কবি কৃষ্ণদাস কবিরাজের বৈষ্ণব পদাবলী
*
প্রাপ্ত রত্ন হারাইয়া তার গুণ সঙরিয়া
ভণিতা নেই
কবি কৃষ্ণদাস কবিরাজ
কৃষ্ণদাস কবিরাজ রচিত চৈতন্যচরিতামৃতের গীত। অন্ত্যলীলা, ১৪শ পরিচ্ছেদ, পৃ-২২০।

যথা রাগঃ।

প্রাপ্ত রত্ন হারাইয়া                                        তার গুণ সঙরিয়া
মহাপ্রভু সন্তাপে বিহ্বল।
রায় স্বরূপের কণ্ঠে ধরি                                কহে হাহা! হরি! হরি!
ধার্য্য গেল হইল চপল॥
শুন বান্ধব! কৃষ্ণের মাধুরী।
যার লোভে মোর মন                                     ছাড়িলেক বেদ ধর্ম্ম
যোগী হঞা হইল ভিখারী॥ ধ্রু॥
কৃষ্ণলীলা মণ্ডল                                               শুদ্ধ শঙ্খ কুণ্ডল
গড়িয়াছে শুক কারিকর।
সেউ কুণ্ডল কাণে পরি                                  তৃষ্ণালাউ থালি ধরি
আশা ঝুলি স্কন্ধের উপর॥
চিন্তা কান্থা উড়ে গায়                               ধূলি বিভূতি মলিন কায়
হাহা! কৃষ্ণ প্রলাপ উত্তর।
উদ্বেগ দ্বাদশ হাতে                                      লোভের ঝুলনী মাথে
ভিক্ষাভাবে ক্ষীণ কলেবর॥
ব্যাস শুকাদি যোগিগণ                                    কৃষ্ণআত্মা নিরঞ্জন
ব্রজে তাঁর যত লীলাগণ।
ভাগবতাদি শাস্ত্রগণে                                       করিয়াছেন বর্ণনে
সেই তর্জ্জা পড়ি অনুক্ষণ॥
দশেন্দ্রিয় শিষ্য করি                                     মহাবাউল নাম ধরি
শিষ্য লঞা করিনু গমন।
মোর দেহ স্বসদন                                       বিষয় ভোগ মহাধন
সব ছাড়ি গেলা বৃন্দাবন॥
বৃন্দাবনে প্রজাগণ                                         যত স্থাবর জঙ্গম
বৃক্ষলতা গৃহস্থ আস্রমে।
তার ঘরে ভিক্ষাটন                                        ফল মূল পত্রাশন
এই বৃত্তি করে শিষ্যসনে॥
কৃষ্ণগুণ রূপরস                                              শব্দ গন্ধ পরশ
সে সুধা আস্বাদে গোপীগণ।
তাঁ’সবার গ্রাস শেষে                                  আনি পঞ্চেদ্রিয় শিষ্যে
সে ভিক্ষয় রাখিল জীবন॥
শূন্য কুঞ্জ মণ্ডপ কোণে                               যোগাভ্যাস কৃষ্ণধ্যানে
তাঁহা রহে লঞা শিষ্যগণ।
কৃষ্ণ আত্মা নিরঞ্জন                                    সাক্ষাৎ দেখিতে মন
ধ্যানে রাত্রি করে জাগরণ॥
মন কৃষ্ণ বিয়োগী                                    দুঃখে মন হৈল যোগী
সে বিয়োগে দশ দশা হয়।
সে দশায় ব্যাকুল হঞা                                  মন গেল পলাইয়া
শূন্য মোর শরীর আলয়॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
অদ্বৈত আচার্য্য ভার্য্যা জগতবন্দিতা আর্য্যা
ভণিতা কৃষ্ণ দাস
কবি কৃষ্ণদাস কবিরাজ
জগবন্ধু ভদ্র সম্পাদিত ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ তরঙ্গিণী”, ২য় তরঙ্গ,
১ম উচ্ছাস, গৌরাবতারের ঐশ্বর্য্য ও মাধুর্য্য, পদসংখ্যা ১৪, ৪০-পৃষ্ঠা। এই পদটি কৃষ্ণদাস কবিরাজ রচিত
চৈতন্যচরিতামৃত, আদিলীলা, ১৩শ পরিচ্ছেদ, পৃ-৩২১, “
নদীয়া উদয় গিরি পূর্ণ চন্দ্র গৌর হরি” পদের অংশ।

