মুক্তিযুদ্ধের গান ও কবিতার দেয়ালিকা
|
|
|
এই পাতাটি পাশাপাশি, ডাইনে-বামে ও কবিতাগুলি উপর-নীচ স্ক্রল করে! This page scrolls sideways < Left - Right >. Poems scroll ^ Up - Down v.
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
ওরা ঘুমিয়ে আছে, ওদের ঘুমোতে দাও।
ওদের কবরে এখন গজিয়ে উঠেছে ঘাস,
যেমন যুবকের বুকে ঘন রোমরাজি।
ওরা ঘুমিয়ে আছে আমরা জেগে থাকবো বলে।
এখন ওদের কোনো ঝুটঝামেলা নেই,
নেই ঋণ কিংবা ব্যাঙ্ক ত্র্যাকাউন্টের ভাবনা,
প্রতি মাসে বাড়ি ভাড়া মেটানোর
দুশ্চিন্তা-কুশ ওদের রাতের ঘুমে চিড় ধরায় না আর;
ওরা বড় শান্তিতে নিদ্রিত এখন,
ওদের শান্তি ভঙ্গ কোরো না।
ওরা ঘুমিয়ে আছে, নিথর পাথর ;
সেই পবিত্র পাথরে আঁচড় কেটো না।
ওরা রাইফেলের গর্জে-ওঠা মুখে পেতে দিয়েছিল বুক,
যাতে আজ আমাদের হৃৎপিণ্ড নির্বিঘ্নে স্পন্দিত হতে পারে।
ওরা ঘুমিয়ে আছে কবি শামসুর রাহমান। আবৃত্তি
করেছেন বাচিক শিল্পী সাবিনা জাহান। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি
কবির বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। ভিডিওটি সৌজন্যে BAFSD YouTube
Channel. । কবিতার কথা সৌজন্যে Shamsur Rahman I Poet of
Independence Facebook ।
"রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ তখন শেষ প্রায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাক হানাদার
বাহিনীকে ঘায়েল করার একের পর এক সংবাদ আসতে থাকে। লাখো প্রাণের
বিনিময়ে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। বিজয়ের প্রহর গুনছে স্বাধীনতাকামী
মানুষ। ঠিক তখনই জাতির মেধাবী সন্তানদের দরজায় ঠক ঠক ঠক...।
এরপর দেশের ইতিহাসে ঘটে যায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ! একে একে হত্যা করা হয়
চিকিৎসক, শিক্ষাবিদ, গবেষক, বিজ্ঞানী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ জাতির মেধাবী
সন্তানদের। সারা দেশে তৈরি হয় গণকবর। দেশের সূর্য সন্তানদের এই লাশের
স্তুপের ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর
পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের
অভ্যুদয় ঘটে। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের
এ দিনে দেশকে মেধাশূন্য করে দিতে পরিকল্পিতভাবে তালিকা করে চালানো
হয়েছিল নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। ‘ওরা ঘুমিয়ে আছে, ওদের ঘুমোতে দাও...../ওরা
ঘুমিয়ে আছে, আমরা জেগে থাকবো বলে।’ কবি শামসুর রাহমান কবিতায়
এই শহীদদের শান্তিতে ঘুমোতে দিতে বলেছিলেন। যাদের মুক্তিযুদ্ধে যোগদান,
মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশের কথা বলতে গিয়ে প্রাণ
দিতে হয়েছিল।"
--- উত্স : শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: ওরা ঘুমিয়ে আছে... , জাতীয় নিউজ ডেস্ক,
বার্তা২৪.কম ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
ওরা ঘুমিয়ে আছে, ওদের ঘুমোতে দাও।
একদিন ওরা আমাদেরই মতো হেঁটে যেতো দীর্ঘ পথ দিয়ে,
আড্ডা দিতো কাফেটেরিয়ায়, চা-খানায়,
পেঙ্গুইন সিরিজের বই পড়তো, দেখতো নাটক,
নারী ও নিসর্গের প্রতি ভালোবাসা ছিল প্রবল,
বলতো দেশের ললাট থেকে দুর্দশার মেঘ মুছে ফেলবার কথা,
ওরা কাল ওদের কণ্ঠ স্তব্ধ হতে দিয়েছে,
আজ আমাদের কণ্ঠে আগামীর গান ঝংকৃত হবে বলে
ডাল ভাতের ক্ষুধার চেয়েও তীক্ষ্ম এক ক্ষুধায় জ্বলে
পানির তৃষ্ণার চেয়েও গভীর তৃষ্ণায় কাতর
ওরা ছুটে বেরিয়েছিল পথে,
ওদের সাধ আর স্বপ্ন বুলেটে ঝাঁঝারা হয়ে গিয়েছিল
আমাদের নানা রঙের
স্বপ্নের পাখায় আকাশ ছেয়ে যাবে বলে।
কারো মা তার সন্তানের মুখে পুরে দিয়েছিল
নারকেলের নাড়ু,
কারো জামার বোতামের ঘরে
টাটকা গোলাপ সাজিয়ে দিয়েছিল বোন,
বিদায়ের কালে কাউকে চুম্বন উপহার দিয়েছিল প্রিয়তমা।
প্রত্যাবর্তনের কথা বলে
ওরা কেউ ফিরে আসে নি,
আমরা আজ তাদের রক্তরঞ্জিত পথ ধরে এগিয়ে যাবো বলে।
যাবতীয় গোলাপ, রজনীগন্ধা, বকুল, চন্দ্রমল্লিকা,
কোকিল, দোয়েল, চন্দনা,
পায়রা, ময়ূর, শস্যরাশি এবং আবাল-বৃদ্ধবনিতাকে
গিলে খাচ্ছিল সোৎসাহে
কিম্ভুতকিমাকার এক জন্তু ; ওরা সেই জানোয়ারকে
বাধা দিতে গিয়ে ঢলে পড়লো সূর্যাস্তের
জাফরানি গালিচা-বিছানো পথে,
আমাদের জীবনে সূর্যোদয় জয়োল্লাস ব্যাপক ছড়িয়ে দেবে বলে।
ওরা ঘুমিয়ে আছে, ওদের ঘুমোতে দাও।
পথশ্রান্ত ওরা, নিদ্রার গহ্বরে ওদের বিশ্রামের দরকার ;
ওরা চেয়েছিল যেন ভয়ংকর দানবেরা মুখ খুলতে না পারে কখনো,
ওরা চেয়েছিল প্রাণীভূক উদ্ভিদ না জন্মায় এখানে,
ওরা পুতেছিল এমন একটি গাছ
যা কখনো বিকৃত হবে না রোমশ হাতের ঝটকায়,
আমাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যে
ওরা ওদের বর্তমানকে উৎসর্গ করেছিল অসীম সাহসিকতায়।
ওরা ঘুমিয়ে আছে, ওদের ঘুমোতে দাও ;
আমাদের চোখের পাতা কোনো কুহকে বুজে এলে চলবে না আজ
কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (১৬.১০.১৯৫৬ - ২১.৬.১৯৯১)। বাচিক শিল্পী নাজমুল আহসান-এর কণ্ঠে আবৃত্তি শুনুন, ভিডিওটি সৌজন্যে Nazmul Ahsan YouTube Channel. ।
কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁর ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প’ কবিতায় সমকালীন স্বৈরাচারী শাসকের সন্ত্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের বর্বর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও অত্যাচারের দুঃসহ স্মৃতিও
তুলে ধরেছিলেন। রচনাকাল: ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সাল। কাব্যগ্রন্থ: 'ছোবল' (১৯৮৭)। কবিতার কথা সৌজন্যে কবিতাককটেল.কম ওয়েবসাইট ।
তাঁর চোখ বাঁধা হলো।
বুটের প্রথম লাথি রক্তাক্ত করলো তার মুখ।
থ্যাতলানো ঠোঁটজোড়া লালা-রক্তে একাকার হলো,
জিভ নাড়তেই দুটো ভাঙা দাঁত ঝরে পড়লো কংক্রিটে।
মা...মাগ... চেঁচিয়ে উঠলো সে।
পাঁচশো পঞ্চান্ন মার্কা আধ-খাওয় একটা সিগারেট
প্রথমে স্পর্শ করলো তার বুক।
পোড়া মাংসের উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো ঘরের বাতাসে।
জ্বলন্ত সিগারেটের স্পর্শ
তার দেহে টসটসে আঙুরের মতো ফোস্কা তুলতে লাগলো।
দ্বিতীয় লাথিতে ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে গেলো দেহ,
এবার সে চিৎকার করতে পারলো না।
তাকে চিৎ করা হলো।
পেটের ওপর উঠে এলো দু’জোড়া বুট, কালো ও কর্কশ।
কারণ সে তার পাকস্থলির কষ্টের কথা বলেছিলো,
বলেছিলো অনাহার ও ক্ষুধার কথা।
সে তার দেহের বস্ত্রহীনতার কথা বলেছিলো-
বুঝি সে-কারণে
ফর ফর করে টেনে ছিঁড়ে নেয়া হলো তার সার্ট।
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
বাতাসে লাশের গন্ধ কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (১৬.১০.১৯৫৬ - ২১.৬.১৯৯১)। বাচিক শিল্পী ফয়সাল আজিজ-এর কণ্ঠে আবৃত্তি শুনুন, ভিডিওটি
সৌজন্যে VoiceArt YouTube Channel. । ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ "উপদ্রুত উপকূল" এর কবিতা। কবিতাটির রচনাকাল ৩ ডিসেম্বর ১৯৭৭
হলেও মুক্তিযুদ্ধেকালে পঞ্চদশ বর্ষীয় এই প্রত্যক্ষদর্শী কবির কবিতাটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতেই রচিত। তথ্যসূত্র : "রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর রচনা সমগ্র" : প্রথম খণ্ড।
সম্পাদনা: অসীম সাহা। প্রকাশক : মুজিবর রহমান খোকা, "বিদ্যাপ্রকাশ" প্রকাশনী, বাংলাদেশ। কবিতার কথা সৌজন্যে কবিতাককটেল.কম ওয়েবসাইট ।
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,
আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে-
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে,
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।
এই রক্তমাখা মটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধেছিলো।
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আঁধার।
আজ তারা আলোহীন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায়।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আড়ষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা, -একি তবে নষ্ট জন্ম?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল?
জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ সেই পুরোনো শকুন।
বাতাশে লাশের গন্ধ-
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দোলে মাংসের তুফান।
মাটিতে রক্তের দাগ-
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়।
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ
|
এ চোখে ঘুম আসে না। সারারাত আমার ঘুম আসে না-
তন্দ্রার ভেতরে আমি শুনি ধর্ষিতার করুণ চিৎকার,
নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ,
মুন্ডহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বিভৎস শরীর
ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে। আমি ঘুমুতে পারিনা, আমি ঘুমোতে পারিনা-
রক্তের কাফনে মোড়া কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে
সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা।
স্বাধীনতা, সে আমার স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন-
স্বাধীনতা, সে আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।
ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
প্যান্ট খোলা হলো। সে এখন বিবস্ত্র, বীভৎস।
তার দুটো হাত-
মুষ্টিবদ্ধ যে-হাত মিছিলে পতাকার মতো উড়েছে সক্রোধে,
যে-হাতে সে পোস্টার সেঁটেছে, বিলিয়েছে লিফলেট,
লোহার হাতুড়ি দিয়ে সেই হাত ভাঙা হলো।
সেই জীবন্ত হাত, জীবন্ত মানুষের হাত।
তার দশটি আঙুল-
যে-আঙুলে ছুঁয়েছে সে মার মুখ, ভায়ের শরীর,
প্রেয়সীর চিবুকের তিল।
যে-আঙুলে ছুঁয়েছে সে সাম্যমন্ত্রে দীক্ষিত সাথীর হাত,
স্বপ্নবান হাতিয়ার,
বাটখারা দিয়ে সে-আঙুল পেষা হলো।
সেই জীবন্ত আঙুল, মানুষের জীবন্ত উপমা।
লোহার সাঁড়াশি দিয়ে,
একটি একটি করে উপড়ে নেয়া হলো তার নির্দোষ নখগুলো।
কী চমৎকার লাল রক্তের রঙ।
সে এখন মৃত।
তার শরীর ঘিরে থোকা থোকা কৃষ্ণচূড়ার মতো
ছড়িয়ে রয়েছে রক্ত, তাজা লাল রক্ত।
তার থ্যাতলানো একখানা হাত
পড়ে আছে এদেশের মানচিত্রের ওপর,
আর সে হাত থেকে ঝরে পড়ছে রক্তের দুর্বিনীত লাভা---
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে
লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে
ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে-
'কখন আসবে কবি?' 'কখন আসবে কবি?'
এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,
এই বৃক্ষে- ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,
এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না।
তাহলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?
তাহলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে,
ফুলের বাগানে ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি?
জানি, সেদিনের সব স্মৃতি মুছে দিতে
হয়েছে উদ্যত কালো হাত।
তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ
কবির বিরুদ্ধে কবি,
মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,
বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,
উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,
মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ...।
হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,
শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি
একদিন সব জানতে পারবে,- আমি তোমাদের কথা ভেবে
লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প।
ধু-ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়।
আমাদের স্বাধীনতাপ্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশে ছিল
এই ধু-ধু মাঠের সবুজে।
কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে এই মাঠে ছুটে এসেছিল
কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক, লাঙল জোয়াল কাঁধে
এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক, পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে
এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক, হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে
এসেছিল মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা,
ভবঘুরে আর তোমাদের মতো শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে।
একটি কবিতা পড়া হবে তার জন্য সে কী ব্যাকুল প্রতীক্ষা মানুষের।
'কখন আসবে কবি?' 'কখন আসবে কবি?'
শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,
হৃদয়ে লাগিল দোলা,
জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা- ;
কে রোধে তাঁহার বজ্র কণ্ঠ বাণী?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শুনলেন তাঁর
অমর কবিতাখানি:
'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।'
সেই থেকে 'স্বাধীনতা' শব্দটি আমাদের।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এই যে এখন বৃষ্টি হচ্ছে,
সবাই মিলে ভিজতে পারি।
অনেক কিছুই অরক্ষিত
অনেক কিছুই খোলা,
যেমন আকাশ, ভোরের বাতাস,
রক্তমাখা ধুলা।
তোমরা যারা অনেক দূরে
মগরা থেকে পাহাড়পুরে
রক্ত ঢেলে হাড় বিছিয়ে
অরক্ষিত পথ বেঁধেছো স্বাধীনতার,
হৃদয় জুড়ে তাদের আসন
বৃষ্টি কিংবা রোদের শাসন
সব কিছুকেই এড়িয়ে যাবে।
বৃষ্টি লেগে আগুন হবে
রোদ লাগলেই সোনা।
তোমরা যারা হারিয়ে গেছো
তাদের হাড়ে বোনা ;
বাংলাদেশে বৃষ্টি হবে,
রোদ উঠলেই সোনা।
রোদ উঠলেই সোনা
কবি নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ২১.৬.১৯৪৫)। কবির ১৯৭২ সালে
প্রকাশিত “না প্রেমিক না বিপ্লবী” কাব্যগ্রন্থের কবিতা।
ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায় কবি আব্দুল লতিফ ( আনু ১৯২৫ - ৬.২.২০০৫)। গানটি
রচিত হয়েছিল বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের সময়ে। মুক্তিযুদ্ধে, আব্দুল লতিফ সাহেবে তাঁর বিখ্যাত এই “ওরা আমার মুখের
কথা কাইড়া নিতে চায়” গানটি গাইতেন ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় বিদ্রোহী মিছিলের সামনে চলতে চলতে I কবি ও সহশিল্পীগণের কণ্ঠে
ভিডিওটি সৌজন্যে Md. Mansur Ali Biswas YouTube Channel. । গানের কথা ও তথ্য সৌজন্যে বাংলাপোয়েমস.ওয়ার্ডপ্রেস.কম ব্লগ।
ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়
ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়
ওরা কথায় কথায় শিকল পরায় আমার হাতে-পায়ে
ওরা কথায় কথায়
ওরা কথায় কথায় শিকল পরায় আমাদেরই হাতে-পায়ে
ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়
ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়
কইতো যাহা আমার দাদায়, কইছে তাহা আমার বাবায়
কইতো যাহা আমার দাদায়, কইছে তাহা আমার বাবায়
এখন কও দেহি ভাই মোর মুখে কি অন্য কথা শোভা পায়
কও দেহি ভাই
এখন কও দেহি ভাই মোর মুখে কি অন্য কথা শোভা পায়
ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়
ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়
সইমু না আর সইমু না, অন্য কথা কইমু না
যায় যদি ভাই দিমু সাধের জান,
আহা যায় যদি ভাই দিমু সাধের জান,
এই জানের বদল রাখুম রে ভাই, বাব-দাদার জবানের মান
ও হো..হো..হো….বাব-দাদার জবানের মান
যে শুইনাছে আমার দেশের গাঁওগেরামের গান
নানান রঙয়ের নানান রসে, ভইরাছে তার প্রাণ
যে শুইনাছে আমার দেশের গাঁওগেরামের গান
নানান রঙয়ের নানান রসে, ভইরাছে তার প্রাণ
যপ-কীর্তন, ভাসান-জারি, গাজীর গীত আর কবি সারি
যপ-কীর্তন, ভাসান-জারি, গাজীর গীত আর কবি সারি
আমার এই বাংলাদেশের বয়াতিরা নাইচা নাইচা কেমন গায়
বাংলাদেশের
আমার এই বাংলাদেশের বয়াতিরা নাইচা নাইচা কেমন গায়
ওরা কাদের মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়
ওরা কাদের মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়
তারি তালে তালে হৈ ঢোল করতাল বাজে ঐ
বাশি কাশি খঞ্জনি সানাই, (আহা) বাশি কাশি খঞ্জনি সানাই
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
এখন কও দেখি ভাই এমন শোভা কোথায় গেলে দেখতে পাই
ও হো..হো..হো….কোথায় গেলে দেখতে পাই
পূবাল বায়ে বাদাম দিয়া লাগলে ভাটির টান
গায়রে আমার দেশের মাঝি
ভাটিয়ালি গান, (ভাইরে) ভাটিয়ালি গান
তার ভাটিয়াল গানের সুরে মনের দুঃখু যায়রে দূরে
বাজায় বাশি সেইনা সুরে রাখাল বনের ছায়
রাখাল বনের ছায়
ওরা যদি না দেয় মান আমার দেশের যতই যাক
তার সাথে মোর নাড়ীর যোগাযোগ,
আছে তার সাথে মোর নাড়ীর যোগাযোগ
এই আপদ-বিপদ দুঃখে কষ্টে এ গান আমার ভোলায় শোক
ও হো..হো..হো….এ গান আমার ভোলায় শোক
এই ঠুং ঠুংয়া ঠুং দোতারা আর সারিন্দা বাজাইয়া
গায়ের যোগী ভিক্ষা মাগে প্রেমের সারি গাইয়াগো
প্রেমের সারি গাইয়া
এই ঠুং ঠুংয়া ঠুং দোতারা আর সারিন্দা বাজাইয়া
গায়ের যোগী ভিক্ষা মাগে প্রেমের সারি গাইয়াগো
প্রেমের সারি গাইয়া
একতারা বাজাইয়া বাউল ঘুচায় মনের সকল আউল
একতারা বাজাইয়া বাউল ঘুচায় মনের সকল আউল
তারা মার্ফতি মুর্শিদি তত্ত্বে পথের দিশা দিয়া যায়
মার্ফতি মুর্শিদি তত্ত্বে পথের দিশা দিয়া যায়
ওরা তাদের মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়
ওরা তাদের মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়
ওরে আমার বাংলারে, ওরে সোনার ভান্ডারে
আরো কত আছে যে রতন আহা আরো কত আছে যে রতন
মূল্য তাহার হয়না দিলেও মনি মুক্তা আর কাঞ্চন
ও হো..হো..হো….মনি মুক্তা আর কাঞ্চন
আরেক কথা মনে হইলে আঁখি ঝইড়া যায়
ঘুমপাড়াইনা গাইত যে গান মোর দুঃখিনী মায়
আরেক কথা মনে হইলে আঁখি ঝইড়া যায়
ঘুমপাড়াইনা গাইত যে গান মোর দুঃখিনী মায়
ওমায় সোনা মানিক যাদু বলে চুমা দিয়া লইত কোলে
সোনা মানিক যাদু বলে চুমা দিয়া লইত কোলে
আরো আদর কইরা কইত মোরে আয় চান আমার বুকে আয়
আদর কইরা
আরো আদর কইরা কইত মোরে আয় চান আমার বুকে আয়
ওরা মায়ের মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়
ওরা মায়ের মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়
কও আমার মায়ের মত গান, আমার মায়ের মত প্রাণ
বাংলা বিনে কারো দেশে নাই, বাংলা বিনে কারো দেশে নাই
এই মায়ের মুখের মধুর বুলি কেমন কইরা ভুলুম ভাই
ও হো..হো..হো….কেমন কইরা ভুলুম ভাই
এই ভাষারই লাইগা যারা মায়ের দেয় ভুলান
দেশের মাটি বুকের খুনে কইরা গেছে লাল
এই ভাষারই লাইগা যারা মায়ের দেয় ভুলান
দেশের মাটি বুকের খুনে কইরা গেছে লাল
মনে কইরা তরার কথা কান্দে বনের তরু লতা
মনে কইরা তরার কথা কান্দে বনের তরু লতা
তাইতো ঘরে ঘরে কত মা তায় চোখের জলে বুক ভাসায়
ওরা মায়ের মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়
ওরা মায়ের মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়
কইরো না আর দুঃখ শোক শোনরে গাঁও গেরামের লোক
শোন শোন গঞ্জের সোনা ভাই,
তোমরা শোন শোন গঞ্জের সোনা ভাই
একবার বুক ফুলাইয়্যা কও দেখি ভাই
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই…
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এই দুর্বার অগ্নিবর্ষনে
রুখে দাঁড়াবো এক মনে
. দেখি না কতবার কতক্ষণ হয় বর্ষণ।
আমার বাংলার প্রতি ঘাসের
. ভালোবাসা পেয়েছি ;
হৃদয়ে যাকে আপন করে নিয়েছি
তাকে ভোলে এই মন কখন ?
এই ছাব্বিশে মার্চ ঊনিশ শো একাত্তর
বানচাল করে দিতে চাই বুঝি স্বপ্ন ;
হোক না যতই কঠিন এ পারাবার
তবু আমরা এ মাটির প্রেমে আছি মগ্ন।
শোন চক্রান্তকারী দুশমন্ অসভ্য বুনো !
বৃথা রক্তপাত হবে না জেনো,
. এর বদলা আমরা নেব দুনো।
আমি এ পারের কবি
সাত কোটি পবিত্র মনের ছবি
. দেখি হৃদয় আরশিতে ;
জেনো প্রেম, ভালোবাসা মাটির কাছ হ'তে
পারবে না কেউ কোনদিন কেড়ে নিতে।
২৬ শে মার্চ, ১৯৭১
কবি রণজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় (জন্ম ২৩.৩.১৯৪৮)।
রচনাকাল ২৬ মার্চ, ১৯৭১, রসোড়া, কান্দি, মুর্শিদাবাদ। কৃষ্ণনগর, নদীয়া
থেকে প্রকাশিত পত্রিকা "রবিবাসরীয়"-তে প্রকাশিত হয়েছিল।
চুয়াত্তরের প্রসব যন্ত্রনা এবং কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (১৬.১০.১৯৫৬ - ২১.৬.১৯৯১)। একাত্তরের
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে রচিত কবিতা। বাচিক শিল্পী অভির কণ্ঠে আবৃত্তি শুনুন, ভিডিওটি সৌজন্যে অভির জগৎ YouTube
Channel .। কবিতার কথা সৌজন্যে কবিতাককটেল.কম।
চিরদিন যে রমনী গভীর বিশ্বাসে
খুলে দিয়েছে শরীরের যাবতীয় পোশাক
সময়ে_অসময়ে, কালে-অকালে
বার বার মেতেছে নিষিদ্ধ অবৈধ সংগমে,
প্রতিবার এক উষ্ম প্রত্যয়ে হয়েছে অন্তসত্ত্বা।
যে রমনী শুয়ে আছে স্নেহের অশ্লীল ভঙ্গিতে
তার তপ্ত ঘামের সোঁদা ঘ্রাণে একদিন অবক্ষয় ছেড়ে
আমি জ্বলন্ত যুবক হয়ে শুয়ে ছিলাম বিপরীতে।
বায়ান্নর অবৈধ প্রসব তার স্বপুরুষ আজ
একাত্তরের সন্তান তার যক্ষাক্রান্ত হলো।
সে যক্ষা একাত্তরের নয়- সে যক্ষা আমার-
সে কঠিন যক্ষা আমাদের সমস্ত শরীরে।
বিদেশী নোতুন মডেলের দুরন্ত চাকায়
মুছে গেছে জন্মের রক্ত, কিশোরী আকাংখা।
আমার আধগতি দেখে বন্ধুরা হাসে বলে ‘এ কেমন সন্তান হলো!’
