কবি দিলীপ কুমার বসু-র কাব্যোপন্যাস
কঙ্কনমালা
*
নিজের শিকড়, ব্যাকুল কংকণা ভাবে কেন যে পাচ্ছে না ?


ব্র্যাবোর্ণ-এর ভাল ছাত্রী ফার্স্ট ইয়ারে, প্রেসিডেন্সী কলেজে ছেলেরা
ছত্রখান হয়ে গেছে, কী সব খবর পাওয়া যায়, শোনা যায় তারা
পড়াশুনা ছেড়ে দিচ্ছে, অধ্যাপক, কর্তৃপক্ষ সমান চিন্তিত
এবছর প্রেসিডেন্সী বহুদিন সঞ্চিত সুনাম রক্ষা করতে অপারগ হবে কিনা,
---বেলুড়ের ছাত্ররা বা কেমন, কী করছে তারা --গোটা বাংলাদেশে ছেলে
নষ্ট হবে, এমন সংবাদ |  অনেকেরই কোনদিন বড় হওয়া হবেনা, নিশ্চিত |
এই কবিতা মিলনসাগর ডট কম থেকে নেওয়া। অনেকেরই হবে না জেনো।     
----গোটা বাংলাদেশ মানে, বহুদিন হতে যারা বাংলাদেশ | বাকি যারা, তারা
বাস্তবিক এ সমস্ত ভোগ, পড়াশুনা করা বাস্তবকে আক্রমণ, পরিবর্তনের
অধিকারী          
         
         
         
      
               


এ কেমন ব্যবহার পিতা ও মাতার ? কংকণা ব্যাকুল প্রশ্নে জলপ্রপাতের
সামনে দাঁড়ায় | নচিকেতা ডিগ্রী খুঁজতে পশ্চিম জার্মানী গিয়েছিল,
পেয়েছে তা, ফিরে এসছে, বলতে গেলে নিতান্তই বালকবয়সে
এত জ্ঞান এত আলো অর্জন করেছে | আই. এফ.এস-ও হয়েছে তারপর | ওদিকেই ঝোঁক--
ও-চাকরিই গ্রহণ করেছে | কংকণার সাথে সামাজিক অনুষ্ঠানে ক’বার হয়েছে দেখা |
কুল, শীল, তহবিল---সব মিলে উপযুক্ত ; তদুপরি খুবই আগ্রহী
এবাড়ির সাথে একটা সম্বন্ধ করতে | পাখির মতন ঝাঁপ দিয়ে পড়তে চায় হৃদয়ে তাহার |
চোখে অনুরাগ ভরে ইশারা জানায় তাই একদিন আরো কত প্রতিদিন কংকণা পাবেই |
তাই          
          
        
     
           

হৃদয় আমার ঘৃণায় ভরেছে, তীব্র বিষে ;
লক্ষ জনতা তাকিয়ে দেখছে নির্নিমেষে
জলপ্রপাতের মৃত্যুকাহিনী |

ঘুমিয়ে পড়ছে একটি রমণী |
হেঁটে কাঁটা আর উপরে কাঁটায় | সতের বছর !
মোটে সতেরতে অজগর সাপ বাঁধছে তাহাকে থুতুর আঠায়,
বিষনিঃশ্বাসে | এত অবসর নদীর তলায় !

.                                                                        
কঙ্কনমালার সূচিতে . . .    
.                                                                          
কবির মূল সূচিতে . . .    

মণিকোঠামাঝে |
মিলনসাগরে।      

প্রবালের খাটে ঘুমিয়ে পড়েছে একটি রমণী সতের বছরে ?
সতের ? মাত্র ? শুরু তো ?  রমণী মানে তো আমি-ই ?
মানে তো আমি-ই  ?
হৃদয় আমার ঘৃণায় ভরেছে | লাল আক্রোশে |

নদীর উপরে বেহুলার ভেলা ছুটছে দ্রুত
লখিন্দরের নূতন জন্মে তার প্রয়োজন

নদীর নিচের প্রবালের খাটে আমি শুয়ে আছি |
ক্লান্ত, নিথর, স্বপ্নবিহীন কোন্ নিদ্রায় |

হৃদয় আমার ছুটেছে কেথায় চিরকাল, শুধু গড়িয়ে গেছে
একপাশ দিয়ে সকাল-বিকেল, চিন্তা কোথায় ভুল পথ বেছে
দীর্ঘ চলেছে, সহজতমের প্রিয় পথখানি রয়েছে কোথায়, কোন্ ঠিকানায় ?

যে           
         
      
          
             
           
           
           
              
          
          
          

ড্রেসিংটেবিলে হীরকোজ্জ্বল বিরাট কাঁচের খন্ডের কাছে
ময়দানবের ঘরের সজ্জা, অচল ডলার, জড়োয়া গহনা
ধিক্ ধিক্ হাসে  | মাগো মা, বৃষ্টি নামবে কখন, আমি কি তাহ’লে
কোনদিন যাব ? যাওয়া কি কখনো শুরুই করিনি ? সতেরয় শেষ ?
সেখানে যাব না ? সেখানে সবাই দলবেঁধে যায়  |
পথের সঙ্গী চিকিত্সা করে, গোপন অ-সুখ গোপনে মেলায় |
আমি কি যাব না ?

---শুকনো তরুতে বিদ্যুৎরেখা চকিত আভাসে ঢেউ তুলে যায়--
উঁই ধরে গেছে গাছের মূলের চারপাশ ঘিরে, শাখা-প্রশাখায়,
গাছের গা বেয়ে |
মিলনসাগর ডট কম।      

নষ্ট শিবিরে
ঘুমিয়ে পড়েছে একটি রমণী  |
জলপ্রপাতের স্বপ্ন দেখছে নির্নিমেষে |
হৃদয় ঘৃণায় ভরে গেছে তার |

আয়না হাসছে দাঁত ভেঙ্ চিয়ে বিজুরী আলোয়
পুষ্ট দেহের উপবনশোভা বুকে আঁকড়িয়ে নষ্ট শিবিরে |

.           ***********************              


.                                                                        
কঙ্কনমালার সূচিতে . . .    
.                                                                          
কবির মূল সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
চতুর্থ পরিচ্ছেদ

ঢাকা আকাশ মেঘস্তুপে, বহুরূপে বিদ্যুৎ নর্তিত ;