কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় - জন্মগ্রহণ
করেন বর্ধমান জেলার ধাত্রীগ্রামে। তাঁদের আদি নিবাস
হুগলি জেলার গুড়াপ-এ।

পিতা জয়গোপাল মুখোপাধ্যায়।
কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের কবিতা মিলনসাগরে তুলে, তাঁকে মিলনসাগরের কবিদের সভায় স্থান
দিতে পেরে আমরা ধন্য হলাম এবং আগামী প্রজন্মের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারলে এই প্রয়াসের সার্থকতা।
এই কবিতার পাতা, তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য।



উত্স -   
  • সুকুমার সেন, “বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস” ৪র্থ খণ্ড, ৩য় পরিচ্ছেদ “চিত্র ও চরিত্র”
  • ডঃ শিশির কুমার দাশ, সংসদ সাহিত্য সঙ্গী ২০০৩।           
  • ডঃ শর্মিষ্ঠা সেন নির্দেশিত সুকুমার সেনের "বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস", ৪র্থ খণ্ড থেকে কবি সম্বন্ধে
    সমালোচনা ও আলেখ্য।
  • সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত “সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান” ১ম খণ্ড, ৫ম সংস্করণ,
    জুলাই ২০১০।    
  • উইকিপেডিয়া    
  • অনলাইন সিনে ম্যাগাজিন 'মুখ ও মুখোশ', চলচ্চিত্র পাঠঃ দেবী



গল্পকার কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন


আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতার প্রথম প্রকাশ, কবির জন্ম শতবর্ষে - ৫.৬.২০২০।
১৭টি নতুন কবিতা ও সুকুমার সেনের উদ্ধৃতি নিয়ে পরিবর্ধিত সংস্করণ - ১৩.৬.২০২০।
                ^^ উপরে ফেরত   
...
কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের শিক্ষা ও কর্মজীবন   
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের গল্প   
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস   
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের সম্পাদনা   
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের অন্যান্য রচনা   
প্রভাতকুমার ও রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে সুকুমার সেনের উদ্ধৃতি  
প্রভাতকুমারের সাহিত্য সম্বন্ধে শিশিরকুমার দাশের উগ্ধৃতি  
কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের কবিতা    
*
কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের শিক্ষা ও কর্মজীবন -                              ^^ উপরে ফেরত   
১৮৮৮সালে কবি জামালপুর হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং ১৮৯৫ সালে পাটনা কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করে
১৯০১ সালে বিলেত যান ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য। ১৯০৩ ব্যারিস্টার হয়ে দেশে ফিরে ৮ বছর গয়ায়
ওকালতি করেন। ১৯১৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কলেজে অধ্যাপক হয়ে যোগ দেন।
*
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের গল্প -                                                         ^^ উপরে ফেরত   
গল্পকার কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, রাধামণি দেবী ছদ্মনামে, কলকাতার এইচ.বসু পারফিউমার দ্বারা
অয়োজিত, প্রখ্যাত “কুন্তলীন পুরস্কারের” দ্বিতীয় বর্ষ, ১৩০৪ বঙ্গাব্দে (১৮৯৭) “পূজার চিঠি” গল্পটি লিখে প্রথম
পুরস্কার লাভ করেন। এটিই তাঁর প্রথম প্রকাশিত গল্প। এই গল্পটির
PDF মিলনসাগর থেকে ডাউনলোড করে
পড়তে
এখানে ক্লিক করুন . . .

