রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য |
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি |
সমতুল বরাত চৌসর চারি ঢাল | তার গায়ে পরিপাটি সুবর্ণ গজাল || ঝনঝন শবদে হাথের অস্ত্র পড়ে | লোকে বলে কামিলা গড়িল বস্যা গড়ে || বাম হাথে যাঁতা টানে হুতাসনে হরি | রাঙ্গ সাটে ফুল কাটে সাদামাঠা করি || পরিপাটি পত্তন অংশুক জৌ চাল | বিশেষ বর্ণক ভেদ হিঙ্গুল হর্তাল || সারি সারি সমুখে বর্ণকপূর্ণ মালা | রাধাকৃষ্ণ বলিয়া বিশাই লিখে ফলা || ভাগবত ভারত অনেক শাস্ত্র দেখে | মহাকবি পন্ডিত পুরাণ যেন লেখে || কৃষ্ণের মহিমা লিখে সজল নয়ান | ভারথের সমুখে লিখিল সাবধান || বিশাই বিশেষ লিখে বসিয়া বিরলে | বাম হাতে সমুখে সোনার বাতি জ্বলে || জয়দূর্গা মনে জপে রঙ্কিণী বাশুলি | রাধাকৃষ্ণ বলিয়া সমুখে ধরে তুলি || লিখন আরম্ভ আগে লিখিল গণেশ | বদন কুঞ্জর শোভা মনুহর বেশ || গোপাল গোবিন্দ হরি বলে দশবার | কান্দিতে কান্দিতে লেখে কৃষ্ণ-অবতার || বসুদেব-কুলেতে দৈবকী ঠাকুরাণী | চতুর্ভূজ-রূপে জন্ম নিল চক্রপাণি || গদা পদ্ম শঙ্খ চক্র বনমালা গলে | সুবর্ণ নূপুর শোভে চরণকমলে || পরিধান পীতবস্ত্র পতঙ্গ-উদয় | জন্মদাতা-সমুখে বলেন সবিনয় || কৃষ্ণ বলে শুন পিতা বিশেষ বচন | আমাকে লইয়া চল গোকুল ভুবন || লুকাইয়া রাখিবে নন্দের অন্তঃপুর | যশোদার কন্যা আনি ভান্ড কংসাসুরে || কংসের নিধন হেতু এই অবতার | চল শীঘ্র গোকুল যমুনা হয়্যা পার || বলিতে বলিতে কৃষ্ণ বালক মূরতি | বিশাই কান্দিয়া লেখে বাম করে বাতি || কান্দিয়া আকুল হয়্যা কৃষ্ণ নিল কোলে | আনন্দে করিল যাত্রা নন্দের গোকুলে || দূর হৈল কপাট প্রসন্ন হৈল গন | বাহিরে অসুর যত নিদ্রা অচেতন || মেঘের গর্জন ঘোর অন্ধকার রাতি | পাছু হইতে বাসুকি ধরিল দন্ড ছাতি || কৃষ্ণকোলে বসুদেব গোকুল পয়ান | দারুণ দরিয়া পথে উড়িল পরাণ || যমুনা হিল্লোল শুনি তরঙ্গ গভীর | ভুজঙ্গ গর্জন ঘোর ঘন ডাকে নীর || পার হইতে বসুদেব জলপানে চায় | কৃষ্ণকোলে করি কান্দে না দেখি উপায় || মনে কর গোকুল যাইব কোন্ গনে | নিকট মথুরা পাছে কংসরাজা শুনে || হায় হায় বলে তখন কোলে নারায়ণ | দুহাথে ধব়্যাছে দড় পরম যতন || হেন বেলা ভবানী আপনি বরদায় | শৃগালের রূপ ধব়্যা পার হয়্যা যায় || পূরববাহিনী দেবী য়মুনার জলে | এ সব দেখিয়া তখন অল্প জল বলে || পাছু পাছু কৃষ্ণ কোলে সত্ত্বর গমন | কোলে হৈতে আমণি পড়িল নারায়ণ || . ফলানির্মাণ পালার পরের পৃষ্ঠায় . . . . এই পাতার উপরে . . . মিলনসাগর |