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
এই কবিতাটি পরবর্তীকালে কবি নির্মলেন্দু গুণের
চাষাভুষার কাব্য (১৯৮১) নামে কাব্যগ্রন্থে সংকলিত হয়।
এই কবিতাটি রচনার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কবির কথা ---
"১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর
ঐতিহাসিক সেই ভাষণটি মঞ্চের সামনে থেকে শোনার
সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। আমি একটি পত্রিকার জন্য
রিপোর্ট লিখতে সেখানে গিয়েছিলাম। ১৯৭৫ সালে
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ইতিহাসবিকৃত হওয়া
শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণাকে এমনভাবে
নিয়ে আসা হয়, যেন জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষণা
দিয়েছেন! তখন আগামী প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস
তুলে ধরার জন্য কবিতাটি লেখার তাগিদ অনুভব করি।
আসলে আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ছিল একটি
কবিতা। এই ভাষণটি কাব্যসমৃদ্ধ ছিল। পরবর্তী সময়ে
মার্কিন সাপ্তাহিক 'টাইমস' পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর 'পয়েট অব
পলিটিকস' শিরোনামে একটি প্রচ্ছদ স্টোরি করেছিল।
এমনকি মার্কিনরাও এই ভাষণ স্টাডি করে তার মধ্যে
কবিতার সন্ধান পেয়েছিল। ভাষণটি স্বয়ং একটি কবিতা
হওয়ায় তা নিয়ে কবিরা খুব বেশি কোনো কবিতা লেখেননি
। এই ভাষণে ১০৩টি লাইন আছে। ১৯ মিনিট দৈর্ঘ্য।
ভাষণটি তিনি এমন চমৎকারভাবে দিয়েছিলেন, প্রথমেই
'ভায়েরা আমার' বলে যে সম্বোধন করলেন, মনে হলো যেন
হাজার বছরের বাঙালির যে ভালোবাসার তৃষ্ণা এবং যে
প্রত্যয় নির্ভরতা, যার স্বপ্ন দেখেছে সে, সেই নেতা এসে
আমাদের সামনে দাঁড়িয়েছেন। ১০ লাখ লোক একসঙ্গে
লাফিয়ে উঠছিল। সব মানুষ যেন আনন্দে উত্তেজনায়
একাকার। তাদের নেতার উপস্থিতিতে নিজেদের শক্তির
প্রদর্শন করছিল তারা। এটি একটি অবিস্মরণীয় ভাষণ।" -
সূত্র: কবি নির্মলেন্দু গুণ।শ্রুতলিখন : মাহমুদ শাওন।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
সমবেত সকলের মত আমিও গোলাপ ফুল খুব ভালবাসি,
রেসকোর্স পার হয়ে যেতে এই সব গোলাপের একটি গোলাপ
গতকাল আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
শহিদ মিনার থেকে খসে পড়া একটি রক্তাক্ত ইট গতকাল আমাকে বলেছে,
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
সমবেত সকলের মত আমিও পলাশ ফুল খুব ভালবাসি, 'সমকাল'
পার হয়ে যেতে সদ্যফোটা একটি পলাশ গতকাল কানে কানে
আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
শাহাবাগ এভিন্যুর ঘূর্ণায়িত জলের ঝর্ণাটি আর্তস্বরে আমাকে বলেছে,
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
সমবেত সকলের মত আমারও স্বপ্নের প্রতি পক্ষপাত আছে,
ভালবাসা আছে- শেষ রাতে দেখা একটি সাহসী স্বপ্ন গতকাল
আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসি নি কবি নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ২১.৬.১৯৪৫)। আবৃত্তি শুনুন
বাচিক শিল্পী শিমুল মুস্তাফার কণ্ঠে, ভিডিওটি সৌজন্যে Shimul Mustapha Official YouTube Channel । কবির ১৯৭৮
সালে প্রকাশিত “'বাংলার মাটি বাংলার জল' কাব্যগ্রন্থের কবিতা।
এই বসন্তের বটমূলে সমবেত ব্যথিত মানুষগুলো সাক্ষী থাকুক,
না-ফোটা কৃষ্ণচূড়ার শুষ্কভগ্ন অপ্রস্তুত প্রাণের ঐ গোপন মঞ্জরীগুলো
কান পেতে শুনুক, আসন্ন সন্ধ্যার এই কালো ককিলটি জেনে যাক-
আমার পায়ের তলার পুণ্য মাটি ছুঁয়ে
আমি আজ সেই গোলাপের কথা রাখলাম, আজ সেই পলাশের কথা
রাখলাম, আজ সে স্বপ্নের কথা রাখলাম।
আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসি নি,
আমি আজ ভালবাসার কথা বলতে এসেছিলাম।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছো পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও।
তোমার পরমায়ু বৃদ্ধি পাক আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে,
প্রাত্যহিক বাহুর পেশীতে, জীবনের রাজপথে,
মিছিলে মিছিলে ; তুমি বেঁচে থাকো, তুমি দীর্ঘজীবী হও।
তোমার হা-করা মুখে প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে
সূর্যাস্ত অবধি হরতাল ছিল একদিন,
ছিল ধর্মঘট, ছিলো কারখানার ধুলো।
তুমি বেঁচেছিলে মানুষের কলকোলাহলে,
জননীর নাভিমূলে ক্ষতচিহ্ন রেখে
যে তুমি উলঙ্গ শিশু রাজপথে বেরিয়ে এসেছো,
সে-ই তুমি আর কতদিন ‘স্বাধীনতা, স্বাধীনতা’ বলে
ঘুরবে উলঙ্গ হয়ে পথে পথে সম্রাটের মতো?
জননীর নাভিমূল থেকে ক্ষতচিহ্ন মুছে দিয়ে
উদ্ধত হাতের মুঠোয় নেচে ওঠা, বেঁচে থাকা
হে আমার দূঃখ, স্বাধীনতা, তুমিও পোশাক পরো ;
ক্ষান্ত করো উলঙ্গ ভ্রমণ, নয়তো আমারো শরীরি থেকে
ছিঁড়ে ফেলো স্বাধীনতা নামের পতাকা।
স্বাধীনতা, উলঙ্গ কিশোর কবি নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ২১.৬.১৯৪৫)। আবৃত্তি শুনুন বাচিক শিল্পী সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য্যর কণ্ঠে, ভিডিওটি
সৌজন্যে সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য্য YouTube Channel । কবির ১৯৭২ সালে প্রকাশিত “না প্রেমিক না বিপ্লবী” কাব্যগ্রন্থের কবিতা।
আবার স্বাভাবিক হবে সবকিছু :
রাজপথ, ন্যুমার্কেট, বিশ্ববিদ্যালয়,
সিনেমা হলের সামনে ভিড় হবে,
কাউন্টারে খিলখিল হাসি।
আমরা উত্তপ্ত হবো পরস্পর হাসি-তামাসায়।
কেবল পেছন থেকে হঠাৎ ডাকবে তুমি,
নিহত আত্মার স্মৃতি শুধাবে কুশল :
‘তোমরা কেমন আছো রক্তাক্ত বাংলায়?’
কুশল সংবাদ কবি নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ২১.৬.১৯৪৫)। কবির ১৯৭২
সালে প্রকাশিত “না প্রেমিক না বিপ্লবী” কাব্যগ্রন্থের কবিতা।
বলো উলঙ্গতা স্বাধীনতা নয়,
বলো দূঃখ কোনো স্বাধীনতা নয়,
বলো ক্ষুধা কোন স্বাধীনতা নয়,
বলো ঘৃণা কোন স্বাধীনতা নয়।
জননীর নাভিমূল ছিন্ন-করা রক্তজ কিশোর তুমি
স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তুমি বেঁচে থাকো
আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে, প্রেমে, বল পেন্সিলের
যথেচ্ছ অক্ষরে, শব্দে, যৌবনে, কবিতায়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
যুদ্ধের মাঠে বিজয় পতাকা ওড়ানো একাত্তর,
লক্ষ প্রাণের মূল্যে মুক্ত আমার এ বাংলাদেশ,
না জনাব, যে ভুলে ভুলুক, আমি ভুলিবো না-
আমার গর্বের ধন, -আমি কভু ভুলিবো না ।
মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও যারা চেয়েছিল স্বাধীনতা,
তাঁরা আমাদের ভাই, তাঁরা আমাদের বোন,
তাঁরা আমাদের বন্ধু, তাঁরা আমাদের পিতা-মাতা ।
খুনের বাঁধন যে খুলে খুলুক, আমি খুলিবো না ।
আঁধার রজনী শেষে জানি আসিবে সূর্যভোর,
যতদিন রবে এই বাংলাদেশ, রহিবে একাত্তর ।
সেদিন এই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর;
না পার্ক না ফুলের বাগান,- এসবের কিছুই ছিল না,
শুধু একখণ্ড অখণ্ড আকাশ যে রকম, সে রকম দিগন্ত প্লাবিত
শিমুল মুস্তাফার কণ্ঠে আবৃত্তি
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আমি যখন বাড়িতে পৌঁছলুম তখন দুপুর
চতুর্দিকে চিক্ চিক্ করছে রোদ্দুর
আমার শরীরের ছায়া ঘুরতে ঘুরতে ছায়াহীন
একটি রেখায় এসে দাঁড়িয়েছে।
কেউ চিনতে পারেনি আমাকে
ট্রেনে সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে একজনের কাছে থেকে
আগুন চেয়ে নিয়েছিলুম,
একজন মহকূমা স্টেশনে উঠেই আমাকে
জাপটে ধরতে চেয়েছিল,
একজন পেছন থেকে কাঁধে হাত রেখে চিত্কার করে উঠেছিল।
আমি সবকেই মানুষের সমিল চেহারার কথা
স্মরণ করিয়ে দিযেছি।
কেউ চিনতে পারেনি আমাকে, একজন রাজনৈতিক নেতা
তিনি কম্যুনিস্ট ছিলেন মুখোমুখি বসে দূর থেকে
বার বার চেযে দেখলেন
কিন্তু চিনতে পারলেন না।
বারহাট্টায় নেমেই রফিজের স্টলে চা খেয়েছি,
অথচ কী আশ্চর্য পুনর্বার চিনি দিতে এসেও
রফিজ আমাকে চিনল না।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পরিবর্তনহীন গ্রামে ফিরছি আমি।
পুকুরের জলে শব্ দ উঠলো মাছের, আবার জিভ দেখালো সাপ
শান্ত স্থির বোকা গ্রামকে কাঁপিয়ে দিয়ে একটি
এরোপ্লেন তখন উড়ে গেল পশ্চিমে-
আমি বাড়ির পেছন থেকে শব্ দ করে দরোজায় টোকা দিয়ে
ডাকলুম--মা।
বাবার জমা-খরচের পাশে কার্ল মার্কস
আলমিরার একটি ভাঙা কাচের অভাব পূরণ করছে
স্কুপস্কায়ার ছেঁড়া ছবি।
মা পুকুর থেকে ফিরছেন, সন্ধ্যায় মহকূমা শহর থেকে
ফিরবেন বাবা, তাঁর পিঠে সংসারের ব্যাগ ঝুলবে তেমনি।
সেনবাড়ি থেকে খবর পেয়ে বৌদি আসবেন
পূনর্বার বিয়ে করতে অনুরোধ করবেন আমাকে।
খবর পেয়ে যশমাধব থেকে আসবেন ন্যাপকর্মী ইয়াসিন,
তিন মাইল বিষ্টির পথ হেঁটে রসুলপুর থেকে আসবে আদিত্য।
রাত্রে মারাত্বক অস্ত্র হাতে আমতলা থেকে আসবে আব্বাস।
ওরা প্রত্যেকেই জিজ্ঞেস করবে ঢাকার খবরঃ
আমাদের ভবিষ্যৎ কী?
আইয়ুব খান এখন কোথায়?
শেখ মুজিব কি ভুল করছেন?
আমার নামে কতদিন আর হুলিয়া ঝুলবে?