এই ছদ্মনামেই “শ্রীবিলাসের দুর্বুদ্ধি” নামক একটি গল্প প্রকাশিত হয় “প্রদীপ” পত্রিকায় ১৮৯৮ সালে। এই
পত্রিকায় তাঁর স্বনামে প্রকাশিত “অঙ্গহীনা' এবং “হিমানী” নামক দুটি গল্পে তিনি প্রথম সমালোচকের দৃষ্টি
আকর্ষণ করেন।

তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ “নবকথা” (১৮৯৯) প্রকাশিত হবার পর থেকে তিনি বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট ছোটোগল্প
রচয়িতা হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। প্রভাতকুমার প্রায় একশো গল্প লিখেছেন। “নবকথা” (১৮৯৯), “ষোড়শী”
(১৯০৬), “দেশী ও বিলাতী” (১৯০৯), “গল্পাঞ্জলি” (১৯১৩), “গল্পবীথি” (১৯১৬), “পত্রপুষ্প” (১৯১৭), "গহনার বাক্স"
(১৯২১), “হতাশ প্রেমিক” (১৯২৪), “বিলাসিনী” (১৯২৬), “যুবকের প্রেম” (১৯২৮), “নূতন বউ” (১৯২১), “জামাতা
বাবাজী” (১৯৩১) প্রভৃতি গল্পগ্রন্থ প্রত্যেকটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।
*
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস -                                                   ^^ উপরে ফেরত   
তাঁর রচিত উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে “নবীন সন্ন্যাসী” (১৯১২), “রত্নদীপ” (৯৯১৫), “জীবনের মূল্য” (১৯১৭)।
প্রভাতকুমারের রচনাবলী পাঁচখণ্ডে ১৯২৩ - ২৪ সালের মধ্যে বসুমতী সাহিত্য মন্দির থেকে প্রকাশিত  
হয়েছিল। “রত্নদীপ” তাঁর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস রূপে স্বীকৃত এবং এটির নাট্য ও চিত্ররূপও জনপ্রিয় হয়।
*
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের সম্পাদনা -                                                 ^^ উপরে ফেরত   
তিনি “মানসী ও মর্মবাণী' পত্রিকাটি মহারাজ জগদিন্দ্রনাথ রায়ের সঙ্গে সহ-সম্পাদনা করেছেন। “প্রদীপ”,
“প্রবাসী" ও 'ভারতী' পত্রিকায় নিয়মিত লিখেছেন। শ্রীজানোয়ারচন্দ্র শর্মা ছদ্মনামে রচিত “সূক্ষ্মলোম পরিণয়”
নামক পঞ্চাঙ্ক নাটকটি “মর্মবাণী'তে প্রকাশিত হয়। তিনি ইংল্যাণ্ড সম্বন্ধেও নানা প্রবন্ধ লিখেছেন।
*
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের অন্যান্য রচনা -                                         ^^ উপরে ফেরত   
তাঁর উল্লেখযোগ্য অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে “অভিশাপ” (বাঙ্গকাব্য), “গল্পবীথি”, “হতাশ প্রেমিক ও অন্যান্য
গল্প”, “সিন্দূর কৌটা”, “দেশী ও বিলাতী', “সতীর পতি", “রমাসুন্দরী” প্রভৃতি।
*
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের সাহিত্য সম্বন্ধে শিশিরকুমার দাশের উগ্ধৃতি -      ^^ উপরে ফেরত   
ডঃ শিশিরকুমার দাশ তাঁর বাংলা সাহিত্য সঙ্গী গ্রন্থে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের রচিত সাহিত্য সম্বন্ধে
লিখেছেন . . .


প্রভাতকুমারের সমস্ত রচনার বৈশিষ্ট্য সুখপাঠ্যতা। তার গল্পগুলি আখ্যান প্রধান। হাস্যরস তার প্রধান
বৈশিষ্ট। জীবনের  জটিল ও গভীর  সমস্যার চেয়েও লঘু  মুহূর্ত ও কৌতুকময়তাই তার রচনায় প্রাধান্য  
পেয়েছে।  কিন্তু 'কাশীবাসিনা', 'দেবী', “ফুলের মুল্য", "আদরিণী" প্রভৃতি গল্পে জীবনের সুক্ষ্ম ও গভীর   
অনুভূতির প্রকাশ হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় তাঁর গল্পগুলি “হাসির হাওয়ায় কল্পনার ঝোঁকে পালের উপর
পাল তুলিয়া একেবারে হুহু করিয়া ছুটিয়া চলিয়াছে।” তাঁর গল্পে বাঙালি যুবকের রোমাঞ্চ, আদর্শবাদ ও  
অসংগতির নানা দিক পরিস্ফুট। কিছু কোনো কোনো গল্পে তিনি জীবনের জটিল অনুভূতিও দক্ষতার সঙ্গে
রূপায়িত করেছেন। “দেবী' গল্পটি তার উজ্জ্বল নিদর্শন
।”