॥ কল্যাণ॥
অদ্বৈত আচার্য্য ভার্য্যা                                জগতবন্দিতা আর্য্যা
নাম তাঁর সীতা ঠাকুরাণী।
আচার্য্যের আজ্ঞা পাঞা                                চলে উপহার লঞা
দেখিতে বালক-শিরোমণি॥
সুবর্ণের কড়ি বৌলি                                   রজত-পত্র পাশুলি
সুবর্ণের অঙ্গদ কঙ্কণ।
দু বাহুতে দিব্য শঙ্খ                                    রজতের মল বঙ্ক
স্বর্ণ মুদ্রা নানা হারগণ॥
বাঘনখ হেম-জড়ি                                     কটি পট্টসূত্র ডোরি
হস্ত পদের যত আভরণ।
চিত্রবর্ণ পট্টশাড়ী                                   ভুনি দোগজা পট্টপাড়ি
স্বর্ণ রৌপ্য মুদ্রা বহু ধন॥
দুর্ব্বা ধান্য গোরোচন                                  হরিদ্রা কুঙ্কুম চন্দন
মঙ্গল দ্রব্য পাত্র ভরিঞা।
বস্ত্র গুপ্ত দোলা চড়ি                                সঙ্গে লঞা দাসী চেড়ী
বস্ত্রালঙ্কারে পেটারি ভরিয়া॥
ভক্ষ্য ভোজ্য উপহার                                 সঙ্গে লৈল বহু ভার
শচীগৃহে হৈল উপনীত।
দেখিয়া বালক ঠাম                                 সাক্ষাতে গোকুল কান
বর্ণ মাত্র দেখে বিপরীত॥
সর্ব্ব অঙ্গ সুনির্ম্মাণ                                     সুবর্ণ-প্রতিমা ভাণ
সর্ব্ব অঙ্গ সুলক্ষণময়।
বালকের দিব্য মূর্ত্তি                                দেখি পাইল বহু প্রীতি
বাত্সল্যেতে দ্রবিল হৃদয়॥
দুর্ব্বা ধান দিল শীর্ষে                                    কৈল বহু আশিষে
চিরজীবী হও দুই ভাই।
ডাকিনী শাকিনী হৈতে                                শঙ্কা উপজিল চিতে
ভয়ে নাম থুইল নিমাই॥
পুত্র মাতা স্নান দিনে                                   দিল বস্ত্র বিভূষণে
পুত্র সহ মিশ্রেরে সম্মানি।
শচী-মিশ্র পূজা লৈয়া                                 মনেতে হরিষ হৈয়া
ঘরে আইলা সীতা ঠাকুরাণী॥
শ্রীচৈতন্য নিত্যানন্দ                                আচার্য্য অদ্বৈত চন্দ্র
স্বরূপ রূপ রঘুনাথ দাস।
ইঁহার সবার শ্রীচরণ                                শিরে ধরি নিজ ধন
জন্মলীলা গাইল কৃষ্ণ দাস॥

.            *************************           
        
.                                                          
কবি কৃষ্ণদাস-এর সূচীতে . . .   
.                                            
কবি কৃষ্ণদাস কবিরাজের-এর সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
ঐছে শচী জগন্নাথ পুত্র পাঞা লক্ষ্মীনাথ
ভণিতা কৃষ্ণ দাস
কবি কৃষ্ণদাস কবিরাজ
জগবন্ধু ভদ্র সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ তরঙ্গিণী”, ১৯৩৪ থেকে নেওয়া। ২য়
তরঙ্গ, ১ম উচ্ছাস, গৌরাবতারের ঐশ্বর্য্য ও মাধুর্য্য, পদসংখ্যা ১৫, পৃষ্ঠা ৪১। এই পদটি কৃষ্ণদাস কবিরাজ
রচিত চৈতন্যচরিতামৃত, আদিলীলা, ১৩শ পরিচ্ছেদ, পৃ-৩২১, “
নদীয়া উদয় গিরি পূর্ণ চন্দ্র গৌর হরি” পদের
অংশ।

