কথা বলবে না আমি বলে রাখলাম।” “তাপস পাল নিজে রিভলবার বার করে গুলি করে দিয়ে চলে
যাবে। একজনের গায়ে হাত পড়লে তাদের বাড়ি এখান থেকে ভেঙ্গে চৌপাট করে দেবে তাপস পাল।”  ওই
ভাষণে তিনি আরও বলেন, “আমি প্রচুর মস্তানি করেছি। আমি চন্দননগরের মাল, কলকাতার মাল না। আমি
কেটে মাল নিয়ে ঘুরি।” তার পরেই তিনি বলেন, “যদি তৃণমূলের কারও গায়ে হাত দেয়, তাদের গুষ্টিকে আমি ..
যা-তা করে দিয়ে চলে যাব। আমার ছেলেদের ঢুকিয়ে দেব, রেপ করে চলে যাবে। রেপ করে চলে যাবে।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
চেয়ারম্যান বিমান বসু    দিবারাত্র খোঁজেন ইস্যু
দিদিরে বিপাকে ফেলিবার।
বিরোধীদের তাহাই কার্য                             তাহাই অনস্বীকার্য
তবুও দেখি, নাই তার বেশী বলিবার॥

পরিবর্তনের আগে                                 বামফ্রন্টের পুরাভাগে
তিনিই ছিলেন বাণী দেবার কর্তা।
ঠোঁটে বাঁকা হাসি হাসিয়া                  বিদ্রুপের স্বরে রসিয়া রসিয়া
আলিমুদ্দিনে বিরচিতেন তিনি বার্তা॥

বদলাইয়াছে বার্তার সুর                   আর দেখিনা সেই রসের পুর
এখন কথায় হতাশা আর ক্রোধ।
বুঝিতেছেন হাড়ে হাড়ে                      কেমন লাগে শাসকের মারে
অসহায়দের কেমনটি হয় বোধ॥

এখন, বিমানবাবুর পথ্যেই                         দিদির মুখপাত্রের কথ্যে
হাসি-বিদ্রুপ-হুমকি পড়ে ঝরিয়া।
যে ই বসে ক্ষমতার আসনে                        ওস্তাদ বনে বক্র-হাসনে
দুষ্টকবি হাসে কাব্য করিয়া॥
.                      **************************   কলকাতা, ৭.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
দম আছে তাই দময়ন্তী  কাটালেন তিনি এই ভ্রান্তি
যে “পার্কস্ট্রীটে ছিলো সব সাজানো"।
মেয়েটির ক্রন্দন থামালেন            তিন দিনে আসামীকে ধরলেন
পথ পায়নি অনেকেই পালানোর॥

দেশজুড়ে বাহবার মধ্যেই               সংবাদ শিরোনামে জমতেই
পেলেন মুখ্যমন্ত্রীর বকুনি।
হরিদাস বাংগালি হতবাক্                 দুষ্ট কবির তো লাগে তাক্
দেখে বিপরীত ফল বীর রমণীর॥

শুরু ফোটা সত্যের ছবিটা               আগামীতে বঙ্গে কি হবে, তা
ঘাসফুলে ঢাকা ছবি এদেশের।
দেখে পুলিশের এই বীর প্রমীলার         মেডেলের বদলে ট্রান্সফার
মনোবল ধূলো চাটে পুলিশের॥

.                      **************************   কলকাতা, ১২.৭.১০১৫
দুষ্ট কবি
.
পার্কস্টীটে এক মহিলার অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন “সব সাজানো ঘটনা ও বিরোধীদের চক্রান্ত।” কিন্তু কলকাতা পুলিশের সাহসী
পুলিশ  অফিসার দময়ন্তী সেন সেই কেসের কিনারা করে দেন তাড়াতাড়ি। মুখ্যমন্ত্রী এই পুলিশ অফিসারকে পুরস্কারের বদলে দেন শাস্তিমূলক বদলি!
দুষ্টকবি ১৯.২.২০১২ তারিখে একটি ছড়া লেখেন এই বিষয়ে। এই কবিতার জন্য আবার নতুন করে এই কবিতাটি লেখা হলো।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
পুলিশের দফা সারা               বাম আমলেরও বাড়া
গোলাগুলি দেখিলে দেয় ভাগ।
ঘরে ঘরে বোমার কারখানা                 ভাঙচুর চৌকি আর থানা
পুলিশ, শাসকদলের পাঞ্চিংব্যাগ॥

দিদিই সবার উপরে                                 তাঁর আশির্বাদী বরে
লুম্পেনদের এখন পোয়া বারো।
জনগণ কহিবে কারে ?                   পুলিশকেই তো পিটিয়ে মারে
থানা-পুলিশ ভয়ে জড়সড়ো॥

পরিবর্তনের পরে বাপ্                         তাঁদেরই আখেরে লাভ
শাস্তি মাফ যত কুকর্মের॥
বুঝিতে পারেন নি তাঁরা                        এই নতুন শাসক কারা!
পুলিশ-পেটানো-সখ, যাদের ধর্মে॥

পঁয়ত্রিশ সাল বামের ঘরে               দিদির এ-রুপ, ঠিক তারপরে
মেরুদণ্ড বেঁকে কুঁকড়ে সারা।
দুষ্টকবি পুলিশরে কয়                    এত অপমান আর কে সয়?
কর্ মেরুদণ্ড সোজা, উঠে দাঁড়া।
.                      **************************   কলকাতা, ১০.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সাত্তোর গেরামের বধূ         তাঁর অপরাধটি শুধু
তিনি, ভিন্ন মত অবলম্বীর আত্মীয়া।
ভাসুরপোরে ধরিতে নারে               তুইল্যা লইয়া যায় তাহারে
সারারাত্র অত্যাচারে মাতিয়া॥

ব্লেড দিয়া শরীর চেরে                          গাত্রের বস্ত্রখান ছেঁড়ে
বিছুটি পাতা ঘষে গোপন অঙ্গে।
পিশাচের এ গল্প নহে                             দুষ্টকবি শরমে কহে
ঘটেছে পরিবর্তনের পরের বঙ্গে॥

উচ্চ আদালতের দ্বারে                          এই রমণী কড়া নাড়ে
এইবার বুঝি যায় সব ফাঁসিয়া।
মিথ্যা মামলায় ধরিলো                      তড়ি ঘড়ি কয়েদ করিলো
যাতে, হাইকোর্টের হাজিরা যায় ভাসিয়া॥

ছিঃ ছিঃ করিছে সবই                    স্বাধীন দেশের এই কী ছবি?
বাঙালীর মাথা লজ্জায় হলো নীচু।
প্রশ্ন করা হইলে তাঁরে                       নির্বিকারে ক্ষমতার আড়ে
দিদি কহে --- নিশ্চয়ই আছে কিছু!

নারীর কর্তৃত্তের দেশে                      নারীর ইজ্জৎ ধূলায় মেশে
কার কাছে নারী চা’বে প্রতিকার?
দুষ্টকবি কহে সাবাশ!                      তুমিই নিজের রাখিলে লাজ
হে সাত্তোরের বধূ-দেবিকা॥
.                      **************************   কলকাতা, ৮.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
১৭ই জানুয়ারি ২০১৫ তারিখ রাতের বেলা, বীরভূম জেলার সাত্তোর
গ্রামে, ভাসুরপোকে খুঁজতে এসে, তাকে না পেয়ে, পুলিশ
গৃহবধূকেই তুলে নিয়ে বর্ধমানের কলমডাঙার জঙ্গলে, তৃণমূল কংগ্রেস
দলের কর্মিদের সঙ্গে মিলে, নির্যাতন চালায়। নির্যাতিতা
সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন যে তাঁর শাড়ী ব্লাউজ ছিঁড়ে দিয়ে গোপন
অঙ্গ সমেত দেহে বিছুটি পাতা ঘষে দেওয়া হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে
চিরে দেওয়া হয় হাতের তালু। সিআইডির তদন্তে অসন্তুষ্ট হয়ে
নির্যাতিতা গৃহবধূ উচ্চ আদাতলে যান। সেই বিচার চলাকালীনই ৪ঠা
জুলাই ২০১৫ তারিখে সাত্তোর গ্রামের তৃণমূল পার্টি অফিসে বোমা
পাওয়া যায়। গ্রামবাসীরাই পুলিসে খবর দিয়েছিল। পুলিশ নিষ্ক্রিয়
থাকায় গ্রামের মানুষ পথ অবরোধ করেন। তৃণমূল অফিসের কাউকে
গ্রেফতার না করে পুলিশ তাঁর শিশুপুত্র বাদে পরিবারের সকলকে নিয়ে
যায় এবং তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা
হয়। শিশুপুত্রের কান্নার কাছে জজসাহেব হার মেনে পুত্রকেও মায়ের
সাথে জেলে রাখার আদেশ দেন। শিশুটির কোনো অপরাধ না করেই
হাজতবাস হলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এটা করা মূল উদ্দেশ্য হলো
এই যে উচ্চ আদালতের মামলায় যেন এই মহিলা হাজিরা না দিতে
পারেন। এই পরিবারটি ইসলাম ধর্মাবলম্বী! কিছুদিন আগেই মাননীয়া
মুখ্যমন্ত্রী বসেছিলেন য়ে মুসলমানদের জন্য তিনি অনেক কিছুই করে
ফেলেছেন। হয়তো করেছেন, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে যে পরিবর্তনের
পরে শুধু মুসলমান হলেই চলবে না। প্রতিটি মুসলমানকে দিদির দল,
তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যও হতে হবে! না হলে এই অত্যারচার
অবলীলাক্রমে তাঁদের উপর নেমে আসতে পারে।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
টিপু মসজিদের ইমাম      বুদ্ধবাবুর সঙ্গে দেখিতাম
মঞ্চের তিনি অনেকটাই আলো করিতেন।
তিনি অঙ্কের হিসাবে পাকা                    যেই ঘুরিল কালের চাকা
দিদির মঞ্চে অমনি তিনি আসিলেন॥

এখন দিদির রাজ্য-পুরে                           সংখ্যালঘুদের উপরে
অত্যাচার আজ সীমা-ছাড়া হেথা।
শুনি না তাঁহার বাণী                           তিলেক প্রতিবাদের ধ্বনি
মুসলমানদের কেমন ধর্মনেতা ?

এমন মহান ধর্মনেতা                           আছে যেই দেশে, সেথা
ভক্তের উপর হবেই অত্যাচার।
দুষ্টকবি বলে শোনো                          এঁদের জন্য আছে জেনো
আল্লাহতালার কঠোর বিচার॥

.                      **************************   কলকাতা, ৮.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
কবি জয় গোস্বামীর ভাগে  পরিবর্তনের আগে
প্রথম প্রতিবাদীর সম্মান।
তাঁহার “শাসকের প্রতি”                           কবিতাটি সূক্ষ্ম অতি
তাই দিয়া বিস্ফোরণ ঘটান॥
**

তিনিই প্রথম প্রথমসারির                       বুদ্ধিজীবীদের বাড়ির
করেন বুদ্ধর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
একে একে নামিল ঢল                        নড়িল সাংস্কৃতিক মহল
শক্ত হইল বিরোধীদের হাত॥

ইতিহাসের সেই সূচনা                         পরে কত তা না না না
পরিবর্তন-স্বপ্ন সফল শেষে।
বুদ্ধের কথা নাহি মানি                       মূল্য চুকাইয়াছেন তিনি
দিদি তাঁকে আসন দিলেন পাশে॥

দিদির রোড শো, ব়্যালি করেন         দিদির সভা আলো করেন
এখন তিনি দিদির কাছের জন।
পরিবর্তনের পরে রাজ্যে                  হত্যা-লুঠ-ধর্ষণ-নৈরাজ্যে
বাধ্য হইয়া চুপ করিয়া র’ন॥
.                      **************************   কলকাতা, ৯.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
** কবি জয় গোস্বামী তারা নিউজ চ্যানেলে, কবীর
সুমন দ্বারা সঞ্চালিত “মতামত” অনুষ্ঠানে নিজের
“শাসকের প্রতি” কবিতাটি পাঠ করে সিঙ্গুরের
আন্দোলনকারীদের প্রতি তাঁর সমর্থন জানিয়েছিলেন,
৮/১২/২০০৬ তারিখে। বুদ্ধিজীবীদের মুখ খোলা এই
ঘটনাটি দিয়েই শুরু হয়েছিলো।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সমীর আইচের ক্যানভাসে       মূর্ত-বিমূর্ত হাসে
শিল্পী তিনি প্রথম সারির বঙ্গে।
পরিবর্তন-উত্তর                                   বুদ্ধিজীবী যখন নিরুত্তর
তাঁরে দেখি প্রতিবাদীর সঙ্গে॥

তাঁর স্পষ্টকথায় বলন                            করিলে শাসক পদস্খলন
তিনি থাকেন না মূক সাজিয়া।
তিনি দাঁড়ান নির্বাচনে                           কংগ্রেসের পতাকার সনে
পরাজয় তাঁর নিশ্চিত জানিয়া॥

কামদুনি থেকে সাত্তোর                              নারী নির্যাতনের চত্তর
আক্রান্তের পাশে সদাই তিনি।
“বুদ্ধিজীবী” শব্দের অর্থ                              হইল গালাগালি সমার্থ
কিন্তু ইহার উর্দ্ধে এখন তিনি।

কত লেখক শিল্পী আইলো                         কত গায়ক গীত গাইলো
অর্থ-পুরস্কারে বাঁধা জ্ঞানী।
সমীর আইচরে কেহ না কয়                      দিদির রঙে ছবি রাঙায়
দুষ্ট কবি ল’ন ইহা মানি॥
.                      **************************   কলকাতা, ৯.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
অনুব্রত হৃষ্ট চিত্তে        দিদির প্রিয় ভাইদের লিস্ট-এ
প্রথম স্থানে দেখি বিরাজেন।
বায়ুমণ্ডল মহা-দুষ্ট                    অক্সিজেন তার কম পেয়ে কষ্ট
তাই লোক-মারিবার কথা বিরচেন!

