আমরা মিলনসাগরে  কবি শ্রীনিবাস আচার্য্যের পদাবলী তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে  পারলে  
এই প্রচেষ্টাকে সফল মনে করবো।

কবি শ্রীনিবাস আচার্যের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।    



আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতা প্রথম প্রকাশ - ৪.৫.২০১৭।
চৈতন্যনন্দন ভণিতার কবির সংযুক্তিকরণ - ১৫-২-২০২০।
পরিচিতির পাতায় তথ্য সংযোজন - ২৬.৬.২০২০।
...                                                                                            
শ্রীনিবাস আর্যের শিক্ষা ও দীক্ষা     
বীর হাম্বীরের কাহিনী   
শ্রীনিবাস আচার্যের ব্যক্তিগত জীবন   
শ্রীনিবাসের পদ ও সতীশচন্দ্র রায়ের উদ্ধৃতি
বৈষ্ণব পদাবলী নিয়ে মিলনসাগরের ভূমিকা     
বৈষ্ণব পদাবলীর "রাগ"      
কৃতজ্ঞতা স্বীকার ও উত্স গ্রন্থাবলী     
মিলনসাগরে কেন বৈষ্ণব পদাবলী ?     
*
*
*
*
*

এই পাতার উপরে . . .
*

এই পাতার উপরে . . .
*

এই পাতার উপরে . . .
*

এই পাতার উপরে . . .
কবি শ্রীনিবাস আচার্য - একজন প্রধান বৈষ্ণবাচার্য ছিলেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৫১৬ সালে,  
বর্দ্ধমানের চাখণ্ডী গ্রামে। পিতা গঙ্গাধর ভট্টাচার্য ওরফে চৈতন্য দাস এবং মাতা লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী।   
(পদকল্পতরু, ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২২২) । মাতামহ ছিলেন জাজি গ্রামের বলরাম আচার্য। "শ্রীনিবাস দাস"  
ভণিতাযুক্ত পদগুলি তাঁরই রচিত বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া
চৈতন্যনন্দন ভণিতার প্রাপ্ত একটি মাত্র পদও
আমরা তাঁরই বলে মনে করছি (মিলন সেনগুপ্ত)। বিস্তারিত জানতে চৈতন্যনন্দনের  পাতায় যেতে
এখানে
ক্লিক করুন . . .
শ্রীনিবাস আচার্যের শিক্ষা ও দীক্ষা -                                                 পাতার উপরে . . .    
অল্প বয়সে তিনি নানা শাস্ত্রে বিদ্বান হয়ে ওঠেন। এই সময়ে তাঁর সাক্ষাৎ হয়
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পরিকর ও
সহকর্মী
নরহরি সরকারের সঙ্গে এবং তারপরেই গৌরাঙ্গপ্রেমে উন্মত্ত হয়ে অধ্যয়ন ছেড়ে নীলাচল (পুরী)
গৃহত্যাগ করেন
চৈতন্যদেবের সঙ্গে সাক্ষাতের বাসনায়। তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। কারণ পথেই তিনি
জানতে পারেন যে চৈতন্যদেব অপ্রকট হয়েছেন। তিনি মর্মাহত হয়ে জগন্নাথদেব ও
মহাপ্রভুর লীলা স্থল দর্শন
করে গৃহে ফিরে নবদ্বীপে গিয়ে চৈতন্য-পত্নী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী এবং তাঁর অভিভাবক বংশীবদন ঠাকুরের সঙ্গে
দেখা করেন।
বীর হাম্বীরের কাহিনী -                                                                  পাতার উপরে . . .    
প্রধান বৈষ্ণবাচার্য হওয়ার পাশাপাশি, তাঁর কাছে বিষ্ণুপুরের মল্লরাজ
বীর হাম্বীরে শিষ্যত্ব গ্রহণের কাহিনী  
খুবই বিখ্যাত ও হৃদয়স্পর্শী।