॥ কল্যাণ॥

ঐছে শচী জগন্নাথ                                  পুত্র পাঞা লক্ষ্মীনাথ
পূর্ণ কৈল সকল বাঞ্ছিত।
ধন ধানে ভরে ঘর                                  লোকমান্য কলেবর
দিনে দিনে হয় আনন্দিত॥
মিশ্র বৈষ্ণব শান্ত                                   অলম্পট শুদ্ধ দান্ত
ধনভোগে নাহি অভিমান।
পুত্রের প্রভাবে যত                                ধন আসি মিলে তত
বিষ্ণুপ্রীতে দ্বিজে দেন দান॥
লগ্ন গণি হর্ষমতি                                       নীলাম্বর চক্রবর্ত্তী
গুপ্তে কিছু কহিল মিশ্রেরে।
মহা পুরুষের চিহ্ন                                লগ্নে অঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন
দেখি এই তারিবে সংসারে॥
ঐছে প্রভু শচীঘরে                              কৃপায় কৈল অবতারে
যেই ইহা করয়ে শ্রবণ।
গৌর প্রভু দয়াময়                                    তারে হয়েন সদয়
সেই পায় তাঁহার চরণ॥
পাইয়া মানুষ জন্ম                                যে না শুনে গৌরগুণ
হেন জন্ম তার ব্যর্থ হৈল।
পাইয়া অমৃতধুনী                                   পিয়ে বিষ গর্ত্তপানী
জানিয়া সে কেন নাহি মৈল॥
শ্রীচৈতন্য নিত্যানন্দ                             আচার্য্য অদ্বৈত চন্দ্র
স্বরূপ রূপ রঘুনাথ দাস।
ইঁহার সবার শ্রীচরণ                              শিরে ধরি নিজ ধন
জন্মলীলা গাইল কৃষ্ণ দাস॥

.            *************************           
        
.                                                          
কবি কৃষ্ণদাস-এর সূচীতে . . .   
.                                            
কবি কৃষ্ণদাস কবিরাজের-এর সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
সোঙরো নব গৌরচন্দ্র
কবি দীন কৃষ্ণদাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), দ্বিতীয় খণ্ড, তৃতীয় শাখা, ১৫শ পল্লব,
রসালস, পদসংখ্যা ১০৮৫।

রসালসোপযুক্তরূপং যথা।

.        শ্রীগৌরচন্দ্রঃ।

.        ॥ ভৈরবী॥

সোঙরো নব                        গৌরচন্দ্র
.                নাগর বনয়ারি।
নবদ্বীপ-ইন্দু                        করুণা সিন্ধু
.                ভক্ত-বত্সলকারী॥ ধ্রু॥
.                বদন-চন্দ অধর অঙ্গ
.                নয়নে গলত প্রেম-তরঙ্গ
.                চন্দ্র কোটি ভানু কোটি
.                                শোভা নিছয়ারি।
.                কুসুম-শোভিত চাঁচর চিকুর
.                ললাটে তিলক নাসিকা উজোর
.                দশন মোতিম আমিয়া হাস
.                                দামিনি ঘনয়ারি॥
.                মকর-কুণ্ডল ঝলকে গণ্ড
.                মণি-কৌস্তুভ-দীপ্ত কণ্ঠ
.                অরুণ বসন করুণ বচন
.                                শোভা অতি ভারি।
.                মাল্য-চন্দন-চর্চ্চিত অঙ্গ।
.                লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ।
.                অঙ্গদ বলয়া রতন নূপুর
.                                যজ্ঞ-সূত্রধারি॥
.                ছত্র ধরত ধরণিধরেন্দ্র
.                গাওত যশ ভকতবৃন্দ
.                কমলা-সেবিত পাদদ্বন্দ্ব
.                                বলিয়ে বলিহারি।
.                কহত দীন কৃষ্ণদাস
.                গৌর-চরণে করত আশ।
.                পতিত-পাবন নিতাই চান্দ
.                                প্রেম দানকারী॥

ই পদটি, দেবীপ্রসন্ন রায়চৌধুরী সম্পাদিত “নব্যভারত” পত্রিকার, ভাদ্র ১৩০০ সংখ্যায় (অগাস্ট ১৮৯৩)
প্রকাশিত, হারাধন দত্তর "বঙ্গের বৈষ্ণব কবি (২)" প্রবন্ধে এভাবে দেওয়া রয়েছে।