কিন্তু তাঁহার কথার ঠ্যালায়        লাশ পড়ে যায়, ঘরদোর জ্বালায়
বলেন --- পুলিশের উপর বোম মারুন।
বীরভূম জেলার তৃণমূলে                  তাঁর কথাতেই সবকুছ চলে
চেলাদের বাই পুলিশ পেঁদানোর ধুম॥

এমন ভাইয়ে ভরা তৃণমূল         আছেন মনিরুল আছেন আরাবুল
প্রিয় ভাইদের আরেক তাপস পাল।
থানা-পুলিশ পোষ মেনে যায়               আদালতকে ভুল ব’লে, চায়
প্রতিবাদীর সাজা দীর্ঘকাল॥

শাসক যখন ক্ষমতার আড়ে                  নারীর ইজ্জত লুণ্ঠন করে
সেই শাসকের পতন শুরু তখন।
মিথ্যার বুনিয়াদের উপর                  ইমারতের না থাকে জোর
ভাঙবেই তাহা, দুষ্টকবির লিখন॥
.                      **************************   কলকাতা, ৯.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
ব্রাত্য বসু নাট্যকার         সন্দেহ নাই তাঁর প্রতিষ্ঠার
বাম আমলেই তাঁহার উত্থান।
পরিবর্তনের আগে                              বিরোধীপক্ষের পুরাভাগে
“স্বজন” গোষ্ঠির একজন সমাহর্তা॥

তাঁহাদের প্রতিবাদে                                   রাজ্য কাঁপিয়া ওঠে
মমতার হাত শক্ত, তাঁরা করেন।
অন্য বুদ্ধিজীবী যখন                           রাজনীতির বাহিরে, তখন
কব্জি ডুবিয়ে তৃণমূলে ধোকেন॥

দিদি, পরিবর্তনের পরে                           ঝুলি উজার করে তাঁরে
করিলেন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী।
একদিন বেফাঁস বলিয়া                           সেই আসন গেল চলিয়া
এখন, বুদ্ধিজীবী দলে টানার যন্ত্রী॥

শিক্ষা দিক্ষা এত ভালো                            কেন যে এই সঙ্গ নিলো
কাল কাটে, সকলেরই, তা ভাবি’।
অনেকেরই মুখোশ থাকে                           কিছুকাল করাল ঢাকে
কখনও তো খসিবেই --- কহে দুষ্টকবি॥
.                      **************************   কলকাতা, ১০.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
নরেন্দ্র দামোদর মোদী            বসিল দিল্লীর গদি
শুকায়নি হাতে দাঙ্গার রক্তের দাগ।
নির্বাচনের আগে, সালভর                সকল মিডিয়ায়, এই তালেবর
বিজ্ঞাপনে লাগাইয়াছিলেন তাক্॥
প্রশ্ন ওঠে সবার মনে                            কোটি কোটি, বিজ্ঞাপনে
কারা? কেন? টাকা ঢালিলেন?
কাহাদের কোন্ কোন্ স্বার্থ?                  মোদী করিবেন চরিতার্থ?
জিতিয়া আসার পরে বলিলেন॥
বলিলেন সব জমি চাই তাঁর               মালিকের সম্মতি নাই দরকার
যত লাগে লিবেন বেওসাদার।
ছবিটা হয় স্পষ্ট ধীরে                        ঢালে কেন কোটি তাঁর’পরে
ধনবানরা কেন সাথে তাঁর॥
শুনি’ তাহার দাঙ্গার কিস্সা                        আমেরিকা দেয়নি ভিস্সা
নির্লজ্জের যথা সেথায় তিনি গেলেন।
শত্রু পাকিস্তানের দোসর                          চীনা ঝিনপিং-সাথে বাসর
তাঁর পত্নীর দোলনার দড়ি টানি দিলেন॥
খুব ভয়ানক ইহার কারণ                              বন্ধু-মুরুব্বীদের এখন
চীনদেশেতে নিবেশ অঢেল!
চীনের অস্থির-মতির ভয়ে                            টাকা বাজেয়াপ্ত না হয়
ঝিনপিঙের পায়ে নরেন মাখায় তেল॥
দিল্লীতে নিমন্ত্রণ পেয়ে                           ওবামা আসে মোদীর গেয়ে
মোদী পড়েন স্যুট দশ লাখী।
শুনি সে উপহারে পাওয়া                      সোনার জড়ির কাজে ছাওয়া
তাঁরই নাম সারা গায়ে লিখি’॥
আর যদি কেউ গ্রহণ করে                     আইন কি করে তাকে ধ’রে?
“ঘুষ” বলিয়া শব্দের পাই গন্ধ।
বলেন প্রব্রাজক তিনি!                              মুখে বিবেকানন্দের বাণী!
“অচ্ছে দিন” কার? ভেবে লাগে ধন্ধ॥
দুষ্ট কবি
.
মোদীজী তাঁর মন ঠিক করে                  বিবাহের ঠিক একদিন পরে
গৃহ ত্যাগেন দেশসেবার তাড়ায়!
পিতৃদত্ত নাম তাঁর নরেন                     মুখের বুলি জুড়িয়াও “নরেন”
তবু তাঁর নাম গুজরাত দাঙ্গায় জড়ায়!
একাধারে গৃহত্যাগী                                    পড়েন বসন দশ লাখী
বিবেকানন্দ ও দাঙ্গার সহাবস্থান!
দুষ্টকবি ধন্ধে পড়ে                                     এমন মহাপুরুষ, ঘরে
কেমন করিয়া নিশ্চিন্তে নিদ্রা যান!!
.                      **************************   কলকাতা, ১০.৭.২০১৫

দুষ্টকবি কয়, চাইয়া ক্ষমা,                             এর আগের স্তবকখানা
ছিল মোদীজীর ইনট্রোডাকশন।
এইবার আমরা ফিরি সত্তর                               নিয়া পরিবর্তন-উত্তর
তাঁহার কিছু কিছু কনট্রিবিউশন॥
রে রে করিয়া নামিয়াছিলেন                  আসর মাতাইয়া বলিয়াছিলেন
সারদা-ঘোটালা দেবেন ফাটকে।
তদন্তও আউগাইয়াছিল                                  জনতা মহানন্দে ছিল
আমলা-নেতা-মন্ত্রী জেলে আটকে॥
মহামতী মোদীর দিল্                              সংসদে আনিলো জমি-বিল
করিয়া নাকি দিদির সঙ্গে ডীল্।
নির্বাচন কমিশনার                             হাত গুটাইয়া নাড়েন তাঁর ঘাড়
নির্বাচন হয় প্রহশনে সামিল॥
এখন মোদীর যাহা মতি                           দোসর অমিত শাহের গতি
২০১৬ নির্বাচন দিয়াছে ছাড়িয়া।
দিদি যাতে ফাঁকা মাঠে                         জিতে ফেরেন বঙ্গের তখ্ত-এ
নিশ্চিত এ রাজ্যে দিলেন করিয়া॥
এখন সারদার নামে                                    তদন্ত নাই কড়ির দামে
ধামাচাপা পড়িয়া এখন শান্ত।
মোদী-দিদির লেন-দেন-গন্ধে                            ইডি-সিবিআই, তদন্তে,
মনের সুখের দিয়া দিল খান্ত॥
পুনশ্চ কহেন দুষ্ট কবি                         বাত্তেলা দেওয়া তাহার হবি
মাঝে মাঝেই বলেন “মন কি বাত”।
মিডিয়াতে এই টক্ চলে                            গাল-ভারি সব কথা বলে
কাজের চেয়ে কথায় বাজিমাত॥
.                      **************************   কলকাতা, ১১.৭.২০১৫
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
শ্রীমতী রূপা গাঙ্গুলী         বিজেপির পতাকা লইলেন তুলি
মহাখ্যাতি তাঁহার দেশজোড়া।
মহাভারতের দ্রৌপদী                                      গাহেন লঘু ও ধ্রুপদী
তিনি সেলিব্রিটি ভীষণ নজরকাড়া॥

নরেন মোদী পি.এম. হ’লে                       রুপা যোগ দেন তাঁহার দলে
কলিকাতার মেয়র হবার লক্ষ্যে।
তাঁহার ভোটের সাকীন কোথা?                 তাই, সেই চেষ্টা হইলো বৃথা
বিবাদে বাদ পড়েন ভোটের যজ্ঞে॥

তিনিও খুব দাপুটে দিদি                                 এবং ভীষণ প্রতিবাদী
বঙ্গে বিজেপির নেত্রী প্রিয়।
এই প্রথম বিজেপি বঙ্গে                            কিছু মানুষও তাঁদের সঙ্গে
দেখি, বামের চেয়ে তাঁহারাই সক্রিয়॥

বিরোধী থাকিলে নেতা                         দেখায়, বোঝে জনগণের ব্যথা
কান্দিয়া ভাসায় দুনয়ন।
গদ্দিতে ব'সে শুধু খাওয়া                                 মায়া দয়া হয় হাওয়া
দুষ্টকবি কয় দেখিবো, রুপাজী কি করেন তখন॥

.                      **************************   কলকাতা, ১১.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
২০১৫-এর কলকাতা করপোরেশনের মেয়র পদের লক্ষ্যে তিনি
বিজেপিতে যোগদান করেন। কিন্তু সংস্লিষ্ট ভোটার লিস্টে তাঁর নাম না
থাকায় তাঁকে ভোটেই দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। এরপর থেকেই তাঁকে
প্রায় প্রধান বিরোধী নেত্রির ভূমিকায় মানুষ দেখতে শুরু করেন।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
ডক্টর নির্মল মাজি                 তিনি নহেন এজিপেজি
তিনি দিদির দলের জাক্তার নেতা।
যদিও মানুষ তাঁহার রোগী                     তিনি পশু-প্রেমেরও যোগী
তিনি অমর হইলেন রচিয়া এক গাথা॥

অনামা কোনো গণ্যমান্য                          একটি সারমেয়র জন্য
নিদান দিলেন তিনি ডায়ালিসিস্।
আগামীর পাঠ্যক্রমে                               এই গাথা উঠিবে জমে
গবেষকরা লিখিবে সব থিসিস্॥

এত করিয়া ক্ষান্ত নহেন                        ডায়ালিসিস্ যন্ত্র, কহেন
পিজি হাসপাতালের হওয়া চাই।
একে শাসক ডাক্তার নেতা                      তায় দিদির প্রিয় ভ্রাতা
তাই কেহই মুখে না বলেন নাই!

বঙ্গজদের ভাগ্যের জোরে                   এবং ইনফেকশনের ডরে
সেই মহান ক্রিয়া ভেস্তে গেল গিয়া।
নির্মল মাজির দুঃখের চোটে              ডাইরেক্টারের চাকরি ছোটে
সারমেয়রা কাঁদের হুক্কা হুয়া॥
.                        ************************** কলকাতা, ১২.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
মুকুল রায় আছেন দলে    আবার নেইও তৃণমূলে
এই কথায় জানি লাগে বড় ধন্ধ!
তিনি ছিলেন দিদির দলে                     দিদির ডানহাত বলা চলে
এখন দলে থেকেও তাঁহার দ্বন্দ্ব!
তাঁরে রেল মন্ত্রক দিয়া                           পরিবর্তনী হাল ধরিয়া
দিদি বসেন বঙ্গের মসনদে।
চলছিলো সবই ভালো                          সারদার কেলেঙ্কারি এলো
নল রাজার কলির দশার ছাঁদে॥
সারদার নাম উঠিলে পরে                         সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে
সুদীপ্ত সেন এই স্ক্যামের মাথা।
সিবিআই জোঁকের লাগা                       সুদীপ্ত দিলেন গাত্র ঢাকা
তাতেও জড়ান মোদের মুকুল দাদা॥
মোদীজীর সাঁড়াশি-চাপে                           কেলেঙ্কারি নানা মাপে
বাহির হইতে লাগিল একে একে।
রেলের এক কেলেঙ্কারি                             মুকুলরে জড়ায়ে ধ’রি
প্রশ্ন চিহ্ন উঠিল তাঁর দিকে॥
মিডিয়া ছাঁকিয়া ধরে                                 প্রশ্নে জর্জরিত করে
বেফাঁস বলেন --- ঘটনা তাঁর আগের।
ইহাই শেষে হইলো কাল                    শুনিয়া গোসায় ফুলিলো গাল
তাকান না আর দিদি তাঁহার দিকে॥
রটে, তিনি দল ভাঙিবেন                        নাকি বিজেপিতে যাবেন
লয় পুত্র, দিদির পদধূলি মাথে।
দুষ্ট কবি কাব্যে কইলে                  এইসব কূট চাল বুঝিতে হইলে
গঞ্জিকা সেবনে দাও দম্ রাতে॥
.                        ************************** কলকাতা, ৪.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
ক্ষমা প্রার্থনা

গুরু-চণ্ডালী দোষে ভরা                     এই ত্রিপদী কাব্যের ছড়া
দুষ্টকবি ক্ষমা তাই চায়।
কবিতা গুচ্ছটি সারা                          ছন্দপতনে গেছে মারা
ছন্দে পাঠ করাই এখন দায়॥
তবুও করজোড়ে বলে                      পাঠক, তুমি ঈশ্বর হলে
তোমারই কারণে রচনা।
এ নৈবেদ্য গ্রহণ কর                            ক্ষমা-ঘেন্না করে পড়
তাতেই কবির ধন্য রচনা॥
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
দুষ্টকবি মিলন               তিনি হাসির খোরাক এখন
পরিবর্তন-ধামা যে ধরিয়াছিলেন!
পরিচিতরা শুধান                      দাদা ক্যামনে রাত্রে ঘুমান?
বিবেকের কি গলাই টিপিয়া দিলেন?