আমি কিছুই বলবো না, আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকা
সারি সারি চোখের ভিতরে
বাংলার বিভিন্ন ভবিষ্যতকে চেয়ে দেখবো
উত্কন্ঠিত চোখে নামবে কালো অন্ধকার,
আমি চিত্কার ক'রে কন্ঠ থেকে অক্ষম বাসনার
জ্বালা মুছে নিয়ে বলবোঃ 'আমি এসবের কিছুই জানি না,
আমি এসবের কিছুই বুঝিনা।'
বহুদিন যে দরোজা খোলে নি
বহুদিন যে দরোজায় কোনো কন্ঠস্বর ছিল না
মরচে পড়া সেই দরজা মুহুর্তেই ক্যাচ ক্যাচ শব্ দ ক'রে
খুলে গেলো
বহুদিন চেষ্টা করেও গোয়েন্দা বিভাগ আমাকে ধরতে পারে নি
চৈত্রের উত্তপ্ত দুপুরে
অফুরন্ত হাওয়ার ভিতরে সেই আমি
কত সহজেই একটি আলিঙ্গনের কাছে বন্দি হয়ে গেলুম সেই আমি
কত সহজেই মায়ের চোখে চোখ রেখে
একটি অবুঝ সন্তান হয়ে গেলুম।
মা-আমাকে ক্রন্দনসিক্ত একটি চুম্বনের মধ্যে লুকিয়ে রেখে
অনেক জঙ্গলের পথ অতিক্রম করে পুকুরের জলে চাল ধুতে গেলেন
আমি ঘরের ভিতরে তাকালুম, দেখলুম দু'ঘরের মাঝামাঝি
যেখানে সিদ্ধিদাতা গণেশের ছবি ছিল সেখানে লেনিন
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আমার সমস্ত শ্রদ্ধা একটি নামের মধ্যে
বাংলাদেশ
আমার সমস্ত শক্তি একটি নতুন অস্ত্রে
শেখ মুজিব
আমার সমস্ত রক্ত একটি অভীষ্ট জ্ঞানে
স্বাধীনতা
আমার সমস্ত অহ্নি একটি পরম সত্যে
ভালোবাসা
আমার সমস্ত ঘৃণা প্রতিশোধে অবিরাম
যুদ্ধরত
আমার সমস্ত শ্রদ্ধা একটি নামের মধ্যে
বাংলাদেশ
আমার সমস্ত শক্তি একটি নতুন অস্ত্রে
শেখ মুজিব
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
পুলিশ স্টেশনে ভীড়
আগ্নেয়াস্ত্র জমা নিচ্ছে শহরের সন্দিগ্ধ সৈনিক
সামরিক নির্দেশে ভিত মানুষের শট্ গান,
রাইফেল, পিস্তল এবং কারতুজ
যেন দরগার স্বীকৃত মানব
টেবিলে ফুলের মতো মস্তানের হাত
আমিই শুধু সামরিক আদেশ অমান্য করে
হয়ে গেছি কোমল বিদ্রোহী
প্রকাশ্যে ফিরছি ঘরে
অথচ আমার সঙ্গে হৃদয়ের মতো
মারাত্মক একটি আগ্নেয়াস্ত্র
আমি জমা দিই নি
আগ্নেয়াস্ত্র কবি নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ২১.৬.১৯৪৫)। আবৃত্তি শুনুন কবিকণ্ঠে, ভিডিওটি সৌজন্যে পাঁচ মিশেলি
কথা YouTube Channel . কবিতাটি কবি নির্মলেন্দু গুণ-এর দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রথম কবিতা। তিনি তখন
মুক্তিযুদ্ধের কালে স্বরণার্থী হয়ে এপারবাংলায় এসেছিলেন। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যয় তাঁকে দেশ পত্রিকার সম্পাদক
সাগরময় ঘোষের কাছে নিয়ে যান এবং পরিচয় করিয়ে দেন। কবিতাটি পরের সপ্তাহেই ছেপে বার হয়েছিল। পরে
কবিতাটি ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয় 'না প্রেমিক না বিপ্লবী' কাব্যগ্রন্থে। কবিতাটি শুনে লেখা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
যারা গান গাইতো বাঁশিতে আঙুল রেখে
যারা কবিতা লিখতো মধ্যরাতে
সেই সব চাষী, সেই সব কারখানার শ্রমিক
যারা ইস্পাতের আসল নির্মাতা
যারা তৈরী করতো স্নো, বিস্কিট,
আমার জন্য শার্ট, নীলিমার জন্য শাড়ী,
তারা এখন অন্য মানুষ
তাদের বাড়ী এখন প্রতিরোধের দুর্গ
যারা গান গাইতো বাঁশিতে আঙুল রেখে
যারা ছাত্র ছিলো পাঠশালার
তারা বিশ্বের সভ্যতার কিম্বা প্রকৃতির
সেই সব ছাত্র শিক্ষক শ্রমিক
একত্রে মিলিত হয়ে
ওরা এখন অন্য মানুষ
একত্রে মিলিত হয়ে
ওরা এখন অন্য রকম
ওরা এখন গান গায় না
ওরা এখন অন্য মানুষ
কাঠের লাঙ্গল যারা চেপে রাখতো মাটির ঔরসে
সেই সব শিল্পী, সেই সব শ্রমিক
যারা গান গাইতো বাঁশিতে আঙুল রেখে
যারা স্বপ্ন দেখতো রাতে
রবীন্দ্রনাথের বাঁশি কবি নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ২১.৬.১৯৪৫)। বাচিকশিল্পী বিপ্লব মজুমদারের কণ্ঠে আবৃত্তি শুনুন,
ভিডিওটি সৌজন্যে Jagoron TV YouTube Channel । কবিতাটি ১৯৭২ সালের “না প্রেমিক না বিপ্লবী” কাব্যগ্রন্থের কবিতা।
কবিতাটি শুনে লেখা।
ধলেশ্বরী নদী তীরে পিসিদের গ্রাম থেকে
ওরা এখন শহরে আসছে
কাঠের লাঙ্গল ফেলে লোহার অস্ত্র নিয়েছে হাতে
কপালে বেঁধেছে লাল শালুর আকাশ
শহর জয় উল্লাসে ওরা রবীন্দ্রনাথকে বলছে স্বাধীনতা
রবীন্দ্রনাথের গান কে বলছে স্টেনগান
যারা গান গাইতো বাঁশিতে আঙুল রেখে
যারা কবিতা লিখতো রাতে
সেই সব চাষী আজ যুদ্ধের অভিজ্ঞ কৃষক
তোমার জন্য বন্দুকের নল আজ আমরও হাতের বাঁশি
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এরকম বাংলাদেশ কখনো দেখ নি তুমি।
মুহূর্তে সবুজ ঘাস পুড়ে যায়,
ত্রাসের আগুন লেগে লাল হয়ে জ্বলে ওঠে চাঁদ।
নরোম নদীর চর হা-করা কবর হয়ে
গ্রাস করে পরম শত্রুকে ;
মিত্রকে জয়ের চিহ্ন, পদতলে প্রেমে,
ললাটে ধূলোর টিপ এঁকে দেয় মায়ের মতন :
এরকম বাংলাদেশ কখনো দেখ নি তুমি।
নদীর জলের সঙ্গে মানুষের রক্ত মিশে আছে,
হিজল গাছের ছায়া বিপ্লবের সমান বয়সী।
রূপসী নারীর চুল ফুল নয়, গুচ্ছ গুচ্ছ শোকের প্রতীক,
বাংলাদেশ আজ যেন বাংলাদেশ নয় ;
এরকম বাংলাদেশ কখনো দেখনি তুমি।
কখনো দেখেনি কেউ।
বাতাস বাতাস শুদু নয়,
ত্রিশ লক্ষ মানুষের দীর্ঘশ্বাসময়
আকাশ আকাশ সুধু নয়,
এরকম বাংলাদেশ বাংলাদেশ নয়।
এখানে প্রাণের মূল্যে
নদীর জলের মধ্যে আসে বান.
টর্নেডো, টাইফুন, ঝড়,
কাল-বৈশাখীর দুরন্ত তুফান।
প্রথম অতিথি কবি নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ২১.৬.১৯৪৫)। বাচিকশিল্পী খন্দকার আলী আহমেদের কণ্ঠে আবৃত্তি শুনুন, ভিডিওটি সৌজন্যে
আবৃত্তিমেলা । Abrittimela YouTube Channel । কবিতাটি ১৯৭২ সালের “না প্রেমিক না বিপ্লবী” কাব্যগ্রন্থের কবিতা। কবিতাটি শুনে লেখা।
কোকিল কোকিল শুধু নয়,
পাখি শুধু পাখি নয় গাছে,
বাউলের একতারা ঊরুর অস্থির মতো
যেন আগ্নেয়াস্ত্রে বারুদের মজ্জা মিশে আছে।
আজকাল গান শুধু গান নয়, সব গান অভিমান,
প্রাণের চিৎকার বলে ক্রুদ্ধ মনে হয়।
এরকম বাংলাদেশ কখনো দেখেনি কেউ,
তুমি তার প্রথম অতিথি।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
শত্রুর তাড়া খেয়ে আমরা যাবো না আর
সীমান্তের দেয়াল ডিঙিয়ে কোনোদিন।
ছিন্নমূল, পাখির মতন নিঃস্ব
মানুষের ঝাঁক, সল্টলেকে, কল্যাণীতে,
মেঘালয়ে, ত্রিপুরার প্রত্যন্ত প্রদেশে
আর কোনোদিন উন্মুখর তোমার প্রতিক্ষায়
আমাদের সময় যাবে না অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
চোখের সমুখে।
সমস্যাসংকুল এই শতাব্দীর
এক কোটি মানুষের ভিড়ে
ফিরে ফিরে তুমিও যাবে না আর
কোনোদিন ক্ষমাপ্রার্থী মানবতা হতে।
নিজ হাতে আকাশের তারার আলোকে
বেঁধে দিয়ে ঘর, ভালোবাসা, চাল-ডাল,
উদ্যম প্রহর নিয়ে তুমি আর ফিরবে না
মুক্তিবাহিনীর শিবিরে শিকিরে।
এখন শূন্য সব, তিনশ' দিনের ঘর,
হা-করা দুয়ার মেঘালয়,
সল্টলেক, কল্যাণীর সশন্ত্র-শিবির,
কিংবা আগরতলার খোলা মাঠ।
কে যেন স্বপ্নের মতো চুপি চুপি এসে
শূন্য কপাট দিয়ে ঢেকে রেখে গেছে সবকিছু।
সল্টলেকের ইন্দিরা কবি নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ২১.৬.১৯৪৫)। কবি নিজেও মুক্তিযুদ্ধের
সময়ে এপার বাংলায় শরণার্থী হয়ে এসে ছিলেন।
একদিন নিজ হাতে বেঁধে দিয়েছিলে ঘর,
মনোহর ভালোবাসা, স্বাধীনতা দিয়ে।
এখন শান্ত সব, সল্টলেক একাকী খুমিয়ে আছে
যেন পরিত্যক্ত দেশপ্রেমিকের খালি বাড়ি ;
মৃত, ম্রিয়মাণ।
তোমার নোয়ানো মাথা সল্টলেকে,
শরণার্থীর ঘরে ঘরে বৃষ্টির অন্ধকারে
অক্ষয় আগুন হয়ে একদিন জ্বলে উঠেছিল।
আজ সে উদ্ধত মাথা বরাভয়ে
সবচেয়ে বড় সেই আকাশের
দর্পকেই স্পর্শ করেছে।
সল্টলেকের ভাঙা-ঘর, মাদুর, চাঁদের কাঁথা,
ভালোবাসা, স্মৃতি ; এখন বিস্তৃত হয়ে
ছড়িয়ে পড়েছে চতুর্দিকে। সীমান্তের চিহ্ন ভেঙে
ঢুকে গেছে পৃথিবীর অসীম হাওয়ায় . . .।
Millions of babies watching the skies
Bellies swollen, with big round eyes
On Jessore Road--long bamboo huts
Noplace to shit but sand channel ruts
Millions of fathers in rain
Millions of mothers in pain
Millions of brothers in woe
Millions of sisters nowhere to go
One Million aunts are dying for bread
One Million uncles lamenting the dead
Grandfather millions homeless and sad
Grandmother millions silently mad
Millions of daughters walk in the mud
Millions of children wash in the flood
A Million girls vomit & groan
Millions of families hopeless alone
Millions of souls nineteenseventyone
homeless on Jessore road under grey sun
A million are dead, the million who can
Walk toward Calcutta from East Pakistan
Taxi September along Jessore Road
Oxcart skeletons drag charcoal load
past watery fields thru rain flood ruts
Dung cakes on treetrunks, plastic-roof huts
SEPTEMBER ON JESSORE ROAD Lyricist Poet Allen Ginsberg, Composer and Singer: Allen Ginsberg, Bob Dylan, David Amram, Jon Sholle,
Steven Taylor and·Mondrian String Quartet. The poet had visited the Refujee camps by the end of 1971, adjescent to the Bangladesh border in West Bengal, India, such
as Bongaon & Boyra, along with poet Sunil Gangopadhyay and some others from the civil society. He saw the horrible plight of the people and the dismal situation in
person and when he went back to USA & wrote this poem. This poem was published on the 14th Jaunuary 1972 edition of Bengali magazine "Desh", from Calcutta now
Kolkata. Their concert raised funds for Refugees. The VDO, courtesy Shane Bordoli YouTube Channel. The poem courtesy Poemhunter.com
The background photograph is a darkened collage of famous photos of the Bangladesh War of Liberation or Mukti Juddho, of brave men and women of Bangladesh alongside the photos of the Indian Soldiers whose selfless sacrifice and martyrdom should never be forgotten. This page is the outcome of the research work carried out by Poet Rajesh Datta.
|
|
|
Wet processions Families walk
Stunted boys big heads don't talk
Look bony skulls & silent round eyes
Starving black angels in human disguise
Mother squats weeping & points to her sons
Standing thin legged like elderly nuns
small bodied hands to their mouths in prayer
Five months small food since they settled there
on one floor mat with small empty pot
Father lifts up his hands at their lot
Tears come to their mother's eye
Pain makes mother Maya cry
Two children together in palmroof shade
Stare at me no word is said
Rice ration, lentils one time a week
Milk powder for warweary infants meek
The man in the bread door Cries & comes out
Thousands of boys and girls Take up his shout
Is it joy? is it prayer? "No more bread today"
Thousands of Children at once scream "Hooray!"