.                ॥ রাগ ভৈঁর - একতাল॥

সোঙর নব, গৌউর সুন্দর, নাগর বনয়ারি।
নদীয়া ইন্দু, করুণাসিন্ধু, ভকতবত্সলকারি॥
বদনচন্দ্র, অধর কন্দ, নয়নে গলত প্রেমতরঙ্গ,
চন্দ্র কোটি, ভানুমুখ, শোভা নিছুয়ারী॥
কুসুম শোভিত চাঁচর চিকুর, ললাটে তিলক নাসিকা উপর
দশন মতিম, আমিয়া হাস, দামিনী ঘনয়ারি॥
মকরকুণ্ডল, ঝলকে গণ্ড, মণি কৌস্তুভ দীপ্তকণ্ঠ,
অরুণ বসন, করুণ বচন, শোভা অতি ভারি॥
মাল্য চন্দন, চর্চ্চিত অঙ্গ, লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ,
চন্দন বলয়া, রতন নূপুর, যজ্ঞসূত্রধারি॥
ধরেন্দ্র গাওত, যশোক্তবৃন্দ কমলা সেবিত পাদদ্বন্দ্ব,
ঠমকে চলত, মন্দ মন্দ, যাহু বলিহারি!
কত দীন কৃষ্ণদাস, গৌর চরণে করত আশ,
পতিতপাবন, নিতাই চাঁদ, প্রেমদান কারি॥ (পদসমুদ্র) ৭২২৪। @

@ - (পদসমুদ্র) ৭২২৪। থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, পদটি হারাধন দত্ত মহাশয় পেয়েছিলেন পদসমুদ্র গ্রন্থ থেকে
এবং সম্ভবত সেই গ্রন্থের এটি ৭২২৪ সংখ্যক পদ ছিল। এখানে উল্লেখনীয় এই যে, "পদসমুদ্র" গ্রন্থটি
বহুচর্চিত হলেও সেটিকে তাঁর মালিক, এই প্রবন্ধের রচয়িতা, হারাধন দত্ত (ভক্তনিধি), কখনো সর্বসমক্ষে
দেখাতে রাজি হন নি। এতে নাকি ১৫০০০ পদ ছিল। এই নিয়ে
, মিলনসাগরে  বৈষ্ণবদাসের পরিচিতির
পাতায় ,পূর্বে আমরা যা লিখেছি তা পাঠকের সুবিধার জন্য এখানে আবার দেওয়া হলো . . .

"
সম্পাদক সতীশচন্দ্র রায় তাঁর পদকল্পতরু গ্রন্থের ৫ম খণ্ডের "ভুমিকা"-য়, "পদ-সমুদ্র" নামের একটি পুথির
উল্লেখ করেছেন যাতে নাকি ১৫০০০ পদ সংকলিত হয়েছিল। হুগলী জেলার বদনগঞ্জ নিবাসী হারাধন দত্ত
ভক্তিনিধি নাকি নানা সময়ে নানা পত্র-পত্রিকায় লিখেছিলেন যে, তাঁর অতিবৃদ্ধপিতামহের সমসায়িক বাবা
আউল মনোহর দাস নামের এক বৈষ্ণব মোহন্ত এই ১৫০০০ (পনেরো হাজার) পদ বিশিষ্ট পদ-সমুদ্র পুথিটি
সংকলন করেন। গৌরপদতরঙ্গিণীর সংকলক জগবন্ধু ভদ্র এই গ্রন্থের অস্তিত্ব বিশ্বাস করেন নি। তিনি
দীনেশচন্দ্র সেনকে উদ্ধৃত করে লিখেছিলেন যে একবার কোন এক ব্যক্তি ২০০০টাকার বিনিময় ওই পুথিটি
কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভক্তিনিধি মহাশয় তা বিক্রী করেন নি। তিনি কখনও এই গ্রন্থটি, কাউকে
দেখতেও দেন নি। তাই তাঁরা এই পুথির অস্তিত্ব সম্বন্ধে সন্দিহান ছিলেন। সতীশচন্দ্র রায় মনে করতেন যে
গ্রন্থটি ভক্তিনিধি মহাশয়ের কাছে হয়তো খণ্ডিত অবস্থায় ছিল তাই তিনি দেখাতে চান নি। তিনি নাকি এই
পুথি থেকেই বিদ্যাপতির আত্ম পরিচয় বিষয়ক "জনমদাতা মোর গণপতি ঠাকুর" ও রামী রজকিনীর
"কোথা যাও ওহে প্রাণ-বঁধু মোর" পদদুটি উদ্ধৃত করেছিলেন
।"

ই পদটি, ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী
সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ৯৪-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