নিত্যানন্দ দাস রচিত “প্রেমবিলাস” ও নরহরি চক্রবর্তী রচিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ থেকে জানা যায়, শ্রীনিবাস
ও অন্যান্য ভক্তেরা বৃন্দাবন থেকে গৌড় যাত্রাপথে বন-বিষ্ণুপুরের
রাজা বীর হাম্বীর-এর পোষিত দস্যুদল
দ্বারা লুণ্ঠিত হন। পরে তাঁর রাজসভায়, শ্রীনিবাসের ভাগবত পাঠ শুনে তিনি বৈষ্ণবধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে
পড়েন এবং সস্ত্রীক শ্রীনিবাসের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। শ্রীনিবাস আচার্য তাঁকে বৈষ্ণবধর্মে দীক্ষিত করেন।
এরপর  থেকে রাজা বীর হাম্বীর, বৈষ্ণব ভাবধারায় জীবন অতিবাহিত করতে থাকেন। তাঁর রচিত দুটি
পদও পাওয়া গিয়েছে। দুটি পদেই “
বীর হাম্বীর” ভণিতা দেওয়া রয়েছে।

শান্তিপুর, একচক্রা প্রভৃতি বৈষ্ণবদের শ্রীপাট দর্শন করে তিনি বৃন্দাবনে গিয়ে
শ্রীরূপ ও সনাতন গোস্বামীর  
অপ্রকট হওয়ার কারণে দেখা না পেয়ে, শ্রীজীব গোস্বামীর কাছে গোস্বামিগ্রন্থগুলি অধ্যয়ন করে
গোপাল ভট্টের
কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন। বৃন্দাবনের গোস্বামীগণ তাঁদের হেফাজতে থাকা বিভিন্ন গ্রন্থের সমাহার নদীয়ায়  
স্থানান্তরিত করার কথা ভাবেন। সেইমত তাঁরা শ্রীনিবাস  আচার্য্য,
নরোত্তম ঠাকুরশ্যামানন্দ বা দুঃখী
কৃষ্ণদাস এর সঙ্গে গ্রন্থগুলি নবদ্বীপে পাঠানো স্থির করেন।  সেই গ্রন্থের সমাহার সহ, তাঁদের স্বদেশ অভিমুখে
যাত্রাকালে বনবিষ্ণুপুরের কাছে মল্লরাজ
বীর হাম্বীরের লুঠেরারা, ধনরত্ন ভেবে সেই গ্রন্থের সমাহার চুরি করে
। এরপরেই শ্রীনিবাসের সংস্পর্শে এসে রাজা
বীর হাম্বীর সস্ত্রীক বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করেন এবং সমস্ত গ্রন্থ  
ফেরত দেন। এই গ্রন্থগুলির মধ্যে
কৃষ্ণদাস কবিরাজের শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থটিও ছিল। গ্রন্থ চুরি যাবার  
খব বৃন্দাবনে পৌঁছালে
কবিরাজ গোস্বামী রাধাকুণ্ডে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে কথিত আছে। তাঁকে  
উদ্ধার করা গেলেও আর বাঁচানো যায়নি।
শ্রীনিবাস আচার্যের ব্যক্তিগত জীবন                                                পাতার উপরে . . .    
কবি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে নিত্যানন্দ ঠাকুরের প্রথমা স্ত্রী জাহ্নবা ঠাকুরাণীর আদেশানুসারে দুবার বিবাহ
করেন। তাঁর প্রথমা পত্নী নাম ঈশ্বরী এবং দ্বিতীয় পত্নীর নাম গৌরাঙ্গপ্রিয়া। মুরারিলাল অধিকারীর ১৯২৫
সালে প্রকাশিত, "বৈষ্ণব দিগ্ দর্শিনী" গ্রন্থে শ্রীনিবাস আচার্য্যের ২য় বিবাহ সম্বন্ধে লেখা রয়েছে . . .