শুধু দুষ্টকবিই নন                         এমন হাজার হাজার জন
দেখেছিল এক সুন্দর স্বপন।
তাঁরা চাননি অন্য কিছু                  ছোটেনি অর্থ-ক্ষমতা পিছু
চান ত্রাসমুক্ত-গণতন্ত্র স্থাপন॥

পরিবর্তন হলো ঠিকই                    মাতে উল্লাসে দশ দিকই
তাহারপরই মুখোশ পড়িলো খ’সে।
ক্ষমতায় দিদির দল                     প্রয়োগ বামেদেরই ছল্ বল্
সেই স্বপন দিলো নির্দয়ভাবে পিষে॥

মানুষের কাছে গিয়ে                বলেছি --- আসবে দিদি নিয়ে
--- বিগত দিনের কালো মেঘের শেষ।
মিথ্যে সে সব আজ                     চলে নৈরাজ্য-ত্রাসের রাজ
চোর-ডাকাত-খুনে-ধর্ষকে নিলো দেশ॥

ভুল করি নাই কোনো                      আবার পরিবর্তন হানো
এদের হটিয়ে চাই অন্য মুখ।
সকল হতাশা দলি’                         ভাঁজে বিস্মৃত তাঁর কলি
“বাংলা জ্বলছে তাই জ্বলুক”॥
.                      **************************   কলকাতা, ১২.৭.২০১৫
অমিত রায় ও প্রবীর বলের কণ্ঠে, দেবাশিস রায়ের সুরে, অমিত রায়ের
সঙ্গীতায়োজনে, দুষ্টকবি রচিত, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের এই জনপ্রিয় "বাংলা
জ্বলছে তাই জ্বলুক" গানটি শুনতে এখানে ক্লিক করুন . . .
দুষ্ট কবি
.
আরও পড়ুন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম
আন্দোলনের কবিতার সংগ্রহে

সিঙ্গুরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে . . .
রচনাকাল  ৫/১/২০০৭ - ২৩/৩/২০০৭   

নন্দীগ্রামের কে কোথায় দাঁড়িয়ে . . .
রচনাকাল ২০.৩.২০০৭ ~ ১.৮.২০০৭
আরও পড়ুন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কবিতার সংগ্রহে, নীচে ক্লিক করে

সিঙ্গুরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে . . .    রচনাকাল  ৫/১/২০০৭ - ২৩/৩/২০০৭   
নন্দীগ্রামের কে কোথায় দাঁড়িয়ে . . .    রচনাকাল ২০.৩.২০০৭ ~ ১.৮.২০০৭
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
শ্রীযুক্ত রাহুল সিংহ               বঙ্গে বিজেপির অমৃতকুম্ভ
ব্যস্ত তিনি দিদির সঙ্গে লড়ে।
তাঁহার কৃতিত্ব এই                                    যে বিজেপি পাইলো খেই
বাঙ্গালায় এতকাল পরে॥

অবস্থা তাঁহার এখন                                    দেখিয়া বিষন্ন হয় মন
তিনি মর্মান্তিক চক্রান্তের শিকার।
এইবার তাহার ভাগে                                বাঙ্গালী দেখিয়াছে আগে
সোমেন মিত্র নাম তাঁহার॥

রাহুল বঙ্গে লড়িয়া মরেন                        নরেন নেপোয়ে দই মারেন
দিদির সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া।
শুধুই মারপিট নহে                                     নিত্য দলের রক্ত বহে
লাশ পড়ে সারা রাজ্যজোড়া॥

নিত্য মানুষের যাচ্ছে প্রাণ                    নাই সংখ্যালঘু নারীর সম্মান
এই মোদী-দিদির আড়ি-মিতালির তালে।
দুষ্টকবি বড় দুঃখে কয়                          রাহুল বাবুর আসল পরিচয়
তিনি সোমেন মিত্র, বিজেপি দলের।

.                      **************************   কলকাতা, ১৫.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
সোমেন মিত্র দীর্ঘকাল রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। তার অনেকটা সময় জুড়েই কেন্দ্রে  কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু
কোনো কারণে কংগ্রেস এই রাজ্যে দীর্ঘ ৩৫বছর বামফ্রন্টকে (জ্যোতি বসুকে) শাসন করতে দিয়েছিল। কংগ্রেসের নেতা প্রণব
মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে জ্যোতিবাবুর যে সখ্যতা ছিল তা সবারই জানা। মানুষ অবাক হতো দেখে যে কংগ্রেস হম্বিতম্বি করলেও,
জ্যোতিবাবুকে কখনই ঘাটাতো না আর রাজ্যে সোমেন বাবুকে বিরোধী দলের নেতা হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হোত! বর্তমান
পরিস্থিতে সোমেন মিত্রর জায়গায় এসেছেন রাহুল সিংহ আর তার দলের নাম বিজেপি। কালের নিয়মে বাকিরা অবান্তর।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
অভিনেতা কৌশিক সেন      বিবেকের ভূমিকায় নামেন
বামফ্রন্টের অত্যাচারের দিনে।
আরো সেলিব্রিটি অনেক                              একসাথে মিলিয়া করেক
স্বজন নামক গোষ্ঠি, আছে মনে॥

পরিবর্তন হইয়া গেলে                                     বুদ্ধিজীবী সদলবলে
যখন কালীঘাটে পূজা দিতে গেল।
কত নৈবেদ্য দিল                                      কত প্রসাদ-ভোগ পাইল
সেই ভক্তের দলে কৌশিক নাহি ছিল॥

ক্রমশ ঘাসফুল ফুটিল                                    বঙ্গনারীর মান লুটিল
আবার মানুষ প্রতিবাদে নামে।
দুষ্টকবি কহে, পথে                                      কৌশিক থাকিলে সাথে
প্রতিবাদ ওঠে উচ্চগ্রামে॥

.                        ************************** কলকাতা, ১৫.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
মহামতি মদন মিত্র               দিদির অতি প্রিয় পাত্র
সেনাপতি বলিলে ভুল নাই।
দিদির অনশনের কালে                        ছিলেন রক্ষী সেই চাতালে
না, তিনি নিজে অনশন করেন নাই॥
ট্যাক্সী ইউনিয়নের নেতা                       পরিবর্তনের যুদ্ধে জেতা
দিদি দিলেন খেলা ও পরিবহণ।
এত দায় দায়িত্ব তাহার                      তাহার উপর মন্ত্রীর বাহার
বুঝি হইলো না তার আর তাহা সহন॥
মনে নিশ্চয়ই বড় ভক্তি                           লাগাইলেন সকল শক্তি
দেবী সারদা-র নামের সংস্থায়।
কর্ণধার সুদীপ্ত সেন                     হাজার হাজার কোটি সরাইছেন
গরীবের, এক অভিনব পন্থায়॥
প্রতারক সুদীপ্ত সেন                              মদন ইহা ঠিক বুঝিলেন
চোরের উপর বাটপারি নাকি করে।
সারদার সভায় দিদি-মদন                     দেখিয়া আশ্বস্ত হন জনগণ
নিশ্চিন্তে তারা সারদায় অর্থ ভরে॥
সংবাদে প্রকাশ করে                             অ্যাম্ব্যুলেন্সে টাকা ভ'রে
রোগীর বদলে পাচার হইতো টাকা।
মাটির-মানুষের সেই টাকাতে                    ফুর্তি চলে দিনে রাতে
ক্রমে সারদার ঝুলি হইলো ফাঁকা॥
কানা-ঘুষোয় শুরু হয়ে তা                   ক্রমে মিডিয়ায় বোমা ফাটা
থানা-পুলিশের খটখটাইল কপাট্।
দিদির পুলিশ সিট করিলে                         নিন্দুকে তো ইহাই বলে
তাদের কর্ম ছিল তথ্য লোপাট॥
বলির পাঠা চয়ন করে                    কুণাল ঘোষ সেই কোপে পড়ে
জেলেই লোকটা বৃদ্ধ হইয়া গেল!
এবার মঞ্চে আসিল মোদী                  আসরে নামিল সিবিআই-ইডি
তদন্তে মদনের নাম উঠে এলো॥
দুষ্ট কবি
.
রব উঠিলো গেল গেল                              মদনরে ফাটকে পুরিল
কলকাতায় যেন পড়িল অ্যাটমবোমা।
দিদির প্রিয় খেলোয়াড় যত                ময়দানের মঞ্চে অবস্থানরত
যেন খেলার জগত হইলো এতিমখানা॥
তখন থেকে আইনের গতে                      মদন আছেন হেপাজতে
কিন্তু তিনি এখনও মন্ত্রী, জাতে।
দিদির যুগেই দেখলো সবে                    জেলে গেলেও চাকরি রবে
দিদির প্রিয় ভাইটি যদি হইতে॥
জেলে ভিতরেই পাইতেন তিনি               রসনাতৃপ্তির ভোজন-পানি
তাও মহামান্য মন্ত্রীর নহে যোগ্য।
তাহার সুযোগ্য আহার পানিয়      যাতে দেওয়া যায় তাহারে আনি
তাই ধরিল তাঁরে ব্যাধী দূরারোগ্য॥
ভর্তি হইলেন হাসপাতালে                            হাজারোটা টেস্ট চলে
শত চেষ্টায় কিছুই নাহি পায়।
তবুও তিনি সেথায় রইলেন               আরামের দিন ফিরা পাইলেন
মদন মিত্র দিদির প্রিয় ভাই॥
এবার মদন মিত্রের ভালে                 কিঞ্চিত দুর্ভোগ দেখা মেলে
মোদী-মমতাদিদির হলো ডীল।
মোদী “ঘৃণার পাত্র” ছিলেন          “রাজ্যের স্বার্থে” জলচল হইলেন
সভায় দিদি বলেন তাঁদের কত মতের মিল!
মোদীর ল্যাণ্ডবিলের জয়                    নির্বিঘ্নে দিদি, বিনিময়
দুইহাজার ষোলো নির্বাচনে জিতা।
মা-মাটি-মানুষের দেশে                   লোকেদের দেখাইতে শেষে
মদনও কি হইবে বলির পাঁঠা!?
.                      **************************   কলকাতা, ১৫.৭.২০১৫
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
অম্বিকেশ মহাপাত্র                 ফরওয়ার্ড করেন ব্যাঙ্গচিত্র
দিদি-মুকুল-দিনেশকে লইয়া।
কার্টুনটি আঁকেননি তিনি                             খেলেননি কভু ছিনিমিনি
কাহারও মান-সম্মান নিয়া।

ব্যাঙ্গ ধরিতে না পারিয়া                           দিদির পুলিশ নিলো ধরিয়া
চেলাদের নিগ্রহ চলে আগে।
চলিল নির্যাতন ভাল                                দিদি কহেন হুমকি দিলো
কার্টুনে “ভ্যানিশ” কথা কেন লাগে?

দিদির কাছে “ভ্যানিশ” মানে                  হুমকি দেওয়া তাঁকে, প্রাণের
একটি নিছক হাস্যের বিকট ব্যাখ্যা।
আসল কথা বুঝলো সবাই                    তাঁর বিরুদ্ধে লিখলেই জবাই
গণতন্ত্রের ইনি করিবেন রক্ষা!?

মানবাধিকার কমিশন                                তাহারে দেয় ক্ষতিপূরণ
দিদির সরকার সেসব কথার ঊর্ধ্বে।
“আক্রান্ত আমরা” রচিয়া                                 দুষ্টকবি কয় রসিয়া
হতভাগাদের বাঁচান যথাসাধ্যে॥

.                      **************************   কলকাতা, ১৫.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
শিলাদিত্য চৌধুরী                 এক জনসভায় প্রশ্ন করি’
চকিতে হইয়া গেলেন মাওবাদী।
পরিবর্তনের পরে                                      সেই সভা মেদিনীপুরে
হা করিয়া দেখিলেন সঙ্গী সাথী॥

কৃষক সাধারণ                                     ছিলনা রাজনৈতিক রং
এঁদেরি মা-মাটি-মানুষ বলিয়া জানি।
উত্তরের বদলে                                        শীলাদিত্যে দিদি বলে
ওই যে ধরো, মাওবাদী! আমি চিনি॥

পুলিশ ধরিয়া নিয়া                                       চালান করিয়া দিয়া
মাওবাদী প্রমাণে ব্যর্থ পরে।
দুষ্টকবি কয়                                         কোন্ শিক্ষার পরিচয়?
যারা জীবন এমন নরক দেয় করে!

মানবাধিকার কমিশন                             তাহারেও দেন ক্ষতিপূরণ
মা-মাটি-মানুষ পরিণত পরিহাসে।
মানুষের টাকাই পোড়ে                       সরকার কোর্টে অ্যাপিল করে
তবুও দুঃখ-লজ্জা নাহি আসে॥
.                      **************************   কলকাতা, ১৬.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
কহেন কবি অভিষেক বন্দ্যো!
“মদ গাঁজা চরস বন্ধ                                  তাই কি প্রতিবাদের গন্ধ?”
কাটাইয়া সকল দ্বন্দ্ব,
কহেন কবি অভিষেক বন্দ্যো!

আহা! কি সুন্দর ছন্দ!                                 কাব্যিক তথা মৃদু-মন্দ!
যেন, কাব্যাকাশে নতুন চন্দ!
পিসির হবেই মন-পসন্দ!

কি দিয়া শুঁকিলেন গন্ধ?                         নাক তো ক্ষমতার দম্ভে বন্ধ!
কিছু পূর্বে এমন ছন্দ---
গাহিতেন বামফ্রন্টের বৃন্দ!

এখন তারা নাই শ্রীমন্ত                                ভুগিছেন নির্বাসন দণ্ড!
রাজপাট গিয়া লণ্ড-ভণ্ড
অতি দম্ভের ফল প্রচণ্ড!