.                        ॥ ভৈরব একতাল॥

সোঙর নব                                        গৌরসুন্দর
.                নাগর বনোয়ারি।
নদীয়া ইন্দু                                        করুণাসিন্ধু
.                ভকত বত্সলকারী॥ ধ্রু॥
বদন চন্দ অধর কন্দ                        নয়নে গলত প্রেমতরঙ্গ
.        চন্দ্র কোটি ভানু কোটি মুখশোভা বিছুয়ারি।
কুসুমশোভিত চাঁচর চিকুর             ললাট তিলক নাসিকা উপর
.        দশন মোতিম আমিয় হাস দামিনী ঘনয়ারী॥
মকরকুণ্ডল ঝলকে গণ্ড                        মণি-কৌস্তুভ-দীপ্ত কণ্ঠ
.        অরুণ বসন করুণ বচন শোভা অতি ভারি।
মাল্যচন্দন-চর্চ্চিত অঙ্গ                 লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ।
.                চন্দন বলয়া রতন নূপুর যজ্ঞসূত্রধারী॥
ধারত গাওত ভকতবৃন্দ                     কমলাসেবিত পাদদ্বন্দ্ব
.                ঠমকে চলত মন্দ মন্দ যাউ বলিহারি।
কহত দীন কৃষ্ণদাস                        গৌর-চরণে করত আশ।
.                পতিতপাবন নিতাইচাঁদ         প্রেমদানকারী॥

ই পদটি, ১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-
মালা”, ৬৭-পৃষ্ঠায় এই রূপে রয়েছে।

.        শ্রীগৌরাঙ্গ-স্মরণ

.        ॥ ভৈরবী॥

সোঙর নব                        গৌর সুন্দর
.                নাগর বনোয়ারি।
নবদ্বীপ ইন্দু                        করুণা সিন্ধু
.                ভক্ত-বত্সলকারী॥
বদন-চন্দ অধর অঙ্গ
নয়নে গলত প্রেমতরঙ্গ
চন্দ্র কোটি ভানু কোটি
.                শোভা নিছয়ারি।
কুসুম-শোভিত চাঁচর চিকুর
ললাটে তিলক নাসিকা উজোর
দশন মোতিম আমিয়া হাস
.                দামিনী ঘনয়ারি॥
মকর কুণ্ডল ঝলকে গণ্ড
মণি-কৌস্তুভ দীপ্ত কণ্ঠ
অরুণ বসন করুণ বচন
.                শোভা অতি ভারি।
মাল্য-চন্দন-চর্চ্চিত অঙ্গ।
লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ।
অঙ্গদ বলয়া রতন নূপুর
.                যজ্ঞ সূত্র ধারি॥
ছত্র ধরত ধরণী ধরেন্দ্র
গাওত যশ ভক্তবৃন্দ
কমলা সেবিত পাদদ্বন্দ্ব
.                বলিয়া বলিহারী।
কহত দীন কৃষ্ণদাস
গৌরাঙ্গ-চরণে করত আশ।
পতিত পাবন নিতাই চাঁদ
.                প্রেমদান কারী॥

ই পদটি, ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ৫৩৫-পৃষ্ঠায় এভাবে রয়েছে।

.        শ্রীগৌরাঙ্গ বর্ণনা

.                ॥ ভৈরবী॥

সোঙরো নব                        গৌরচন্দ্র
.                নাগর বনয়ারি।
নদীয়া ইন্দু                        করুণা সিন্ধু
.                ভকতবত্সলকারী॥ ধ্রু॥
.                বদনচন্দ অধর অঙ্গ
.                নয়নে গলত প্রেম-তরঙ্গ
.                চন্দ্র কোটি ভানু কোটি
.                                শোভা নিছয়ারি।
.                কুসুম-শোভিত চিকুর চাঁচর
.                ললাটে তিলক নাসিকা উজোর
.                দশন মোতিম আমিয়া হাস
.                                দামিনি ঘনয়ারি॥
.                মকর-কুণ্ডল ঝলকে গণ্ড
.                মণিকৌস্তুভদীপ্ত কণ্ঠ
.                অরুণ বসন করুণ বচন
.                                শোভা অতি ভারি।
.                মাল্যচন্দন চর্চ্চিত অঙ্গ।
.                লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ।
.                অঙ্গদ বলয়া রতন নূপুর
.                                যজ্ঞসূত্রধারি॥
.                ছত্র ধরত ধরণিধরেন্দ্র
.                গাওত যশ ভকতবৃন্দ
.                কমলা-সেবিত পাদদ্বন্দ্ব
.                                বলিয়ে বলিহারি।
.                কহত দীন কৃষ্ণদাস
.                গৌর-চরণে করত আশ।
.                পতিত-পাবন নিতাই চান্দ
.                                প্রেম দানকারী॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*