তরুণ অরুণ কিরণে প্রকৃতি চারণকবি মুকুন্দদাস ডঃ জয়গুরু গোস্বামী সম্পাদিত “চারণকবি মুকুন্দদাস”, ১৯৭২ থেকে নেওয়া। ( ১৯০৬ সাল | বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন উপলক্ষে সারা দেশের নেতারা উপস্থিত হয়েছেন বরিশাল সম্মেলনে | মহাত্মা অশ্বিনীকুমারের প্রথম থেকে দৃষ্টি ছিল মুকুন্দদাসের উপর | এই বিরাট সভায় উদ্বোধন-সঙ্গীতের ভার পড়ল মুকুন্দদাসের উপর | মুকুন্দদাস গাইলেন – “তরুণ অরুণ কিরণে প্রকৃতি” ইত্যাদি | সেই সভায় পুলিশ ভীষণভাবে লাঠি-চার্জ করে | চিত্তরঞ্জন গুহঠাকুরতা সেদিন জলে পড়েও জ্ঞান না হারানো পর্যন্ত ‘বন্দেমাতরম্ ধ্বনি’ করেছিলেন | )
সময় ফিরিয়া কেবা পায় ? কেবলি শুনিনু কানে না চাহিনু তাঁর পানে, শুধু উপেক্ষিনু তাঁরে হেলায় হেলায় || এখনো যা আছে কিছু ধরিলে তাঁহারে এঁটে, যে ক’টা দিন আছে বাকী আনন্দেই যেত কেটে, কিন্তু এমন অন্ধ মোরা, এমনই কপাল পোড়া, বিধিলিপি কপাল জোড়া কথায় কথায় || মোরা যেমন ফুটবলে কিক্ দিয়ে ধরা জিনি, বিধি-রে ভেবেছ বুঝি তেমনি একটি হাবা তিনি | বিশ্বপতি কর্মময় হাবা ছেলের বাবা নয়— কর্ম ভালবাসেন তিনি, কর্মীই তাঁর কৃপা পায় || কর্মক্ষেত্রে এসে যারা কর্মই করে না সাথী, ক্ষণস্থায়ী যেন ভাই তাদেরই জীবন-বাতি এ মহা কর্মের যুগে, শান্তি নাই কর্মত্যাগে, মুকুন্দ করিছে কর্ম, শান্তিবারি পিপাসায় ||
মায়ের জাতি জাগিয়ে তোল্ | মায়ের জাতি গ’ড়ে তোল্ | সকল কাজের ঐ তো গড়া, . আজ ভেঙ্গে দে রে তাদের গোল || মেয়েদের এই সব হাইস্কুলে, . মা হবে না কোনকালে | তাই তোরা ভাই সবার আগে, . মায়ের মন্দির গ’ড়ে তোল্ || গার্গী, লীলা খনার দেশে, . কাপড় হল গাউন শেষে | এসব দেখে শুনে অন্ধের মত, . খাঁটী দুধে ঢালছিল ঘোল || মায়ের জাতি উঠলে গ’ড়ে, . ছেলে মিলবে ঘরে ঘরে | বাজবে আবার বিজয় ভেরী, . জয় ডঙ্কা সানাই ঢোল ||
রাম রহিম না জুদা কর ভাই চারণকবি মুকুন্দদাস ডঃ জয়গুরু গোস্বামী সম্পাদিত “চারণকবি মুকুন্দদাস”, ১৯৭২ থেকে নেওয়া।
রাম রহিম না জুদা কর ভাই . মনটা খাঁটী রাখ জী | দেশের কথা ভাব ভাই রে, . দেশ আমাদের মাতাজী || হিন্দু মুসলমান এক মায়ের ছেলে, . তফাৎ কেন কর জী ; দু’ ভাইয়েতে দু’ ঘর বেঁধে, . করি একই দেশে বসতি || টাকায় ছিল আট মণ চাউল ভাই, . এখন বিকায় পোয়া পশারি | এর পরেতে হতে হবে, গাছের তলায় বসতি ||