Run home to tents where elders await
Messenger children with bread from the state
No bread more today! & and no place to squat
Painful baby, sick shit he has got.
Malnutrition skulls thousands for months
Dysentery drains bowels all at once
Nurse shows disease card Enterostrep
Suspension is wanting or else chlorostrep
Refugee camps in hospital shacks
Newborn lay naked on mother's thin laps
Monkeysized week old Rheumatic babe eye
Gastoenteritis Blood Poison thousands must die
September Jessore Road rickshaw
50,000 souls in one camp I saw
Rows of bamboo huts in the flood
Open drains, & wet families waiting for food
Border trucks flooded, food cant get past,
American Angel machine please come fast!
Where is Ambassador Bunker today?
Are his Helios machinegunning children at play?
Where are the helicopters of U.S. AID?
Smuggling dope in Bangkok's green shade.
Where is America's Air Force of Light?
Bombing North Laos all day and all night?
Where are the President's Armies of Gold?
Billionaire Navies merciful Bold?
Bringing us medicine food and relief?
Napalming North Viet Nam and causing more grief?
Where are our tears? Who weeps for the pain?
Where can these families go in the rain?
Jessore Road's children close their big eyes
Where will we sleep when Our Father dies?
Whom shall we pray to for rice and for care?
Who can bring bread to this shit flood foul'd lair?
Millions of children alone in the rain!
Millions of children weeping in pain!
Ring O ye tongues of the world for their woe
Ring out ye voices for Love we don't know
Ring out ye bells of electrical pain
Ring in the conscious of American brain
How many children are we who are lost
Whose are these daughters we see turn to ghost?
What are our souls that we have lost care?
Ring out ye musics and weep if you dare--
Cries in the mud by the thatch'd house sand drain
Sleeps in huge pipes in the wet shit-field rain
waits by the pump well, Woe to the world!
whose children still starve in their mother's arms curled.
Is this what I did to myself in the past?
What shall I do Sunil Poet I asked?
Move on and leave them without any coins?
What should I care for the love of my loins?
What should we care for our cities and cars?
What shall we buy with our Food Stamps on Mars?
How many millions sit down in New York
& sup this night's table on bone & roast pork?
How many millions of beer cans are tossed
in Oceans of Mother? How much does She cost?
Cigar gasolines and asphalt car dreams
Stinking the world and dimming star beams--
Finish the war in your breast with a sigh
Come tast the tears in your own Human eye
Pity us millions of phantoms you see
Starved in Samsara on planet TV
How many millions of children die more
before our Good Mothers perceive the Great Lord?
How many good fathers pay tax to rebuild
Armed forces that boast the children they've killed?
How many souls walk through Maya in pain
How many babes in illusory pain?
How many families hollow eyed lost?
How many grandmothers turning to ghost?
How many loves who never get bread?
How many Aunts with holes in their head?
How many sisters skulls on the ground?
How many grandfathers make no more sound?
How many fathers in woe
How many sons nowhere to go?
How many daughters nothing to eat?
How many uncles with swollen sick feet?
Millions of babies in pain
Millions of mothers in rain
Millions of brothers in woe
Millions of children nowhere to go
&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
শত শত চোখ আকাশটা দেখে, শত শত শত মানুষের দল,
যশোর রোডের দুধারে বসত বাঁশের ছাউনি কাদামাটি জল।
কাদামাটি মাখা মানুষের দল, গাদাগাদি করে আকাশটা দেখে,
আকাশে বসত মরা ইশ্বর, নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে।
ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে, যুদ্ধে ছিন্ন ঘর বাড়ী দেশ,
মাথার ভিতরে বোমারু বিমান, এই কালোরাত কবে হবে শেষ।
শত শত মুখ হায় একাত্তর যশোর রোডযে কত কথা বলে,
এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে।
সময় চলেছে রাজপথ ধরে যশোর রোডেতে মানুষ মিছিল,
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, গরুগাড়ী কাদা রাস্তা পিছিল
লক্ষ মানুষ ভাত চেয়ে মরে, লক্ষ মানুষ শোকে ভেসে যায়,
ঘরহীন ভাসে শত শত লোক লক্ষ জননী পাগলের প্রায়।
রিফিউজি ঘরে খিদে পাওয়া শিশু, পেটগুলো সব ফুলে ফেঁপে ওঠে
এইটুকু শিশু এতবড় চোখ দিশেহারা মা কারকাছে ছোটে।
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, এত এত শুধু মানুষের মুখ,
যুদ্ধ মৃত্যু তবুও স্বপ্ন ফসলের মাঠ ফেলে আসা সুখ।
কারকাছে বলি ভাতরূটি কথা, কাকে বলি করো, করো করো ত্রান,
কাকে বলি, ওগো মৃত্যু থামাও, মরে যাওয়া বুকে এনে দাও প্রান।
কাঁদো কাঁদো তুমি মানুষের দল তোমার শরীর ক্ষত দিয়ে ঢাকা,
জননীর কোলে আধপেটা শিশু একেমন বাঁচা, বেঁচে মরে থাকা।
Poet Allen Ginsberg অনুবাদ খান মোহাম্মদ ফারাবী
|
সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের September on Jessore Road কবিতার বঙ্গানুবাদ কবি খান মোহাম্মদ ফারাবী (১৯৫২-১৯৭৪) । আবৃত্তি শুনুন বাচিক শিল্পী তসরিমা
নাহিদ তন্বী, ভিডিও সৌজন্যে HRIDKABBO YouTube Channel । কবি গিন্সবার্গ নিজে এসেছিলেন বনগাঁ-বয়ড়া সীমান্তের শরণার্থী শিবিরে। তাঁবুতে তাঁবুতে ঘুরছিলেন কবি সুনীল গঙ্গপাধ্যায় ও অন্যান্যদের
সঙ্গে। কথা বলছেন শরণার্থীদের সঙ্গে। দেখছেন, শরণার্থীদের দুঃখ-দুর্দশা ও যন্ত্রণা। নিউ ইয়র্কে ফিরে গিয়ে এই অভিজ্ঞতাকে কবিতায় রূপ দেন এই মার্কিন কবি। তাঁর বন্ধু বব ডিলান ও অন্যান্য বিখ্যাত
গায়ক-সঙ্গীতজ্ঞ ডেভিড অ্যামব়্যাম, স্টিভেন টেলর ও মনড্রিয়ান স্টিং কোয়ার্টেট এর সহযোগিতায় গানের কনসার্ট করেছিলেন এবং বাংলাদেশী শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন কবি গিন্সবার্গ।
কবিতাটির বাংলা কথা সৌজন্যে বাংলাপোয়েমস.ওয়ার্ডপ্রেস.কম । তথ্যসূত্র - সাজ্জাদ শরিফ, কবিতায় মুক্তিযুদ্ধের অনন্য রূপকার, প্রথমআলো.কম।
ছোটো ছোটো তুমি মানুষের দল, তোমার ঘরেও মৃত্যুর ছায়া,
গুলিতে ছিন্ন দেহ মন মাটি, ঘর ছেড়েছোতো মাটি মিছে মায়া।
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, ঘর ভেঙে গেছে যুদ্ধের ঝড়ে,
যশোর রোডের দুধারে মানুষ এত এত লোক শুধু কেনো মরে।
শত শত চোখ আকাশটা দেখে, শত শত শত শিশু মরে গেল,
যশোর রোডের যুদ্ধ ক্ষেত্রে ছেঁড়া সংসার সব এলোমেলো
কাদামাটি মাখা মানুষের দল, গাদাগাদি করে আকাশটা দেখে,
আকাশে বসত মরা ইশ্বর, নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে।
এই কবিতার বঙ্গানুবাদ, এর পরেই >>>>
No vegetable money or work for the man
Rice lasts four days eat while they can
Then children starve three days in a row
and vomit their next food unless they eat slow.
On Jessore road Mother wept at my knees
Bengali tongue cried mister Please
Identity card torn up on the floor
Husband still waits at the camp office door
Baby at play I was washing the flood
Now they won't give us any more food
The pieces are here in my celluloid purse
Innocent baby play our death curse
Two policemen surrounded by thousands of boys
Crowded waiting their daily bread joys
Carry big whistles & long bamboo sticks
to whack them in line They play hungry tricks
Breaking the line and jumping in front
Into the circle sneaks one skinny runt
Two brothers dance forward on the mud stage
The guards blow their whistles & chase them in rage
Why are these infants massed in this place
Laughing in play & pushing for space
Why do they wait here so cheerful & dread
Why this is the House where they give children bread
ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে, যুদ্ধে ছিন্ন ঘর বাড়ী দেশ,
মাথার ভিতরে বোমারু বিমান, এই কালোরাত কবে হবে শেষ।
শত শত মুখ হায় একাত্তর যশোর রোডযে কত কথা বলে,
এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে,
এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আমি একজন মুক্তি-যোদ্ধা, মৃত্যু পিছনে আগে,
ভয়াল বিশাল নখর মেলিয়া দিবস রজনী জাগী ।
কখনো সে ধরে রেজাকার বেশ, কখনো সে খান-সেনা,
কখনো সে ধরে ধর্ম লেবাস পশ্চিম হতে কেনা।
কখনো সে পশি ঢাকা-বেতারের সংরক্ষিত ঘরে,
ক্ষেপা কুকুরের মরণ-কামড় হানিছে ক্ষিপ্ত স্বরে।
আমি চলিয়াছি চির-নির্ভীক অবহেলি সবকিছু
নরমুণ্ডের ঢেলা ছড়াইয়া পশ্চাত-পথ পিছু।
ভাঙিতেছি স্কুল ভাঙিতেছি সেতু ষ্টিমার জাহাজ লরি,
খান-সৈন্যরা যেই পথে যায় আমি সে পথের অরি
ওরা ভাড়া-করা ঘৃণ্য গোলাম স্বার্থ-অন্ধ সব,
মিথ্যার কাছে বিকাতে এসেছে স্বদেশের বৈভব!