দুষ্ট কবি কহে --- হে অভি বন্দ্যো!                    দেখিয়া শেখে বুদ্ধিমন্ত।
সুবুদ্ধিরই যদি হইলো অন্ত,
লাভ কি হইয়া হন্ত-দন্ত?

.     ************   কলকাতা, ২২.০৯.২০১৪
দুষ্ট কবি
.
“মদ গাঁজা চরস বন্ধ
তাই কি প্রতিবাদের গন্ধ?”
কথাটি বলেছিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা
শ্রী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যার্থীদের দ্বারা আন্দোলন চলাকালীন। এই
আন্দোলনটির নাম ছিল হোক কলরব। আমরা মিলনসাগরে সেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রচিত কবিতা ও
গান সংগ্রহ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলাম।
সেই সংগ্রহে যেতে এখানে ক্লিক করুন . . .
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
মহান রতন টাটা                ক’রে মোদের টা টা
নরেন মোদীর দেশে গেলেন চলি।
সিঙ্গুর-জমি রইলো পড়ে                  দিনে গরু ছাগল চরে
সূর্যিমামা পাটে গেলে কি হয় কেমনে বলি!

বুদ্ধবাবু গেলেন                              জেঁকে দিদি এলেন
টাটাবাবু মহানন্দে অগস্ত্যহাঁটা দিলেন॥
প্রচুর বুদ্ধি ধরেন                         পাতায় পাতায় চলেন
এক হাটে কিনে সবে আরেক হাটে বেচেন।

ফেরত পেতে জমি                      দিদির চেষ্টা গেল দমি’
দিদি এসেও টাটার চুক্তি খোলসা নাহি করেন।
আটকে রেখে দিলেন              জমি ফেরত নাহি দিলেন
চুক্তিখানা কেমন ছিল, কেউ নাহি তা বলেন।

হয়েছিলেন ভীষণ কাবু                বললে সেদিন রতনবাবু
দিদি নাকি “বাঘিনী” সাক্ষাৎ!
কুত্সা নয়, প্রশংসা হয়!                  দুষ্টকবি সকাব্যে কয়
দিদি টাটা বাদে এখন সবাই কুপোকাৎ॥
.                      **************************   কলকাতা, ১৯.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
বছর দুই শাসন যাইতে                   নীল-সাদার রঙে মাইতে
দিদি বলেন -- সব কাজ হলো সারা।
মাঝে সদর্পে বলেন                        ফেসবুক-টুইটারে চলেন
--- আগামী নির্বাচনটি তার ধরা॥
দেশোদ্ধারের লক্ষ্যে হোক              বা কমিশনের দিকে চোখ
প্রকল্পের টাকা ফেরত যায় না, সত্য।
নীল সাদায় রাস্তাঘাট                   কিন্তু, গণতন্ত্র সন্ত্রাসের হাট
এই কি ছিল পরিবর্তনের শর্ত ?
অগ্নিকন্যা নাম যথার্থ                         শাসিতের রক্ষক-সমার্থ
বাম-শাসকের তিনিই ছিলেন ত্রাস।
এখন পাশা উলটে গেরো                  শুধু তাঁরই পোয়া বারো
আম জনতা করে হাস্ ফাস্॥
থমকে গেছে সিঙ্গুর গ্রাম                     বিস্মৃত আজ নন্দীগ্রাম
ছিল কেবল এরা সিঁড়ির ধাপ ?
অগস্ত যাত্রায় টাটা                     শাস্তি হয়নি কোনো ব্যাটার
খুনিদের আজ সাতখুন মাফ॥
তিনি যখন বিরোধী নেতা                শাসক যদি করিত যা তা
শাসকের পাকা ধানে দিতেন মই।
কাড়িতো ঘুম শাসকের চোখের         চিন্তায় শাসকের চুল পাকে
দিদির মত বিরোধী নেতা কই?
মা-মাটি-মানুষের নামে                      এমন নৈরাজ্য, নেমে
আসিবে যদি ঘূর্ণাক্ষরেও জানিতাম---
দুষ্টকবি কহে ভাবি’                               পরিবর্তনের দাবী
তাহা হইলে মুখেও নাহি আনিতাম॥
.                        ************************** কলকাতা, ৪.৭.২০১৫
.
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ ছড়াটিতে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ ছড়াটিতে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ ছড়াটিতে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
মাননীয় মনীশ গুপ্ত         বিদ্যুতমন্ত্রক হইছেন প্রাপ্ত
তাঁহার কথাই কইয়া হই তুষ্ট।
প্রবল পরাক্রান্ত বাম                               যখন ছিলেন গদিয়ান
গৃহসচিব-পদে উনি উপবিষ্ট।

তখন শীর্ষস্থানে বঙ্গে                           জ্যোতি বসু বসিয়া টঙ্গে
দেড় যুগ অতিক্রান্ত কাল।
তাঁহারই দক্ষিণ হস্ত                                   হইয়া মণীশ, ব্যস্ত
উনিশশো তিরানব্বই সাল॥

মমতারই উদ্যোগে লড়ে                      মহাকরণ অভিযান করে
যুবকংগ্রেসের বিশাল দল।
আসি’ ধর্মতলার প্রান্তরে                        পুলিশ আটকাইতে নারে
চালায় গুলি ঠেকাইতে গণ্ডগোল॥

তেরোটি পরাণ গেল                         জ্যোতি বলে “ভাল হইল”
বুদ্ধ বলে “তদন্তের নেই প্রয়োজন”।
গৃহসচিব মণীশ দাদা                     গুলি চালনায় দেন নাই বাধা
আদেশের বিরুদ্ধে ছিলেন --- ক'ন এখন॥

চুপ করিয়া ছিলেন তিনি                    প্রতিবাদ করেন নাই জানি
আদেশ কি দিয়াছিলেন তিনিই?
কে বলিবে আসল সত্য                      সুশান্ত-কমিশন হইল হদ্দ
ফাইল-পত্র হইছে লোপাট শুনি॥
দুষ্ট কবি
.
কেন গুলি চলিল বক্ষে?                      কেন নহে পদের লক্ষ্যে?
কে দায়ি এই গণহত্যার?
ইহা নিয়া তর্কে দেশ                        আঠারো বছর হইছিল শেষ
ধাক্কা লাগে ইহার পরের বার্তার॥

পরিবর্তন হইল শুরু                                  বামেদের পতন গুরু
বিধানসভার প্রার্থীবাছাই কালে।
এখনও সন্দেহের ঘেরে                       তবুও দিদি কিসের ফেরে
মনীশ গুপ্তে প্রার্থী করে দিলে॥

মণীশ গুপ্ত দিদির পছন্দ                          পাইল যাদবপুর কেন্দ্র
ভোটে হইলেন বিধায়ক জিত্যা।
দিদির এত প্রিয় সান্ত্রী                               হইলেন বিদ্যুত মন্ত্রী
তেরো শহীদের রক্ত কইব়্যা মিথ্যা॥

দিদির এ কেমন কর্ম?                        কাপিলো না তাঁহার মর্ম?
তেরোটি হত্যার নাই প্রতিকার?
দুষ্টকবি হতবাক হইলো                      সংক্ষেপে এই প্রশ্ন কইলো
গণহত্যার এ কেমন পুরস্কার?
.                      **************************   কলকাতা, ২১.৭.২০১৫

শ্রীমতী রূপা গাঙ্গুলী -
ডক্টর নির্মল মাজি -
নির্মল মাজির কর্ম-বচন -
মুকুল রায় আছেন দলে -
শ্রীযুক্ত রাহুল সিংহ -
অভিনেতা কৌশিক সেন -
মহামতি মদন মিত্র -
অম্বিকেশ মহাপাত্র -
শিলাদিত্য চৌধুরী -
শ্রী সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় -
সভাকবি সুবোধ সরকার -
সঙ্গীতজ্ঞ বাবুল সুপ্রিয় -
সারদার পদাবলী -
কবিবর সুনীল গাঙুলী -
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
জনগণ ভালবাসিয়া ডাকিতো হার্মাদ
পার্টি ক্যাডার ভালো                                   দুরমুসে নাম ছিল
জনগণ ভালবাসিয়া ডাকিতো হার্মাদ।
ছুঁচো-মারা নোংরা কাজ                       গ্রাম কে গ্রাম দখলের রাজ
অবাধ্য জনতার ছিল পরমাদ॥
প্যাঁদাইয়া ছাড়াইতো ভুত                         জ্যোতি-বুদ্ধদের সুপুত
দলের “সম্পদ” এবং কর্মী ।
একটানা পঁয়ত্রিশ বছর                            বামেদের শাসন জবর
বাম জমানার রেড-আর্মি॥
দেয়াল দখলে শুরু                                     বুথ-ক্যাপচারের গুরু
রিগিং সাইন্টিফিক্ বা ক্লাসিকাল।
সন্ত্রাসের ঘেরাটুপি                                  ভোট-গুনতির কারচুপি
সবেতেই ইঁহারা ছিলেন মহাকাল॥
বামেদের ধ্বজা ধরিয়া                                সর্বঘটে পার্টি করিয়া
আলিমুদ্দীনে বাঁধা ছিল সবই।
সাঁইবাড়ী হত্যাকাণ্ড                                 মরিচঝাঁপির লীলাভাণ্ড
আরও কত ক’বে দুষ্টকবি॥
পরিবর্তন আসিল শেষে                         বুদ্ধের শাসন ধূলায় মেশে
লণ্ডভণ্ড হইলো বামফ্রন্ট।
ক্ষমতায় দিদি বসেন আসিয়া                হার্মাদকুলও আইলো ভাসিয়া
তৃণমূলে ঢুকিয়া হয় যশবন্ত॥
জামার “পরিবর্তন” করিয়া                         হার্মাদকুল রাজ্যজুড়িয়া
দিদির হইয়া করে রাজ্য ত্রাসন।
তৃণমূলের আদি যারা                          তাহাদেরও প্যাঁদাইয়া সারা
হার্মাদই, লাল-তৃণমূল এখন॥  
.                      **************************   কলকাতা, ১৯.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
সাত্তোর গ্রামের এই ঘটনাটি এমন
যে তা নিয়ে দুষ্টকবি এখনও কোনো
ব্যঙ্গচিত্র এঁকে উঠতে পারেননি।
যতদিন না পারেন, ততদিন এই
প্রতিবাদী কালোই এখানে থাক।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
ডক্টর মিশ্র সূর্যকান্ত       পরিবর্তন অতিক্রান্ত
হইলেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা!
সাধ ছিল তাঁর ডাক্তারি                   সাধ্যে এল সত্তার-ই
পঞ্চায়েত ও স্বাস্থমন্ত্রী যথা॥
বামফ্রন্টের যুগে                    মানুষ মরিতো ভুগে ভুগে
হাসপাতাল আর মর্গ ছিল সমান।
সূর্যর চলিছে দুঃসময়                 দেয় মিডিয়ায় ব্যঙ্গময়
শাসক-বিরুদ্ধ তীক্ষ্ণ সব বয়ান॥
পরিবর্তন-ঝড়ে                           হাহাকার বামের ঘরে
বুদ্ধ স্বয়ং হারিয়া সর্বস্বান্ত।
যখন সিপিএমের দুর্দিনে      তাঁদের দেখিনা কোনো দূর্বীনে
বাতি দিতে রইলেন সূর্যকান্ত॥
পরিবর্তন এলে                   এবং কিছুকাল আরও গেলে
দিদির মহান কর্মে ধরে মাথা,
এমন মাত্স্যান্যায় দেখিয়া                   সবাই লয় মানিয়া
ছিল পরিবর্তন বাঙালীর হঠকারিতা॥
বুদ্ধ অবসাদে                       তাই তিনিই বিধানসভাতে
সিপিএমের সবচেয়ে বড় নেতা।
যদি দল জেতে নির্বাচনে               তবে তাঁরই কপালগুণে
মূখ্যমন্ত্রী তাঁহারই হইবার কথা॥
কিন্তু চলিছে কানাকানি              সোমনাথও আসিছে শুনি
দিচ্ছে শান্ সি.এম.-গদির তরে।
দুষ্টকবি বলে                           দলের দুর্যোগের কালে
সূর্যই দলের তরী পার করে॥
.               **************************   কলকাতা, ২২.৭.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সাংসদ শ্রী কুণাল ঘোষ     এখন দিদির “নন্দ ঘোষ”
একদা ছিলেন দিদির বড় প্রিয়।
সংবাদ প্রতিদিন এর এডিটর           এবং চ্যানেল টেন এর ভিতর
প্রধান নিয়ত্রণও ছিল তদীয়॥
দিদি অন্ত ছিল প্রাণ                               তখন যেইখানেই যান
গিয়া তিনি করিতেন দিদির নাম।
হইয়া প্রসন্ন, দিলেন দিদি                         রাজ্যসভায় দলের গদি
বঙ্গে উত্তাল সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম॥
মিডিয়ায় পরিচিত মুখ                         নাহি ছিলো কোনো দুখ
কত অনুষ্ঠানের সঞ্চালক।
এরই মাঝে তালে গোলে                           সারদা গোষ্ঠির হইলে
মিডিয়ার সি-ই-ও, ঝিনচ্যাক্॥
দুর্যোগের ঘনঘটা                                    ঢাকিল তাঁহার ছটা
পরিবর্তন-পরকালে।
সারদা কেলেঙ্কারি ফাঁস                        তাঁহার নাম করিল প্রকাশ
সুদীপ্ত সেন, সিট-এর তদন্তজালে॥
নাম তো আরও বহু উঠিল                     নেতা মন্ত্রী জড়াইয়া গেল
কিন্তু বলির পাঁঠা কেবলই কুণাল।
নিন্দুকে বলে, সিট-এর নামে                 পুলিশ, তথ্য লোপাটে নামে
বাঁচাইতে শাসক দলের রাঘব বোয়াল॥
সারদার প্রতারিত জনে                            চাহিল সিবিআই, রণে
যাতে তদন্ত চলে ঠিকঠাক।
সিবিআই-ইডির জাঁতা ঘুরিলো              রাঘব বোয়াল ধরা পড়িল
থামিলো মদনের জয়ঢাক॥
দুষ্ট কবি
.
এত কেস কুণালের নামে                         ঠুকিলো পুলিশ-প্রশাসনে
জীবনভর সে বেইল নাহি পায়।
কুণালের কঠোর হাজতবাস                  মদনের হাসপাতালের রাস
জেলেই বৃদ্ধ হইয়া গেল, এই শ্যামরায়॥
বলির পাঁঠা হইছে বুঝিয়া                  মিডিয়ায় কুণাল দিল কহিয়া
সারদায় দিদিই, আজ সবচেয়ে লাভবান।
সেই থেকে দিদির পুলিশ                    ও আদালতের উকিল মুনিষ
আদালতে রে রে করিয়া গণ্ডগোল বাঁধান॥
কুণাল সামনে আইলে পরে                   জোরে শব্দ-চিত্কার করে
কুণালের কথা নাহি যায় শ্রবণ।
ইহা তো আদালত চত্তরে                       একই ছবি এজলাস ঘরে
জজ সাহেবও শুনিতে কষ্ট পান!
এই কাণ্ড দেখিলে, মনে                       পড়িয়া যায় খেলা দক্ষিণের
বাগে আনিবার খেলা, চাপিয়া ষাঁঢ়ে।
চলিতে থাকিলে এভাবে                 কোনোদিন উহার প্রাণটাই যাবে
ভুত হইয়া চাপিবে কি ঘাড়ে?
প্রতিবাদে এই সারদাধীশ                   জেলের ভিতর খাইলো বিষ
আত্মহত্যার করিলো ব্যর্থ চেষ্টা।
অনশনেও ইনি বসেন                            জজকে সেই কথা বলেন
কানেও তোলেনা এই পোড়া দেশটা॥
যদি ধরি সবই “ঠিক থা”                 আর কুণালের কথা ডাহা মিথ্যা
তবে শাসকদলের ভয়ের কি কারণ?
হোক না তদন্ত সোজা                        বন্ধ হউক এই শব্দের গোঁজা
দুষ্টকবি কয় --- এ কোন আইনের ধরন?
.                      **************************   কলকাতা, ২৪.৭.২০১৫
(সিট অথবা
S.I.T. = Special Investigation Team, WB Govt.
ইডি অথবা E.D. = Enforcement Directorate, Central Govt.
সিবিআই অথবা C.B.I. = Central Bureau of Investigation, Central Govt.
সুদীপ্ত সেন - কুখ্যাত সারদা গোষ্ঠির মাথা। সারদা প্রতারণা মামলার মূখ্য
আসামী। সি-ই-ও অথবা
C.E.O. = Chief Executive Officer )
যে কোনো কবিতায় ক্লিক্ করলেই সেই কবিতাটি আপনার ব্রাওজারের ডান দিক ঘেঁষে ফুটে উঠবে
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
দেবাশিষ রায় সুরকার    তিনি সুরের মালাকার
গ্রামে গঞ্জে বাজিতো তাঁর গান।
পরিবর্তনী আন্দোলনে                  মাতাইয়াছিলেন সুরে গানে
গাহিতো সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম॥