বিষ্ণুপুরে অবস্থিতি কালে, রাজা বীর হাম্বীরের অনুরোধে শ্রীআচার্য্য প্রভু পশ্চিম-গোপালপুর নিবাসী রঘুনাথ
চক্রবর্তীর কন্যা পদ্মাবতী (পরে গৌরাঙ্গপ্রিয়া) দেবীর পাণিগ্রহণ করেন। তখন তাঁহার বয়স ৬৯ বত্সর
।”

শ্রীনিবাস আচার্য্যের পুত্র প্রসিদ্ধ পদকর্তা
গোবিন্দগতি ওরফে গতিগোবিন্দ ঠাকুর এবং কন্যা হেমলতা
ঠাকুরাণী ছিলেন   বিখ্যাত পদকর্তা
যদুনন্দন দাসের দীক্ষাদাত্রী। শ্রীনিবাসাচার্য্যের বৃদ্ধপ্রপৌত্র রাধামোহন
ঠাকুর প্রসিদ্ধ পদকর্তা ও পদ সংগ্রাহক এবং "পদামৃতসমুদ্র" নামক বিশাল গ্রন্থের প্রণেতা। রাধামোহনের
শিষ্যদের মধ্যে ছিলেন তখনকার দিনের বিখ্যাত কীর্তনিয়া এবং পৃথিবীতে একক প্রচেষ্টায় সৃষ্ট সর্ববৃহৎ  
পদসংকলন বা কবিতা ও গীত সংকলন শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর সংকলক গোকুলানন্দ সেন ওরফে
বৈষ্ণবদাস,
প্রখ্যাত পদকর্তা
উদ্ধবদাস এবং ব্রিটিশদের দ্বারা মিথ্যা মামলায় ফাঁসীর সাজাপ্রাপ্ত মহারাজ নন্দকুমার
শ্রীনিবাসের পদ ও সতীশচন্দ্র রায়ের উদ্ধৃতি                                       পাতার উপরে . . .    
শ্রীনিবাসাচার্যের “শ্রীনিবাস দাস” ভণিতার “বদন-চান্দ কোন্ কুন্দারে কুন্দিল গো” পদটি প্রথম আমরা পাচ্ছি  
আনুমানিক ১৭০০
সালের বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর (হরিবল্লভ দাস) বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীক্ষণদা-
গীতচিন্তামণি”-তে। এই পদটি রয়েছে
নরহরি চক্রবর্তীর “শ্রীভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থেও। এই পদটি সহ মাত্র তিনটি
পদ রয়েছে
বৈষ্ণদাসের শ্রীশ্রীপদকল্পতরুতে। চতুর্থ পদটি আমরা পেয়েছি ১৬৪৩-১৬৭৬ সময়কালে,  
রামগোপাল দাস (গোপাল দাস) সংকলিত ও বিরচিত সংকলন “শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণ-রসকল্পবল্লী” গ্রন্থে।

শ্রীনিবাসাচার্যের “বদন-চান্দ কোন্ কুন্দারে কুন্দিল গো” পদটি সম্বন্ধে
সতীশচন্দ্র রায় তাঁর  সম্পাদিত  
বৈষ্ণবদাস বিরচিত ও সংকলিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় লিখেছেন . . .  

শ্রীনিবাসাচার্যের বেশী পদ পাওয়া যায় নাই। তবে তাঁহার---
‘বদন-চান্দ কোন্        কুন্দারে কুন্দিলে গো
.        কে না কুন্দিলে দুই আঁখি।
দেখিতে দেখিতে মোর পরাণ যেমন করে
.        সেই সে পরাণ তার সাখী॥’
ইত্যাদি ৭৯০ সংখ্যক শ্রীকৃষ্ণের রুপানুরাগের পদটি অতি অপূর্ব্ব। সমগ্র পদাবলী ,সাহিত্যেও বোহ হয়, ইহা
অপেক্ষা সরল ও আন্তরিকতা-পূর্ণ রূপ-বর্ণনার পদ বড় বেশী পাওয়া যাইবে না। শ্রীনিবাসাচার্য্যের ৩০৭২,  
৩০৭৩ সংখ্যক পদ-দ্বয় প্রার্থনা-বিষয়ক। তিনি ঐ পদে গুণমঞ্জরী সখীর অভিন্ন-তনু স্বীয় গুরুদেবের নিকট
শ্রীরাধা-কৃষ্ণের যুগল-সেবনরূপ কৃপা যাচ্ ঞা করিয়াছেন
।”
শ্রীনিবাসাচার্য্যের অপর ভণিতা চৈতন্যনন্দন এর
পদাবলীর
পাতায় যেতে . . .