প্রখ্যাত চলচিত্রকার ও
কবি সত্যজিৎ রায় "দেবী" গল্পটির ১৯৬০ সালে চলচিত্রায়ণ করেন। এই  ছবিটি  
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এ সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বাংলা ছায়াছবির জন্য রাষ্ট্রপতির রৌপ্য পদক পায়।  
১৯৬০ এবং ১৯৬২ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবের সর্বোচ্চ পদক পাম দি’অর
(The Palme d'Or) এর জন্য
মনোনিত হয়েছিল।
*
কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের কবিতা -                                             ^^ উপরে ফেরত   
মিলনসাগরে আমরা মনে করি যে বাঙালী হয়ে পৃথিবীতে এলেই, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তার সাথে আসে একটি
কবিসত্তা, একটি অকর্তিত বা আন্-কাট্ হীরের মতো! এবার, এই আন্-কাট্ হীরের মত কবিসত্তাটিকে যে
যতটা ঘষা-মাজা করে, তাঁর কবিসত্তা ততটা উজ্জ্বলতার সঙ্গে চারিদিক উদ্ভাসিত করে। কথাটি মোটেই  
অসত্য-ভাষণ নয় কারণ প্রাচীন কাল থেকে বাংলার ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব ও মনীষীদের ক্ষেত্রে আমরা তা  
দীর্ঘকাল ধরে সত্য বলে দেখে আসছি। প্রখ্যাত গল্পকার ও ঔপন্যাসিক প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ও বাঙালীর
জন্মসূত্রে পাওয়া, সেই কবিসত্তা থেকে বাদ পড়েন নি!

তিনি ছাত্রাবস্থায় "ভারতী" পত্রিকায় কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে সাহিত্যজীবন শুরু করেন। তাঁর প্রথম রচনা
“চির-নব” নামের কবিতাটি, "ভারতী ও বালক" পত্রিকার কার্ত্তিক ১৮৯০ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। কবির তখন
মাত্র ১৭বছর বয়স। সেই সময় তিনি আরও কিছু কবিতা লিখেছেন যা “ভারতী ও বালক”, “ভারতী”, “দাসী”,
“প্রদীপ” প্রভৃতি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই কবিতাগুলিতে তাঁর হাস্যরস ও কৌতুকময়তা অনেক ক্ষেত্রেই  
যেন তাঁর সাক্ষর বা ভণিতার কাজ করছে! এর পরে তিনি গদ্যরচনা শুরু করেন।

মূলত
রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায় কবি প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, কবি থেকে গল্পকার ও ঔপন্যাসিক রূপে  
আত্মপ্রকাশ করেন। ফলস্বরূপ ১৯০১ সালের (১৩০৮ বঙ্গাব্দ) পরে তিনি কবিতা লেখা প্রায় ছেড়েই দেন।  
ওটুকু সময়ের মধ্যে রচিত তাঁর কবিতার ভাব, ভাষা, বিষয়, ছন্দ ইত্যাদি নিয়ে আমরা যা দেখতে পাই, তা
থেকে আমরা নিশ্চিত যে যদি তিনি কবিতা না ছাড়তেন তা হলে পরবর্তিতে তাঁর কবিতা, বাংলার বহু  
প্রথমসারির কবিকেও টেক্কা দিতে সক্ষম হতো। হয়ত
রবীন্দ্রনাথও তার থেকে বাদ পড়তেন না!
*
প্রভাতকুমার ও রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে সুকুমার সেনের উদ্ধৃতি -                       ^^ উপরে ফেরত   
সুকুমার সেন তাঁর “বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস” ৪র্থ খণ্ড, ৩য় পরিচ্ছেদ “চিত্র ও চরিত্র”-এর ৪০-৫২ পৃষ্ঠায়  
ভাবে প্রভাতকুমার কবি থেকে, মূলত রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায় গল্পকার ও ঔপন্যাসিক রূপে আত্মপ্রকাশ
করেন। রবীন্দ্রনাথকে প্রভাতকুমার সম্ভবত তাঁর একজন মেন্টর রূপে শ্রদ্ধা করতেন। তিনি রবীন্দ্র বিরোধী
গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষুরধার লেখা লিখেছেন। “দাসী” পত্রিকার পরিচালকদের
 মধ্যে কেউ কেউ রবীন্দ্র-বিদ্বেষী
হয়ে পড়ায় তিনি “দাসী”তে লেখা দেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কেবল “ভারতী” আর “প্রদীপ” পত্রিকায়
 