পরিবর্তনের আগে                   বহু গায়ক ও ব্যাণ্ডের ভাগে
ছিল, পুরস্কারের ঝুলি চকমকে।
দিদির উপর করিয়া ভরসা            তিনি করেন গানের বর্ষা
জীবন জীবিকা তুলিয়া দিয়া ডকে॥

পরিবর্তনের পক্ষে, তাই                যাহা হইবার হইলো তাই
বন্ধ সকল গানের জলসা তাঁর।
প্রতিষ্ঠিত ছিল যাঁহারা             পকেট ভরিয়া চলিলো তাহারা
বামফ্রন্টের ছায়ায় পুরস্কার॥

রচিয়া নব সঙ্গীত                           শুনাইলো গুরুরে গীত
তিরস্কারিল গুরু --- বাম দলের।
দিদির জমানা শুরু                        ডিগবাজি খাইলো গুরু
দিদির প্রসাদ মাথায় রাখেন তুলে॥

যারা মাড়াইতো না ছায়া               দিদিরে করিতো না মায়া
রাখিতো শতহস্তের ফারাক।
পরিবর্তনের পরে                         তাদেরই ডাকিলো ঘরে
কেবল "সেলেব্রিটি" পাইলো সেই ডাক॥
দুষ্ট কবি
.
বামফ্রন্টের কালে                         বামের ইস্তাহারে মিলে
দিতেন দিদির বিরুদ্ধে তাঁরা সই।
এখন দিদির সভা                         মাতায় তাদেরই শোভা
এমন দিদি অন্ত প্রাণ, আর নাই!

সেলিব্রিটি ডাকি আনি                 দিদি করিলেন মাথার মণি
ক্ষমিলেন ইঁহাদের ইতিহাস।
দেবাশিষের মতো                            দিদির দুর্দিনের যত
সাথীদের, দিলেন বনবাস॥

পরিবর্তন হইবার পরে                       দেবাশিষদের ঘরে
নাহি কোনো বিজয়ীর উল্লাস।
এখন দিদির দলে                 “তাঁর নামই শোনেনি” --- বলে
কালের কি কঠোর পরিহাস॥

দুষ্টকবি ছন্দে বলে                         এ সব ভাবিলে চলে?
লক্ষ্যে দিদি পৌঁছে গেছেন তাঁর।
মোড়ে মোড়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত             মঞ্চে পাগলুডান্সের গীত
দেবাশিস রায়ের আর কী দরকার?
.                      **************************   কলকাতা, ৩১.৭.২০১৫
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কালে দেবাশিস রায়ের সুরারোপিত দুটি গানের
সিডি বার হয়। “বাংলা জ্বলছে” এবং “ভাঙো বাস্তিল”। “বাংলা জ্বলছে” তে
গান গেয়েছিলেন অমিত রায়, প্রবীর বল, সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুরূপ ও
দেবাশিস রায় নিজে। “ভাঙো বাস্তিল” এর সব কটি গানই ছিল তাঁর নিজের
কণ্ঠে। গানগুলি আন্দোলনকারিদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়। “বাংলা জ্বলছে”
সিডিটি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে সেই
সিডি তাঁদের বিভিন্ন স্টল থেকেও বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অমিত রায় ও প্রবীর বলের কণ্ঠে, দেবাশিস রায়ের সুরে, অমিত রায়ের সঙ্গীতায়োজনে, দুষ্টকবি রচিত, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের এই জনপ্রিয় "বাংলা
জ্বলছে তাই জ্বলুক" গানটি শুনতে এখানে ক্লিক করুন . . .
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
নির্মল মাজির কর্ম-বচন         রচেন গাথা এমন ধরণ
বঙ্গের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে।
নিত্যি নব কর্ম তাহার                   জোটায় রশদ কবির লেখার
ধন্য দুষ্টকবি, নমি তাঁরে॥

সম্প্রতি এই বদ্যিপ্রবর                      ফতোয়া দিয়াছিলেন জবর
সুপুত্রের পরীক্ষার সুবিধার্থে।
পুত্র তাঁহার বিদ্যার আধার               ডাক্তার হইবার ইচ্ছা তাঁহার
পঠন-পাঠন ডাক্তার হইবার স্বার্থে॥

ডাক্তারি পরীক্ষার তরে                         সীট্ পড়ে তাঁর বহু দূরে
অন্য কলেজের কোনো হল-এ।
অদেখা অজানার মাঝে                     পরীক্ষা দেবার দুঃখ কী যে
বুঝিয়া সব পিতার বক্ষ টলে॥

দিদির প্রিয় ভাইদের একজন            ফতোয়া দেবার তিনি মহাজন
কহেন --- পুত্রে দিতেই হবে ছুট্।
এক্জাম হলে বসিবেন কোথায়               পুত্রের ইচ্ছাতেই যেন হয়
সিসিটিভির বন্ধ থাকুক বিদ্যুৎ॥

ঘোর অন্যায় ঘটাইয়া দিল!                   নির্মলরে “না” করিয়া দিল!
দুষ্টকবি কয় --- ঘোর কলি কাল!
এমন যাঁর মহান আত্মা                        এমনতর ফতোয়ার কর্ত্তা
বাঙ্গালীরা বুঝিলোই না তাঁর চাল ---

আগামী দিনের তরে                     নির্মল মাঝির ফতোয়ার ধারে
ডাক্তার হইতো টোকাটুকির পর্ব্বে।
পরিবর্তনের পরে                            দিদি ও তাঁর ভাইদের বরে
বঙ্গজরা সশরীরে যাইতো স্বর্গে॥
.                        ************************** কলকাতা, ২৮.৮.২০১৫


.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
শ্রী সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়          দশদিকে তাঁর নাম ধায়
তিনি ইলেকশন কমিশনার দিদির পেয়ারের।
তিনি ডব্লুবিসিএস                                      তিনিই প্রথম এমন কেস
পূর্বে আইএএসরা বসিতেন এই চেয়ারে॥

চলিতো ঠিকঠাক সবই                      যদি ইতিহাসে আসিতো না কভি
শেষান নামের কোনো এক চরিত্র।
ছিল সেই বাপের ব্যাটার                                  এমনই বুকের পাটা
বাঘ ও গরুর একই ঘাটে ডুবিতো গাত্র॥

সংবাদ মাধ্যমে দেখি                              অতি সুবোধ বালক সে কি
লাগে মাধ্যমিকের ছাত্র অতি সৎ।
দিদির প্রিয় পাত্র ইনি                                      দিদিরে মনিব মানি
লেহনে ব্যস্ত দিদির পদ॥

অন্যায় অত্যাচার দেখিলে                         তাঁহার অন্তরাত্মা জাগিলে
কহেন তিনি করিবেন তার বিহিত।
তারপরেই “সূতা”-র টানে                              ডিগবাজি খান সসম্মানে
অপমানের বোধই তাঁর অবিদিত॥

তিনি হয়তো অতি চালাক                           নতুবা ডাহাবোকা বেবাক
বোঝেন না কি তাঁহার পদমর্যাদা?
সাংবিধানিক তাঁহার পদ                                 গণতন্ত্র রক্ষার মসনদ
রাজ্যে সুষ্ঠ নির্বাচনের তিনিই দাতা॥
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
হইতেন ব্যাঘ্রযথা দৃষ্ট                          কিন্তু ব্যাঘ্রের মাসী হইয়াই তুষ্ট
মর্যাদা তাঁর পদের ভূলুণ্ঠিত।
সেই জ্ঞান কি আছে তাঁর?                        নইলে, ভুল কেন বারবার?
দুষ্টকবি ভাবিয়া হয় শঙ্কিত॥
.                          **************************       কলকাতা, ৬.১০.২০১৫

দুষ্টকবি কয়, চাইয়া ক্ষমা,                               এর আগের স্তবকখানা
লিখিয়াছিলাম ইস্তফার পূর্বে।
ইস্তফার খবর শুনিয়া                                    সুখ হইতেছে জানিয়া
তাঁহার, অপমান-বোধ যায়নি নদীর গর্ভে॥

সুষ্ঠ নির্বাচন দিবার                                     সুযোগ পাইয়া হারাবার
অনুশোচনা হয়তো তাঁহার থাকবেই।
ইহা ভাবিয়াই দুষ্টকবি                                    সম্পাদিল তাহার ছবি
বাকি যা রহিল তাহা, তাঁহার প্রাপ্যেই॥

.                          **************************       কলকাতা, ৭.১০.২০১৫
নির্বাচন কমিশনারের অফিসের মধ্যেই, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের চার ঘন্টা ব্যাপি অবস্থান ও তাঁর উপর অকথ্য বাক্যবাণ ও মানসিক
অত্যাচারের ফলে, শ্রী সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়, গতকাল (৬.১০.২০১৫) ইলেকশন কমিসনারের পদ থেকে ইসতফা দেন। কিন্ত তাঁর পূর্বসূরী
শ্রীমতী মীরা পাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করলে তাঁর কার্যকাল কর্তাভজনার চরম নিদর্শন হিসেবে অনুজ্জ্বল হয়ে থাকবে। শেষ পর্যন্ত তাঁর
আত্মমর্যাদা বোধ তাঁকে ইস্তাফা দিতে বাধ্য করে। তাঁর উত্তরসূরীরা এই ঘটনা মনে রাখবেন আশাকরি।  
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সভাকবি সুবোধ সরকার।              বামফ্রন্ট যখন ছারখার
করিতেছিল পরিবর্তনের পূর্বে।
মিডিয়ার চ্যানেলে চ্যানেলে                   তিনি থাকিতেন বামের প্যানেলে
তাঁহাদের কুকাজ ঢাকিতে, সগর্বে॥

বামফ্রন্টের সভাকবি                                       সর্বদা থাকিতেন ডুবি
সর্বত্র সম্মানের আতরে।
স্কন্ধে সম্মাননার ঝুলি                                 পদে বিদেশ ভ্রমণের ধূলি
ঈর্শা জাগিত অনেকেরই --- ভিতরে॥

কম্যুনিস্ট ছিলেন কি না,                            “দেব-দেবী” তাঁহাদের মানা,
পাছে রাগিয়া যদি হন তেলে-বেগুন!
দুষ্টকবি তাই সভয়ে কয়                                “দেবী সরস্বতীর” কৃপায়
লেখনী তাঁর ঝরাইত আগুন॥

সবই চলিতেছিল ঠিক                               পরাক্রান্ত বামফ্রন্টের দিক
শ্মশানের শান্তিতে ছিল দেশ।
জাগিলো সিঙ্গুর গ্রাম                                        পরে ভীষণ নন্দীগ্রাম
পরিবর্তনে উলটাইলো গণেষ॥

কবির হইলো ভুল                                     রাজসভার সুখের মাশুল!
বামের রাজ্য যাবে, ভাবেন নাই।
হঠাৎ পতনের ঠ্যালা                                       ছিনিয়া লইলো ম্যালা
সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য-দুধের গাই॥

দুঃখ তো সুখের ছায়া                                      ছাড়েন জগতের মায়া
কবি পত্নী ক্যানসারের কোপে।
মল্লিকাও স্বনামে খ্যাত                                    গড়েন নারীবাদ-মাহাত্য
তাঁর লেখনীর তীব্র প্রকোপে॥
দুষ্ট কবি
.
স্তব্ধ হইয়াছিল দেশ                                      দেখিয়া এই কবির শেষ
যেন প্রতি ঘরে আপন-বিয়োগ।
ছুঁইয়াও ভিনগ্রহের মাটি                                      লাচার মনুষ্য জাতি
রোধিতে পারে না এই রোগ॥

ইতিমধ্যে আসীন শাসনে                                 মা মাটি মানুষের নামে
দিদিমনির জয়জয়কার।
পালা বদলের মেলায়                                        জার্সি বদলের খেলা!
ধান্ধাবাজদের খুলিলো স্বর্গদ্বার!

