কবি বিজয় গুপ্ত-র মনসামঙ্গল কাব্য যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে। |
ছয় মাস সাত মাস হইল মাস নয় | দশ মাস হইল গর্ভ সম্পূর্ণ সময় || ( ছয় সাত অষ্ট মাস নয় পরবেশ | দেখিয়া মুনিগণে হরিষ বিশেষ || পুত্র গর্ভে দেখি মনসার মনে বড় সুখ | পদ্মার মুখ দেখিয়া শিবের কৌতুক || ) বিজয় গুপ্ত বলে ভাই সদাই আনন্দ | পয়ার এড়িয়া বল লাচারির ছন্দ || . **************** সূচি... মিলনসাগর |
মনসামঙ্গল কাব্যের সূচি |
কবি বিজয় গুপ্তর মনসা মঙ্গল অষ্ট নাগের জন্ম পালা ২ মনসা প্রথম গর্ভবতী আনন্দিত পশুপতি নাচন্তি অতি কুতূহলে | ভূমিতে আঁচল পাতি নিদ্রা যায় পদ্মাবতী উঠে বসে অতি কুতূহলে || দুর্বল পান্ডুর গায় আড় নয়নে চায় অধর দশনে নাহি রঙ্গ | তাম্বুল শর্করা ক্ষীর ঘৃত ননী না লয় জীব বড় প্রিয় জামির ছোলঙ্গ || আর কিছু না লয় মন ঝিকট পরম ধন উঠিতে বসিতে নাহি বল | গর্ভাবেশ দুঃখিন দশ মাস দশ দিন আচম্বিতে উদর চলন || গর্ভ ভারে তনু ক্ষীণ দশ মাস দশ দিন পূর্ণিত হইল তখন | হরষিত হইল মাতা ( ? ) পদ্মার প্রসব ব্যথা প্রভাতে জন্মিল অষ্টজন || উপজিল অষ্টজন হরিষে নাচে দেবগণ আকাশে কুসুম বরিষণ | দেখি দেখি অষ্টজন মায়ের আনন্দিত মন বিজয় গুপ্তের সরস বচন || ( জন্মিয়া সে ততক্ষণে আস্তীক চলিল বনে কমন্ডলু লইয়া বায়ুগতি | বিজয় গুপ্ত বলে সার মোর গতি নাহি আর দয়া কর দেবী পদ্মাবতী || ) . **************** সূচি... মিলনসাগর |
কবি বিজয় গুপ্তর মনসা মঙ্গল অষ্ট নাগের জন্ম পালা ৪ আরে প্রভু জগদীশ কার বোলে খাইয়া বিষ বিষ খাইয়া পড়িলা ঢলিয়া | শুনহে আমার বাণী ওহে প্রভু শূলপাণি আজু প্রমাদ পড়িল তোমা দিয়া || আজু সে বুঝিলাম সার জীবন না রাখিব আর প্রাণ দিব গরল খাইয়া | যে হউক সেউক মোর কার্তিক গণেশ তোর দুই পুত্র কারে যাও দিয়া || তোমারে না দেখি ভাল মুখ বাহিয়া পড়ে লাল কি করিব ইহার উপায় | গলায় কাটারি দিয়া যাব প্রাণ তেয়াগিয়া এ জীবনে আর নাহি সাধ || শুনিয়া যে পদ্মাবতী আসিলেন শীঘ্রগতি দেবগণ হইল হরষিত | ব্রহ্মা বলে পদ্মা শুন জিয়াও বাপ ত্রিলোচন বিষ খাইয়া ঢলিল জগন্নাথ || দেবগণে জয় জয় বারেক জিয়াও মনসায় তুমি রাখ দেবের সাধন | গৌরী বলে ঝি আইল এখন প্রভুর জীবন রইল বাপ তোমার জিয়াও এখন || পদ্মা বলে না কর তাপ এখনই জিয়াব বাপ আর তুমি না হও চিন্তিত | শুনিয়া পদ্মার বাণী সবে করে জযধ্বনি নিশ্চিন্তে হইয়া হরষিত || বাপের নিকট পদ্মা যায় দেবগণে জয় জয় যোড় হস্তে করয়ে স্তবন || বিজয় গুপ্ত কবি ভণে মনসার শ্রীচরণে দেবীর বরে সভার কল্যাণ || . **************** সূচি... মিলনসাগর |
কবি বিজয় গুপ্তর মনসা মঙ্গল অষ্ট নাগের জন্ম পালা ১ আপনার বল বিক্রম বাড়ে নিজ কুল | মন দিয়া শুন কহি ইহার আদিমূল || উতঙ্ক নামে মুনি তপে মহাবল | গুরুর তরে গিয়া আনে রতন কুন্ডল || বনবাসে উপবাসে শরীর দুর্বল | আচম্বিতে এক বৃক্ষে দেখে রম্য ফল || উপবাসে উজাগারে শরীরের বল টোটে | ভূমিতে কুন্ডল থুইয়া গাছে গিয়া উঠে || অতি কোপে ফল পাড়ে বেলা অবসানে | কুন্ডল লইয়া এক নাগ নামিল পাতালে || আচম্বিতে কুন্ডল লইয়া গেল নাগপুরী | গাছ হইতে নামে মুনি ধর ধর বলি || হের হের বলিয়া মুনি ডাকে পরিত্রাহি | গাছ হইতে নামি দেখে তথায় নাগ নাহি || অনেক যত্নে পাইল ধন সেই নাগলোকে | আহার পানি এড়ে মুনি সেই ধনের শোকে || পাতালে নামিলে চিত্ত পরিপাটি | হাতে দন্ড লইয়া খোঁড়ে পাতালের মাটি || তপের বলে হইল দন্ডের চোখ মুখ | খান খান করিয়া চিরে পৃথিবীর বুক || ইহা দেখি পৃথিবী লইয়া ইন্দ্রের শরণ | কান্দিতে কান্দিতে কহে যত বিবরণ || মুনির বৃত্তান্ত যত কহিলা ইন্দ্রের সকাশ | পৃথিবীতে শান্তাইয়া পাঠাইলা দেশ || অশেষ বিশেষ মুনি বুঝাইলা বিশেষ | তথাচ না এড়ে মুনি বুঝাইলা আশ || মুনিবরের মোহ দেখি ইন্দ্রের দুঃখ লাগে | বজ্র বান্ধিয়া দিলা মুনির দন্ডের লাগে || সবের প্রধান অস্ত্র অতি বড় রঙ্গ | বজ্রঘাতে পৃথিবীর হইল সুরঙ্গ || দেখিয়া কৌতুক মুনি বলে ভাল ভাল | |
|