রচনা বার হতে থাকে।

প্রভাতকুমারের লেখনী রবীন্দ্রনাথকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে, তাঁর “রমাসুন্দরী” (১৯০৮ সালে প্রকাশিত বই
আকারে) উপন্যাসে কাশ্মীরের বিবরণ পড়ে তিনি কাশ্মীর ঘুরে আসা মনস্থির করেন ১৯১৪ সালে! কিন্তু তিনি
পরে জানতে পারেন যে প্রভাতকুমার ইংল্যাণ্ডে বসে লেখাটি লিখেছিলেন। কাশ্মীর কোনদিন যাননি। কশ্মীর
সম্বন্ধে তথ্য আহরণ করেছিলেন বিটিশ মিউসিয়ামে!

এই আলেখ্যে সুকুমার সেন তাঁর স্বভাবসিদ্ধ সমালোচকের ভূমিকায়, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের রচনা
 
সম্বন্ধে লিখেছেন। তা থেকে কিছু কিছু অংশ এখানে তুলে দিচ্ছি . . .

সাধনায় রবীন্দ্রনাথ যে ছোটগল্পের ধারা উন্মুক্ত করিয়া দিলেন তাহাই অনতিবিলম্বে বাঙ্গালা সাহিত্যে  
প্রতিভাবান্ লেখকদের সুগমতম সরণি হইস। কিন্তু সে পথে সরিতে আগামীদের কিছু ইতস্তত করিতে
 
হইয়াছিল। কবিতার বাঁধা রাস্তায় চলিলে সাধারণ পাঠকের অনুমোদনের অভাব হইত না। রবীন্দ্রনাথের
কৃপায় কবিতা লেখাও বেশ সহজসাধ্য হইয়া আসিয়াছিল। এই কারণে পরে যাঁহারা গল্পে-উপন্যাসে নাম
করিয়াছিলেন তাঁহাদের প্রায় সকলেরই কবিতালেখক রূপে মাসিক-পত্রে প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটিয়াছিল।
 
রবীন্দ্রনাথের পরেই যিনি ছোটগল্প রচনায় সর্বাধিক কৃতিত্বের অধিকারী সেই প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ও
(১৮৭৩-১৯৩২) এই নিয়মের অন্যথা করেন নাই।

কিছুদিন ধরিয়া প্রভাতকুমার গল্প ও কবিতা দুইই লিখিতেন, ১৩০৮ সালের পর প্রায় ছাড়িয়া দেন। তাঁহার
কবিতা প্রধানত ‘দাসী’, ‘ভারতী’ ও ‘প্রদীপ’ এই তিন পত্রিকাতেই প্রকাশিত হইত। প্রভাতকুমারের একটিমাত্র
অতিক্ষুদ্র কবিতাপুস্তিকা প্রকাশিত হইয়াছিল---‘অভিশাপ (ব্যঙ্গকাব্য)’। কবিতাটি ভারতীতে (১৩০৬) প্রথম
বাহির হইয়াছিল।
(এই কাব্যগ্রন্থটি বা ভারতী পত্রিকার উপরোক্ত সংখ্যাটি আমরা হাতে পাইনি। তাই
অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে এই কবিতাটি মিলনসাগরে তোলা সম্ভব হলো না।)


প্রভাতকুমারের গদ্যরচনায় যে একটি বিশিষ্ট গুণ---প্রচ্ছন্ন স্নিগ্ধ কৌতুক---তাহা ইঁহার প্রথম-রচিত কবিতার
মধ্যেও দুর্লক্ষ্য নয়। . . .