বুদ্ধিজীবী ছিল যত                                          দিত যাঁরা স্বেচ্ছামত
বামফ্রন্টের ইস্তাহারে সই।
নানা ছুতো করে ছুটে                                      গেল তাঁরা কালীঘাটে
দেবীর থানে পূজার প্রসাদ চাই॥

দিদি কল্পতরু বঙ্গে                                         ভূষণ-বিভূষণের রঙ্গে
কিনিলেন ইঁহাদের মাথা।
সেলিব্রিটিদের পাশে                                         দিদিও আনন্দে ভাসে
অপূর্ব এক দেওয়া-নেওয়া গাথা!

এমনই পটভূমিকায়                               মিশেল-ফুকো ঝেড়ে মিডিয়ায়
“বিকল্প নেই” কবি সুবোধ বলেন।
পত্নী বিয়োগের পরে                                      বামেরা পুছে নাই তাঁরে,
বলিয়া, লোমহর্ষক ডিগবাজিটা খেলেন!

নিন্দুকেরা আরও কত কয়                            সে সব বাদ রাখিয়া, যা হয়
দুষ্টকবি রচেন এই স্তবক।
কাব্য জগতের তারকা                              এখন অলিম্পিকের অপেক্ষা
ডিগবাজিতে পাবেনই স্বর্ণপদক॥
.                          **************************         কলকাতা, ২১.১০.২০১৫
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সঙ্গীতজ্ঞ বাবুল সুপ্রিয়              ছিলেন মোদির এতই প্রিয়
তাঁকে বি.জে.পি.-র টিকিট ধরাইয়া দিলেন।
তিনি এখনও ভারতবর্ষের                            বলিউডের উত্কর্ষের
প্রথমসারির প্রথম দিকে চলেন॥

সবই চলিতেছিল ঠিক্                               প্রাণপণ লড়িয়া নির্ভিক্
হইলেন আসানসোলের সাংসদ।
দিদির ভাইদের যাহা ছিরি                  সেই তুলনায় তাঁহাকে ঘিরি
বাঙালী কিঞ্চিৎ হইলো গদগদ॥

তাঁহার সভায় উপরি পাওনা             ভাগ্যে থাকিলে মুফতের “গানা”
সবে, জনপ্রিয়তায় উঠিতেছিলেন শীর্ষে।
তাঁহার এই উত্থান দেখিয়া                     দিদির দল জ্বলিয়া পুড়িয়া
কুত্সা বেকার, ছড়াইলো ভারতবর্ষে॥

এমন সময়ে সুনামীর ন্যায়                          চাপিলো সারদা-র দায়
দিদির দলে গেরেপ্তারের লাইন!
ই.ডি.-সি.বি.আই.-ত্রিশূলে                    কাড়িয়া হাওয়া দিদির পালে
হইলো, মোদি-দিদির ঊহ্য-চুক্তি ফাইন!!

সে এক অপূর্ব রসনা                           মঞ্চে একে-অপরের ভজনা
বঙ্গরাজ্য মোদি-দিদিময়!
তদন্তের রসিতে ঢিল                              গেরেপ্তারির সংখ্যা Nil
কেবল, বলির পাঁঠা কুণাল-মদন হায়!!
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
সেই সব পিরিতের দিনে                            ভিক্টোরিয়ার ময়দানে
বাবুলকে দিদি কইলেন --- সঙ্গে চল্।
ঝালমুড়ি কিনিয়া ঠোংগায়                  খাওয়াইলেন সদ্ভাবের গঙ্গায়
খাইয়া বাবুল, প্রায় গলিয়া জল!

দুষ্টকবি কহে বঙ্গে                                  দূর-দূরান্তে পার্টির রঙ্গে
নিত্য জ্বলে গ্রামের পরে গ্রাম।
পাড়ুই-সাত্তোরে, সেথা                            গিয়াছে উলু-খাগড়ার মাথা
তাঁহাদের, এই ঝালমুড়িতে কি কাম?

.                             ***********************       কলকাতা, ১০.১১.২০১৫
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সারদার পদাবলী
মহামহিম সুদীপ্ত সেন                             প্রবাদের “গৌরী সেন” ছিলেন
পরিবর্তনের পরের এই বঙ্গে।
“সারদা চিটফাণ্ড”-এর গীত                          গাহিয়া করিলো সবারে প্রীত
গরীব চলিবে চকিতে ধনীর রঙ্গে॥

পৈতৃক নাম শঙ্করাদিত্য                             শুরুটা নাকি নকশাল-দৌরাত্ব
নিন্দুকে যত রটনা করিতেছে।
নব্বইয়ে ক’রে প্লাস্টিক সার্জারি                  নব নামে শুরু এই জারিজুরি
দেশোদ্ধারে নামিলেন মুখ মুছে॥

হত-দরিদ্রের জমাইয়া রাখা                           হাজার হাজার কোটি টাকা
সরাইয়া তিনি লভিলেন এই নাম---
যে, বঙ্গভূমের ইতিহাসে                                    উজ্জ্বলতম প্রতিভাসে
সর্বোচ্চ প্রতারকের সম্মান॥

ক্রমে ক্রমে টাকার গন্ধে                               ভীড় করিলো সকাল সন্ধ্যে
পরিবর্তনোত্তর দিদির ভাই-বোন!
হাত সাফাইয়ের এ মহাযজ্ঞে                          তাঁরাই জুটিয়া পার্শে সর্বাগ্রে
সুদীপ্তর মঞ্চে জুড়িয়া দিলেন নাচন॥

দেখিয়া এঁদের সুদীপ্তর সঙ্গে                                     সর্বহারা যত বঙ্গে
ভাবিলো বুঝি
“SAFE”  তাঁদের টাকা।
জঙ্গলমহলের আভায়                               সারদার অ্যাম্বুলেন্সের সভায়
দিদিও নাকি দিয়াছিলেন দেখা॥
দুষ্ট কবি
.
নিন্দুকে কহে, ইমরান ভাইজান                 করে, বাংলাদেশে টাকার চালান
যা, খাগড়াগড়ে বোমা হইয়া ফাটে।
জনসেবার অ্যাম্বুলেন্স করিয়া                          টাকা পাচার বস্তায় ভরিয়া
ই.ডি.-সি.বি.আই. সেই জট্ কাটে॥
কে বা বাদ যায় এই সমারোহে                  নেতা ও বুদ্ধিজীবী মিলে দোহে
যে যা পারিলো তুলিয়া ভরিলো পকেট।
অর্পিতা-শুভা-অপর্ণা থেকে                               মুকুল-মদন-কুণাল হাঁকে
কেবল মিঠুনই ফিরাইয়া দিল প্যাকেট॥

দেখাইয়া দিদিভাইদের প্রেজেন্স                করিয়া অনেকেরই মেইন্টেনেন্স
সুদীপ্ত ওঠেন সবার প্রিয় হয়ে।
কোটিতে দিদির শিল্পীসত্তা                            কেনেন ছবি সারদা কর্তা।
গুপ্ত মিটিং কালিংপং-এর ডেলো-য়॥

সেই সব কথা বেফাঁস বলিয়া                             কুণাল গেল রসাতলিয়া
জেলেই তিনি বৃদ্ধ হইয়া গেলেন।
নিন্দুকে কয়, সিট-গোয়েন্দা                              তদন্তের পুঁথি গণ্ডা গণ্ডা
মুছিয়া সুন্দর সাফ করিয়াছিলেন॥

এই, স্বর্ণ ডিম্ব প্রসবী হংস                     দেখিয়া বাড়িলো লোভের অংশ
গেল প্রিয় ভাইদের ক্ষুধা বাড়ি’।
মেটাইতে এদের তৃষ্ণা-ক্ষুধা                          বহাইতে গিয়া টংকা-সুধা
ডোবে, সারদা সহ গরীব নিবেশকারী॥

সুদীপ্ত সেন সে মানুষ রসিক!                     রাখিয়াছিলেন সেবিকা সঠিক
দেবযানি ম্যাম্, ডিরেকটর সারদার।
দুইয়ে মিলিয়া মৌকা বুঝিয়া                          টাকা-কড়ি ধুইয়া মুছিয়া
পলাইলেন চোখে ধূলা দিয়া সবার॥
সংবাদে কয় -- এক নেতা দেন                   রচিয়া তাঁদের পলায়ন-প্ল্যান,
কাশ্মীর দিয়া যাইতে পাকিস্তানে।
সেপথে মৃত্যু অবধারিত,                          মরিলে সাক্ষী-সাবুদ মিটিতো,
বুঝিয়া, সুদীপ্ত ধরা দিলো সজ্ঞানে॥

সারদা-কেলেঙ্কারির খবরে                             লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘরে
নামিয়া আসে হাহাকার অন্তহীন।
পাওনাদারের ত্রাসের দরুণ                         কত শত করে আত্ম হনন
আজও বিচার পাওয়ার আশা ক্ষীণ॥

সুদীপ্ত না হয় মহা ধড়িবাজ                   সবহারাকেও লোঠা তার কাজ
প্রতারক! তাই রয়েছেন শ্রীঘরে।
যাহারা সুদিন আনিবার ছলে             ভোটে জিতে নাচে সারদার তালে
তাঁহাদের মোরা ডাকিবো কি নাম ধ’রে?

দুষ্টকবি কয় চাইয়া ক্ষমা                        সারদা বোঝনো তাঁর কম্ম না
বোঝেনি এখনও ই.ডি.-সি.বি.আই. মাসি!
বুঝিতোই যদি দুষ্টকবি                              দেখিতো সবাই অন্য ছবি
কাব্য ছাড়িয়া কামাইতো ধনরাশি!!

পরিবর্তন-পরে, সুদীপ্ত, বঙ্গে                   আসিতো না যদি, সারদা-সঙ্গে
ইতিহাস তবে এমনই কি প্রবাহিত?
বাঁশ না থাকিলে বাজিতোনা বাঁশী         হয়তো র’তো সৎ ক্ষমতায় আসি
দুষ্টকবি, অসৎ-এর জয়গাথা নাহি রচিত॥
.                                  ***********************         কলকাতা, ১১.১১.২০১৫
সিট অথবা
S.I.T. = Special Investigation Team, WB Govt.
ইডি অথবা E.D. = Enforcement Directorate, Central Govt.
সিবিআই অথবা C.B.I. = Central Bureau of Investigation, Central Govt.
সুদীপ্ত সেন - কুখ্যাত সারদা কর্ণধার। সারদা প্রতারণা মামলার
মূখ্য আসামী।
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
.
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
কবিবর সুনীল গাঙ্গুলী        তিনি কবে গিয়াছেন চলি’…
তাঁদের নিয়া কেন টানাটানি?
দুষ্টকবির ধরিলো কি                                ভীমরতি। বাড়িলো কি
“অম্ল”-এর ভাগ, কমি’ “মধু”-র বাণী?

