ষষ্ঠ সর্গঃ
ধৃষ্ট বৈকুণ্ঠ
অথ তাং গন্তুমশক্তাং চিরমনুরক্তাং লতাগৃহে দৃষ্ট্বা |
তচ্চরিতং গোবিন্দে মনসিদমন্দে সখী প্রাহ ||১||
গীতম্ ১২
গোণ্ডাকিরীরাগেণ রূপকতালেন গীয়তে
পশ্যতি দিশি দিশি রহসি ভবন্তম্ |
তদধরমধুরমধুনি পিবন্তম্ ||১||
নাথ হরে সীদতি রাধা বাসগৃহে || ধ্রুবম্ ||
ত্বদভিসরণরভসেন বলন্তী
পততি পদানি কিয়ন্তি চলন্তী ||২||
বিহিতবিশদবিসকিশলয়বলয়া
জীবতি পরমিহ তব রতিকলয়া ||৩||
মহুরবলোকিতমণ্ডনলীলা
মধুরিপুরহমিতি ভাবনশীলা ||৪||
ত্বরিতমুপৈতি ন কথমভিসারম্ |
হরিরিতি বদতি সখীমনুবারম্ ||৫||
শ্লিষ্যতি চুম্বতি জলধরকল্পম্ |
হরিরূপগত ইতি তিমিরমনল্পম্ ||৬||
ভবতি বিলম্বিনি বিগলিতলজ্জা
বিলপতি রোদিতি বাসকসজ্জা ||৭||
শ্রীজয়দেবকবেরিদমুদিতম্
রসিকজনং তনুতামতিমুদিতম্ ||৮||
বিপুলপুলকপালিঃ স্ফিতশীত্কারমস্তজনিতজড়িমকাকুব্যাকুলং ব্যাহরন্তী |
তব কিতব বিধায়ামন্দকন্দর্পচিন্তাং রসজলধিনিমগ্না ধ্যানলগ্না মৃগাক্ষী ||১||
অঙ্গেম্বাভরণং করোতি বহুশঃ পত্রেহপি সঞ্চারিণি
প্রাপ্তং ত্বাং পরিশঙ্কতে বিতনুতে শয্যাং চিরং ঘ্যায়তি |
ইত্যাকল্পবিকল্পতল্পরচনাসঙ্কল্পলীলাশত-
ব্যাসক্তাপি বিনা ত্বয়া বরতনুনৈষা নিশাং নেষ্যতি ||২||
কিং বিশ্রাম্যসি কৃষ্ণভোগিভবনে ভাণ্ডারভূমিরুহি
ভ্রাতর্যাহি ন দৃষ্টি গোচরামতঃ সানন্দনন্দাস্পদম্ |
রাধায়া বচনং তদধ্বগমুখান্নন্দান্তিকে গোপতো
গোবিন্দস্য জয়ন্তি সায়মতিথি-প্রশস্ত্যগর্ভা গিরঃ ||৩||
ইতি শ্রীগীতগোবিন্দ মহাকাব্যে বাসকসজ্জাবর্ণনে ধৃষ্টবৈকুণ্ঠো নাম ষষ্ঠঃ সর্গঃ
জয়দেবের গীতগোবিন্দ (দ্বাদশ শতক) ষষ্ঠ সর্গ ধৃষ্ট বৈকুণ্ঠ
|
ষষ্ঠ সর্গ
বা ধৃষ্ট বৈকুণ্ঠ
গমনে অশক্তা চির অনুরক্তা
. রাধাকে হেরিয়া লতা-ভবনে,
কহে তাঁর চরিত মনসিজ-দলিত
. গোবিন্দে, রাধাসখী, গহনে | ১
দ্বাদশ গীতি
( গোণ্ডকিরী রাগ ; রূপক তাল )
হেরে রাধা দিশি দিশি তোমাকেই বিজনে ;
ভাবে,--- আছে মুখ-মধু পানে রত দুজনে | ১
ধুয়া---- ওহে নাথ, অবসাদে আছে রাধা ভবনে |
তব অভিসার-আশে বল লভি’ উঠিয়া,
. চলিতে চলিতে পথে পড়ে পুনঃ লুটিয়া | ৩
পরিয়া বিশদ বিস-কিশলয় বালা গো,
তোমারি মিলন আশে বেঁচে আছে বালা তো | ৩
পরিধানে কভু রাধা তব বেশ পরিয়া,
কহে :-- “আমি মধুরিপু”, ছলে ভুল করিয়া | ৪
সযতনে সখীজনে সুধাইছে বারবার,
“কেন হরি ত্বরা করি নাহি করে অভিসার” | ৫
কালরূপ হেরি বালা,--- তুমি এলে বলিয়া,
তিমির চাপিয়া বুকে চুমে প্রেমে গলিয়া | ৬
বিলম্ব হেরি হল বিগলিত লজ্জা ;
করিছে বিলাপ, সাজি সে বাসক-সজ্জা | ৭
দূতী-কথা, জয়দেব কবিতায় উদিত
শুনি তাহা রসিকের চিত সুখ-মুদিত | ৮
পুলকে রোমাঞ্চিতা, শীত্কারে শীর্ণা,
মোহবশে মূর্চ্ছিতা, বিরহেতে খিন্না,
তব চিন্তন-রস-জলধিতে মগ্না,---
এমনি ত আছে রাধা তোমাতেই লগ্না | ১
বারে বারে আভরণ পরিছেন অঙ্গে |
নড়িলে গাছের পাতা পবনের রঙ্গে,
তুমি এলে ভেবে মনে, রবে শেষ পবনে ;
তোমাতে নিহিত চিত্ত, তব ধ্যান নয়নে |
মনের মাঝারে তুমি, তবু খেদ মেটে না ;
বিরহের রাতি তার কোন মতে কাটে না | ২
“ কে তুমি ভাণ্ডীর বনে, ওগো পথ-শ্রান্ত ?
কৃষ্ণভোগী থাকে হেথা, জান না কি পান্থ ?
যাও যথা উত্সব নন্দের ভবনে |”
কৌশলে কহিলা রাধা | পথিকের বচনে
শুনি তাহা গিয়ে হরি নন্দের সদনে
প্রশংসে পান্থকে, সানন্দ বদনে |
হরির সে বাণী হোক জয়যুত ভুবনে | ৩
ইতি বাসকসজ্জাবর্ণনে ধৃষ্টবৈকুণ্ঠ নামে ষষ্ঠ সর্গ সমাপ্ত
<< ভাণ্ডীর বনে কষ্ণভোগী অর্থাৎ কালসাপ বাস করে ; এই কথার উল্লেখ করিয়া রাধা পান্থ দ্বারা কৃষ্ণকে অভিসার-সঙ্কেত দিয়াছিলেন। . ---বিজয়চন্দ্র মজুমদার
|
কবি জয়দেবের গীতগোবিন্দ ও কবি বিজয়চন্দ্র মজুমদারের বঙ্গানুবাদ
|
কবি বিজয়চন্দ্র মজুমদারের বঙ্গানুবাদ (আশ্বিন ১৩৩২ বঙ্গাব্দ, অক্টোবর ১৯২৫) সাদা পটে, ছোট হরফে, অনুবাদের সঙ্গে কবির দেওয়া বিভিন্ন টীকা-টিপ্পনী . . .
|