আমরা চলেছি রক্ষা করিতে মা-বোনের ইজ্জত,
শত শহীদের লোহুতে জ্বালানো আমাদের হিম্মত।
ভয়াল বিশাল আঁধার রাত্রে ঘন-অরণ্য ছায়,
লুণ্ঠিত আর দগ্ধ-গ্রামের অনল সম্মুখে ধায়।
তাহার আলোতে চলিয়ছি পথ, মৃত্যুর তরবার,
হস্তে ধরিয়া কাটিয়া চলেছি খান-সেনা অনিবার।
এ সোনার দেশে যতদিন রবে একটিও খান-সেনা,
ততদিন তব মোদের যাত্রা মুহুর্তে থামিবে না।
মাঠগুলি পুনঃ ফসলে ফসলে পরিবে রঙিন বেশ,
লক্ষ্মীর ঝাঁপি গড়ায়ে ছড়ায়ে ভরিবে সকল দেশ।
মায়ের ছেলেরা হবে নির্ভর, সুখ হাসি ভরা ঘরে,
দস্যুবিহীন এদেশ আবার শোভিবে সুষম ভরে।
সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড (ইংরেজি ভাষায়:
September on Jessore Road) বিখ্যাত
মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ রচিত একটি
কবিতা যা থেকে পরে গান করা হয়েছিল।
অ্যালেন গিন্সবার্গ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের
স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ দিকে ভারতের কলকাতায়
এসেছিলেন। কলকাতার বেশ কয়েকজন
সাহিত্যিকের সাথে তার বন্ধুত্ব ছিল যাঁদের মধ্যে
একজন কবি ও সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
তিনি সুনীলের বাড়িতেই উঠেছিলেন। তখন
বাংলাদেশ থেকে অনেক শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গ ও
সীমান্তবর্তী অন্যান্য শহরে আশ্রয় নিয়েছিল।
ব্রিটিশ রাজের সময় পূর্ব বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের
সংযোগকারী সড়ক হিসেবে কাজ করতো "যশোর
রোড"। অনেক বৃষ্টি হওয়ায় তখন যশোর রোড
পানিতে ডুবে গিয়েছিল। সড়ক পথে না পেরে
গিন্সবার্গ অবশেষে নৌকায় করে বনগাঁ পেরিয়ে
বাংলাদেশের যশোর সীমান্তে পৌঁছেন। তার
সাথে সুনীলও ছিলেন। তারা যশোর সীমান্ত ও
এর আশপাশের শিবিরগুলোতে বসবাসকারী
শরণার্থীদের দুঃখ-দুর্দশা ও যন্ত্রণা প্রত্যক্ষ করেন।
এই অভিজ্ঞতা থেকেই গিন্সবার্গ এই কবিতাটি
লিখেছিলেন। এই দীর্ঘ কবিতার সাথে সুর দিয়ে
এটিকে গানে রূপ দিয়েছিলেন তিনি।
আমেরিকায় ফিরে গিয়ে তাঁর বন্ধু বব ডিলান ও
অন্যান্য বিখ্যাত গায়কদের সহায়তায় এই গান
গেয়ে কনসার্ট করেছিলেন। এভাবেই বাংলাদেশী
শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন গিন্সবার্গ।
...তথ্যসূত্র - সাজ্জাদ শরিফ, কবিতায়
মুক্তিযুদ্ধের অনন্য রূপকার, প্রথমআলো.কম।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ভাঙো, বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও।
বন্দী প্রাণ মন হোক উধাও॥
শুকনো গাঙে আসুক
জীবনের বন্যার উদ্দাম কৌতুক--
ভাঙনের জয়গান গাও।
জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক,
যাক ভেসে যাক, যাক ভেসে যাক।
আমরা শুনেছি ওই মাভৈঃ মাভৈঃ মাভৈঃ
কোন্ নূতনেরই ডাক।
ভয় করি না অজানারে,
রুদ্ধ তাহারি দ্বারে দুর্দাড় বেগে ধাও॥
বাঁধ ভেঙে দাও কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সমবেত কণ্ঠে সম্প্রচারিত গান।
গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন
প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”
ওয়েবসাইটে। গানের ভিডিও সৌজন্যে Tanvir Hossain YouTube Channel ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
কারার ঐ লৌহ-কপাট,
ভেঙে ফেল্ , কর্ রে লোপাট রক্ত-জমাট
শিকল-পূজার পাষাণ-বেদী!
ওরে ও তরুণ ঈশান !
বাজা তোর প্রলয়-বিষাণ !
ধ্বংস-নিশান
উড়ুক প্রাচী’র, প্রাচীর ভেদি’ ।
গাজনের বাজ্ না বাজা !
কে মালিক ? কে সে রাজা ?
কে দেয় সাজা,
মুক্ত-স্বাধীন সত্য কে রে?
হা হা হা পায় যে হাসি,
ভগবান পর্ বে ফাঁসি? সর্ব্বনাশী
শিখায় এ হীন্ তথ্য কে রে?
ওরে ও পাগলা ভোলা !
দে রে দে প্রলয়-দোলা, গারদগুলা
জোর্ সে ধ’রে হেঁচ্ কা টানে!
মার হাঁক হৈদরী হাঁক,
কাঁধে নে দুন্দুভি ঢাক
কারার ঐ লৌহকপাট কথা ও সুর কবি কাজী নজরুল ইসলাম। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সমবেত কণ্ঠে
সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি
ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন
মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। সেই সময় প্রচারিত গানটি শুনতে এখানে ক্লিক করুন। সম্ভবত ব্যবসায়িক কারণে তারা তা
অন্য কোথাও দেখানো নিষিদ্ধ করেছেন। তাই এখানে গানটি ক্যালকাটা ইউথ কয়ারের অনুষ্ঠানের রেকর্ডিং থেকে শুনুন, সৌজন্যে
Saregama Bengali YouTube Channel ।
ডাক ওরে ডাক্
মৃত্যুকে ডাক্ জীবন পানে!
নাচে ঐ কাল-বোশেখী,
কাটাবি কাল ব’সে কি?
দেয় রে দেখি
ভীম-কারার ঐ ভিত্তি নাড়ি’ !
লাথি মার্ ভাঙ্ রে তালা !
যত সব বন্দী-শালায় আগুন জ্বালা,
আগুন জ্বালা, ফেল্ উপাড়ি’ ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
দুর্গম গিরি, কান্তার মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার !
দুলিতেছে তরী ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ ?
কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ |
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার ||
তিমির রাত্রি মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান !
যুগযুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান |
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে দিতে হবে অধিকার ||
অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া জানে না সন্তরণ,
কাণ্ডারী ! আজি দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি-পণ !
“হিন্দু না ওরা মুসলিম ?” ওই জিজ্ঞাসে কোন্ জন ?
কান্ডারী ! বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র !
গিরি-সঙ্কট, ভীরু যাত্রীরা, গুরু গরজায় বাজ,
পশ্চাত-পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ !
কান্ডারী ! তুমি ভুলিবে কি পথ ? ত্যজিবে কি পথ মাঝ ?
করে হানাহানি, তবু চল টানি’ নিয়াছ যে মহাভার !
কাণ্ডারী হুশিয়ার কথা ও সুর কবি কাজী নজরুল ইসলাম। কবির সর্বহারা কাব্যগ্রন্থের কবিতা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সমবেত
কণ্ঠে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ
হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”
ওয়েবসাইটে। সেই সময় প্রচারিত গানটি শুনতে ভিডিও সৌজন্যে Neazul, Lost World YouTube Channel ।
কাণ্ডারী ! তব সন্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর,
বাঙালীর খুনে লাল হ’ল যেথা ক্লাইভের খঞ্জর !
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায় ভারতের দিবাকর !
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পুনর্বার !
ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান
আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান ?
আজি পরীক্ষা জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ ?
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কাণ্ডারী হুশিয়ার !
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
জাগো অনশন-বন্দী, ওঠ রে যত
জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যহত!
যত অত্যাচারে আজি বজ্র হানি’
হাঁকে নিপীড়িত-জন-মন-মথিত বাণী,
নব জনম লভি’ অভিনব ধরণী ওরে ঐ আগত॥
আদি শৃঙ্খল সনাতন শাস্ত্র আচায়
মূল সর্বনাশের, এরে ভাঙিব এবার।
ভেদি’ দৈত্য-কারা আয় সর্বহারা;
কেহ রহিবে না আর পর-পদ-আনত॥
নব ভিত্তি’পরে –
নব নবীন জীবন হবে উত্থিত রে!
শোন্ অত্যাচারী! শোন্ রে সঞ্চয়ী!
ছিনু সর্বহারা, হব সর্বজয়ী।
ওরে সর্বশেষের এই সংগ্রাম-মাঝ।
নিজ নিজ অধিকার জুড়ে দাঁড়া সবে আজ ;
এই ‘জনগণ-অন্তর-সংহতি’ রে
হবে নিখিল মানব জাতি সমুদ্ধত॥
জাগো অনশন বন্দী কথা ও সুর কবি কাজী নজরুল ইসলাম। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সমবেত কণ্ঠে সম্প্রচারিত গান। গানটির
উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত,
“স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। সেই সময় প্রচারিত গানটি
শুনতে ভিডিও সৌজন্যে Neazul, Lost World YouTube Channel । কথা সৌজন্যে poetnazrul.com ওয়েবসাইট।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এই শিকল পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল।
এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল॥
তোদের বন্ধ কারায় আসা মোদের বন্দী হতে নয়,
ওরে ক্ষয় করতে আসা মোদের সবার বাঁধন–ভয়।
এই বাঁধন প’রেই বাঁধন–ভয়কে কর্ব মোরা জয়,
এই শিকল– বাঁধা পা নয় এ শিকল ভাঙা কল॥
তোমার বন্ধ ঘরের বন্ধনীতে কর্ছ বিশ্ব গ্রাস,
আর ভয় দেখিয়েই ক’র্বে ভাবছ বিধির শক্তি হ্রাস
সেই ভয় দেখানো ভূতের মোরা ক’র্বো সর্বনাশ,
এবার আন্বো মাভৈঃ বিজয়–মন্ত্র বল–হীনের বল॥
তোমরা ভয় দেখিয়ে কর্ছ শাসন জয় দেখিয়ে নয়;
সেই ভয়ের টুঁটি ধর্ব টিপে কর্ব তারে লয়।
মোরা আপনি ম’রে মরার দেশে আন্ব বরাভয়,
প’রে ফাঁসি আন্ব হাসি মৃত্যু–জয়ের ফল॥
ওরে ক্রন্দন নয় বন্ধন এই শিকল–ঝঞ্ঝনা,
এ যে মুক্তি–পথের অগ্রদূতের চরণ–বন্দনা!
এই লাঞ্ছিতেরাই অত্যাচারকে হান্ছে লাঞ্ছনা,
মোদের অশ্রু দিয়েই জ্ব’লবে দেশে আবার বজ্রানল॥
এই শিকল পরা ছল কথা কবি কাজী নজরুল ইসলাম। সুরকার ও শিল্পী: কাজী নজরুল ইসলামের স্নেহধন্য প্রবাদপ্রতিম সংগীতশিল্পী ও
গানের গুরু গিরীন চক্রবর্তী। এই গানটি ১৯৪৯ সালের রেকর্ড। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই
ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার
কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। সেই সময় প্রচারিত গানটি শুনতে
ভিডিও সৌজন্যে Nazrul Center YouTube Channel । কথা সৌজন্যে https://nazrulgeeti.org ওয়েবসাইট।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম, মোরা ঝর্ণার মত চঞ্চল।
মোরা বিধাতার মত নির্ভয়, মোরা প্রকৃতির মত সচ্ছল॥
. আকাশের মত বাঁধাহীন,
মোরা মরু সঞ্চার বেদুঈন,
(মোরা) বন্ধনহীন জন্ম–স্বাধীন, চিত্ত মুক্ত শতদল॥
মোরা সিন্ধু–জোয়ার কল–কল
মোরা পাগলা–ঝোরার ঝরা জল
. কল–কল–কল্ ছল–ছল–ছল্ কল–কল–কল্ ছল–ছল–ছল্
মোরা দিল–খোলা খোলা প্রান্তর,
মোরা শক্তি অটল মহীধর
. হাসি গান শ্যাম উচ্ছল
মোরা বৃষ্টির জল বনফল খাই, শয্যা শ্যামল বন–তল॥
মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম কথা ও সুর কবি কাজী নজরুল ইসলাম। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শাহীন সামাদ। স্বাধীন
বাংলা বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের
সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই
আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। সেই সময় প্রচারিত গানটি শুনতে ভিডিও সৌজন্যে Md. Mansur Ali Biswas YouTube Channel । কথা সৌজন্যে https:
//nazrulgeeti.org ওয়েবসাইট।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি
আমার দেশের মাটি॥
এই দেশেরই মাটি জলে
এই দেশেরই ফুলে ফলে
তৃষ্ণা মিটাই মিটাই ক্ষুধা পিয়ে এরি দুধের বাটি॥
এই মায়েরই প্রসাদ পেতে
মন্দিরে এর এঁটো খেতে
তীর্থ ক’রে ধন্য হতে আসে কত জাতি।
ও ভাই এই দেশেরই ধূলায় পড়ি’
মানিক যায় রে গড়াগড়ি
ও ভাই বিশ্বে সবার ঘুম ভাঙালো এই দেশেরই জিয়ন-কাঠি॥
এই মাটি এই কাদা মেখে
এই দেশেরই আচার দেখে
সভ্য হ’লো নিখিল ভুবন দিব্য পরিপাটি।
ও ভাই সন্ন্যাসিনী সকল দেশে
জ্বাল্লো আলো ভালোবেসে
মা আঁধার রাতে এক্লা জাগে আগ্লে রে এই শ্মশান-ঘাঁটি॥
ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি কথা ও সুর কবি কাজী নজরুল ইসলাম। শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়। স্বাধীন বাংলা
বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। এই গানটি ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে রেকর্ড করা। গানটির উল্লেখ আমরা পাই
ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন
বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। সেই সময় প্রচারিত
গানটি শুনতে ভিডিও সৌজন্যে Md. Mansur Ali Biswas YouTube Channel । কথা সৌজন্যে https://nazrulgeeti.org ওয়েবসাইট।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
ঐনূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
আস্ল এবার অনাগত প্রলয়–নেশায় নৃত্য–পাগল,
সিন্ধু–পারের সিংহ–দ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল!