সেইসব কিছুই নয়, হে সুধী!                    ঠিক ছিলো সব এই অবধি
গোল বাধাইলো সুনীলের প্রাণের ধন।
“কৃত্তিবাস” পত্রিকা তাঁহার                       বঙ্গের-মহা-কাব্য-সমাহার
কাড়িয়া লইলো নামটি অন্য জন॥

“নতুন” শব্দটি নামে জুড়িয়া          আইনের ফাঁকের দোহাই পাড়িয়া
কোনো যাদুকর, প্রকাশিল “নতুন কৃত্তিবাস”।
কি জানি কি পাইবার গন্ধে        বা নিদেন মিডিয়া-ফোকাসের সন্ধ্যে
ব্রাত্য-সুবোধ খেলিলেন যাদুর তাস॥

এতই ক্ষুদ্র “নতুন” লেখা                    কষ্ট করিয়াও যায় না দেখা
পাঠক ভাবিবে, বুঝি আসল “কৃত্তিবাস”।
তঞ্চকতা না করিয়া যদি                       রচিতো নবীন পত্রিকাদি
বাঙালী পীঠ চাপরাইয়া কহিতো - শাবাস॥

কবিপত্নী স্বাতী-সহায়                        এখনও সম্পাদকের ভূমিকায়
তাই পত্রিকাটি বন্ধ, বলা ভুল।
পত্রিকাটি অনাথ ভাবিলে                     জোর করিয়া নাম কাড়িলে
হয়, দিনে দুপুরে ডাকাতি বিলকুল॥

সুনীল-শক্তি হাত ধরিয়া                    আরও কত-র লেখনী জুড়িয়া
গড়িয়া তোলেন সাধের “কৃত্তিবাস”।
পরিবর্তনের পরে বঙ্গে                  ডিগবাজী খাইয়া, লুঠেরার সঙ্গে
কবি-বুদ্ধিজীবী, করেন সহবাস॥
.                                  *****************         কলকাতা, ১৮.১১.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সুবোধ বালক যথা            রয়েছে বঙ্গে হেথা
নিত্যি-নূতন তার খেলা।
বেকার দুষ্টকবি                          দেখে করে কভি কভি
ধৃষ্টকাব্যে ছেলেখেলা॥
একদা সে নন্দনে                               বামেদের বন্ধনে
গুলজার করিতেন নরক।
দিদিভাইর গুষ্টির                                 করিতেন তুষ্টি
মিডিয়া চ্যানেলে বে-ধড়ক॥
কাস্তে হাতুড়ি ধোওয়া                    ভলগার বারি ছোঁওয়া
অবারিত বাণী, দিবা-রজনী।
হঠাৎ সেদিন দেখি                        বলে, সেই দিদিই নাকি
“নিও কমিউনিজমের জননী”!
মুর্খ বা শিক্ষিত                               কাফের বা দীক্ষিত
আছেন যতজন এই বঙ্গে।
মাথা চুলকিয়ে টাক                         হয়ে গেলো হতবাক
এই পরিবর্তনী রঙ্গে॥
এত বড় সম্মানে                               দিদি গ’লে, সজ্ঞানে
ভাবেন --- কি দেবেন তাহায়!
বড় দেরী করে এলি!                        ভূষণের ব্যাগ খালি!
তখন, গৌড়বঙ্গ
V.C. সহায়॥
সমাবর্তন হইলে                               
 D.Litt তাহারে দিলে
কিছু তো দেওয়াই হবে তাকে।
দিদিও দিলেন ঢা’লি                              সম্মাননার ডালি
সুবোধ
D.Litt পেল জেঁকে॥
D.Litt হইলো বটে                             মুড়ালো গাছটি নটে
গল্পটি ফুরালো কি শেষে?
হরিদাস বাঙ্গালি                           দিলো জোরে হাততালি
কিন্তু, সত্য
Delete হবে কিসে?
.                                  *****************         কলকাতা, ১৫.১২.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>

সুবোধ বালক যথা -
শঙ্কুদেব পণ্ডা -
সরস্বতী বিদ্যেবতী -
দেশপ্রিয় পার্কের বড় দুর্গা -
কৃষি মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা -
দুষ্টকবি মিলন -
“বহুজ” কবীর সুমন -

নারদার পদাবলী সহ
আরও সাম্প্রতিক কাব্য ও কার্টুনের জন্য
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে ২
পাতায় যান এখানে ক্লিক্ করে . . .
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
শঙ্কুদেব পণ্ডা                        ধরিয়া দিদির ঝাণ্ডা
নেতা ছিলেন যুব-তৃণমুলের।
দিদির প্রিয় ভ্রাতা                                  দলের যুব নেতা
শিক্ষা জগত নাচিত তার তালে॥
এত প্রিয় ভ্রাতা                                 মাথায় দিদির ছাতা
যারে তারে বলিতেন নাকি যা-তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে                                  তথা যত শিক্ষালয়ে
তিনিই ছিলেন শেষ-কথার দাতা॥

পরিবর্তনের আগে                            যখন নন্দীগ্রাম জাগে
ধরেন এক বাম নেতার ঘুষ।
তার, রিপোর্টারির চোটে               সেই নেতার চাকরি ছোটে
এখন জানি, সে সবই ছিল ফুস্॥
পরিবর্তনের পরে                                   মা সারদার ঘরে
তিনিও নাকি মাথা ঠেকাইয়াছিলেন।
গণমাধ্যমে শোনা                          ইডি সিবিআই-র বোনা
সেই জালে ধরা তিনিও পড়িয়া গেলেন॥

দিদির সাফ কথা                         নেতারা, খাইলে যথা তথা
দলের নামে দিও নাকো দোষ।
অর্ধচন্দ্র খাইয়া দলে                                  শঙ্কু এখন বলে
---দলের হইয়া কামাইয়াও, করি আফসোস!

গেল, পার্টি অফিসে থাকা                          উদ্বাস্তু, পথে একা
দিদির কথায় সবাই দিল আড়ি।
দুষ্টকবি জিঘায়                             এখন বাঁচার কি উপায়?
রাজ-সাক্ষী হইলে এড়াবে, কোমরেতে দড়ি!
.                                  *****************         কলকাতা, ১৫.১২.২০১৫
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
সরস্বতী বিদ্যেবতী                চক্ষু দাও মা, দাও সুমতি
ধন্য দেখে তোমার অবতার।
ঘোর কলিতে আবার এলে               শুধু , গুলাম আলী চিনতে পেলে
বন্দিলেন জলসায়, কলকাতার॥

আমরা অবোধ পাপী-তাপী                              সারাক্ষণ নিন্দে জপি
আমরা তাই চিনিতে পারি নাই॥
দিদি-রূপে নব-কলেবর                               দৃশ্যত সে অতি মনোহর
ইনডোর স্টেডিয়ামের এরিনায়॥

মুম্বাই শহরে মানা                                       করিয়াছিল শিবসেনা
পাকিস্তানীর সঙ্গে কথা নয়।
সেই কারণে গুলাম আলী                         পান নি সেথায় হাত তালি
ভারতে বন্ধ সকল জলসা হায়॥

এই না শুনে সর্বপ্রথম                              দিল্লী-রাজা বুক ঠুকে কন্
তাঁর রাজ্যে গুলাম গাইবে গান।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল                            দিয়া বিরোধীদের সামাল
গুলাম আলীরে নিমন্ত্রণ পাঠান॥

তাই না শুনে দিদিও খাড়া                      এমন সুযোগ যায় না ছাড়া
আর কদিনেই আসিছে নির্বাচন!
তিনিও গুলামেরে কহেন                     আদাব মিঞা, হেথায় আহেন,
বলিয়া, তাঁরে জানান নিমন্ত্রণ॥

কি যেন এক হঠাৎ কারণ                       দিল্লী, গুলাম করলে বারণ
“অন্দর কী বাত”, আমরা জানিনা।
টুনটুনিতে বলিছে শুনি                       দিদির কোনো পেয়ারের গুণী
দিদি-তে "হ্যাঁ" আর দিল্লী-তে করাইলো "মানা"॥
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
এরই মধ্যে গুলাম-দেশী                        পাঠানকোটে করিলো পেশী
মারিলো সাত জওয়ান ইণ্ডিয়ান।
বিশ্বে পাকিস্তানের সুনাম                          সেথা কিছুই করেনা কাম
কিন্তু, উগ্রবাদের আঁতুড় ঘর মহান॥

উঠিলো ছিঃ ছিঃ রব                              নিন্দায় ভারতবাসী সরব
সাতটি চিতায় অগ্নি লেলিহান।
ক্রিয়া-কর্ম হয় নাই শেষ                         কাটে নাই গণহত্যার লেশ
কিন্তু, দিদির চাই-ই গুলামের প্রোগ্রাম॥

পুত্র-সম সাতটি জওয়ান                          দেশের জন্য দিলো পরাণ
দাগ কাটে নাই গুলাম-ভক্তের মনে।
আর ক’টা দিন পিছিয়ে দিলে             হইতো কি ভুল কোনো চালে ?
জিঘায় দুষ্ট কবি ও কয় জনে॥

কবে কার কথা---দিদি শোনে                       নির্বাচনের ঘন্টা গোণে
সংখ্যালঘুর ভোটের স্বপ্নাবেশ!
নিত্য পুলিশ ফাঁড়ি জ্বলে                              ধর্ষণ খুন সঙ্গে চলে
চোর-ডাকাতের ফাইল পুড়িয়া শেষ॥

প্রশ্ন মনে জাগে ভায়া                           দেশে যখন শোকের ছায়া
কেন, পাকিস্তানী গায়ক নিয়েই মাতি ?
জওয়ানের তাজা লাশের উপর                খুব জমিলো জলসা জবর
গুলাম বলেন - দিদিই সরস্বতী!

ভক্ত গুলাম, দিদি দেবী                          সঙ্গে আবার পুরুত সেবী!
রশীদ বাবা দ্বিজ এ উত্সবে!
দুষ্টকবির এমন ছড়া                                তালিবানী গন্ধ ছড়ায়
সঙ্গীত-প্রেমী উঠিবে রে রে রবে!
.                      **************************   কলকাতা, ১৫.১.২০১৬
১লা জানুয়ারী ২০১৬ তে পাঠানকোটের বিমানবাহিনীর
ক্যানটোনমেন্টে পাকিস্তানী জঙ্গীরা আক্রমণ চালায়।
তার কিছুদিন আগে মুম্বাই শহরে গুলাম আলীর জলসা
নিষিদ্ধ করে শিবসেনা দল। তা শুনে প্রথমে দিল্লীর
মুখ্যমন্ত্রী শ্রী অরবিন্দ্ কেজরিওয়াল গুলাম আলী কে
আমন্ত্রণ করেন দিল্লীতে গানের অনুষ্ঠান করার জন্য।
এরপরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ও গুলাম আলীকে আমন্ত্রণ জানান
কলকাতায় অনুষ্ঠান করার জন্য। কিন্তু এর পরেই
গুলাম আলী দিল্লীতে অনুষ্ঠানের “না” করে দেন এবং
কলকাতায় অনুষ্ঠানে সম্মতি জানিয়ে দেন। এটার
পেছনে কি কারণ তা আমরা জানিনা। কিন্তু রটনা তো
ছড়ায়। আর কথায় আছে - যাহা রটে তাহা কিছুটা
সত্য বটে! এর পরে পাক আক্রমণের ঘটনা ঘটে যায়।
সাতজন জওয়ান নিহত হন সেই আক্রমণ ঠেকাতে
গিয়ে। তাঁদের চিতার আগুন ঠাণ্ডা হবার আগেই
কলকাতায় গুলাম আলীর জলসা ঠিক করা হয়, ১২ই
জানুয়ারী। বহু মানুষ অনুরোধ করেছিলেন,
অনুষ্ঠানটিকে পিছিয়ে দেবার জন্য। কিন্তু কেউ কথা
শোনেনি। অনুষ্ঠানে গুলাম আলী, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে
“সরস্বতী দেবী” আখ্যা দেন। ওস্তাদ রশীদ খানও এই
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকায় দেখা যায়। এমন কি ওস্তাদ গুলাম আলী
ওস্তাদ রশীদ খানের সঙ্গে গলাও মেলান।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
দেশপ্রিয় পার্কের বড় দুর্গা
দেশপ্রিয় পার্কের থানে                  দুইহাজার পনেরোর থীম্-এ
“বড় দুর্গা” কৃতিত্বের রাখে দাবী।
ভাঙিলো বঙ্গের সর্ব রেকর্ড                           এত বড় সাইজের গড্
দেখে নাই ভেতো-বঙ্গজ-কূল কভি॥

স্পনসর ছিল স্টার সিমেন্ট                         কাছা দিয়া মাঠে নামেন
নূতন গৌরী সেন এর ভূমিকায়।
কোলকাতা শহর জুড়িয়া                       পোস্টার দিল নজর কাড়িয়া
খরচ নাকি কোটির ডাক হাঁকায়॥

সেই পোস্টার দেখিয়া দেখিয়া                      বাঙালী মনস্থির করিয়া
কোমর বাঁধিল --- এ দুর্গা দেখিবেই।
সকলেরই পড়িলো চোখে                        জানিলো ত্রিভূবনের লোকে
কেবল পুলিশই তা জানিতে পারে নাই॥

আসিলো শরতের কাল                            শিউলি-কাশফুলে সকাল
নৌকায় চাপি’ দুর্গা আসিলো দেশে।
পরিবর্তনের পরের সমাজ                      মধ্যগগনে দিদিভাইর রাজ
বাঙালী থাকে রোজ উত্সবের রেশ-এ।

থানা-পুলিশ-ক্লাবদের মিটিং             উপরতলার আদেশের ব্রীফিং---
পূজায় দিদিরে না ডাকিলে, নয়!
দিদিরে না পাইলে বুঝেন---                শাসক দলের নেতারা আছেন
যেন উদ্বোধনে উহাদেরি ডাকা হয়॥
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
মা-দুর্গার কদর গিয়াছে                   কদর, কে ফিতে কাটিতে আসে
মন্ত্রী, নিদেন নেতা শাসক দলের।
বিদ্বজনেরা ভাবিয়া না পায়                    পুলিশের এই সরল উপায়
কী করিয়া ক্লাব কর্তারা ভোলে॥

বঙ্গজগণ তাড়ায় মাতি’                     তৃতীয়াতেই পড়ে ঢাকে কাঠি
দেবীর আগমন ভি.আই.পি.-দের সাথে॥
যাহা হোউক, আসিলো পুজা                       মণ্ডপে মণ্ডপে দশভূজা
উপচিলো ভীড় কোলকাতার রাজপথে।

দেশপ্রিয় পার্কের কর্তা                       অগ্রাহ্য করিয়া পুলিশের বার্তা
সৌরভরে দিয়া ফিতা কাটাইলো।
পূজা কমিটির প্রমুখ                           ঢাকিয়াছিল প্রতিমার শ্রীমুখ
এইবার তাহা উন্মুক্ত করিয়া দিলো।

অষ্টাশি ফীটের সমান!                               গিরিবালা গিরি-প্রমান!
দেখিয়া বাঙালীর সার্থক জীবন।
শিল্পী মিন্টু পালের কীর্তি                             মনে রাখিবে পরবর্তী
বহু বহু যুগের মানুষ জন॥

এইবার শুরু হইলো ঠ্যালা                          বড়-দুর্গার দর্শন-মেলা
গন্তব্য সবার দেশপ্রিয় পার্ক।
ক্রমে ক্রমে ভীড় বাড়িলো                      পঞ্চমীতেই মাত্রা ছাড়িলো
ভাঙিলো সব ভীড়ের রেকর্ড মার্ক॥

দেখিয়া ভীড় বড়-দুর্গার                          দর কমিলো অন্য পূজার
দিদির ফিতে-কাটাও খাইলো ঝাড়।
মুখ রাখিতে পুলিশের কর্তা                      বলিয়া --- নাই নিরাপত্তা
NO ENTRY বোর্ড বসাইলো পূজার দ্বার॥
“বেআইনী পূজা” বলেন কর্তা                 ক্লাবের দোষের রাঁধেন ভর্তা
নালিশ-এফ.আই.আরের ঝড় থানায়।
মানুষ যাতে দেখিতেও না পায়             দিলেন ঢাকিয়া সেই প্রতিমায়
এতই ছিল তাঁর নিরাপত্তার দায়!