. . . রবীন্দ্রনাথ যে বছর ভারতী সম্পাদনা করিয়াছিলেন সেই বছরে (১৩০৫) ভারতীতে প্রভাতকুমারের শুধু
চারিটি কবিতা প্রকাশিত হইয়াছিল। . . .  

. . . দাসীর পরিচালকবর্গের মধ্যে কেহ কেহ রবীন্দ্র-বিদ্বেষী হইয়া পড়ায় প্রভাতকুমার দাসীতে লেখা দেওয়া
বন্ধ করেন। অতঃপর ভারতী ও প্রদীপে তাঁহার রচনা বাহির হইতে থাকে। (গ্রন্থের ৪৪-পৃষ্ঠার পাদটীকায়
দ্রষ্টব্য)

. . . কবিতা লেখার সূত্রেই বোধ করি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে প্র
ভাতকুমারের প্রথম যোগাযোগ। প্রভাতকুমারের
লিখিবার প্রবণতা লক্ষ্য করিয়া রবীন্দ্রনাথ তাঁহাকে গদ্য রচনায় প্রবৃত্ত করিয়াছিলেন। রবী
ন্দ্রনাথের ইঙ্গিত
ব্যর্থ হয় নাই। প্রভাতকুমারের  গদ্য লেখাতেই তাঁহার মনের সতেজ ভাব ও প্রকাশের ঋজুভঙ্গি প্রকট
 
হইয়াছে। . . .

. . . প্রভাতকুমারের উপন্যাসে ঘটনার ঘনঘটা আছে, ভূমিকার ভিড় আছে। কিন্তু সে ঘটনা যেন রেলগাড়িতে
বাহির পর্ষবেক্ষণ এবং সে ভিড় যেন রেলষ্টেশনে যাত্রীর ভিড়। অর্থাৎ প্রভাতকুমারের উপন্যাসে পাই চিত্র-
পরম্পরা বা ছোটগল্পের মালা, পাইনা মানুষের জীবনের কোন কাহিনী। প্লট রোমান্টিক---তাঁহার ছোটগল্পের
চেয়েও রোমান্টিক, এবং কাহিনী চিত্রবহুল এবং তাহার মধ্যে চমকপ্রদ ঘটনাও যথেষ্ট আছে। তবে চিত্র ও
ঘটনা প্রায়ই কাহিনীর মধ্যে মিশাইয়া মিলাইয়া যাইতে পারে নাই। ইমোশনের অভাব আছে। আসলে
প্রভাতকু
মারের উপন্যাসে কাব্যধর্মের অপেক্ষা নাটকধর্মের লক্ষণই অধিক।

প্রভাতকুমারের অধিকাংশ উপন্যাসের প্লট সত্য ঘটনার উপর প্রতিষ্ঠিত। এই কারণে বোধ করি কোন কোন
ভূমিকা যতটা উজ্জ্বল হইয়া ফোটে অপর ভূমিকাগুলি  তেমন ফোটে না। অর্থাৎ যেখানে লেখাকের সাক্ষাৎ
জ্ঞানের অভাব আছে সেখানে রঙ ফিকা হইয়া গিয়াছে। প্রায়ই অবান্তর চিত্রের উজ্জ্বলতায় অথবা ঘটনার
চমত্কারিত্বে মূল কাহিনীর কৌতূহল খর্ব হইয়া গিয়াছে, এবং সে কারণে প্রধান চরিত্রগুলি প্রাণহীন ও
অনুজ্জ্বল হইয়া পড়িয়াছে
। . . . ”

সুকুমার সেনের “বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস” ৪র্থ খণ্ড, ৩য় পরিচ্ছেদ “চিত্র ও চরিত্র” থেকে প্রভাতকুমারের
উপরে সম্পূর্ণ লেখাটি,
PDF আকারে মিলনসাগরে তোলা হয়েছে। সেই লেখাটি ডাইনলোড করে  পড়তে  
এখানে ক্লিক করুন . . .