মৃত্যু–গহন অন্ধকুপে, মহাকালের চন্ড–রূপে ধূম্র–ধূপে
বজ্র–শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর!
ওরে ওই হাসছে ভয়ংকর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
দ্বাদশ রবির বহ্নি–জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন–কটায়,
দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার ত্রস্ত জটায়!
বিন্দু তাহার নয়ন –জলে
সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে
কপোল–তলে!
বিশ্ব –মায়ের আসন তারই বিপুল বাহুর ‘পর –
হাঁকে ঐ “জয় প্রলয়ংকর!”
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
মাভৈঃ, ওরে মাভৈঃ, মাভৈঃ, মাভৈঃ জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার
ঘনিয়ে আসে
তোরা সব জয়ধ্বনি কর কথা ও সুর কবি কাজী নজরুল ইসলাম। শিল্পী অংশুমান রায় ও সহশিল্পীবৃন্দ। স্বাধীন বাংলা
বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের
সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন
মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। সেই সময় প্রচারিত গানটি শুনতে ভিডিও সৌজন্যে Ansuman Roy - Topic YouTube Channel ।
কথা সৌজন্যে https://nazrulgeeti.org ওয়েবসাইট।
জরায়–মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ–লুকানো ঐ বিনাশে।
এবার মহা–নিশার শেষে
আসবে ঊষা অরুণ হেসে
করুণ্ বেশে!
দিগম্বরের জটায় লুটায় শিশু–চাঁদের কর!
আলো তার ভরবে এবার ঘর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
চল্ চল্ চল্ !
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণী তল
অরুণ প্রাতের তরুণ দল
চল্ রে চল্ রে চল্
চল্ চল্ চল্ ॥
ঊষার দুয়ারে হানি’ আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত,
আমরা টুটাব তিমির রাত,
বাধার বিন্ধ্যাচল।
নব নবীনের গাহিয়া গান
সজীব করিব মহাশ্মশান,
আমরা দানিব নতুন প্রাণ
বাহুতে নবীন বল।
চল্ রে নৌ-জোয়ান,
শোন্ রে পাতিয়া কান------
মৃত্যু-তোরণ-দুয়ারে-দুয়ারে
জীবনের আহ্বান।
ভাঙ্ রে ভাঙ্ আগল,
চল্ রে চল্ রে চল
চল্ চল্ চল্ ॥
চল চল চল ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল কথা ও সুর কবি কাজী নজরুল ইসলাম। গৌরীকেদার ভট্টাচার্য ও
সহশিল্পীবৃন্দ। ১৯৫২ সালের রেকর্ড। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র
পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে
এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। গানটি শুনুন, ভিডিও সৌজন্যে Surajit Sen YouTube Channel ।
ঊর্ধ্বে আদেশ হানিছে বাজ
শহীদী-ঈদের সেনারা সাজ্,
দিকে দিকে চলে কুচ্ কাওয়াজ
খোল্ রে নিদ্-মহল !
কবে সে খোয়ালি বাদ্ শাহী
সেই সে অতীত আজো চাহি’
যাস্ মুসাফির গান গাহি
ফেলিস্ অশ্রুজল !
যাক্ রে তখ্ত্-তাউস
জাগ্ রে জাগে বেহুঁস !
ডুবিল রে দেখ্ কত পারস্য
কত রোম গ্রীক রুষ।
জাগিল তারা সকল,
জেগে ওঠ্ হীনবল !
আমরা গড়িব নতুন করিয়া
ধূলায় তাজমহল !
চল্ চল্ চল্ ॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আমি ভয় করব না ভয় করব না।
দু বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না॥
তরীখানা বাইতে গেলে মাঝে মাঝে তুফান মেলে---
তাই ব’লে হাল ছেড়ে দিয়ে ধরব না, কান্নাকাটি ধরব না॥
শক্ত যা তাই সাধতে হবে, মাথা তুলে রইব ভবে---
সহজ পথে চলব ভেবে পড়ব না, পাঁকের ‘পরে পড়ব না॥
ধর্ম আমার মাথায় রেখে চলব সিধে রাস্তা দেখে---
বিপদ যদি এসে পড়ে সরব না, ঘরের কোণে সরব না॥
আমি ভয় করব না কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিল্পী সুচিত্রা মিত্র। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত
গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ
হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই
আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। গানের ভিডিও সৌজন্যে pujan kumar daripa YouTube Channel ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আজও ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশ ছুঁয়েছে
পুডিয়েছে অগণিত ঘর ইয়াহিয়ার নেকড়ের দল।
এ তল্লাটে ঘর বলতে কিছুই নেই মানুষতো,
চিরুনী তল্লাসী করে নিয়ে গেছে সব।
চারিদিকে পচা গন্ধ, মরা মানুষ ছড়ানো ছিটানো
নদীর চড়ায়, বনে-জঙ্গলে এখানে-ওখানে।
রাত দিন ধূর্ত শৃগালেরা বলে দেয়,
মাথা উঁচু মানুষের সন্ধান।
কুড়োল ও কাটারীতে নিশ্চিহ্ন করেছে পেয়ারা বাগান।
লাখে লাখে লোক সহায় সম্বল ছেড়ে বাদুড়ের মত
পাড়ি দিয়েছে এক বাঙলা থেকে অপর বাঙলায়।
রক্ত পিপাসু নেকড়ে কবি অরুণ ভট্টাচার্য। কবি "আকিঞ্চন" পত্রিকার সম্পাদক। কবিতাটি কবি মুক্তিযুদ্ধের
কালে লিখলেও তা প্রকাশ করেন পরবর্তিকালে তাঁর "আগুনের বাজি" গ্রন্থে। কবির বাড়ি ছিল বরিশালের ঝালকাঠিতে,
রণমতি গ্রামে। ৭১ এর মুক্তি যুদ্ধে তিনিও ছিলেন, মাত্র ১৫ বছর বয়সী এক তরুণ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর
রাজাকার আলবদর বাহিনীর দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। তার জন্য তিনি ভারতে চলে আসতে বাধ্য হন।
২০২২ সালের জুন মাসে "সময়বৃত্ত"
পত্রিকার তরফে কবিকে সম্বর্ধনা
দেওয়া হয়। সেই সম্বর্ধনা সভার
অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর বক্তৃতায় খুব
স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন . . .
. . . "এমন প্রশ্ন উঠতে পারে পাঠক
মহলে, আপনি তো বাংলাদেশের
মুক্তিযোদ্ধা। আপনি দেশকে স্বাধীন
করে এখানে (ভারতে) কেন? হ্যাঁ বন্ধু
এ বড় লজ্জার। ১৯৭৫ এ শেখ মুজিবুর
রহমানের নৃশংস হত্যার পর ধর্মীয়
মৌলবাদীদের জন্য এবং রাজাকার
আলবদর, আলসামস, জামায়েত
ইসলামীরা অত্যাচারী হয়ে ওঠে। সেই
জন্যই আমার মতো অনেক মুক্তি
যোদ্ধা ভারতে আশ্রয় নিয়ে নাগরিকত্ব
গ্রহণ করেছেন। এই জন্য ভারত
সরকার কে ধন্যবাদ জানাই।"
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আমরা মিলেছি আজ মায়ের ডাকে।
ঘরের হয়ে পরের মতন ভাই ছেড়ে ভাই ক'দিন থাকে?।
প্রাণের মাঝে থেকে থেকে 'আয়' ব'লে ওই ডেকেছে কে,
সেই গভীর স্বরে উদাস করে-- আর কে কারে ধরে রাখে?।
যেথায় থাকি যে যেখানে বাঁধন আছে প্রাণে প্রাণে,
সেই প্রাণের টানে টেনে আনে-- সেই প্রাণের বেদন জানে না কে?।
মান অপমান গেছে ঘুচে, নয়নের জল গেছে মুছে--
সেই নবীন আশে হৃদয় ভাসে ভাইয়ের পাশে ভাইকে দেখে ॥
কত দিনের সাধনফলে মিলেছি আজ দলে দলে--
আজ ঘরের ছেলে সবাই মিলে দেখা দিয়ে আয় রে মাকে ॥
আমরা মিলেছি আজ মায়ের ডাকে কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিল্পী অমর পাল। স্বাধীন বাংলা
বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের
সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন
মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। ১৯৬১ সালে রেকর্ড করা গানের ভিডিও সৌজন্যে Saptarshi Ghatak YouTube Channel ।
গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
নিশিদিন ভরসা রাখিস, ওরে মন, হবেই হবে।
যদি পণ করে থাকিস সে পণ তোমার রবেই রবে।
ওরে মন, হবেই হবে ॥
পাষাণসমান আছে পড়ে, প্রাণ পেয়ে সে উঠবে ওরে,
আছে যারা বোবার মতন তারাও কথা কবেই কবে ॥
সময় হল, সময় হল-- যে যার আপন বোঝা তোলো রে--
দুঃখ যদি মাথায় ধরিস সে দুঃখ তোর সবেই সবে।
ঘণ্টা যখন উঠবে বেজে দেখবি সবাই আসবে সেজে--
এক সাথে সব যাত্রী যত একই রাস্তা লবেই লবে ॥
নিশিদিন ভরসা রাখিস কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিল্পী বনশ্রী সেনগুপ্ত। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে
সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ
জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই
আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। ১৯৬১ সালে রেকর্ড করা গানের ভিডিও সৌজন্যে eladey1949 YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে
https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এই কথাটা ধরে রাখিস-- মুক্তি তোরে পেতেই হবে।
যে পথ গেছে পারের পানে সে পথে তোর যেতেই হবে ॥
অভয় মনে কণ্ঠ ছাড়ি গান গেয়ে তুই দিবি পাড়ি,
খুশি হয়ে ঝড়ের হাওয়ায় ঢেউ যে তোরে খেতেই হবে।
পাকের ঘোরে ঘোরায় যদি, ছুটি তোরে পেতেই হবে।
চলার পথে কাঁটা থাকে, দ'লে তোমায় যেতেই হবে।
সুখের আশা আঁকড়ে লয়ে মরিস নে তুই ভয়ে ভয়ে,
জীবনকে তোর ভ'রে নিতে মরণ-আঘাত খেতেই হবে ॥
এই কথাটা ধরে রাখিস মুক্তি তোরে পেতেই হবে কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে
প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের
গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। বাংলাদেশের iChannel এর "গান দিয়ে শুরু"
অনুষ্ঠানের ভিডিও সৌজন্যে Impress Audio YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এবার তোর মরা গাঙে বান এসেছে, 'জয় মা' ব'লে ভাসা তরী ॥
ওরে রে ওরে মাঝি, কোথায় মাঝি, প্রাণপণে, ভাই, ডাক দে আজি---
তোরা সবাই মিলে বৈঠা নে রে, খুলে ফেল্ সব দড়াদড়ি ॥
দিনে দিনে বাড়ল দেনা, ও ভাই, করলি নে কেউ বেচা কেনা---
হাতে নাই রে কড়া কড়ি।
ঘাটে বাঁধা দিন গেল রে, মুখ দেখাবি কেমন ক'রে--
ওরে, দে খুলে দে, পাল তুলে দে, যা হয় হবে বাঁচি মরি ॥
এবার তোর মরা গাঙে বান এসেছে কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
শিল্পী পঙ্কজ কুমার মল্লিক। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে
প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের
গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। গানের ভিডিওটি
সৌজন্যে Anjan Chakraborty YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ওদের বাঁধন যতই শক্ত হবে ততই বাঁধন টুটবে,
মোদের ততই বাঁধন টুটবে।
ওদের যতই আঁখি রক্ত হবে মোদের আঁখি ফুটবে,
ততই মোদের আঁখি ফুটবে ॥
আজকে যে তোর কাজ করা চাই, স্বপ্ন দেখার সময় তো নাই--
এখন ওরা যতই গর্জাবে, ভাই তন্দ্রা ততই ছুটবে,
মোদের তন্দ্রা ততই ছুটবে ॥
ওরা ভাঙতে যতই চাবে জোরে গড়বে ততই দ্বিগুণ করে,
তোরা ভরসা না ছাড়িস কভু, জেগে আছেন জগৎ-প্রভু--
ওরা ধর্ম যতই দলবে ততই ধুলায় ধ্বজা লুটবে,
ওদের ধুলায় ধ্বজা লুটবে ॥
ওদের বাঁধন যতই শক্ত হবে কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
শিল্পী শান্তিদেব ঘোষ। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত,
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”
সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। গানের ভিডিওটি সৌজন্যে Shantideb Ghosh -
Topic YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
নাই নাই ভয়, হবে হবে জয়, খুলে যাবে এই দ্বার--
জানি জানি তোর বন্ধনডোর ছিঁড়ে যাবে বারে বার ॥
খনে খনে তুই হারায়ে আপনা সুপ্তিনিশীথ করিস যাপনা--
বারে বারে তোরে ফিরে পেতে হবে বিশ্বের অধিকার ॥
স্থলে জলে তোর আছে আহ্বান, আহ্বান লোকালয়ে--
চিরদিন তুই গাহিবি যে গান সুখে দুখে লাজে ভয়ে।
ফুলপল্লব নদীনির্ঝর সুরে সুরে তোর মিলাইবে স্বর--
ছন্দে যে তোর স্পন্দিত হবে আলোক অন্ধকার ॥
নাই নাই ভয় হবে হবে জয় কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচারিত গান। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে
প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের
গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। গানের ভিডিওটি সৌজন্যে Gaaner Dali
YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল--
পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান ॥
বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ--
পূর্ণ হউক, পূর্ণ হউক, পূর্ণ হউক হে ভগবান ॥
বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা--
সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক হে ভগবান ॥
বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন--
এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান ॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল--
পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান ॥
বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ--
পূর্ণ হউক, পূর্ণ হউক, পূর্ণ হউক হে ভগবান ॥
বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা--
সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক হে ভগবান ॥
বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন--
এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান ॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো।
একলা রাতের অন্ধকারে আমি চাই পথের আলো ॥
দুন্দুভিতে হল রে কার আঘাত শুরু,
বুকের মধ্যে উঠল বেজে গুরুগুরু--
পালায় ছুটে সুপ্তিরাতের স্বপ্নে-দেখা মন্দ ভালো ॥
নিরুদ্দেশের পথিক আমায় ডাক দিলে কি--
দেখতে তোমায় না যদি পাই নাই-বা দেখি।
ভিতর থেকে ঘুচিয়ে দিলে চাওয়া পাওয়া,
ভাব্নাতে মোর লাগিয়ে দিলে ঝড়ের হাওয়া
বজ্রশিখায় এক পলকে মিলিয়ে দিলে সাদা কালো ॥
ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। দ্বৈতকণ্ঠে শিল্পী দেবব্রত বিশ্বাস ও
কনক বিশ্বাস। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ
জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই
আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে। গানের ভিডিওটি সৌজন্যে Anjan Chakraborty YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.
tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।
একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো রে ॥
যদি কেউ কথা না কয়, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয়--
তবে পরান খুলে
ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে ॥
যদি সবাই ফিরে যায়, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি গহন পথে যাবার কালে কেউ ফিরে না চায়--
তবে পথের কাঁটা
ও তুই রক্তমাখা চরণতলে একলা দলো রে ॥
যদি আলো না ধরে, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি ঝড়-বাদলে আঁধার রাতে দুয়ার দেয় ঘরে--
তবে বজ্রানলে
আপন বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে একলা জ্বলো রে ॥
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিল্পী সুচিত্রা মিত্র। গানটির উল্লেখ
আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান দ্বারা
সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে।
গানের ভিডিওটি সৌজন্যে Anjan Chakraborty YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
গানটি গান্ধীজীর খুব প্রিয় ছিল এবং তাঁর নেতৃত্বে ১২ই মার্চ ১৯৩০ থেকে ৬ই এপ্রিল ১৯৩০ এর লবন
সত্যাগ্রহের ডাণ্ডী মার্চের থীম সং হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক, আমি তোমায় ছাড়ব না মা!
আমি তোমার চরণ--
মা গো, আমি তোমার চরণ করব শরণ,
আর কারো ধার ধারব না মা ॥
কে বলে তোর দরিদ্র ঘর, হৃদয় তোর রতনরাশি--
আমি জানি গো তার মূল্য জানি,
পরের আদর কাড়ব না মা ॥
মানের আশে দেশবিদেশে যে মরে সে মরুক ঘুরে--
তোমার ছেঁড়া কাঁথা আছে পাতা,
ভুলতে সে যে পারব না মা!
ধনে মানে লোকের টানে ভুলিয়ে নিতে চায় যে আমায়--
ও মা, ভয় যে জাগে শিয়র-বাগে, কারো কাছেই হারব না মা ॥
যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক আমি তোমায় ছাড়ব না কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিল্পী অদিতি
মহসিন। গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ
হোসেন প্রধান দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”
ওয়েবসাইটে। গানের ভিডিওটি সৌজন্যে Impress Audio YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।
সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে ॥
জানি নে তোর ধনরতন আছে কি না রানীর মতন,
শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে ॥
কোন্ বনেতে জানি নে ফুল গন্ধে এমন করে আকুল,
কোন্ গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে।
আঁখি মেলে তোমার আলো প্রথম আমার চোখ জুড়ালো,
ওই আলোতেই নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে ॥
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান
দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে।
গানের ভিডিওটি সৌজন্যে Impress Audio YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
অয়ি ভুবনমনোমোহিনী, মা,
অয়ি নির্মলসূর্যকরোজ্জ্বল ধরণী জনকজননিজননী ॥
নীলসিন্ধুজলধৌতচরণতল, অনিলবিকম্পিত-শ্যামল-অঞ্চল,
অম্বরচুম্বিতভালহিমাচল, শুভ্রতুষারকিরীটিনী ॥
প্রথম প্রভাত উদয় তব গগনে, প্রথম সামরব তব তপোবনে,
প্রথম প্রচারিত তব বনভবনে জ্ঞানধর্ম কত কাব্যকাহিনী।
চিরকল্যাণময়ী তুমি ধন্য, দেশবিদেশে বিতরিছ অন্ন---
জাহ্নবীযমুনা বিগলিত করুণা পুণ্যপীষুষস্তন্যবাহিনী ॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
মরুবিজয়ের কেতন উড়াও শূন্যে হে প্রবল প্রাণ।
ধূলিরে ধন্য করো করুণার পুণ্যে হে কোমল প্রাণ॥
মৌনী মাটির মর্মের গান কবে উঠিবে ধ্বনিয়া মর্মর তব রবে,
মাধুরী ভরিবে ফুলে ফলে পল্লবে হে মোহন প্রাণ॥
পথিকবন্ধু, ছায়ার আসন পাতি এসো শ্যামসুন্দর।
এসো বাতাসের অধীর খেলার সাথী, মাতাও নীলাম্বর।
উষায় জাগাও শাখায় গানের আশা, সন্ধ্যায় আনো বিরামগভীর ভাষা,
রচি দাও রাতে সুপ্ত গীতের বাসা হে উদার প্রাণ॥
মরুবিজয়ের কেতন উড়াও কথা ও সুর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিল্পী শ্যামল মিত্র, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সহশিল্পীবৃন্দ।
গানটির উল্লেখ আমরা পাই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে প্রকাশিত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সভাপতি ডঃ জাহিদ হোসেন প্রধান
দ্বারা সম্পাদিত, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান”সংকলনে। পাঠক ইন্টারনেটে এই গ্রন্থটি পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ”ওয়েবসাইটে।
গানের ভিডিওটি সৌজন্যে Shyamal Mitra - Topic YouTube Channel । গানের কথা সৌজন্যে https://www.tagoreweb.in ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী-জননী।
ফুলে ও ফসলে কাদা মাটি জলে ঝলমল করে লাবনি॥
রৌদ্রতপ্ত বৈশাখে তুমি চাতকের সাথে চাহ জল,
আম কাঁঠালের মধুর গন্ধে জ্যৈষ্ঠে মাতাও তরুতল।
ঝঞ্ঝার সাথে প্রান্তরে মাঠে কভু খেল ল’য়ে অশনি॥
কেতকী-কদম-যূথিকা কুসুমে বর্ষায় গাঁথ মালিকা,
পথে অবিরল ছিটাইয়া জল খেল চঞ্চলা বালিকা।
তড়াগে পুকুরে থই থই করে শ্যামল শোভার নবনী॥
শাপলা শালুক সাজাইয়া সাজি শরতে শিশির নাহিয়া,
শিউলি-ছোপানো শাড়ি পরে ফের আগামনী-গীত গাহিয়া।
অঘ্রাণে মা গো আমন ধানের সুঘ্রাণে ভরে অবনি॥
শীতের শূন্য মাঠে তুমি ফের উদাসী বাউল সাথে মা,
ভাটিয়ালি গাও মাঝিদের সাথে গো, কীর্তন শোনো রাতে মা।
ফাল্গুনে রাঙা ফুলের আবিরে রাঙাও নিখিল ধরণী॥
এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায় কথা ও সুর কবি কাজী নজরুল ইসলাম। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে'র
কণ্ঠযোদ্ধা শাহীন সামাদের কণ্ঠে গানটি শুনুন, ভিডিওটি সৌজন্যে Shaheen Samad YouTube Channel ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
তাজা রক্তে ভিজে গেছে বাংলার পথঘাট আজ
কত মাতা, কত প্রিয়া, হারালো আপন জন
যে ভালোবাসা পেয়েছিল এ বাংলার মাটি মন
থেকে, না সেকি এমনি করে পাবে প্রতিদান প্রতিক্ষণে?
লুকিয়ে যারা পায়চারি করে পাইন দেবদারু বনে
জেনো তাদেরই এ নির্মম নিশংসয় কাজ।
শ্মশানের তীরে বসে মৃত্যুকে কি আর ভয় !
ভালোবাসা, প্রেম যদি ভুলে গিয়ে থাকি
তবে কি আছে দেবার মতো ধন যা আছে বাকী?
জানি নাই রূপসীর চুলের বিন্যাসে এত গন্ধ
এক লহমায় মুছে গিয়ে হারাবে প্রেমের ছন্দ।
জেনো প্রাণ কাঁদে মাটি হারা দিবা নিশি
. পাখির হৃদয়
পাখির হৃদয়
কবি রণজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় (জন্ম ২৩.৩.১৯৪৮)।
অদ্যবধি অপ্রকাশিত কবিতা। রচনাকাল ৩রা জানুয়য়ারী ১৯৭১, রাত্রিকাল,
রসোড়া, কান্দি, মুর্শিদাবাদ।
এপার বাংলার কলকাতায়, ভারতমাতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তির সামনে, ভারতবর্ষের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।
দিল্লীর গেটওয়ে অফ ইণ্ডিয়াতে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ভারতীয় সেনার স্মৃতিতে বিগত ৫০ বছর যাবৎ প্রজ্বলিত "অমর জওয়ান জ্যোতি" নামক অনির্বাণ অগ্নিশিখাকে নিভিয়ে দিয়ে, আমাদের ইতিহাস থেকে, মুক্তিযূদ্ধের কালে, ভারত ও বাংলাদেশের মৈত্রী, সহযোগিতা ও ভারতীয় সেনার আত্মবলিদান এবং ইন্দিরা গান্ধীর অবিস্মরণীয় অবদান মুছে ফেলার বর্তমান ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের আপ্রাণ চেষ্টার প্রতিবাদে আমরা এই ছবিটি এখানে তুলে দিলাম।
মোদী সরকার বলছেন যে তাঁরা নাকি ওই অনির্বাণ অগ্নিশিখাটিকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে অন্যান্য সেনাদের সৌধের অগ্নিশিখার সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন। যা আমরা হাস্যকর মনে করি।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সারা ভারত তথা এপার বাংলায়, দেশের শাসকদলের ছড়ানো বিদ্বেষ-বিষে বুঁদ হয়ে থাকা নাগরিক সমাজ ও বিরোধী দলগুলি থেকে এই সিদ্ধান্তের কোনো জোরালো প্রতিবাদ চোখে পড়ে নি।
|
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সংকলক, কবি গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর কী সম্পর্ক?
|
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে মিলনসাগর.কম এর পরিচালক মিলন সেনগুপ্তর কী সম্পর্ক?
|
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সংকলক, কবি গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর কী সম্পর্ক?
|
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে মিলনসাগর.কম এর পরিচালক মিলন সেনগুপ্তর কী সম্পর্ক?
|