ইহার উপর টিভি মিডিয়ায়                 এই খবর যেন আর না ছড়ায়
দেওয়া হইলো তাহারও নির্দেশ।
না দেখিয়া এই বড়-দুর্গা                     ব্যথিতরা, ধরে রাস্তা, ঘরকা
অথবা করে অন্য পূজায় প্রবেশ॥

শহর কলকাতা যায় চেনা                       পথে-পার্বনে ভীড়ের হানা
ভীড়েই ইহার আসল পরিচয়।
দশ-বারো লাখ ব়্যালিতে হয়                লাখ লাখ নিত্য মিছিলে যায়
সেই ভীড় রোজ এই পুলিশই সামলায়!

হঠাৎ এই বড়-দুর্গায়                        পুলিশ কর্তা পাইলো কেন্ ভয়?
কাহারও আজ বাকি নাহি বুঝিতে।
দিদির ছোঁওয়া না পাইলে ভাই        কোনো কাজে কারো অধিকার নাই
“পূজা বন্ধ” কি এই বার্তাই দিতে?

বিশ্বাস করিবেন না এই বাত্                  নিন্দুকে ছড়াইতেছে অপবাদ
রটনা সারা “বিশ্ব-বঙ্গ” জুড়ে!
দুষ্টকবি খাইয়া গুজিয়া                            প্রশ্ন করে এ-কলি ভাঁজিয়া
দিদির রাজ্যে এমনও কি হইতে পারে?!

.                      **************************   কলকাতা, ১৮.১.২০১৬
২০১৫ সালের দুর্গা পূজার অনেক আগে থেকেই সারা কলকাতা শহর পোস্টার ও বিশাল বিশাল বিলবোর্ড-
এ ঢেকে গিয়েছিল একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে, এই জানিয়ে যে তাঁরা এবার নিয়ে আসবেন বিশ্বের সবচেয়ে
বড় দুর্গা প্রতিমা। সেই বিজ্ঞাপনের ছবিতে থাকতো দুর্গার একটি অংশের ছবি যেমন পা বা চোখ এবং তা
রং করছেন শিল্পী। এতই জোরালো ছিল সেই বিজ্ঞাপন যে কেবল মাত্র চক্ষুহীনেরাই তা দেখা থেকে রেহাই
পেয়েছেন। পরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার শ্রী সুরজিত কর পুরকায়স্থ জানিয়েছিলেন যে কলকাতা
পুলিশও নাকি তা দেখতে পাননি। যার ফলে তাঁরা বুঝতেই পারেননি কত বড় মূর্তি তৈরী হচ্ছিলো! ৮৮
ফিট ফাইবার গ্লাসের এই মূর্তিটি তৈরী করেছিলেন শিল্পী শ্রী মন্টু পাল। আসলে সেই পূজামণ্ডপটিই ছিলো
বড় দুর্গার আকারে। মণ্ডপের ভেতরে ছিল আরেকটি ছোট প্রতিমা যেটিকে পূজার জন্য রাখা হয়েছিল।
শোনা যায় যে পূজার আগে বিভিন্ন ক্লাবকর্তাদের সঙ্গে পুলিশের যে মিটিং হয় তাতে নাকি বলাও হয়েছিল
যে তাঁদের কাছে উপর থেকে খবর আছে যাতে হয় মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা
কোনো বড় নেতাকে দিয়ে পুজার উদ্বোধন করার চেষ্টা করতে হবে। এত কিছু করার পরেও দেশপ্রিয়
পার্কের পূজার কর্তারা প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক শ্রী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কে দিয়ে তাঁদের পূজা
উদ্বোধন করান, তৃতীয়ার দিনই। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর জনসংযোগের কর্মসূচীর আওতায় একের পর
এক পূজা উদ্বোধন করে গিয়েছেন। কিন্তু দেখা যায় যে মানুষের ভীড় সুনামীর আকারে ধাবমান হয়
দেশপ্রিয় পার্কের পূজার দিকে, অন্য সব পূজাকে ম্লান করে দিয়ে। খবরে প্রকাশ শেষ পর্যন্ত পুলিশ
কমিশনার, সেই পূজা বন্ধ করে দেন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অজুহাতে।
বাইরে বহুদূর থেকে মূর্তিটি দেখা যাচ্ছিল বলে মানুষের ভীড় তখনও বহাল ছিল। তাই একটি
ত্রিপাল দিয়ে মূর্তিটিকে ঢেকে দেওয়া হয় এবং পার্কের ধারের দেয়ালে উঁচু করে আড়াল করা ছিল। বিভিন্ন
মিডিয়াকে নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে এই মূর্তির খবর না ছড়ায়। সেদিন পুলিশ কমিশনারকেই পাতাল রেলে
চেপে কালীঘাট স্টেশনে নেমে হেঁটে দেশপ্রিয় পার্ক পর্যন্ত আসতে হয়। মাসের পর মাস এই পূজার খবর
পাবার পরেও তাঁর পুলিশী বন্দোবস্ত এতই অপ্রতুল ছিল। এত বড় একটি কাজ সমাধা যে ব্যক্তিরা
করেছিলেন তাঁদের বাহবা ও পৃষ্ঠপোষকতা না করে, চটজলদি যে কোন অজুহাতে সেই পূজাই বন্ধ করে
দেবার কাজটি মানুষের মনে ধাক্কা দিয়েছিল। মনে হয়েছিল যে এই প্রতিমাটিকে কোনো ভাবেই মানুষ
যাতে দেখতে না পারে সেই ব্যবস্থাই করা হয়। যে কোনো পূজার ভীড় সামলানো কলকাতা পুলিশের
আয়ত্তের বাইরে একথা সবচেয়ে বড় শত্রুও বলতে পারবে না।  

এই পদাবলীতে দুষ্টকবি, হাজার হাজার দর্শক ও সাধারণ মানুষের মনের কথা এবং সেই সময়ে যে
কথোপকথনে কলকাতার রাজপথ ছেয়ে গিয়েছিলো, তা হাল্কাভাবে বলার চেষ্টা করেছেন।
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
কৃষি মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা            বলিতেন তিনি খুল্লাম খুল্লা
দিদির চেয়ে
Danger নাহি জানি।
এলো পরিবর্তন দেশে                                 বাম ফ্রন্ট গেল ধ্বসে
শাসকেরে নামাইলো পথে টানি॥

তাহার কিছু কাল পরে                         পার্টি-অফিস খুলতে ভাঙরে
রেজ্জাক সেবার তথায় গিয়াছিলেন।
দিদির প্রিয় ভাই আরাবুল                প্যাঁদাইয়া তাঁহারে চাখাইয়া ধূল
হাসপাতালের ভাত খাওইয়া দিলেন॥

ছিলেন জাত কমিউনিস্টো                      গিয়া ক্ষমতার গুড়, মিষ্টো
ধম্মে কম্মে মন দিলেন তিনি।
লাল ঝাণ্ডা বাক্সে রাখিয়া                   ফিরিয়া, কাবায় মাথা টেকিয়া
“হাজী” হইয়া সংবাদে ফের, শুনি॥

বুঝি, হাজী হইবারই তালে                     চোখের ঠুলি পড়িলো খুলে
দেখিতে পাইলেন দলের যত দোষ।
ক’য়ে চ্যাটাং চ্যাট্যাং কথা                         দলের নিন্দা যথা তথা
খ্যাদাইয়া দিলো দল, কি আফসোস॥

নিজে, কৃষক নেতা ব’লে                        মন্ত্রী, খোশ-মেজাজে দলে
ছিলেন না কম, কাহারো অপেক্ষা।
একটুও না দমিয়া, তিনি                            গড়েন নতুন দল, জানি
নিজের দলেও খাইলেন ঘাড়ধাক্কা॥
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
ফাটে পরিবর্তন-ফানুস                              কাহিল্, মা-মাটি-মানুষ
দিদির প্রিয়, ভাই-বোনদের দয়া।
ধর্ষণের ঢালাও হুমকি                             ধর্ষিতারা বিরোধী-চুমকি
প্রশাসন, ভয়ে পলায় কাশী-গয়া॥

গরীব-গুর্বো লোকের টাকা                  সারদা লুঠিয়া করিলো ফাঁকা
দিদির ছবি, বিকোয় কোটির দামে।
বেফাস্, মুখে "ডেলো" বলিয়া                 কুণাল গেলো জেলে চলিয়া
বলির পাঁঠা মদন কারাধামে॥

তেলেভাজা হইলো শিল্প                   দলের লাগাম ধরিলো ভাইপো
বস্তা ভরিয়া বাংলাদেশে চালান ধনরাশি।
সেই টাকা নাকি খাগড়াগড়ে                    বোমা হইয়া শব্দে পড়ে।
কুটীর-শিল্পে তৈরী হয় ফিদায়ীন-সন্ত্রাসী॥

ধর্মীয় প্রতিবাদের আড়ে               যারা, মাদক-জালনোট পাচার করে
কালিয়াচকে পোড়ায় থানা এবং রেকর্ডরাশি॥
মুসলিম ভীত, বুঝিতে পারি,               হিন্দুও ত্রাসে গাহিতে নারি!?
দিদিভাই কয় - “সব ঠিক হ্যায়”, হাসি'॥

ত্রিফলা বাতিতে ছাইয়া দেশ                ক্ষুদে বিগবেন করি’ উন্মেষ
লণ্ডন ধরি’ আনিলো কলকাতায়।
নীল-সাদায় রাস্তা ঘাট                              থানা পুড়িয়া ভস্মীমাত
সিণ্ডিকেট-রাজ পিণ্ডি চটকায়॥
নারীর গোপন অঙ্গে বিছুটি                ছাইলো বঙ্গে গো-বলয়-নীতি
আয়ারাম-গয়ারামের বেচা কেনা।
ভালো লোকদের ছাঁটিয়া বাদ                 গুণ্ডাবাজের ক’রে আবাদ
দিদির বাহিনী হইলো কুরু সেনা॥

এমতবস্থায় কাটিলো কাল                 আসিলো ভোটের মহা সকাল
আরাবুল যত, ফিরিলো দিদির দলে।
বাকি যত ছিল ধান্ধাবাজ                   দিদিরে ধরিতে, কুচকাওয়াজ
রেজ্জাক, দিদির সভায় হত্যে দিলে॥

দিদির দিল্, দরাজ দরিয়া                 ক্ষমিয়া তাঁহারে নিলেন বরিয়া
বসিতে দিলেন আরাবুলদেরই পাশে।
মুখপোড়া এই দুষ্ট কবি                        বলে আহা! কি সুন্দর ছবি
সাপে-নেউলে দেখিনি সখার বেশে॥

.                      **************************   কলকাতা, ১৪.২.২০১৬
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
“বহুজ” কবীর সুমন

জন্মিলে মরিতে হবে                 অমর কে কোথা কবে
কহিয়াছেন সত্য, মধুসূদন।
ব্রাহ্মণ জন্মাইলে নরে                  পইতে ঝুলাইয়ে ঘাড়ে
পায় “দ্বিজ” সম্মানের ভূষণ॥

“দ্বিজ” চাটুজ্জে সুমন                        হইয়া কবীর সুমন
আরও এক জন্ম নিলেন বটে।
কপাল করিলে পরে                    আরও জন্ম লাভ ক’রে
“বহুজ” উপাধি কি তাঁর খাটে ?

সাংসদের কোটার বখারায়                   টান পড়িলে হায়
মহা শত্রু হইয়াছিলেন দিদি।
বঙ্গবিভূষণের ডালি                     ঘুচাইলো মনের কালি
দিদি হইলো আবার মহানিধি॥

সম্প্রতি যাদবপুরে                        বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরে
সারমেয় জন্ম তাঁর দেখিলাম!
দেখাইতে দিদিরে ভক্তি                 লাগাইয়া সকল শক্তি
কহেন, --- “আমি মমতার ডোবারম্যান”॥

তর্ক-বিতর্ক রচি                            বাজারটা ঠিক বুঝি
খেলুন, সংসদীয় মাওবাদের ঘুঁটি।
এই মহা জন্মদিনে                         “বহুজ” কবীর সুমনে
দুষ্ট কবির প্রণাম শত কোটি।
.                      **************************   কলকাতা, ২২.৩.২০১৬
দুষ্ট কবি
.
<<<দেয়ালিকার শুরুতে ফিরতে
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
পরিবর্তনের পরে কে কোথায় দাঁড়িয়ে ১ ॥ দুষ্ট কবি ( কাব্য ও কার্টুন )॥
দেয়ালিকার শেষ প্রান্তে যেতে>>>
দেয়ালিকার শেষ ছড়াটিতে যেতে>>>

দেয়ালে  দেয়ালে  মনের  খেয়ালে
লিখি কথা |
আমি  যে  বেকার,  পেয়েছি লেখার
স্বাধীনতা ||
সুকান্ত ভট্টাচার্য
এই পাতাটি পাশাপাশি, ডাইনে-বামে স্ক্রল করে! This page scrolls sideways, Left-Right !